দীর্ঘ জার্নি শেষে বাসায় পৌছালাম
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আলহামদুলিল্লাহ ঈদ শেষে সুস্থ মতো বাসায় ফিরতে পেরেছি। কিন্তু গতকালকের জার্নিটা খুব বেশি আরামের ছিল না। আমার লাইফের সবথেকে খারাপ জার্নি বলতে গেলে এটি। এমনিতেই আমার শ্বশুরবাড়ি অনেক দূরে হওয়ার কারণে অনেক সময় লাগে যেতে। সেজন্য বছরে দুই তিন বারের বেশি যাওয়া হয়না। বিশেষ করে দুই ঈদে অবশ্যই যাওয়া হয়। ঈদের সময় যাওয়ার কারনে রাস্তা ঘাটে প্রচুর জ্যাম থাকে। এজন্য সময় অনেক বেশি লাগে। আমরা সব সময় ছুটি শুরু হওয়ার একদিন আগে এবং ছুটি শুরু হওয়ার একদিন পরে রওনা দেওয়ার চেষ্টা করি। এর ফলে রাস্তার জ্যাম কিছুটা এভয়েড করা সম্ভব হয়।
এই ছবিটি বাড়ি থেকে রংপুর যাওয়ার সময় গাড়িতে বসে তুলেছিলাম।
আমাদের বাস ছিল রাত দশটায়। সেজন্য আমরা বিকাল পাঁচটার দিকে শ্বশুরবাড়ি থেকে রংপুরের উদ্দেশ্যে চলে আসি আমার মামাশ্বশুরের বাসায়। কারণ একবারে জার্নি করে বাসে উঠলে বাচ্চাদের খুব কষ্ট হয়ে যায়। এজন্য মামাশ্বশুরের বাসায় এসে একটু রেস্ট নিয়ে তারপর বাসে উঠি। এখানে আসার পর বিকালের নাস্তা এবং রাতের খাওয়া দাওয়া করে আমরা নয়টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে যাই। বাস ওয়ালার সাথে কথা বলে সবকিছুই ঠিক মতো ছিল। এজন্য আমরা বাসস্ট্যান্ডে না গিয়ে একটু সামনে এগিয়ে দাঁড়িয়েছি। যাতে বাসস্ট্যান্ডের ভিড়ের মধ্যে না পরতে হয়। কিন্তু কপালে যদি ভোগান্তি থাকে তাহলে কিছু করার থাকে না। আমরা যখনই অটো থেকে নেমে দাঁড়িয়েছি তখন বাস ওয়ালাকে ফোন দেয়ার পর সে বলল যে গাড়ি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সময় লাগবে। ভাবলাম বাচ্চাদের নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে না থেকে বাস কাউন্টারে গিয়েই বসি। আবার ওখান থেকে বাস কাউন্টারে যাই। আমরা যে বাসের টিকিট কেটেছি সেই বাসের কাউন্টার বাস স্ট্যান্ডের একদম শেষ মাথায়। এজন্য হেঁটে যেতে অনেক কষ্ট হয়। তারপরে ব্যাগ তো থাকেই সাথে।
কাউন্টারে বসার পর শুরু হয় আমাদের অপেক্ষার পালা। কাউন্টার থেকে বারবার আমাদেরকে জানানো হচ্ছিল যে ১০ মিনিট লাগবে, ১৫ মিনিট, ৩০ মিনিট এভাবে বলছিল। আমরা প্রতিবারই ভাবছিলাম যে এতক্ষণ যেহেতু অপেক্ষা করেছি আর একটু অপেক্ষা করে চলেই যাই। তা না হলে আবার আগামীকাল বাসের টিকিট পাওয়ার ঝামেলা। তাছাড়া আমরা সহজ ডট কম এর মাধ্যমে টিকিট কিনেছিলাম। তিনটি টিকিটের দাম পড়েছিল প্রায় ১০ হাজার টাকা। কাউন্টার থেকে সহজের টিকিট ফেরত নিতে চাচ্ছিল না। একে তো টিকিট ফেরত নিবে না তার উপরে আবার আগামীকাল টিকিটের ঝামেলা। সব মিলিয়ে আমরা অপেক্ষা করতেই থাকলাম। বাচ্চারাও ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পরেছিলো। এভাবে অপেক্ষা করতে করতে প্রায় রাত ১টা বেজে গেল। রাত ১.