গল্প "সম্পর্ক"-শেষ পর্ব
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে "সম্পর্ক" গল্পটির শেষ পর্ব আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। এতদিন পর্যন্ত তিতলি এবং তার ভাইয়ের সম্পর্ক বেশ ভালোই যাচ্ছিলো। আজ দেখা যাক তাদের সম্পর্কের মধ্যে কি হয়েছিলো। আশা করি আজকের পর্ব আপনাদের ভালো লাগবে।
সম্পর্ক
তিতলির ভাই বেশ বড় অংকের টাকা লোন নিয়েছিলো। তাই মাঝেমধ্যে সে ভাবে যে কোন একটা ফ্লাট বিক্রি করে দিয়ে লোনের টাকা শোধ করবে। তাহলে আর ঝামেলা থাকবে না।
তিতলির ভাইয়ের একটি ফ্লাট বিক্রি করে দেয়ার কথা শুনে তার ভাইকে বলে সে যেই ফ্ল্যাটে থাকে সেটি যেন তার কাছে বিক্রি করে দেয় তাহলে তার আর এই বাড়িতে থাকতে খারাপ লাগবে না। নিজের ফ্ল্যাটেই থাকবে।
তিতলির ভাইও তাতে রাজি হয়ে যায়। বাইরের লোকের কাছে ফ্ল্যাট বিক্রি করার থেকে নিজের বোনের কাছে বিক্রি করলেই সুবিধা। তাছাড়া বোন এই বিল্ডিং দেখেশুনে রাখতে পারবে। তার আর চিন্তা করতে হবে না।তিতলির ভাইয়ের কাছে ফ্লাটের দাম জিজ্ঞাসা করলে তিতলির ভাই বলে যে তুই যতটুকুই দিতে পারবি ততটুকুই দে। আমার কোন চাহিদা নেই। তোর জন্যই তো এই বিল্ডিং আজও টিকে আছে। শুধু একটা ফ্ল্যাট বিক্রি করলে কেমন হয় সেজন্য দোতলার পুরোটাই কিনে নিতে চায় তিতলি। একটা মোটামুটি দাম ধরে তার ভাইকে কিছু টাকা এডভান্স করে এবং বাকি টাকা তার ভাই দেশে আসলে দিয়ে ফ্ল্যাটটি নিজের করে নিতে চায়।
সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিলো। এভাবেই বেশ কিছুদিন চলে যায়। হঠাৎ তিতলির ভাই একদিন তিতলিকে জানায় যে সে এই বাড়ি বিক্রি করে দিবে। কারণ সে আর কখনোই দেশে আসবে না। শুধু শুধু এই বাড়ি রেখে লাভ কি। আর তিতলিকে টাকা ফেরত দিয়ে দেবে। একটা ফ্লাট অন্য কাউকে বিক্রি করলে এই বাড়িটি বিক্রি করতে পারবেনা। একথা শুনে তিতলি খুবই অবাক হয়। তার কাছ থেকে টাকা এডভান্স নিয়েছে আর এখন তার ভাই এসব কি বলছে।
এখন তিতলির বোনরা সবাই বুঝতে পেরেছে যে তার ভাই হয়তো এজন্যই তাদের কাছ থেকে বাড়িটি লিখে নিয়েছিলো। যেহেতু তারা লিখে দিয়েছে এখন তাদের আর কিছু করার নেই। তাই তিতলি কোন কিছু না বলে ভাইয়ের উপর রাগ করে বাসা ছেড়ে দেয় এবং তার ভাই ও বাসা বিক্রি করে দেয়। তিতলি এখন পাশের বিল্ডিং এ তার বোনের একটি ফ্লাটে উঠেছে। সেখানে তিতলিরা এখন থাকছে। ভাইকে সরাসরি কিছু না বললেও ভাইয়ের উপর একটা রাগ তিতলির সারা জীবন রয়ে যাবে। যার জন্য এত কিছু করলাম সে এমন প্রতিদান দিলো ।
সম্পত্তি এমন জিনিস এর কাছে রক্তের সম্পর্ক ও বৃথা হয়ে যায়। বেশিরভাগ রক্তের সম্পর্কে এই সম্পত্তির জন্য নষ্ট হতে দেখা যায়। আপনাদের কি মনে হয় তিতলির ভাইয়ের সঙ্গে এই ফ্ল্যাট নিয়ে এত ঝামেলা হওয়ার পরও তিতলির বোনের ফ্ল্যাটে ওঠা কি ঠিক হয়েছে? আমার তো মনে হয় তিতলির অন্য কোথাও বাসা ভাড়া নেওয়া উচিত ছিল। বোনের ফ্ল্যাটে ভাড়া নেওয়া তার জন্য ঠিক হয়নি।
