ইস্ট লন্ডন মসজিদে জীবনে প্রথম জামাতে নামাজ পড়ার অভিজ্ঞতা

in আমার বাংলা ব্লগlast month
আসসালামুআলাইকুম

বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন ? আশা করি ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুল্লিাহ ভালো আছি।

IMG_1099.jpeg

Photo Credit: Getty Images/Jack Taylor

এক মাস আগে ঈদের শপিং করতে যখন হোয়াইটচ্যাপল এ গিয়েছিলাম, তখন লন্ডনের এই বিখ্যাত ইস লন্ডন মসজিদে জামাতে নামাজ পড়ার সুযোগ হয়েছিল। মসজিদটি অনেকবার দেখেছি কিন্তু ভেতরে গিয়ে নামাজ পড়ার সুযোগ কখনো হয়নি। রোজা ছিলাম, আর আমরা ওখানে যেতে যেতে একটা বেজে যায়। এমনিতেই বিশেষ কারণ ছাড়া নামাজ কাজা করা ঠিক নয়, আর তো রোজার মাস নামাজ কাজা হয়ে গেলে তো আরো বেশি খারাপ লাগে। যদিও নামাজ বাদ দেওয়ার কোন সিস্টেম নেই, যেভাবেই হোক নামাজ আদায় করতে হয়।যেহেতু যোহরের নামাজের সময় হয়ে যায় তাই আমার ভাসুর আর হাজব্যান্ড বলল ওখান থেকে নামাজ পড়ে যাই।আমরা দুই পরিবার মিলে গিয়েছিলাম ঈদের শপিংয়ে, বাচ্চারা সহ টোটাল ৮ জন ছিলাম আমরা। রাস্তা দিয়ে যখন হেঁটে যাচ্ছিলাম তখন আজান শুনতে পেয়েছিলাম। খুবই ভালো লাগছিল কারণ এ দেশে আমরা আযান শুনতে পাই না। এই মসজিদটি যুক্তরাজ্যের প্রথম মসজিদগুলির মধ্যে একটি যাকে আযান সম্প্রচারের জন্য লাউডস্পিকার ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।আর অন্য কোন মসজিদে আযানের এই ফ্যাসিলিটি দেওয়া হয়নি।

বিশাল এলাকা নিয়ে এই মসজিদটি গঠিত। মহিলাদের জন্য ওজু ও নামাজের আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে।এখানে প্রায় 7,000-এরও বেশি মুসল্লির নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। মসজিদে ঢুকে ছেলেরা ও মেয়েরা সবাই আলাদা হয়ে গেলাম। এরপর পড়ে গেলাম বিপাকে কারণ আমরা আগে কখনো জামাতে মসজিদে নামাজ পড়িনি। আর নামাজ পড়ার সিস্টেমও জানিনা কিভাবে জামাতে মসজিদে নামাজ পড়তে হয়। বাসায় হাজবেন্ডের সাথে জামাতে নামাজ পড়েছি কিন্তু মসজিদে কিভাবে পড়তে হয় তার কোন সিস্টেম জানা ছিল না। ভেতরে যখন ঢুকে গেলাম তখন নামাজের জায়গা খঁুজে পাচ্ছিলাম না, কারণ অনেক বড় জায়গা নিয়ে মসজিদটি নির্মিত।এরপর ভিতরে যারা ছিলেন তাদেরকে জিজ্ঞাসা করে চলে গেলাম আমরা সেখানে। গিয়ে দেখি জামাত শুরু হয়নি। দেখলাম অনেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তো এরপর ইমাম সাহেব যখন নামাজ শুরু করে দেন তখন অন্যদের দেখে দেখে আমরাও নামাজে দাঁড়িয়ে যাই। ইমাম সাহেব কে দেখতে পাইনি, শুধু তার ভয়েস শুনতে পেয়েছিলাম। আর এই ভয়েসটি অনেক পরিচিত ছিল কারণ টিভিতে প্রায়ই তাকে আনা হয় ইসলামিক অনুষ্ঠানগুলোতে। একই ইমাম পুরুষ ও মহিলাদের নামাজ পড়াচ্ছিলেন সেপারেট স্থান থেকে। যাইহোক চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়ে নিয়েছিলাম। জামাতে দীর্ঘ সময় ধরে তিনি নামাজ পড়িয়েছিলেন। দীর্ঘ সময় ধরে রুকু ও সিজদায় ছিলেন। এরপর জামাত শেষে জোহরের সুন্নত চার রাকাত, এরপর দুই রাকাত শেষ করে আমরা সকলেই নামাজ পড়ে বের হয়ে যাই। নতুন এক অভিজ্ঞতা হল মসজিদে জামাতে নামাজ পড়ার। এই মসজিদের শুধু বাঙালিরাই ছিল না, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মুসলিমরা আসে এখানে নামাজ পড়তে। বিশাল একটি ভাতৃত্বের বন্ধন সৃষ্টি হয় এখানে। আর এই মসজিদটি বাংলাদেশিরাই নির্মিত করেছেন।