৩০ মিনিটে বাস চললো। বেশ কয়েকজন টিকিট ফেরত নিয়ে বাসায় চলে গিয়েছিল। খারাপের মধ্যে ভালো যে বিষয়টি তা হল আমার জীবনের এই প্রথম রংপুর থেকে ঢাকা আসতে মাত্র সাড়ে পাঁচ ঘন্টা লেগেছে। আমরা অনেক রাতে রওনা দেয়ার কারণে রাস্তা একদমই ফাঁকা ছিল। এজন্য খুবই অল্প সময়ে আসতে পেরেছিলাম। আমার হাসবেন্ড আবার বাসায় এসে অফিসে যাবে জন্য একটু টেনশনে ছিলাম সময় মতো পৌঁছাতে পারবো কিনা। কিন্তু আমরা দেড়টায় গাড়িতে উঠলে সকাল সাতটায় আমাদেরকে বাসস্ট্যান্ড নামিয়ে দেয়। একদিক দিয়ে সময় নষ্ট হলেও অন্য দিক দিয়ে সময় ঠিকই বেঁচে গিয়েছে। অবশেষে অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আমরা বাসায় পৌঁছতে পেরেছি তাই আলহামদুলিল্লাহ।
সময় নিয়ে আমার পোস্টটি দেখার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।
ধন্যবাদ
@tania
Photographer | @tania |
---|---|
Phone | i phone11 |
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
আপু কোন কিছুর জন্য অপেক্ষা করতে হলে এটা যে কত বিরক্তিকর, তা শুধু যারা অপেক্ষা করে তারাই শুধু বুঝতে পারবে। আর আপনি তো আপনার বাচ্চাদেরকে নিয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। যাক অবশেষে সব ভালই হয়েছে জেনে আমার কাছেও খুব ভালো লাগলো। রাস্তাঘাট একদম ফাকা থাকার কারণে অল্প সময়ে ঢাকা গিয়ে পৌঁছেছেন। এতে করে আপনার বরের টেনশন অনেকটা কমে গিয়েছে। দীর্ঘ জার্নি শেষে বাসায় পৌঁছানো নিয়ে আপনার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
জ্বী ভাইয়া প্রথমে অনেক সময় অপেক্ষা করলেও পরে খুব দ্রুত আসতে পেরেছি। ধন্যবাদ মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
ঈদ শেষে সবাই ফিরছে আপন ঠিকানায়।
কর্মব্যস্ততায় সবাই আবার ডুবে যাবে।
তবে গ্রামে এসে আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব সবার সাথে কাটানো সময়টা রয়ে যাবে স্মৃতির পাতায়।
বাস জার্নি আমার কাছেও খুব বিরক্ত লাগে।
বাসে ওঠা থেকে শুরু করে নামার আগ পর্যন্ত কতবার বমি হয় হিসেবে রাখতে পারি না।।
রংপুর থেকে ঢাকা জার্নিটা অনেক বড়।
যাহোক ঠিকঠাকমতো বাসায় পৌঁছে গেছেন আলহামদুলিল্লাহ।।।
ঈদের সময় যাওয়া আসায় খুব সমস্যা হয়। কারণ সবাই নিজ নিজ বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করে। যাই হোক ভাইয়া ঠিকমতো পৌঁছাতে পেরেছি তাই আলহামদুলিল্লাহ। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনারা দীর্ঘ জার্নি শেষে সুস্থ ভাবে বাসায় পৌঁছাতে পেরেছেন, এটা জেনে অনেক ভালো লেগেছে। যে রাস্তা ফাঁকা ছিল তাই আপনারা খুব তাড়াতাড়ি পৌঁছাতে পেরেছেন। আসলে রাস্তায় জ্যাম থাকলে আমার কাছে একেবারে ভালো লাগেনা। ফাঁকা থাকলেই সব থেকে বেশি ভালো লাগে। যাইহোক সম্পূর্ণটা বেশ ভালোভাবেই পড়লাম।
