বাচ্চার ফ্রেন্ডের প্রথম পরোটা খাওয়ার অনুভূতি

in আমার বাংলা ব্লগ9 months ago
আসসালামুআলাইকুম

বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করি ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

IMG_8181.jpeg

দুদিন আগে বড় মেয়ের বান্ধবী বাসায় এসেছিল একদিন থাকার জন্য। তাদের বাসা আমাদের বাসা থেকে খুব বেশি দূরে নয়। একই এলাকায়, প্রায় আট নয়টা বাসার পরে হবে ওদের বাসা। প্রায়ই যাওয়া আসা করে তারা দু’জন দু’জনের বাসায়।সেদিন প্রথম সে আমাদের বাসায় ১ দিন থেকেছে। আমি মোটেও পছন্দ করিনা বাচ্চাদেরকে অন্য বাসায় দিতে এবং রাত যাপন করা তো দূরের কথা। কিন্তু তারা ইংলিশ তারা আমাদের মত নয়,তারা একটু ভিন্ন ধরনের। আমার মেয়েও চায় ওদের বাসায় একদিন থাকতে,কিন্তু আমি না করে দিয়েছি।বলে দিয়েছি এটা সম্ভব হবে না।ওরা আমাদের বাসায় থাকতে পারবে কিন্তু তুমি পারবে না। এ ছাড়া যেহেতু আমরা মুসলিম সেহেতু আমাদের হারাম ও হালাল বেছে খেতে হয়। তাদের বাসায় গেলে ওরা যেটা ইচ্ছা সেটা খেতে পারবে না, কিন্তু ওরা আমাদের বাসায় আসলে যা ইচ্ছে তাই খেতে পারবে। যেহেতু তাদের কোন বাঁধা নিষেধ নেই। কিন্তু প্রবলেম আছে অনেক।তাদের খাবার দাবারের সাথে আমাদের খাবার দাবার মোটেও মেলেনা।আমরা যেটা খাই তারা সেটা খায় না বা খেতে পারেনা।কিন্তু তাদের মুখে আমাদের বাসার কোন খাবার মজা লাগলে সেটা আবার খাওয়ার কোন বাঁধা নেই। প্রবলেম হচ্ছে তারা ঝাল মোটেও খেতে পারে না। যাইহোক তার জন্য ঝাল একটু কম দিয়ে চিকেন রান্না করে দিয়েছিলাম। মোটামুটি খেতে পেরেছিল কারণ তারা আমাদের মত এত মসলা দিয়ে খেতে অভ্যস্ত নয়। বিকেলবেলায় ঘরে থাকা ফ্রোজেন ফিশ ফিঙ্গার, চিকেন ফ্রাই, চিপস এগুলো ভেজে দিয়েছিলাম। রাতের বেলায় খিচুড়ি রান্না করে দিয়েছিলাম বাংলাদেশী স্টাইলের চাল ও ডাল দিয়ে। এটা সে ভালোই খেতে পারে, কারণ মাঝে মাঝে আসলে এটা রান্না করে দেই।

এরপর সকাল বেলার নাস্তার টাইম, তাকে এখন কি খাওয়াব? যদিও সে ব্রেড খায়, কিন্তু ওইদিন আমার বাসায় কোন ব্রেড ছিল না। আমরাও সকালে ব্রেড দিয়ে নাস্তা করি।পরোটা খুব বেশি খাওয়া হয়না।তবে ঘরে কিনে রাখা হয় ফ্রোজেন পরোটা। আর এই পরোটা কিন্তু খেতে অনেক টেস্টি। বাঁচ্চারা মাঝে মাঝে খেতে চায় তাই সবসময় রাখি। যেহেতু বাসায় পরোটা ছিল, তাকে জিজ্ঞাসা করলাম খাবে কিনা? সে বলল পরোটা কি? তখন আমার মেয়ে গুগলে সার্চ করে একটি ফটো দেখালো।তখন সে বলল ওকে।এর আগে কখনও সে তা খায়নি। ফ্রাইপ্যানে ভেজে এনে দিলাম।দেখলাম সে বেশ মজা করেই খেয়ে নিল। এরপর নাস্তা করে বেলা বারোটার দিকে সে তার বাসায় ফিরে গেল। এরপর পরের দিন সে আমার মেয়েকে মেসেজ করছে তার নানু আমাকে জিজ্ঞাসা করতে বলেছে, সে যে পরোটা খেয়েছিল ওই পরোটার রেসিপি কি আমি তাকে দিতে পারব কিনা?তার নানু তাকে বানিয়ে দিতে চেয়েছিল।এরপর আমি বললাম এটা তো আমরা শপ থেকে কিনে এনেছি।আমরা যখন শপে যাব তখন তার জন্য কিনে আনব। কিন্তু সে তাতে রাজি হলো না। বলল কোন শপ থেকে আমরা কিনেছি। এরপর বলে দিলাম শপের নাম।আসলে এই পরোটা সব ধরনের শপগুলোতে পাওয়া যায় না। এগুলো পাওয়া যায় ইন্ডিয়ান, বাংলাদেশী এবং পাকিস্তানি শপ গুলোতে।

