জীবন, মৃত্যু ও পরকাল - পর্বঃ ৬

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আসসালামুআলাইকুম

বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন ? আশা করি ভালই আছেন, আমিও আলহামদুল্লিাহ ভাল আছি। জীবন, মৃত্যু ও পরকাল নিয়ে ষষ্ঠ পর্ব পর্বে হাজির হয়ে গেলাম।আজকের পর্বে আমাদের সাথে আলোচনা করব কেয়ামত ও হাসর নিয়ে। যদিও আমরা এ বিষয়গুলো আমরা সকলেই কম বেশি জানি কিন্তু আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে আমরা এগুলো যত শুনব এবং জানবো ততই আমাদের মনগুলো নরম হবে এবং আল্লাহর দিকে বেশি ঝুঁকে যেতে পারব।তাই আমার এই প্রচেষ্ঠা। আসলে শয়তান সবসময়ই চায় ভাল কাজ হতে আমাদেরকে দূরে রাখতে। আমরা প্রতিনিয়ত তার সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছি। কেউ কেউ এ যুদ্ধ জয়ী হয় আবার কেউ কেউ হেরে যায়।তাই যতই ধর্মীয় জ্ঞান আহরন করা যায় ততই খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকা যায় এবং মনে অনেক শান্তি পাওয়া যায়। আশা করি আজকের পর্বটিও আপনাদের ভাল লাগবে।চলুন চলে যাওয়া যাক তাহলে মূল পর্বে।

C513F2C4-E36C-42D9-92E5-6730FE907363.jpeg

Image source

যখন কেয়ামতের সময় শুরু হয়ে যাবে তখন আল্লাহ তা'আলার হুকুমে ইসরাফিল আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিংগায় ফুঁক দিবেন।তখন কেয়ামত সংঘটিত হবে। ওই সময় যে যখন যেই অবস্থায় থাকবে তখন ঠিক সেই অবস্থায় তাঁর মৃত্যুবরণ করবে।তখন একটি প্রাণী ও জীবিত থাকবে না।সমগ্র মানব, পৃথিবী ও মহাবিশ্ব ধ্বংস হয়ে যাবে।এরপর একে একে মিকাইল আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ইসরাফিল আলাইহি ওয়াসাল্লাম, জিবরাঈল আলাইহিস সাল্লাম এবং সর্বশেষে মালাকুল মউতের মৃত্যু ঘটবে।শুধু থাকবেন একমাত্র মহান রাব্বুল আলামিন। তখন এই পৃথিবী একটি সমান্তরাল ভূমিতে পরিণত করা হবে। তখন আল্লাহ তায়ালা একটি তরল জাতীয় পদার্থ ভূমিতে নিঃসৃত করবেন সেখান থেকে এই সমগ্র পৃথিবীর মানবকূলের দেহের ক্ষুদ্র একটি কণা যা মাটিতে থাকে তা ওই পানির সংস্পর্শে এসে পুনরায় মানব শরীর গঠিত করবে।তখন ফেরেশতাদেরকে আবার জীবিত করা হবে। ইসরাফিল আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন দ্বিতীয় শিংগার ফুঁক দিবেন।তখন প্রতিটি মানুষ কবর থেকে উঠে আসবে। আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে সকলে দলে দলে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকবে। ছোট ছোট বাচ্চারা যারা নিষ্পাপ তাদের চুলগুলো সব ভয়ে পেকে যাবে পৃথিবীবাসীর এই ভয়াবহ অবস্থা দেখে।