যাই হোক আজ এ পর্যন্তই। সময় নিয়ে আমার গল্পটি পড়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।
ধন্যবাদ
@tania
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
আসলেই আপু অর্থ সম্পদের জন্য রক্তের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায় এবং এমন ঘটনা অনেক পরিবারেই এখন ঘটছে। তিতলির ভাই বাড়ি বিক্রি করে খুবই বাজে একটা কাজ করেছে। তবে তিতলির মোটেও উচিত হয়নি তার বোনের ফ্ল্যাটে উঠা। অন্য কোনো ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়া উচিত ছিলো তিতলির। যাইহোক গল্পটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো আপু। আশা করি নতুন কোনো গল্প নিয়ে হাজির হবেন আমাদের মাঝে।
তিতলি মনে মনে তার ভাইয়ের আচরণে খুবই কষ্ট পেয়েছে। কিন্তু তোদের সম্পর্ক কিন্তু এখনো নষ্ট হয়নি। বেশ ভালই রয়েছে। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আসলে মানুষ নিজের স্বার্থটাকে সবচেয়ে বড় করে দেখে। কখনো রক্তের সম্পর্কের কথা ও চিন্তা করে না। আর সম্পত্তি এবং টাকা পয়সা এমন জিনিস যা রক্তের সম্পর্ক ও একেবারে ছিন্ন করে দেয়। তবে আমারও মনে হয় তিতলি যদি অন্য কারো ফ্লাট ভাড়া নিত তাহলে ভালো হতো। তার একেবারে উচিত হয়নি তার নিজের বোনের বাসা ভাড়া নেওয়া।
ঠিক বলেছেন আপু অর্থ সম্পত্তির কাছে রক্তের সম্পর্ক ও ছোট হয়ে যায়। যাই হোক ধন্যবাদ গল্পটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য।
আসলে তিতলি এত কিছু করার পরেও এরকম একটা ফল পাবে সে কখনো কল্পনা করেনি। তার ভাই তার সাথে অনেক বড় অন্যায় করেছে। তার ভাইয়ের উচিত ছিল তার বোনের কাছে ফ্ল্যাট বিক্রি করে দেওয়া। তার ভাই তার কাছ থেকে এডভান্স টাকা নিয়ে পরবর্তীতে বেইমানি করেছে। আসলেই সম্পত্তির কারণে কাছের সম্পর্ক গুলো ভেঙ্গে যায়। আর এরকম বিষয় এখন বেশিরভাগ ফ্যামিলিতে ঘটছে বলে আমার মনে হয়।
পৃথিবীতে অনেক কিছুই তো উচিত থাকে কিন্তু কয়জনইবা সেই কাজটি করে। যাই হোক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আপনার গল্পের প্রথম পর্বগুলো আমি পড়ি নাই। তবে এই পর্ব ফড়ে বুঝতে পারলাম সম্পত্তির কাছে রক্তের কোন দাম নেই।তিতলির ভাইয়ের কাছ থেকে ফ্লাট কিনার পর ও সে তাকে দিতে চাইছে না পুরো বাড়ি বিক্রি করবে। আসলে তিতলির এত কিছু করার পরও তারা সেই কথা মনে রাখল না। সম্পত্তির কারণে আপন মানুষগুলো অনেক কষ্ট দেয়। সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য সামান্য কিছুই যথেষ্ট। তবে গল্পটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো তাই ধন্যবাদ আপনাকে।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া রক্তের সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য এই সম্পত্তি দায়ী। যাই যাই হোক ধন্যবাদ গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য।