ছোটবেলার স্মৃতি
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আপনাদের সঙ্গে ছোটবেলার একটি গল্প শেয়ার করব। সেদিন ডাক্তারের কাছে গিয়ে ইঞ্জেকশন দেয়ার সময় হঠাৎ করে মনে পড়ে গেল ছোটবেলার কথা। ছোটবেলায় ইনজেকশন বা ডাক্তারের কাছে যাওয়া নিয়ে কতই না ভয় পেতাম । কিন্তু এখন আর এগুলোকে কিছুই মনে হয় না। বিশেষ করে দুইটা বাচ্চা সিজারে হওয়ার পর থেকে তো আরও ভয় কমে গিয়েছে। কিন্তু তারপরও রক্ত পরীক্ষার জন্য রক্ত নিলে আমি কখনো ইনজেকশনের দিকে তাকাই না। অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে থাকি। ইনজেকশন দেখলেই আমার এখনো কেমন যেন লাগে। যাই হোক যে গল্প শেয়ার করতে এসেছিলাম তাই তো বলা হচ্ছে না।
আমাদের ছোটবেলা এখনকার বাচ্চাদের মত ছিল না আমরা ছোটবেলায় বিকাল হলেই বাইরে ছুটে চলে যেতাম খেলার জন্য। শুধু অপেক্ষা করতাম যে কখন বিকাল হবে আর কখন ঘর থেকে বের হতে পারব। বিকাল বেলায় কত খেলা যে খেলতাম তার কোন শেষ নেই। এরকমই একবার খেলতে গিয়ে এক বিপত্তি ঘটে। দৌড়াদৌড়ি খেলতে গিয়ে হঠাৎ করে ময়লার মধ্যে পা চলে যায়। আর সেই ময়লাতে ভাঙ্গা কাঁচ ছিল। আমার পায়ের কাঁচ ঢুকে যায় এবং রক্ত বের হতে থাকে। আমি চুপি চুপি বাসায় এসে বিভিন্ন কাপড় দিয়ে রক্ত মুছে বন্ধ করি। বাসায় কাউকে আর জানায়নি ভয়ে। একে তো বকা খাওয়ার ভয় দুয়ে তো আবার কি না কি হয়েছে সেই ভয়।
এভাবেই তখন রক্ত বন্ধ করেছিলাম কাউকে আর জানায়নি। তারপরে মনে হয় দুই এক বছর পার হয়ে গিয়েছে। হঠাৎ আমার মনে হল যে জায়গায় কাঁচ লেগেছিল সেই জায়গাটা একটু উঁচু উঁচু ।তখন তো আরো ভয় পেয়ে গেলাম যে হয়তো কাঁচ ভিতরে রয়ে গিয়েছে। ভয়ে ভয়ে আম্মাকে জানালাম। পরে আম্মা ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল। ডাক্তার দেখে বলল যে ভিতরে কাঁচ আছে ফুলে গিয়েছে অপারেশন করতে হবে।
তারপর কি আর করা যেই ভয়ে এতদিন বলিনি সেই কাজই হল। প্রথম বার ওটিতে ঢুকে কি পরিমাণ যে ভয় পেয়েছিলাম তা বলে বোঝাতে পারবো না। ডাক্তাররা কেটে কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করার পর বলল যে কাঁচ নেই। পরে সেলাই করে বাসায় পাঠিয়ে দিল। কয়েকদিন পর সেলাই কেটে বাসায় এসে মনে মনে আফসোস করছি যে কিছুই পেল না শুধু শুধু আমার পা কাটলো। পরে আরো দুই এক দিন পর হঠাৎ সেই জায়গায় হাত দিয়েছি কেমন যেন একটা কিছু বাধলো। আমি টান দিতেই দেখি ছোট্ট একটা চিকন পাতলা কাঁচের টুকরো বের হয়ে আসলো। এই নিয়ে পরে বেশ মজা করছিলাম যে ডাক্তার কাঁচ পেল না কিন্তু আমি ঠিকই বের করে ফেললাম। আসলে যে কোন বিপদে পরলেই বাবা মাকে সঙ্গে জানানো উচিত। আমার মত এরকম লুকিয়ে রাখা উচিত না। তখন জানালে হয়তো এই অপারেশনটা করা লাগত না।
যাইহোক ছোটবেলায় এই স্মৃতিটা মনে পড়ে একা একাই হাসছিলাম। তাই আপনাদের সঙ্গে আজকে শেয়ার করলাম। আশা করি আপনাদের ভাল লেগেছে। সময় নিয়ে আমার পোস্টটি দেখার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।
ধন্যবাদ
@tania
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