এ সময় সূর্য প্রায় মাথার কাছে চলে আসবে। সূর্যের প্রচণ্ড তাপে মানুষ ঘামতে থাকবে।। ঘামের পরিমাণ হবে পাপের পরিমাণের উপর। কেউ কেউ তার পাপ অনুযায়ী পায়ের টাকনু পর্যন্ত ঘামবে, কেউ কেউ হাঁটু পর্যন্ত, কেউ কেউ বুক পর্যন্ত, কেউ কেউ গলা পর্যন্ত এবং কেউ কেউ আবার তার ঘামের মাঝে ডুবে থাকবে। পানির তৃষ্ণায় গলা শুকিয়ে আসবে। এসময় বিশাল আকৃতির পানি ভর্তির একটি পুকুর দেখা যাবে। কোটি কোটি মানুষ থাকবে সেই পুকুর টিকে ঘিরে পানির তৃষ্ণা মেটানোর জন্য। কিন্তু সেই পানি সবাই পান করতে পারবেনা, পান করতে পারবে শুধু মুমিন ও ইমানদার বান্দাগণ। আর সেখানে দাঁড়িয়ে থাকবেন আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাঃ তাদেরকে পানি পান করানোর জন্য।আর এটিই হচ্ছে সেই কাউসার যা কুরআনে রয়েছে। এ পানি যে একবার পান করবে তার আর কোনদিনও পানির পিপাসা থাকবে না।

অপরদিকে আরেক দল মানুষ থাকবে আল্লাহর আরশের ছায়াতলে।কতইনা ভাগ্যবান তারা! আল্লাহ যেন আমাদেরকে ঐ দলে রাখেন।ওই দিন কাউকে কাউকে দেখে মনে হবে এই মাত্র কবর থেকে যেন উঠে এসেছে, আবার কাউকে দেখে মনে হবে কত বছর তারা যেন এভাবে পাগলের মত ঘুরে বেড়াচ্ছে।কতইনা ভয়াবহ হবে সেই দিন! আল্লাহ যেন আমাদেরকে ক্ষমা করে দেন , তাঁর নেক বান্দাদের দলে আমাদেরকে যেন শামিল করেন।

আজকে তাহলে এইটুকুই। আগামী পর্বে এরপর থেকে আবার আলোচনা করব।

বন্ধুরা এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন। আমার এই ক্ষুদ্র জ্ঞানের পরিসর থেকে এতোটুকুই আলোচনা করলাম।আশা করি আপনাদের ভাল লেগেছে। পরবর্তীতে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব।

ধন্যবাদ,

@tangera

1927F0BC-A81B-459C-A2F6-B603E4B2106C.png


👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :

👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :

VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png

Sort:  
 last year 

আপু সত্যি বলেছেন সব মুসলিম জাতি এই কেয়ামত ও হাসর সম্বন্ধে জানে কিন্তু তারপরেও আমরা বেখেয়াল হয়ে দুনিয়াতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছি।আপনার লেখাগুলো পড়ছিলাম আর সেই দিনের ভয়াবহতা অনুধাবন করছিলাম।চোখ ছলছল হয়ে আসছিল বারবার সেই দিনটির কথা স্মরণ করে। আল্লাহ আমাদের নেক বান্দাদের দলে সামিল করুন, আমিন। খুব সুন্দর ভাবে গুছিয়ে কথাগুলো লিখেছেন আপু।খুব ভালো লাগলো। জানা এই কথাগুলো বারবার স্মরণ করা হলে মনটা আল্লাহর দিকে ঠিকই ধাবিত হবে। অনেক ধন্যবাদ আপু শেয়ার করার জন্য। অনেক অভিনন্দন রইলো আপনার জন্য।

 last year 

আমরা বলে থাকি জীবন মানেই যুদ্ধ। আর এই যুদ্ধটা করে থাকে নিজের সংসার অর্থ উপার্জনের জন্য। কিভাবে নিজের পরিবারের মানুষদেরকে ভালো রাখবো এর জন্য। কিন্তু আসলে বাস্তব যুদ্ধ হলো শয়তানের সাথে যুদ্ধ নিজের নফসকে পবিত্র রাখার জন্য শয়তানের সাথে প্রতিনিয়ত ঈমানদার ব্যক্তিরা যুদ্ধ করে যাচ্ছে। একটা বিষয় আপনার সাথে আমি সহমত আপু যত বেশি বেশি ইসলামের প্রচার মানুষের মধ্যে করা হবে তত বেশি বেশি মানুষ সজাগ হবে। বেশি বেশি কোরআন হাদিসের কথা মানুষের মধ্যে তুলে ধরলে মানুষ সে সম্পর্কে জানতে পারবে এবং তারা আল্লাহর পথে ধাপিত হবে। হাসর এক বিশাল ময়দান । এই ময়দানে ভয়াবহতা সম্পর্কে আমাদের জানা উচিত। ঐদিন আল্লাহর প্রিয় বান্দারা ছাড়া কেউ আল্লাহর আরশের ছায়া পাবে না। আল্লাহ যেন আমাদেরকে তার প্রিয় বান্দাদের মধ্যে একজন হিসাবে কবুল করেন,আমিন।

