গল্প -" একটি দুঃখী মেয়ের গল্প শেষ পর্ব"
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি গল্প নিয়ে। আজকের গল্পটিও একজন মেয়ের জীবনের সত্যিকারের কাহিনী। মানুষের জীবনের সত্যিকারের কাহিনী গল্প আকারে লিখতে আমার কাছে বেশি ভালো লাগে। কারণ এটা একেবারে বাস্তবসম্মত হয়। বানিয়ে গল্প লিখলে তো সেগুলো বাস্তবসম্মত হয় না। যাইহোক আজকের গল্পটি আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
একটি দুঃখী মেয়ের গল্প
বেদানা এখন মানুষের বাসায় কাজ করে। মানুষের বাসায় কাজ করে টুকটাক টাকা যা পায় তা সে জমিয়ে গ্রামে একটি জায়গার লিজ নেয়। তাতে ধান চাষ করে। আরও কিছুদিন কাজ করে কিছু টাকা পয়সা জমিয়ে গ্রামে চলে যাবে সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু ৬-৭ মাস পর হঠাৎ একদিন কাজে আসার সময় বেদানার হাসবেন্ড তার রাস্তা আটকায়। তার হাজবেন্ড জানায় যে তার বউকে ছেড়ে দিয়েছে। সে বেদানাকে আবার নিতে চায়। তার ভুল হয়েছে। সে বেদনার কাছে ক্ষমা চায়। বেদানা তাকে অনেক বোঝায় এখন আর তার সঙ্গে সংসার করা সম্ভব নয়। যেহেতু সে একবার বিয়ে করেই ফেলেছে। যদি বিয়ে না করতো তাহলে না হয় চিন্তা করা যেত।
বেদানা এ কথা তার পরিবারের কাউকেই জানায় না। প্রতিদিন বেদনার হাসবেন্ড রাস্তায় বেদানাকে আটকায় এবং বিভিন্নভাবে রাজি করানোর চেষ্টা করে। বেদানা যখন কিছুতেই রাজি হয় না তখন তাকে বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখায়। তাকে উঠিয়ে নিয়ে যাবে অথবা যদি একেবারে রাজি না হয় তাহলে তার মুখে এসিড দিয়ে দিবে। বেদানা তার না হলে অন্য কারো হতে পারবে না। বেদানা প্রতিদিন ভয়ে ভয়ে কাজে আসে। তারপরও সে তার বোনকে কিছু জানায় না। যদি বোন তাকে দোষারোপ করে। শেষে বেদানা সিদ্ধান্ত নেয় সে আর ঢাকায় থাকবে না। বাড়ি চলে যাবে। তার বোনকে বোঝায় যে তার শরীর অসুস্থ। সে কাজ করতে পারছে না। তার বোন রাজি হয় না, বলে যে তাহলে ডাক্তারের কাছে নেই। কিন্তু বেদানা কিছুতেই ডাক্তারের কাছে যেতে রাজি হয় না।
অনেক বুঝিয়ে বোনকে রাজি করে গ্রামে চলে যাবে বেদানা। বেদানা যে বাসায় কাজ করে সে বাসার মালিককে বেদানা সবকিছু জানায়। বেদনার মালিক তাকে বোঝায় সে যেনো তার বোনকে সবকিছু খুলে বলে। যদি বেদানা চলে যাওয়ার পর তার হাজবেন্ড তার নামে উল্টাপাল্টা কিছু বলে। বেদানা তার কথা বুঝতে পেরে রাজি হয় বাসায় গিয়ে তার বোনকে সবকিছু খুলে বলে। তখন তার বোনও ভয় পেয়ে বেদনাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। বেদনা এখন গ্রামের বাড়িতে চলে গিয়েছে। তারপরে হয়তো স্বামীর কাছ থেকে মুক্তি পেয়েছে।
পরবর্তীতে আর কি হয়েছিল তা আমার জানা নেই। বেদানার জীবনটা আসলেই দুঃখে ভরা। অল্প বয়সে মেয়েকে হারিয়ে স্বামীকে হারাতে হয়েছে। তাই সে জীবনের প্রতি অনেকটা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। এমন অনেকের জীবনেই হয়। তারপরও সবকিছু ভুলে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হয়। আশা করি বেদনাও সবকিছু ভুলে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে।
এই ছিল আমার আজকের গল্প। আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে। সময় নিয়ে আমার পোস্টটি দেখার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।
ধন্যবাদ
@tania
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
একটি দুঃখী মেয়ের গল্পের শেষ পর্ব টা পড়ে আমার কাছে ভালো লেগেছে। এই গল্পের আগের পর্বগুলো ও আমার পড়া হয়েছিল। আর শেষ পর্বের অপেক্ষায় ছিলাম আমি । আজকে শেষ পর্ব টা শেয়ার করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো। বেদনা শেষ পর্যন্ত তার বোনকে ওই কথাগুলো শেয়ার করেছিল। এবং তার বোন ও ভয় পেয়ে তাকে গ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছিল জেনে ভালো লেগেছে।
আমার গল্পটি পড়ে আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।
বেদানার যে পরিমাণ নিজের মতের উপর আস্থা রয়েছে, এমন শক্ত আস্থা অনেক শিক্ষিত মেয়েদেরও নেই। বেদানার প্রতি সম্মান বেড়ে গেলো এমন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হওয়ার কারণে। ভালো করেছে সে তার প্রাক্তন বরের কাছে ভয় ভীতি দেখানোর পরেও ফিরে না গিয়ে নিনের মতোন জীবন কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নেগেটিভ বা টক্সিক মানুষ নিয়ে থাকার চেয়ে একা একা থাকাই ভালো এবং ঢের শান্তির
ঠিক বলেছেন আপু এরকম আস্থা নিজের উপর রাখা খুবই জরুরী। এজন্যই তো বেদানার মত মেয়েরা আজও ঘুরে দাঁড়াতে পারে। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।