জীবন, মৃত্যু ও পরকাল - পর্বঃ ২
আসসালামুআলাইকুম
বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন ? আশা করি ভালই আছেন, আমিও আলহামদুল্লিাহ ভাল আছি। জীবন, মৃত্যু ও পরকাল নিয়ে ২য় পর্বে হাজির হয়ে গেলাম। আজকের পর্বে মহান রব্বুল আলামীনের আমাদের প্রতি অশেষ দয়া ও রহমতের কথা আলোচনা করব। আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে।চলুন চলে যাওয়া যাক তাহলে মূল পর্বে।
মহান সৃষ্টিকর্তা মহান রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর সৃষ্টির সেরা জীব রূপে। গাছপালা, পশুপাখি, নদী, আকাশ, আলো-বাতাস সৃষ্টি করে এই পৃথিবীকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে মানবজাতির বসবাসের উপযোগী করে তুলেছেন।আল্লাহতালা প্রথমে প্রথম মানব আদম ও হাওয়া আলাইসাল্লাম কে এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন।পাঠানোর উদ্দেশ্য ছিল একমাত্র তাঁরই এবাদত করা এবং তাঁর হুকুম পালন করা। বেহেশ্ত থেকে যখন আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালামকে এই পৃথিবীতে পাঠানো হয় তখন শয়তানকেও বেহেশ্ত থেকে বের করে দেওয়া হয়।তখন শয়তান চ্যালেঞ্জ করেছিল তাঁর প্রতিটি বান্দাকে জাহান্নামের দিকে ধাবিত করবে। শয়তান সবসময়ই মানুষের ভাল কাজে বাঁধা দেয় এবং খারাপ কাজে উৎসাহিত করে। যারা এই খারাপ কাজকে উপেক্ষা করতে পারে তারাই সফলকাম। এটিই হচ্ছে আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আল্লাহ পাক কত মহান ও দয়ালু, যারা খারাপ কাজ করে আল্লাহর কাছে তওবা করে মাফ চায় তাদেরকে ক্ষমা করে দেন। আল্লাহপাক সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন তাঁর কাছে কিছু চাওয়া। কিন্তু তার কাছে সেই চাওয়ার সময় টুকুও আমাদের নেই। তিনি আমাদের যে নেয়ামত গুলো দিয়েছেন তার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞও থাকি না। আল্লাহ কোরআনে বারবার একই কথা বলেছেন মানুষ বড়ই অকৃতজ্ঞ। সত্যিই আমরা বড়ই অকৃতজ্ঞ, কোন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি না। কিন্তু আল্লাহ তাআলা মহান, অসীম তার ভালোবাসা যার কোন তুলনা হয় না।
আল্লাহ তাআলা যখন মানুষ সৃষ্টি করেছিলেন তখন তার ভালোবাসাকে 100 ভাগে ভাগ করেছিলেন। তার মধ্য থেকে 99 ভাগ তিনি নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন আর এক ভাগ সমস্ত মানবজাতি, জীবজন্তু এ পশুপাখির মধ্যে দিয়েছিলেন। একবার চিন্তা করে দেখুন মা তাঁর সন্তানদেরকে কত ভালোবাসেন। সন্তান ও মায়ের ভালোবাসাও থাকে অসীম।স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসাও হয় গভীর। মাত্র একভাগ ভালোবাসা নিয়েই মানুষ এত ভালোবাসতে পারে, আর আল্লাহ তাআলার রয়েছে 99 পার্সেন্ট, তাহলে চিন্তা করুন কতটা ভালবাসেন তিনি আমাদেরকে। তিনি সব সময়ে আমাদেরকে ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকেন। আর আমরা তাকে ভুলে বসে থাকি।আমরা সাধারন মানুষ সবসময়ই ছোটখাটো, বড় নানান ধরনের গুনাহ করে থাকি, কোনো মানুষই গোনার ঊর্ধ্বে নয়।তাই আল্লাহ রোগ-শোক,বিপদ-আপদ, ধন-সম্পদের ক্ষতির মাধ্যমে আমাদের পরীক্ষা করেন এবং ছোটখাটো অনেক গোনাহ মাফ করেন। আপনারা কি জানেন কোন কারণে আমরা যদি পেরেশান হয়ে যাই অথবা খুব বেশি দুশ্চিন্তা করি তখন সেই কারণের জন্য আমাদের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
