ক্রিয়েটিভ রাইটিংঃ আশিক তানহার বৃষ্টি ভেজা স্মৃতির গল্প।[পর্ব-৩]

in আমার বাংলা ব্লগ4 days ago
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু /আদাব

🌿আমি তানহা তানজিল তরসা। আমি বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে বলছি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @tanha001

আজ ১২ জুলাই ২০২৪ ইং:।
বাংলায় ২৮ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।

হ্যালো বন্ধুরা........

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি।আজ আমি আপনাদের মাঝে ক্রিয়েটিভ রাইটিং এর তৃতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। এরআগে ও আমি আরো দুটি পর্ব আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি। আমি ছোটকাল থেকে লিখালিখি করতে এবং পড়তে অনেক ভালোবাসি।হঠাৎ করে আমাদের এখানে সকাল থেকে অনেক বৃষ্টি হচ্ছে তাই ভাবলাম এই বৃষ্টির দিনে একটু লেখালেখি করি। সময়ের অভাবে এখন আর তেমন একটা লেখালেখির কাজ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। তবে মাঝেমধ্যে সময় পেলে লেখালেখির কাজে বসে যাই।আমি ঠিক জানিনা আমার লেখা ক্রিয়েটিভ রাইটিং আপনাদের কাছে কতটুকু ভালো লাগে তার পরেও আমি চেষ্টা করি ভালো করে লেখার। আশা করি আমার লেখা ক্রিয়েটিভ রাইটিং আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে।


digital-art-398342_1280.webp
Source

আশিক তানহার বৃষ্টি ভেজা স্মৃতির গল্প~[পর্ব ৩]


তানহা ও আশিকের জীবনের তৃতীয় বর্ষার দিনটি ছিল তাদের জন্য একটি বিশেষ দিন। তাদের ছোট্ট বাসায় সেদিন বৃষ্টি শুরু হয়েছিল খুব সকালে। তানহা আর আশিক বারান্দায় বসে চা আর পকোড়া খাচ্ছিল। বৃষ্টির ছন্দময় শব্দে তাদের মন আনন্দে ভরে উঠেছিল। প্রতিটি বৃষ্টির দিনে তারা নতুন করে নিজেদের ভালোবাসা অনুভব করত।সেদিন আশিক তানহাকে বলল,তানহা আজ আমাদের একটু বিশেষ কিছু করা উচিত। আমরা সারা দিন ঘরে বসে থাকতে পারি,আজ কিন্তু বাইরে বের হব। তানহা অবাক হয়ে বলল এত বৃষ্টি হচ্ছে, বাইরে তো ভিজে যাবো। আশিক মিষ্টি হেসে বলল, বৃষ্টির দিনটা আরও সুন্দর করে উপভোগ করতে চাই।তারা বের হল বাসা থেকে। আশিক তানহার হাত ধরে তাকে নিয়ে গেল একটি পুরোনো পার্কে, যেখানে ছোটবেলায় তারা প্রথম দেখা করেছিল। পার্কের সবকিছুই তখন ভিজে গিয়েছিল বৃষ্টির পানিতে , কিন্তু তানহা আর আশিকের চোখে সেটা ছিল এক স্বপ্নের রাজ্য। তারা পার্কের এক কোনায় একটি বেঞ্চে বসে বৃষ্টির শব্দ শুনছিল।

হঠাৎ আশিক বলল, তানহা জানো আজকের দিনে আমি তোমাকে একটা বিশেষ জায়গায় নিয়ে যেতে চাই। তানহা একটু অবাক হয়ে বলল, কোথায়? আশিক তার হাত ধরে বলল, এসো আমি তোমাকে দেখাচ্ছি। তারা হাঁটতে হাঁটতে পার্কের এক গভীর জায়গায় পৌঁছাল, যেখানে একটি ছোট্ট লেক ছিল। লেকের পানিতে বৃষ্টির ফোঁটা পড়ে সুর সৃষ্টি করছিল।

আশিক বলল, তানহা এই লেকটি আমাদের জীবনের প্রতীক। যেমন বৃষ্টির ফোঁটা পড়ে লেকটি আরও সুন্দর হয়ে উঠছে, তেমনি আমাদের ভালোবাসা প্রতিদিন আরও গভীর হয়ে উঠছে। তানহার চোখে জল এসে গিয়েছিল। আশিক তখন পকেট থেকে একটি ছোট্ট কাগজের নৌকা বের করে তানহার হাতে দিল। তানহা অবাক হয়ে বলল, "এটা কি?" ইমন মিষ্টি হেসে বলল, এই নৌকাটি আমাদের ভালোবাসার প্রতীক। প্রতিদিন আমরা এই নৌকাটি তৈরি করব, এবং প্রতিদিন এটি আমাদের ভালোবাসাকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে।

তানহা নৌকাটি নিয়ে লেকের পানিতে ছেড়ে দিল। নৌকাটি ভেসে চলল, আর তানহা আর আশিক একসাথে সেই দৃশ্য দেখছিল। তাদের হৃদয়ে তখন ছিল শুধুই ভালোবাসা আর আনন্দ। আশিক বলল তানহা আমাদের জীবনে যতই ঝড়-ঝাপটা আসুক যতই বৃষ্টি হোক আমরা সবসময় একসাথে থাকব। এই নৌকাটি যেমন পানিতে ভেসে চলছে, তেমনি আমাদের ভালোবাসার নৌকা সবসময় নিরাপদে ভেসে চলবে।তানহা আশিকের কথা শুনে হেসে উঠল। সে বলল, আশিক তুমি সবসময় আমাকে নতুন করে ভালোবাসার পাঠ শিখিয়ে দাও। তোমার জন্যই আমার জীবন এত সুন্দর হয়ে উঠেছে।আশিক তখন তানহার হাত ধরে বলল, "তানহা তুমি আমার জীবনের উজ্জ্বল আলো। তোমার জন্যই আমি প্রতিদিন নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখি।"

