গল্প-নীতির জীবন পর্ব ১
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি গল্প নিয়ে। আজকের গল্পটিও একজনের বাস্তব জীবন থেকে নেয়া। আসলে বানিয়ে গল্প লেখা থেকে বাস্তব জীবনের গল্প গুলো লিখতে আমার কাছে বেশি ভালো লাগে। কারণ বানানো গল্পতে অনেক কিছু অবাস্তব থাকে। কিন্তু সত্যিকারের জীবন কাহিনী থেকে অনেক কিছু শেখা যায়। এজন্য সত্যি কারের জীবন কাহিনী থেকেই গল্প লিখতে বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করি। আজকের গল্পটিও আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
নীতির জীবন
নীতিরা তিন ভাইবোন। দুই বোন এক ভাই। ভাই সবার বড় এবং নীতি সবার ছোট। পরিবারের খুব আদরের নীতি। নীতি যখন যা বলে বাবা মা তাই শুনে।পরিবারের সবার আদর পেয়ে পেয়ে প্রচণ্ড রকম জেদী হয়েছে।সে যে কোন উপায়ে তার কথা মানিয়ে নেয়। নীতির বড় বোন এবং ভাইয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তাদের দুজনে লাভ ম্যারেজ ছিল। প্রথমে লাভ এবং পরে এরেঞ্জ ম্যারেজ। নীতির বড় বোনের বিয়েতে প্রথমে পরিবারের অমত ছিলো। কিন্তু পরে তার বোন ঠিকই রাজি করিয়েছে পরিবারকে।
নীতি ইন্টার পাশ করার পর তার ভাই তাকে একটি মোবাইল কিনে দেয়। কিছুদিন পর জানতে পারে তার মোবাইলে বিভিন্ন নাম্বার থেকে ফোন আসে। তাকে ডিস্টার্ব করে। সেজন্য নীতির ভাই নীতিকে নম্বর চেঞ্জ করে দেয়। যাতে তার বোনকে কেউ বিরক্ত করতে না পারে।
এভাবে নীতি ডিগ্রী কমপ্লিট করে। তাই নীতির পরিবার থেকে চাচ্ছিল তাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য। নীতির বাবা প্রাইমারি স্কুলের টিচার ছিল। কয়েক বছর হল চাকরি থেকে অবসর নিয়েছে। নীতির বাবা গ্রামের খুব গণ্যমান্য ব্যক্তি। গ্রামের সবাই তাকে খুব শ্রদ্ধা করে এবং এক নামে চেনে। নীতির ভাই খুব ভালো চাকরি করে শহরে থাকে। বোনেরও মোটামুটি ভালো বিয়ে হয়েছে। গ্রামের এক পরিচিত লোক একটি ছেলের প্রস্তাব নিয়ে আসে। ছেলের ফ্যামিলি সেখানকার প্রভাবশালী। ছেলে ছোটখাট একটা চাকরি করে। কিন্তু ছেলেদের আর্থিক অবস্থা খুব ভালো। বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে। ছেলের নানী এমপি ছিলেন।
তারা নীতিকে দেখতে এসে বেশ পছন্দ করে। ছেলেরও নীতিকে খুব পছন্দ হয়। তারপর তারা দিনক্ষণ দেখে কাবিনের ডেট ঠিক করে। নীতির ভাবীর পরীক্ষার জন্য বাপের বাড়ি থাকার কারণে বিয়ের ডেট কিছুটা পিছিয়ে যায়। তার ভাবি আসার পরে কাবিনের ডেট ঠিক হয়। প্রথমে কাবিন করে রাখবে। পরে ধুমধাম অনুষ্ঠানে করে উঠিয়ে দেওয়া হবে। নীতি প্রথমে বিয়েতে একটু অমত করলেও পরবর্তীতে রাজি হয়েছে।
বিয়ের আগের দিন সকাল বেলায় নীতি পার্লারে গিয়ে তার প্রয়োজনীয় কাজ করে এসেছে। গ্রামের পার্লার বাজারের উপরে ছিল। বাজারে গিয়ে তার হবু শ্বশুরের সঙ্গে দেখা হয়ে যায়। শ্বশুরও তাকে দেখে খুব খুশি। নীতিকে নিয়ে গহনার দোকানে গিয়ে আংটি পছন্দ করিয়ে নিয়েছে। এদিকে নীতিও তার ভাবিকে শহর থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে আসার জন্য বলে। সবাই খুব খুশি নীতির এত আগ্রহ দেখে। সব কেনাকাটা হয়ে গিয়েছে। খাবার-দাবারের আয়োজন আগের দিন রাতে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে। বাড়ি সব মহিলারা পিঠা বানাতে লেগে পড়েছে। আর ছেলেরা সব মসজিদে গিয়েছে নামাজ পড়ার জন্য। এমন সময় কারেন্ট চলে যায়। আর হুট করে নীতিকেও পাওয়া যায় না।
নীতির কি হলো তা জানতে হলে অবশ্যই পরবর্তী পর্ব পড়তে হবে। সময় নিয়ে আমার গল্পটি পড়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে এই গল্পের পরের অংশ নিয়ে।
ধন্যবাদ
@tania
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
পরিবারের ছোট ছেলে এবং মেয়েরা এমনিতেই আদর একটু বেশি পায়। তাই অনেক সময় জেদি হয়ে যায়। নীতির পরিবার তো বেশ ভালো সবদিক দিয়ে। একেবারে সুখী পরিবার বলা যায়। নীতির বিয়েও ঠিক হয় প্রভাবশালী পরিবারে। তবে কারেন্ট যাওয়ার পর যেহেতু নীতিকে পাওয়া যাচ্ছে না,তার মানে নীতি পালিয়েছে। কিন্তু নীতি তাহলে এই বিয়েতে কেনো রাজি হলো। সে তো বাসায় আগেই বলতে পারতো সবকিছু। আবার নীতির ভাইবোনও প্রেম করে, পরিবারের মাধ্যমেই বিয়ে করেছে। নীতির তো কোনো দিক দিয়েই সমস্যা হওয়ার কথা না। তবে আমার মনে হচ্ছে নীতির বয়ফ্রেন্ডের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ কিংবা নেশাখোর। তাই নীতি বাসায় বলেনি বয়ফ্রেন্ডের কথা। যাইহোক পরবর্তী পর্বে বিস্তারিত জানতে পারবো আশা করি।