মানুষের যতই ধনসম্পত্তি থাকুক না কেন প্রকৃতপক্ষে কোন মানুষই সুখী নয় ।এই পৃথিবীতে কোন মানুষই একশভাগ সুখী হতে পারবে না একমাত্র সম্ভব জান্নাতে। আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেছেন আমি মানুষকে কষ্ট ও পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে সৃষ্টি করেছি। তাই কষ্টও পরিশ্রমের ঊর্ধ্বে কোনো মানুষই পাওয়া যাবে না। যারা আল্লাহকে বিশ্বাস করেন ঈমানদার ও মুমিন অথবা যারা আল্লাহর কাছে অতি পছন্দের তাদেরকে দুনিয়ায় কিছু কষ্ট দিয়ে , মৃত্যুর সময় কিছু কষ্ট দিয়ে গুনাহ মাফ করেন।এরপর যদি কিছু গুনাহ থাকে তাহলে কবরে আজাব দিয়ে, তারপরও গুনাহ থাকলে হাশরের মাঠে কষ্ট করাতে করাতে গুনাহ মাফ করানো হয় অর্থাৎ আল্লাহর উদ্দেশ্যই হচ্ছে তাদেরকে জান্নাতে পৌঁছানো। অবশেষে তারা যখন জান্নাতে যাবে তখন একেবারে খাঁটি হয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে,কোন বিন্দু পরিমান গুনাহ কারো থাকবে না। এরপর বিচার তো রয়েছেই।এসকল ধাপগুলো পার হয়ে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। যাদের গুনাহ গুলোএভাবে দুনিয়া ও আখেরাতে কেটে গিয়েছে তারা অনেক ভাগ্যবান। সর্বশেষে আরো একটি কথা বলতে চাই আল্লাহ তাআলা বলেছেন তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে ক্ষমা করে দিবেন যদি তার সাথে কেউ শিরক না করে। অর্থাৎ যারা একমাত্র শুধু তাঁকেই এবাদত করে অন্য কাউকে নয়।
বন্ধুরা এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন। আমার এই ক্ষুদ্র জ্ঞানের পরিসর থেকে এতোটুকুই আলোচনা করলাম।আশা করি আপনাদের ভাল লেগেছে। পরবর্তীতে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব।
ধন্যবাদ,
👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :
VOTE @bangla.witness as witness
OR
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
আপু অনেক সুন্দর কিছু কথা বলেছেন ৷ ধর্ম যার যেটাই হোক না কেন ৷ দিনশেষে প্রতি ধর্মে লেখা বাণী গুলো একি কথা বলে ৷ এটা সত্য বলেছেন ঈশ্বের মাত্র ১% ভালোবাসায় আমরা কতটা অনুভব করছি ৷
আপনি সুন্দর একটি কথা বলেছেন ৷
একদম যথার্থ মানুষের যতই ধন সম্পদ থাকুক না কেন৷ সে কখনোই সুখী নয় ৷ এ জগৎ সংসারে মায়া মমতার জালে আমরা বন্দী ৷ তাই সর্বোপরি ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা করা খুবই জরুরি ৷ দিনশেষে সবকিছুর মালিক তিনি ৷
যা হোক অনেক সুন্দর কিছু কথা বলেছেন আপু ৷ অনেক অনেক ধন্যবাদ
আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে সৃষ্টির সেরা জীবন বানিয়েছে ঠিক, কিন্তু আমরা কি আমাদের চরিএের দিক থেকে আসলেই হতে পেরেছি।আমরা কি আল্লাহর সকল নেয়ামতের ঠিকভাবে শুকরিয়া আদায় করতে পারছি।আল্লাহ মহান তাই আমাদের বার বার ক্ষমা করে দেন।যাই হোক আপু কথাগুলো বেশ ভালো লিখেছেন। পরিশেষে এটা বলতে চাই আল্লাহর আমাদের সকলের গুনাহ মাফ করে দেক,জীবনের শেষ পর্যায়ে যেন ঈমান নিয়ে মরতে পারি।শিরক থেকে মুক্ত রাখে,এবং পরকালের যাএা যেন সহজ করে আমাদেরকে জান্নাত দান যেন করে দেয়,এই প্রত্যাশা করি।আমিন