সেদিন তানহা আর আশিক তাদের জীবনের এক বিশেষ দিন কাটিয়েছিল। তারা জানতো জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই মূল্যবান, আর প্রতিটি বৃষ্টির দিনেই নতুন কিছু পাওয়ার অপেক্ষা করে। তাদের জীবনের প্রতিটি বৃষ্টির দিনে তাদের ভালোবাসা আরও গভীর আর মধুর হয়ে উঠেছিল। তারা জানতো যতই বৃষ্টি আসুক, যতই ঝড় বইতে থাকুক, তাদের ভালোবাসার নৌকা সবসময় নিরাপদে তীরে পৌঁছাবে।

এইভাবে তানহা আর আশিকের তাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করে কাটিয়ে যাচ্ছিল। তাদের জীবনের প্রতিটি বৃষ্টির দিন ছিল একটি নতুন গল্প, একটি নতুন অভিজ্ঞতা। তারা জানতো জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই মূল্যবান, আর প্রতিটি বৃষ্টির দিনেই নতুন কিছু পাওয়ার অপেক্ষা করে। বৃষ্টি ছিল তাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ, যা তাদের ভালোবাসাকে সবসময় তাজা আর জীবন্ত রেখেছিল।


মুলভাব
তানহা ও আশিকের জীবনের তৃতীয় বর্ষার দিনটি ছিল তাদের জন্য একটি অনন্য অভিজ্ঞতা। বৃষ্টির মধ্যে পার্কে গিয়ে তাদের ভালোবাসার প্রতীক কাগজের নৌকা ভাসানো সত্যিই এক রোমাঞ্চকর মুহূর্ত ছিল। আশিকের ভালোবাসা ও যত্ন, তানহার প্রতিদিনের হাসি ও আনন্দ—সবকিছু মিলিয়ে তাদের জীবন যেন এক রূপকথার গল্পের মতো। তাদের প্রতিটি বৃষ্টির দিনে ভালোবাসা নতুন করে আবিষ্কৃত হয়, যা সত্যিই প্রশংসনীয়। এই গল্প আমাদের শিখিয়েছে যে, ভালোবাসা ও বিশ্বাস থাকলে জীবনযাত্রার প্রতিটি ঝড়-ঝাপটা অতিক্রম করা সম্ভব। তানহা ও আশিকের জীবনের এই বিশেষ দিনগুলো আমাদের সকলের জীবনের জন্য একটি উদাহরণ।


পোস্টের বিষয়ক্রিয়েটিভ রাইটিং
পোস্টকারীতানহা তানজিল তরসা
ডিভাইসরেডমি নোট ১১
লোকেশনকালীগঞ্জ


আজ এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আর লেখার ভেতর ভূল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখেবেন।


১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।


আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়

আমি তানহা তানজিল তরসা। আমার স্টিম আইডির নাম @tanha001। আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক। আমি বিবাহিতা। আমার একটা ছেলে সন্তান আছে। আমি ফটোগ্রাফি, গান গাইতে,রান্না করতে ও বাইকে ঘুরতে অনেক পছন্দ করি। আমার জন্ম স্থান কালিগঞ্জ থানা ঝিনাইদহ জেলায়। আমি পেশায় এক গৃহিনী। পাশাপাশি আমি আমার পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমি অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। আমি আমার হাসবেন্ড এর চাকরির সূত্রে পাবনা চাটমোহর এ বসবাস করছি।


সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি দেখার জন্য ও সুন্দর মতামত শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। স্পেশালি ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা, এডমিন ও মডারেটরদের যারা আমাকে এত সুন্দর একটা কমিউনিটিতে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে এবং আমাকে প্রতিনিয়ত সাপোর্ট করছেন।


১০%প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।


Logo.png

Banner.png

20230619_1852241.gif

Sort:  
 4 days ago 

বাহ্ আপনি অনেক সুন্দর একটি ক্রিয়েটিভ রাইটিং লিখে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।আপনার শেয়ার করা ক্রিটিভ রাইটিং এর আরো দুটি পর্ব আমি পড়েছিলাম। গল্পটি সত্যি অসাধারণ ছিল। আশিক তানহার ভালোবাসার কোনো তুলনা হয় না। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের মাঝে সুন্দর একটা পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 4 days ago 

জি এটা ঠিক বলেছেন আপনি যে আশিক তানহার ভালোবাসার কোন তুলনা হয় না।আমার শেয়ার করা আগের দুটি পর্ব আপনি পড়েছেন জেনে খুবই ভালো লাগলো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর মতামত শেয়ার করে পাশে থাকার জন্য।

 3 days ago 

দুই জনের যে মনের মিল ও ভালোবাসা সেটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। শুকরিয়া

 3 days ago 

ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 64821.33
ETH 3466.08
USDT 1.00
SBD 2.51