যাই হোক মহিলাদের জন্য নামাজের শ্রেষ্ঠ স্থান হচ্ছে তাদের নিজ গৃহ।আর মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়াটা আসলে আমার কাছে ভালো লাগেনা। মসজিদে নামাজ ঠিক আছে, বাইরে গিয়ে নামাজের জন্য কোন জায়গা না থাকলে ওই মসজিদই হচ্ছে মহিলাদের জন্য শ্রেষ্ঠ স্থান।যেমন সেখানে মসজিদ না থাকলে আমাদের যোহরের নামাজটি কাজা হয়ে যেত কারণ আর কোথাও নামাজ পড়া সম্ভব হতো না।যাইহোক মসজিদের অনেকগুলো ফটো নিয়েছিলাম, কিন্তু মোবাইল হারিয়ে যাওয়াতে আর ফটোগ্রাফিগুলো শেয়ার করা হলো না। পরবর্তী তে আবার কখনও গেলে আপনাদের জন্য শেয়ার করবো ফটোগ্রাফিগুলো।

বন্ধুরা এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন।আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে।

ধন্যবাদ,

@tangera

1927F0BC-A81B-459C-A2F6-B603E4B2106C.png


👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :

👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :

VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


[witness_vote.png](https://steemitwallet.com/~witnesses

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 last month 

আজকে আপনার পোস্ট পড়ে অনেক বেশি ভালো লাগলো। ইংল্যান্ডের মত জায়গায় মসজিদে ছেলে মেয়ে আলাদা জায়গায় নামাজ পড়ার সুযোগ পায়। তবে আপনার ফোন যদি হারিয়ে না যেত তাহলে হয়তো ভেতরের সৌন্দর্যগুলো দেখতে পারতাম। যাই হোক আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল আপু।

 last month 

আপু আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। ইংল্যান্ডের মসজিদে ছেলেমেয়েদের জন্য আলাদা নামাজের ব্যবস্থা আছে জেনে অনেক ভালো লাগলো। সঠিক সময়ে নামাজ আদায় করতে পেরেছেন এবং আপনার নামাজ কাজা হয়নি আলহামদুলিল্লাহ।আর দারুন একটি অভিজ্ঞতা হলো আপু আপনার মসজিদের নামাজ পড়ার। অনেক ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last month 

আপু আপনার পোস্ট দেখে এবং পড়ে প্রশান্ত পেলাম। পোস্ট করে জানতে পারলাম ঈদের এক মাস আগে শপিং করতে যাওয়াই ইস্টবেঙ্গল মসজিদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় এই মসজিদে নামাজ পড়ার আপনার সুযোগ হয়ে ওঠে। নামাজগুলো সেখানে খুব দীর্ঘ মেয়াদী করা হয়েছিল। আসলে নামাজ দীর্ঘ করে পড়ার ভিতরে একটা অন্যরকম শান্তি আছে। যাইহোক সেখানে নামাজ পড়ে আপনার অনুভূতি যেনে খুবই ভালো লাগলো এবং সেখানে শুধু বাঙালীরা নয় বিশ্বের সব জায়গার মুসলমান সেখানে নামাজ আদায় করতে পারে এতে একটা ভালো লাগার বিষয় জন্ম হয়। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো।

