সবচেয়ে খারাপ জার্নির অভিজ্ঞতা
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ।
জীবনে অনেক জার্নি করেছি, কিন্তু গতকালকের মত খারাপ জার্নি কোনদিনও করিনি। ঈদের ছুটি অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে তাই আমরা ভেবেছিলাম যে শুক্রবারে হয়তো অতটা ভিড় থাকবে না। সেজন্য ড্রাইভারকে আগের দিন সন্ধ্যায় গাড়িতে উঠে রংপুরে পৌঁছাতে বলেছিলাম। আমাদের ইচ্ছে ছিল সকাল সকাল রওনা দেয়ার। কিন্তু সকালের দিকে ড্রাইভার এর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম যে রাস্তায় প্রচুর জ্যাম তার পৌঁছাতে দুপুর বারোটা বেজে যাবে। তখনই আমাদের চিন্তা শুরু হলো যে দুপুর বারোটায় যদি রওনা দেই আমরা কখন পৌঁছাব?
রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় গাড়িতে বসে আমি এই ছবিগুলো তুলেছি। তা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করছি।
কি আর করার রওনা তো দিতেই হবে। অবশেষে আমরা বারোটায় বাসায় থেকে বের হলাম । আমাদের ধারণা ছিল খুব বেশি হলেও ১০টার মধ্যে পৌঁছে যাব। কিন্তু রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় ছোট বড় অসংখ্য জ্যামে পড়েছি আমরা। বিশেষ করে যমুনা সেতুর উপর থেকে জ্যাম শুরু হয়েছিল প্রায় ১৪ কিলোমিটারের মতো।
আমরা সকালবেলায় বাসা থেকে খাবার খেয়ে বের হয়েছিলাম। সেজন্য বাচ্চাদের অনেক ক্ষুধা লেগে গিয়েছিল। ফুড ভিলেজ গুলোতে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু এত ভিড় যে আর সেখানে দাঁড়াতে পারিনি। পরে কিছুদুর এসে ওভি ফুড ভিলেজ নামে আরেকটি রেস্টুরেন্ট ছিল সেখানে দাঁড়িয়ে আমরা কোনরকম দুপুরের খাওয়া সেরে আবারো রওনা দেই। খাবার দাবারও প্রায় শেষের দিকে হয়ে গিয়েছিল তেমন ভালো কোন খাবার ছিল না।
রাস্তায় এত গাড়ি আমি আগে কখনো দেখিনি।বিশেষ করে প্রতিটি ট্রাক মানুষ দিয়ে ভর্তি ছিল। আবার ছোট ছোট পিকআপ গুলোতে পিছনের ডালার উপরে বসে অনেক লোক যাচ্ছিল । কি ভয়ংকর জার্নি সেগুলো। তারপরে অসম্ভব রকমের গরম তাদেরকে দেখেই বোঝা যাচ্ছিল।
তারপরও কষ্ট করে জার্নি প্রায় শেষের দিকে হয়ে গিয়েছিল। আমরা সাভার ঢুকবো তার ঠিক আগ মুহূর্তে একটি ছোট ট্রাক আমাদের গাড়ির সাইডে লাগিয়ে দিল। গাড়ির একটা চাকা সাথে সাথে পাঞ্চার হয়ে নষ্ট হয়ে গেল এবং দরজার কোনা কিছুটা ঝলসে গিয়েছে। ওই পাশের দরজা আর খোলা যাচ্ছিল না। গাড়ির পিছনের ডিকি ভর্তি ছিল । সেগুলো সব নামিয়ে আবার ভিতর থেকে চাকা বের করে চাকা চেঞ্জ করে আবারো রওনা দিলাম। এই গাড়ি ঠিক করতে না জানি কত খরচ হয়। মিনিমাম ৫০-৬০ হাজার টাকার একটা ধাক্কা।যাই হোক গাড়িতে উঠে ভাবছিলাম যে আল্লাহ অল্পের মধ্যে দিয়ে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। গাড়ির ক্ষতি হয়েছে আমাদের আল্লাহর রহমতে কারো কোন ক্ষতি হয় নাই। তার জন্য আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া।
অবশেষে আমরা রাত দুটায় বাসায় ফিরি ক্লান্ত হয়ে। এরকম ভয়াবহ জার্নির অভিজ্ঞতা আমার আগে কখনো হয়নি । তারপরও সব মিলিয়ে সুস্থ মত বাসায় পৌছাতে পেরেছি সেটিই অনেক বড় বিষয়।
এই ছিল আমার আজকের আয়োজন। আশা করি আপনাদের সকলের ভাল লেগেছে। সময় নিয়ে আমার পোস্টটি দেখার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।
ধন্যবাদ
@tania
Photography | @tania |
---|---|
Phone | oppo reno5 |
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
আসলে আপু ঈদের এই সময়টায় রাস্তায় জ্যাম এবং সব অফিস আদালত গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি খুলে ফেলাতে প্রচুর মানুষের ঈদের ছুটি শেষে বাড়ি ফেরার এই মুহূর্তটা, ওই মুহূর্ত টাই আপনি পড়ে গিয়েছেন। তবে আমার মনে হয় আপনাকে আরো আগে হয়তোবা আরো পরে রওনা দিলে এই ভয়াবহ কষ্টটা করতে হত না। তবে যতটুকু বুঝতে পেরেছি হয়তো বসে থেকে কষ্ট করে আসতে পেরেছে নিজের গাড়ি করে কিন্তু যারা পিকআপে করে বাট ট্রাকে করে আসছিল ওদের এই প্রচন্ড রোদের তাপে না জানি কি অবস্থা হয়েছিল আল্লাহ তাদেরকে হেফাজত করিও। আল্লাহর কাছে লাখো শুকরিয়া জানাই আপনারাও সামান্য কিছু গাড়ির ক্ষতি কাটিয়ে নিজেরা সম্পন্ন অক্ষত ভাবে বাসায় ফিরেছেন এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় ব্যাপার। যাই হোক আপনার সবচেয়ে খারাপ জার্নিটা পড়ে আমার কাছেও বেশ খারাপ লাগলো। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া আর একদিন আগে রওনা দিলে হয়ত এই জ্যামে পড়তাম না। আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া যে আমরা সব শেষে সুস্থ মত বাসায় ফিরতে পেরেছি। ধন্যবাদ আপনাকে পুরো পোস্টটি পরে মন্তব্য করার জন্য।
নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ফাকি দিয়ে এভাবে চলে গেলেন!!
তবে এমন বাজে জার্নি করার অভিজ্ঞতা শুনতেই তো গা শিউরে উঠছে। আর সব চাইতে বড় কথা অল্পের ওপর দিয়ে সবই বেঁচে গেছেন। বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটে নি। ঈদের আগে ওর পরে আমাদের দেশের সড়ক গুলোতে বের হওয়া মানে পাপের মাশুল গোনা যেন। পদে পদে যেন দুর্ভোগ আর দুর্ভোগ। সব কিছুর পরেও যে সুস্থ ভাবে পৌছতে পেরেছেন এটাই বড় কথা।
আগে থেকেই জানতাম যে অনেক জ্যাম হবে সেজন্যই আপনাকে আর নিয়ে আসিনি। শুধু শুধু এই কষ্ট করে কি দরকার আপনার আসার।