যেহেতু আমরা যে এলাকায় থাকি সেই এলাকাটি ইংলিশ এলাকা।বাঙালি কোন শপ নেই। তাই যখন আবার বাঙালী গ্রোসারী শপে যাব কেনাকাটা করতে তখন ওর জন্য কিনে নিয়ে আসব। যাইহোক আমার খুব ভালো লেগেছে কারণ বাঙালি একটি খাবার তারা আমাদের মাধ্যমে চিনতে পেরেছে এবং তাদের অনেক ভালো লেগেছে। আমার ভালো লাগার কারণেই এই ঘটনাটি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।

বন্ধুরা এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন।আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে।

পরবর্তীতে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।

ধন্যবাদ,

@tangera

1927F0BC-A81B-459C-A2F6-B603E4B2106C.png


👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :

👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :

VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 9 months ago 

তাহলে বিদেশি মেহমানকে আপ্যায়ন করেছেন। একজন মুসলিম হিসেবে একজন খ্রিস্টানের বাসায় গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করাটা একটু তো সমস্যা হয় যেহেতু হালাল হারামের একটা বিষয় আছে তারপরও মেয়েদেরকে যতটা সম্ভব পর্দায় রাখাটা ভালো। ইংরেজ মেয়েটাকে সবশেষে ভালোই আপ্যায়ন করেছেন বুঝতে পারলাম।

Posted using SteemPro Mobile

 9 months ago 

আসলে ঠিক বলেছেন বাচ্চাদেরকে অন্য কারো বাসায় দেওয়া মোটেই ঠিক নয়। তবু যেহেতু আপনার বড় মেয়ের বান্ধবী আপনাদের বাসায় এসেছে তাহলে তাকে তো ভালই আপ্যায়ন করতে হয়। যেহেতু মেহমান বলে কথা। যদিও তার খাওয়া দাওয়ার হ্যাবিট ভিন্ন হতে পারে, তবুও আপনি দেখলাম পরোটা, চিকেন, ফিস, খিচুড়ি, আরও অনেক কিছু খাইয়েছেন। অবশেষে তার যে বাঙালি এই পরোটা ভালো লেগেছে এটি জেনে খুব ভালো লাগলো। যাই হোক আগামী বার গ্রোসারী থেকে কিনে নিয়ে ওকে দিবেন। আর আশা করছি সেও অনেক বেশি খুশি হবে। ধন্যবাদ আপু আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 9 months ago 

বাচ্চাকে মা ছাড়া কোথাও আসলে দেয়া ঠিক নয়।আপনি ঠিকই বলেছেন।আমরা মুসলিম আমাদের কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলতেই হয়।আপনার মেয়ের বান্ধবী আপু পরোটা খেয়ে পরোটার প্রেমে পরে গিয়েছিল। তাইতো তার নানু পরোটার রেসিপি চাইছিলো।এটা খুবই ভালো লাগলো। আমাদের দেশি খাবার যে পছন্দ করলো এটা খুব ভালো লেগেছে।আপনি পরে এক সময় বাঙালি শপ থেকে কিনে দেবেন। অনেক ভালো লাগলো আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে। ধন্যবাদ আপনাকে।

 9 months ago 

আপনার হালাল হারাম এর বিচারটা আমার বেশ ভালো লেগেছে আপু। আপনি আপনার মেয়েদের জন্য এইক্ষেএে খুবই কঠোর এবং যেটা একেবারেই ঠিক। এইভাবে ফ্রোজেন পরোটা ব‍্যাপার টা দারুণ। আর পরোটা খেয়ে ভালো বলবে না এমন কেউ নেই হই জগতে হা হা। আপনার মেয়ের ফ্রেন্ড এর খাদ‍্যভ‍্যাস আলাদা খুব একটা সমস্যা হয়নি।।