সুখী পরিবার কি আর সব সময় সুখী থাকে। মাঝেমধ্যে সুখী পরিবারেও দুঃখ আসে। ধন্যবাদ ভাইয়া গল্পটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
নীতির গল্পটি ভীষন ভালো লাগলো।আদরের মেয়ে নীতি সবার আদর পেয়ে পেয়ে অনেক জেদি হয়ে গেছে। নীতেকে ছেলে পক্ষ দেখতে এসেই পছন্দ করেছে জেনে ভালো লাগলো।তবে বিয়ের দিন কারেন্ট চলে যাওয়াতে নীতিকে খুজে কেন পাওয়া যাচ্ছে না তা পরবর্তী পর্বে জানার অপেক্ষায় রইলাম।
জি আপু নীতিকে কেন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না তা জানতে হলে পরবর্তী পর্বের সাথেই থাকবেন। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আপনার এই গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। খুব সুন্দর ভাবে আপনি এই গল্পটি শেয়ার করেছেন৷ নীতি পরিবারের আদর পেয়ে অনেকটাই জেদি হয়ে গিয়েছে৷ সে তার পরিবার থেকে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা পেয়েছে৷ যখনই কারেন্ট যাওয়ার পরে আর তাকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না তখনই বুঝা যাচ্ছে যে এসে আর বাড়িতে নাই৷ সে বিয়ে করার ভয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছে৷ তবে এসে পালিয়ে না গিয়ে তার পরিবারকে সবকিছু বলে দিতে পারতো৷ কারণ তার বড় ভাইবোনরাও প্রেম করে বিয়ে করেছে৷ হয়তো তার বয়ফ্রেন্ডের কোন সমস্যা ছিল সেই কারণে সে তার পরিবারকে তার কথা বলতে পারেনি৷
পরবর্তী পর্ব দেখার আশায় রইলাম৷
ঠিক বলেছেন ভাইয়া নীতি তার পরিবারকে সব কিছু বলে দিলে হয়তো পরিবার মেনে নিত। যাই হোক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
নীতির জীবনের গল্পের প্রথম পর্ব টা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। তবে শেষে খুবই গোল মেলে লেগেছে। নীতি অনেক বেশি আদরের ছিল যার কারণে সে অনেক জেদি ছিল। তবে সে তার পড়ালেখা ভালোভাবেই কমপ্লিট করেছে, আর ভালো একটা ফ্যামিলিতে তার বিয়ের সম্বন্ধ হয়েছে। সবকিছুই দেখছি ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু কারেন্ট চলে যাওয়ার পর নীতি কোথায় গিয়েছিল? আর তাকে কেন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না? এটাই বুঝতে পারতেছি না? যাইহোক আশা করছি এগুলো পরবর্তী পর্বে স্পষ্টভাবে বুঝতে পারব।
ভাইয়া নীতিকে কেন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না তা জানতে হলে তো পরবর্তী পর্ব পড়তে হবে। আশা করি পরবর্তী পর্ব পড়লে এর উত্তর পেয়ে যাবেন। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
নীতির সাথে তো দেখছিলাম সবকিছু ভালোই হচ্ছিল। সে নিজেই বিয়েতে রাজি হয়েছিল প্রথমে অমত করলেও। আর বিয়ের সবকিছুই ঠিক হয়ে গিয়েছিল দেখছি। আর সে যখন পার্লারে গিয়েছিল তখন বাজারে সে নিজের হবু শশুরকেও দেখেছিল। এবং তিনি নীতি কে সাথে করে নিয়ে তার পছন্দমত আংটি কিনে দিয়েছিল। আর তার ভাবিও তার জন্য প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই এনেছিল শহর থেকে। কিন্তু শেষ পর্যায়ে কারেন্ট চলে যাওয়ার পর নীতিকে হুট করে পাওয়া যাচ্ছে না কেন এটাই মাথায় আসতেছে না?? এই বিষয়টা বোঝার অপেক্ষায় থাকলাম এখন।
সবকিছু তো ভালোই চলছিল। নীতিকে কেন পাওয়া যাচ্ছিল না তা জানতে হলে পরের পর্ব পড়তে হবে। ধন্যবাদ আমার গল্পটি পড়ে গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য।
ঠিকই বলেছেন আপু বাস্তব জীবনের গল্পগুলো থেকে অনেক কিছু শেখার আছে । আপনার গল্পটা পড়ে ভালো লাগছে । তিন ভাই বোনের ছোট নীতি আদর পেয়ে পেয়ে নস্ট হয়ে গিয়েছে । বিয়ের দিন তারিখ সব ঠিক হয়ে গিয়েছে এবং রান্নাবান্নার আয়োজনে শেষ হয়ে গিয়েছে নীতিও অনেক খুশি অথচ শেষ পর্যন্ত তাকে আর পাওয়া যাচ্ছে না । ঘটনাটা কোন দিকে মোড় নিবে কে জানে ।
এজন্যই আমার বাস্তব জীবনের কাহিনী নিয়ে গল্প লিখতে ভালো লাগে। বানিয়ে গল্প লিখতে খুব একটা ভালো লাগে না। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।