সাতকরা ফল
আসসালামুআলাইকুম ,
সবাই কেমন আছেন ? আশা করি ভালই আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের সামনে সাতকরা ফলের কিছু তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি ।কিছুদিন আগে আমার একটি পোস্ট ছিল সাতকরা দিয়ে মাংস রান্না ,এই পোস্টটিতে @rme দাদা একটি কমেন্ট করেছিলেন ,উনি বলেছিলেন সাতকরা দিয়ে একটি পরিচিতিমূলক পোস্ট করার জন্য , মূলত এ কারণেই আমার এই পোস্টটি করা।
পূর্বে সাতকরা সম্পর্কে আমার কোন ধারণা ছিল না, কারণ আমি ঢাকা বিভাগের আর আমার হাজব্যান্ড সিলেট বিভাগের।সাতকরার সঙ্গে সিলেট বিভাগের মানুষের একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। কারন শতকরা তাদের কাছে অন্যতম একটি প্রধান খাদ্য যা মাংসে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এটি দেখতে অনেকটা অরেঞ্জের মতো এবং টক হয় , এছাড়াও এর সুন্দর একটা ফ্লেভার আছে,এই ফ্লেভারের কারণেই সাতকরা বেশি প্রসিদ্ধ। এর বাকল বা খোসাকে ভালোভাবে শুকিয়ে ছয়-সাত মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করে রাখা যায় । মাংস রান্না করার সময় এই বাকলই ব্যবহার করা হয় আর রসালো অংশটুকু ফেলে দিতে হয়। সাধারণত ঈদের সময় এবং বিশেষ কোনো অনুষ্ঠানে এই সাতকরাটি বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে ।ঈদের সময় এর দাম খুব চড়া থাকে, বিশেষ করে কুরবানীর ঈদের সময়।
Copyright free image Link
সিলেটে আসার পর প্রথম যখন এর স্বাদ পেয়েছিলাম আজও ভুলতে পারেনি , তারপর থেকে আমি অভ্যস্ত হয়ে পড়লাম সাতকরা দিয়ে মাংস রান্নায়। আরেকটি কথা জানা অতি জরুরি, সঠিক পরিমান । পরিমাণমতো ব্যবহার না করলে এর কোন স্বাদই আপনি পাবেন না ,খুব কম যদি ব্যবহার করেন তাহলে কোন টেস্ট পাবেন না, আর যদি অতিরিক্ত হয়ে যায় তাহলে এটি তিতা হয়ে যাবে। আপনাদেরকে একটি ঘটনা বলি ,একবার আমি আমার এক মামিকে একটি সাতকরা দিয়েছিলাম ,মামি না জেনে রসালো অংশটুকু না ফেলে সবটুকু মাংসের মধ্যে দিয়ে দিয়েছিলেন, তখন মাংসের স্বাদ তিতা হয়ে গিয়েছিল। সুতরাং এর ব্যবহারের সঠিক পরিমাণ জানতে হবে। সাধারণত দুই কেজি মাংসে অর্ধেক পরিমাণ শতকরা ব্যবহার করলে ভাল হয়।
এ দুটি আমার ফটোগ্রাফি,আইফোন টেন এক্স ম্যাক্স হতে নিয়েছি।
এটি এখন বিদেশেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। প্রবাসে বসবাসকারী সিলেটবাসীর কাছে এর চাহিদা ব্যাপক। আপনারা জানলে অবাক হয়ে যাবেন ইংল্যান্ডের প্রায় বিশ হাজারের মতো ইন্ডিয়ান ও বাংলাদেশী রেস্টুরেন্ট রয়েছে যেখানে এই সাতকরার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এখানে তাদের সাতকরা দিয়ে তৈরি কারীটি মেনুর লিস্টে জায়গা দখল করে রয়েছে, যা এদেশের ইংলিশ পিপলদেরও অনেক পছন্দের। এ দেশে ব্যাপক চাহিদার কারণে বাংলাদেশে পর্যাপ্ত পরিমানে এর চাষাবাদ করা হয় এবং তা আমদানি করা হয় ইউরোপ আমেরিকার মত বিভিন্ন দেশে। সাধারণত শতকরা এদেশে ফ্রজেন হিসেবেই বেশি পাওয়া যায় ।আরেকটি কথা জানা দরকার ,এই সাতকরার প্রথম চাষাবাদ শুরু হয়েছিল ভারতের আসামে সেখান থেকে আস্তে আস্তে সিলেট, রাঙ্গামাটি ও কক্সবাজারের কিছু কিছু অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। এটি ছিল আমার আজকের আয়োজন।
আশা করি আমার এই আয়োজন আপনাদের ভাল লেগেছে।
ধন্যবাদ,
@tangera
Cc: @rme
আমি তানজিরা, ব্রিটিশ-বাংলাদেশী , বিবাহিতা, দুই সন্তানের জননী। বর্তমানে ইংল্যান্ডে বসবাস করছি।বাংলা আমার মাতৃভাষা, বাংলাকে ভালোবাসি , ভালোবাসি আমার জন্মভূমিকে ,ভালোবাসি মাটি ও মানুষকে ।বাগান করতে ভালোবাসি যা আমার একমাত্র প্রধান সখ,ভালোবাসি ভ্রমণ করতে ও রান্না করতে।
আমি তো প্রথমে ভাবলাম এটি কমলা লেবু।কিন্তু আপনার কথা শুনে এবং লেবুর কাটা অংশ দেখে ধারণা উড়ে গেছে।ধন্যবাদ আপু।
তোমাকেও অনেক ধন্যবাদ।
অনেক সুন্দর লিখেছেন এবং অনেক কিছু জানতে পারলাম। ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আমাদের এখানে এগুলোকে বাতাবি লেবু বলে।ধন্যবাদ আপু
একটি বাতাবি লেবু নয় বাতাবি লেবু ডিফারেন্ট, বাতাবি লেবু লবণ আর মরিচ দিয়ে মাখিয়ে খাওয়া যায় আর এটি ওভাবে খাওয়া যায় না, এটি মাংস দিয়ে খেতে খুবই মজা।
দেখে মনে হচ্ছিল বাতাবি লেবু।যায়হোক ধন্যবাদ দিদি।