Posted using SteemPro Mobile

 9 months ago 

একজন বিদেশীনীর প্রথম পরোটা খাওয়ার অভিজ্ঞতা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো আপু। বাইরের অনেক ফুড কালচারই তো আমরা বাঙালিরা এক্সসেপ্ট করে নিয়েছি। কিন্তু বাহিরের দেশে এখনো তেমন বাঙালি খাবারের কালচার ওভাবে শুরু হয় নি। বিভিন্ন শপগুলোয় পাওয়া যায় ঠিকই, কিন্তু তা শুধু বাঙালিরদের মধ্যেই সীমিত। আপনার বাসায় পরোটা খেয়ে সে তার বাসায় গল্প করেছে এবং তার দাদীও তাকে বানিয়ে দিতে চেয়েছে জেনে ভালো লাগলো।

Posted using SteemPro Mobile

 9 months ago 

আসলেই আপু আমরা যেহেতু মুসলিম, অবশ্যই আমাদেরকে হালাল খাবার খেতে হবে। আপনি আপনার মেয়েকে ওদের বাসায় থাকতে না দিয়ে বেশ ভালো করেছেন আপু। একজন মা যতটা মমতাময়ী, প্রয়োজনে ততটা কঠোর হতে হয়। আর সেটা অবশ্যই সন্তানের মঙ্গল বয়ে আনে। যাইহোক এই পরোটা গুলো খুব সুস্বাদু লাগে খেতে। যখন সাউথ কোরিয়াতে ছিলাম, তখন পাকিস্তানি দোকান থেকে এই পরোটাগুলো কিনে ফ্রিজে রেখে দিতাম। যাইহোক একজন ব্রিটিশ মেয়ের পরোটা খেয়ে এতো ভালো লেগেছে, জেনে খুব ভালো লাগলো। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

Posted using SteemPro Mobile

 9 months ago 

একদম ঠিক বলেছেন আপু, কারো বাসায় রাত্রিযাপন করা এটা ঠিক নয় ।কেননা সবার পরিবার এক না,আর বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে কারো বাড়ি না থাকায় ভালো।তাছাড়া যেহেতু ইংলিশ খাওয়া দাওয়ায় সমস্যা তো রয়েছে।আমরা মুসলিম হালাল হারামের একটি বিষয় রয়েছে।আপনার মেয়ের বান্ধবী প্রথম পরোটা খেয়ে তার ভালো লাগে। পরে পরোটার রেসিপি জানতে চাইলে দোকানের ঠিকানা নেন।যেহেতু ইংলিশ এলাকা তাই বাঙালি শপে পাওয়া যায় এটি।এর পরে তার জন্য নিয়ে আসবেন আপনারা।ভালো লেগেছে পোস্টটি।ধন্যবাদ আপু সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 9 months ago 

একদম ঠিক বলছেন আপু আমার অনেক ভালো লেগেছে আপনার নিয়ম গুলো। বন্ধুত্ব হবে ঠিক আছে একে অপরের বাসায় আসা যাওয়া করবে তাও ঠিক। কিন্তু রাত যাপন করা মোটেই পছন্দ না। আপনার নিয়ম গুলো আমার অনেক পছন্দ হয়েছে। তবে আপনি ঠিক বলছেন এই পরোটা অনেক মজার আপু। আমিও ফ্রোজেন পরোটা ফ্রিজের মধ্যে রাখি প্রায় সময়। হঠাৎ করে তৈরি করতে ঝামেলার হয়ে যায় তাই এনে রাখি। তবে ব্রান্ডের মধ্যে ভিন্ন থাকতে পারে কিন্তু আমার কাছে অনেক ভালো লাগে এই ফ্রোজেন পরোটা। দারুণ একটি মুহূর্ত শেয়ার করলেন অনেক কিছু শেখার এবং জানার ছিল আপু।

 9 months ago 

আপু আপনি মামনিকে তার বান্ধবীর বাসায় থাকার পারমিশন না দিয়ে ভালোই করেছেন। আসলে ছোট মানুষ ওরা হয়তো অনেক কিছুই বুঝবে না। আর মেয়েদের সব জায়গায় থাকতে নেই। বিশেষ করে রাতের বেলা একদম না। যাইহোক মামনির বান্ধবীর পরোটা বেশ পছন্দ হয়েছে বুঝতে পারছি। তাই তো সে রেসিপি চাচ্ছিল। অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 66750.09
ETH 3474.88
USDT 1.00
SBD 2.80