আসলেই আমারও ছোটবেলার স্মৃতিগুলো মনে করতে অনেক ভালো লাগে। ছোটবেলায় বিকেল হলে খেলাধুলা করার জন্য যেন মনটা অস্থির হয়ে যেত। মা বাবাকে না জানিয়ে চুপিচুপি খেলতে চলে যেতাম। আর ঘরে ফিরলে মা বাবার বকা শুনতে হতো। কতইনা এভাবে চুপিচুপি খেলাধুলা করতে গিয়েছি কে জানে। আপনি বিকেলে খেলতে গিয়ে পায়ে কাঁচ ফুটিয়ে ফেললেন এজন্য খুবই খারাপ লাগলো। পরে ডাক্তার দেখিয়ে নিয়েছেন। এরকম আমার অনেক হয়েছে খেলাধুলা করতে গিয়ে কাটাছিরা হয়ে যেত। কিন্তু ভয়ে এসে আর কাউকে বলতাম না। ছোটবেলার স্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন আজকে। আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো আমার কাছে।
আমাদের ছোটবেলাটাই ছিল অনেক আনন্দের। আর এখনকার বাচ্চাদের তো খেলার জায়গায় নেই। ওদের শৈশব কাটে তো মোবাইল আর ল্যাপটপে যাই হোক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
জি আপু আপনার মত ছোটবেলায় আমারও হাজারো ব্যথা আছে যেটা আমি কাউকে বলিনি। আসলে ভয় পেতাম আম্মু দুটোর জন্য একইতো খেলতে গিয়েছি তারপর ব্যথা পেয়ে একটা আপদ ঘটিয়ে এসেছি। যাইহোক আপনার ঘটনাটি পড়ে বেশ মজা পেলাম আবার একটু ভয়ও লাগছিল। যেমন এক বছর পরে আপনার একটা অপারেশন করতে হয়েছে, কিন্তু ডাক্তার কোন কিছুই পেল না। কিছুদিন পর আপনি নিজেই ডাক্তারের মত কাচটুকু বের করে ফেললেন 😁। আসলে যে কোন কিছুই আমাদেরকে বাবা মায়ের সাথে শেয়ার করা উচিত তাহলে সেটা অল্পতে সলভ হয়ে যায়।
ঠিক বলেছেন আপু বাবা মায়ের সঙ্গে সবকিছু শেয়ার করা উচিত। আমরা ভয়ে অনেক কিছুই গোপন করতে চাই কিন্তু পরে হিতে বিপরীত হয় । ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আমি নিজেও ইনজেকশন দেওয়া নিয়ে এখনো বেশ ভয় পাই,, তবে ডেঙ্গুতে যতবার রক্ত নিয়েছে আর ইনজেকশন করে ওষুধ দিয়েছে তখন অনেকটাই ভয় কেটে গিয়েছিল। আপনার মত তো আমিও ছিলাম। বাইরে এমন দুর্ঘটনা ঘটিয়ে এসে বাড়িতে চুপ করে থাকতাম। পরে সুদাসলে তার ফল পেতাম। কিন্তু কথা হলো আপনার পা অপারেশন করার আগে এক্সরে করে দেখেনি ভেতরে সত্যিই কিছু আছে কিনা? এমনি এমনি কষ্ট পোহাতে হয়েছে।
এক্সরে করেছিল ভাইয়া। কাঁচতো ভিতরে ছিল। ডাক্তার কেন যেন পাইনি পরে ঠিকই বের হয়েছিল। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আসলে ছোটবেলার সেই দিনগুলো ছিল অন্যরকম বিকেল হলে বেরিয়ে পড়তাম খেলাধুলা করার জন্য। সবাই অপেক্ষা করতো কখন বিকেল হবে আর ঘর থেকে বের হব এটা কিন্তু একেবারে সত্যি।আপনার পা কাছের মধ্যে কেটে গিয়েছিল এটা শুনে তো আমি ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম যখন শুনলাম অপারেশনের কথা তখন তো একেবারে মাথা ঘুরছিল আমার।আসলে যে কোন বিপদ বাবা-মাকে সঙ্গে সঙ্গে জানানো উচিত কারণ এর ফলে অনেক বড় কিছু হয়ে যেতে পারে। ডাক্তার অপারেশন করে কাঁচ পেল না কিন্তু আপনি কাঁচ পেয়ে গেলেন এটা কিন্তু সত্যি খুবই মজার বিষয়। এই স্মৃতিটা মনে পড়ার পর আপনি একাই হাসতে ছিলেন তাই আমাদের সাথে শেয়ার করলেন পড়ে ভালো লাগলো।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া তখন বাবা মাকে জানালে হয়তো পরে এই অপারেশনটা করা লাগত না। কিন্তু কি আর করবো ছোটবেলায় তো আর এত কিছু বুঝতাম না। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।