 last month 

জি আপু ঠিক বলেছেন নামাজ বাদ দেয়ার কোন অপশন নাই সঠিক সময়ের নামাজ আদায় করতে হবে। তবে এটাও ভালো বলেছেন যে এলাকায় আযানের শব্দ শোনা যায় না হঠাৎ করে শব্দ শুনতে পেলে অনেক বেশি ভালো লাগে। অবশ্য বাংলাদেশের সময় হলে আযানের ধ্বনি ভেসে আসে অসম্ভব ভালো লাগা কাজ করে। তবে আমার মনে হয় সব মসজিদেই মেয়েদের নামাজের জায়গা থাকলে সুবিধা হয় তাহলে আর বাইরে বের হলেও নামাজ কাজা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

আপনি আজ আমাদের মাঝে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন দেখে আমার অনেক বেশি ভালো লাগলো। আপনারা দুই পরিবার মিলে ৮ জন মার্কেট করতে গিয়েছিলেন।এক মাস আগে ঈদের শপিং করতে যখন হোয়াইটচ্যাপল এ গিয়েছিলাম, তখন আপনি নামাজ পড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন খুব ভালো লাগলো শুনে।ইস্ট লন্ডন মসজিদে জীবনে প্রথম জামাতে নামাজ পড়ার অভিজ্ঞতা। প্রায় ৭ হাজার মুসলিম নামাজ পড়ছিলেন জেনে আরো বেশি খুশি হলাম তাহলে তো অনেক বড় মসজিদ।

 last month 

আমি আপনার পোস্ট টা পড়ার সময় এই কথাটাই ভাবছিলাম। মহিলাদের জন্য বাড়িতে নামাজ পড়ায় উওম। মসজিদে যাওয়ার ব‍্যাপার টা আসলেই কেমন জানি। একটু অসুবিধায় পড়েছিলেন দেখছি প্রথমবার জামাতে নামাজ পড়তে গিয়ে। যদিও পরের দিকে সামলে নিয়েছিলেন। আপনার অভিজ্ঞতা টা বেশ ভালো ছিল আপু।

 last month 

ইস লন্ডন মসজিদে জামাতে নামাজ পড়ার অভিজ্ঞতার কথা জেনে ভালো লাগলো আপু। সত্যিই আপু আপনার মত আমার কাছেও মনে হয় মেয়েদের ক্ষেত্রে নামাজ ঘরে পড়লেই ভালো হয়। তবে অনেক সময় বিপদে পড়ে বাইরে নামাজ পড়তে হয়। কিন্তু মসজিদে নামাজ পড়ার অভিজ্ঞতা নেই। আমাদের দিকে তো এরকম কোন সিস্টেমও নেই। এত বড় মসজিদ বাংলাদেশিরা নির্মিত করেছে জেনে খুবই ভালো লাগলো আপু। আপনার ফোন হারিয়ে না গেলে হয়তো আরো কিছু ছবি দেখতে পেতাম।

 last month 

বিধর্মী অনেক দেশে বাংলাদেশীদের উদ্যোগে অনেক অনেক মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে, এই ব্যাপারটা আমার খুব ভালো লাগে। দক্ষিণ কোরিয়াতে আমি আনসান সিটিতে থাকতাম এবং সেখানে ৫ তলা বিশিষ্ট অনেক সুন্দর একটি মসজিদ ছিলো। বিভিন্ন দেশের মুসলিমরা একসাথে নামাজ আদায় করতাম সেই মসজিদে। যাইহোক ইস্ট লন্ডন মসজিদে জীবনে প্রথমবার জামাতে নামাজ আদায় করেছেন, এটা দেখে খুব ভালো লাগলো আপু। বিশেষ কারণ ছাড়া নামাজ কাজা করা কখনোই উচিত নয়। মোবাইল না হারালে হয়তোবা ইস্ট লন্ডন মসজিদের অনেক সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি দেখতে পেতাম। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 61227.58
ETH 3437.75
USDT 1.00
SBD 2.56