আপনার প্রত্যেকটা কথায় আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আসলে কোন কথা রেখে কোন কথার জন্য কমেন্ট করব আমি কিছু বুঝতে পারছিনা। তবে এটা ঠিক আমরা সবকিছু করার সময় পাই শুধু তাঁর ইবাদত করার সময় পায়না এবং তাঁর কাছে চাওয়ার মত করে কিছু চাইতে পারিনা। অবশ্যই আমরা আল্লাহর কাছে কিছু চাইলে আল্লাহ আমাদের নিরাশ করবেন না।
আপু আপনার আজকের পোষ্টটি একবার পড়লেও তার মধ্যে কিছু সময়ের জন্য হলেও পরকালের চিন্তা জাগ্রত হবে। আসলে ধর্ম সবসময়ই মানুষকে সঠিক পথে চলার দিক নির্দেশনা প্রদান করে কিন্তু আমরা দুনিয়ার বিভিন্ন প্রলোভনে পরকালের চিন্তা ভুলে যাই। প্রার্থনা করি সৃষ্টিকর্তা আমাদের সবাইকে সঠিক পথে চলার হেদায়াত দান করুন।
আসলেই বিষয়টা গভীরভাবে চিন্তা করলে ফিল হয় যে ১০০ ভাগের মাত্র এক ভাগ ভালোবাসা মানুষের মধ্যে সৃষ্টিকর্তা দিয়ে দিয়েছেন আর তাতেই মায়ের প্রতি শিশুর এতটা ভালবাসা। প্রিয় মানুষের প্রতি এতো ভালবাসা। এই পোস্ট অনেক ভালো লেগেছে আপু কারণ এ ধরনের পোস্ট পড়লে মন অনেকটাই নরম হয়ে যায়, সৃষ্টিকর্তার প্রতি আরো গভীর ভালোবাসা জন্মে।
মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমত আর নেয়ামতের জন্যই মানবজাতি বেঁচে আছে।তিনি পরম ক্ষমাশীল, আমরা প্রতিনিয়ত কত গুনাহ করে যাচ্ছি নিজের অজান্তে।তবে আল্লাহর বান্দা আর প্রিয় নবীর জন্য উম্মত হিসেবে শুকরিয়া আদায় করি বারবার। শয়তানের প্ররোচনা থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকার জন্য আল্লাহর প্রতি প্রার্থনা জ্ঞাপন করি।
ব্লগটি পড়ে অনেক ভাল লাগলো। ছেলেবেলা থেকে যে কথাগুলো শুনতে শুনতে বড় হয়েছি সেই কথাগুলো আজ আবার আপনার ব্লগে পড়ে নিলাম। সত্যি মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন আমাদের যে নিঃশ্বাস টুকু দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছেন এতটুকু চিন্তা করলেই বোঝা যায়। যা আমরা করোনার সময় খুব ভাল ভাবে বুঝতে পেরেছি। আল্লাহর শুকরিয়া আমাদের সব সময় করতে হবে। সবকিছুতেই আমাদের আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে হবে। আর পরকালের জন্য নিজেকে একজন ভাল মানুষ হিসেবে তৈরি করতে হবে।আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে নেক হায়াত দান করুন, আমিন। ধন্যবাদ আপু।
আপনি ঠিক বলেছেন আল্লাহ তাআলার কাছে কিছু চাইলে তিনি খুশি হন। তবে আফসোস এটাই যে আমাদের তার কাছে চাওয়ার সময়ই থাকে না। যদিওবা এগুলোর মধ্যে অনেক কথাই আমি আগে থেকেই শুনেছি। তবে আপনার আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আবার পড়ে বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে এই সুন্দর পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আমাদের যতদিন বেঁচে থাকতে হবে পরিশ্রম করে যেতে হবে সবাইকে। আর এই জগতে আমরা সৃষ্টির সেরা জীব হলেও আমরা প্রকৃতপক্ষে সম্পূর্ণভাবে সুখী নয়। সুখ দুঃখ সব কিছু মিলেই আমাদের জীবন।