 last year 

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর একটি হাদীসে আছে মৃত্যু যত কঠিন তার থেকে বেশি কঠিন কবর যত কঠিন তার থেকে বেশি কঠিন হাশরের ময়দান এর মানে যখন আমাদের হিসাব নিকাশ হবে।।
আপনি অনেক সুন্দর হবে আলোচনা করেছেন খুবই ভালো লাগলো।। আসলে মৃত্যু কবর কিয়ামত কেয়ামতের ময়দান এগুলা নিয়ে আমরা কখনোই ভাবি না মধ্য দিয়ে পার হয়ে যাচ্ছে আমাদের জীবন কখন যে জীবনটা শেষ হয়ে যাবে মাথায় আনি না।।
গোনাগুলো স্মরণ করি আল্লাহর কাছে প্রতিনিয়ত ক্ষমা প্রার্থনা করি।।

 last year 

আসলেই এই বিষয়গুলো যত পড়বো ততই মন নরম হবে।আসলেই কেয়ামত নিয়ে ভাবলে বেশ ভয় লাগে।আমরা মানুষরা যে হারে পাপ কাজ করি, আল্লাহ পাহাড় সমান গুনাহ মাফ করে দেয়,মাফ চাইলে।আল্লাহ তায়ালা মাফ না করলে আমাদের কোন উপায় থাকবে না।আল্লাহ আমাদের সবাইকে কাউসারে পানি খাওয়ার সুযোগ করে দেক।আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে ক্ষমা করে দেন , তাঁর নেক বান্দাদের দলে আমাদেরকে যেন শামিল করেন।ভালো লাগলো।ধন্যবাদ

 last year 

আপু আপনার লেখাগুলো পড়ে সত্যি অনেক ভালো লাগলো। আসলে এই লেখাগুলো যতই পড়া হয় ততই মনের মাঝে আলাদা রকমের ভয় তৈরি হয় এবং নিজেদের ধর্মীয় কাজগুলো করার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। আপু আপনার লেখাগুলো পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। জানা কথাগুলো বার বার জানতেও ভালো লাগে। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু অনেক গুরুত্বপূর্ণ এই কথাগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

মাঝের কয়েকটি পর্ব মিস করে ফেলেছি।
এই পর্বে কেয়ামতের বিবরণ দিয়েছেন। আজকের পর্ব পড়ার সাথে সাথে গায়ের লোমগুলো খাড়া হয়ে গেল। পাপীদের জন্য কেয়ামতের দিন কতটা কঠিন হবে সেটা তুলে ধরেছেন। আর যারা নেক বান্দা তারা আরশের তলে থাকবে। আল্লাহতালা যেন আমাদেরকে সেই দিনের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করে আমিন।

 last year 

আপু আপনার জীবন মৃত্যু ও পরকাল পর্ব -৬ খুব ভালো লিখেছেন।এই পর্বে কেয়ামত সম্পর্কে অনেক গুরুত্তপূর্ণ বিষয় শেয়ার করেছেন। এ সময় পৃথিবীর এ অবস্থা দেখে শিশুদের চুল পেকে সাদা হয়ে যাবে ভয়ে।ধন্যবাদ আপু সুন্দর হয়েছে ব্লগটি,শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 64573.45
ETH 3441.06
USDT 1.00
SBD 2.51