দেরিতে রওনা দেয়ার কারণে রাস্তা একদমই ফাঁকা ছিল। এজন্য খুব দ্রুত পৌঁছাতে পেরেছিলাম। ধন্যবাদ আপু আপনার মন্তব্যের জন্য।
আমিতো আপু আগেই বলেছিলাম সব খারাপের পেছনে ভালো কিছু নিহিত আছে।এবার দেখলেন তো মিললো?? যাক সুন্দর ভাবে পৌঁছে গেলেন জেনে বেশ ভালোই লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।
জি আপু আপনার কথা মিলে গিয়েছিল। ধন্যবাদ আপনার গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য
এর আগেও জেনেছি আপনি বাসায় ফেরার আগে আপনার মামাশ্বশুরের বাসায় উঠে রেস্ট করে খাওয়া দাওয়া করে তারপর গাড়িতে ওঠেন। প্রথমের দিকে আমারও বেশ খারাপ লাগছিল কারণ বাচ্চাদের নিয়ে এত রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করা আসলে কষ্টকর। যাই হোক খুব কম সময়ে পৌঁছে গিয়েছেন জেনে খুব ভালো লাগলো।
মামাশ্বশুরের বাসায় যাওয়া আসার সময় উঠলে জার্নি কিছুটা আরামের হয়। এজন্যই মাঝখানে রেস্ট নিয়ে নেই। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
সুস্থভাবে জার্নি শেষে বাসায় পৌঁছাতে পারলেই হয়। আপনারাও সুস্থভাবে বাসায় পৌঁছাতে পেরেছেন এটা জেনেই আমার কাছে ভালো লেগেছে। তিনটি টিকেটের দাম তো দেখছি অনেক বেশি ছিল ১০ হাজার টাকা। যদিও এখন ঈদ উপলক্ষে জ্যাম থাকার কথা, কিন্তু জ্যাম না থাকার কারণে আপনারা অনেক সহজেই এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাসায় পৌঁছে যেতে পেরেছিলেন।
জি ভাইয়া ঈদের সময় টিকিটের দাম প্রায় ডাবল হয়ে যায়। এজন্যই এত টাকা লাগে। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
ইস এতো ভোগান্তিতে সত্যি দুঃখের বিষয় কারণ দশটার বাস যদি ১ঃ৩০ মিনিটে ছাড়ে তাহলে কতটা কষ্ট হয়েছে বলার মতো না। বাচ্চারা থাকলে তো আরো বেশি খারাপ অবস্থা। মাশাআল্লাহ আপনার ধৈর্য শক্তি আছে বলা যায় আমার কিন্তু সম্ভব হতো না। যাক অবশেষে আপনি বাসায় পৌছে গেছেন তাহলে তো ভালো। এত লং জার্নি হলে খুবই বিরক্তিকর লাগে। আপনাদের জন্য শুভকামনা রইল সুস্থ থাকেন সবাই দোয়া করি।
বাচ্চারা একেবারে অধৈর্য হয়ে গিয়েছিল। পরে শেষে তো ঘুমিয়ে গিয়েছিল । ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
এই রকমের ভোগান্তি আমিও পেয়েছি আপু। কি যে অশান্তি লাগে!! বলে বোঝানো যাবে না। আর সাথে ব্যাগ বাচ্চা থাকলে তো জীবন শেষ আরো। কিন্তু এত অল্প সময়ে ঢাকা থেকে রংপুর!! আমি রীতিমত অবাক হয়ে গেলাম গো আপু। বাস তো ঝড়ের গতিতে চলে গেছে। শুরুটা খারাপ হলেও শেষ টা কিন্তু বেশ ভালো ছিল আপু।
বাচ্চারা খুবই বিরক্ত হয়ে গিয়েছিল পরে তো না পেরে ঘুমিয়েই গিয়েছিল দুইজন। যাই হোক ভাইয়া ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।