শীতের কিছু অনুভূতি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
আসসালামুআলাইকুম,

বন্ধুরা সকলে কেমন আছেন? আশা করি ভালোই আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।আজকে আপনাদের সাথে আমার শীতের কিছু অনুভূতি শেয়ার করতে যাচ্ছি। চারিদিকে এখন শীতের আমেজ পরিলক্ষিত হচ্ছে।যদিও ইংল্যান্ডে বছরের অধিকাংশ সময়ই ঠান্ডা থাকে দুই তিন মাস ছাড়া,তাই এতটা ফিলিংস আসে না। বাংলাদেশে থাকতে ছোট বেলায় এই শীত দারুণভাবে উপভোগ করতাম। খুব ভালো লাগতো শীতের সময়, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে। গ্রাম অঞ্চলে সব সময় শীত বেশি পড়ে শহর অঞ্চলের তুলনায়। কিন্তু ইদানিং শহর অঞ্চলে শীত তেমন পড়েই না বিশেষ করে ঢাকায়।যাইহোক আজকে আপনাদের সাথে আমার শীতকালের উপভোগ্যময় কিছু স্মৃতি শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে। চলুন চলে যাওয়া যাক তাহলে মূলপর্বে।

আসলে শীত উপভোগ করতে হলে অবশ্যই আপনাকে গ্রামে যেতে হবে।জানিনা সেই সোনালী দিন গুলো এখন আছে কি নেই? আমার মনে আছে যখন শীতের ঋতুতে গ্রামের বাড়িতে যেতাম তখন অন্যরকম একটি আমেজ পরিলক্ষিত হতো প্রতিটি ঘরে ঘরে। ঘরে ঘরে পিঠা-পুলি বানানোর ধুম পড়ে যেত। আমি সবচেয়ে বেশি উপভোগ করতাম শীতের বেলায় গাঁছি খেজুর গাছ থেকে যে রস পেরে আনত তা দেখতে। আমাদের বাড়িতে অনেকগুলো খেজুর গাছ ছিল। সবগুলো গাছ থেকে রস পেরে এনে লাইন ধরে হাঁড়িগুলো সাজিয়ে রাখত। এরপর রস ভাগ করত যা দেখতে আমার খুব ভালো লাগত।৪/৫ হাঁড়ি করে রস ভাগে পেতাম। রস ছিল আমার খুবই পছন্দের, তাই অনেক ভোরে উঠে যেতাম রস খাওয়ার জন্য।কিন্তু যেদিন দেরি হতো সেদিন আর রস পাওয়া যেত না, কারন যারা গুড় বানাত তাদেরকে দিয়ে দেয়া হত কিছু নিজেদের খাওয়ার জন্য রেখে।কিন্ত সেগুলো এত মজা থাকত না, গাছ থেকে পেড়ে সাথে সাথে খাওয়ার মজাই ছিল আলাদা।

আরেকটি জিনিস আমি খুব উপভোগ করতাম। হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় গ্রামের মানুষেরা আগুন পোহাতে যা দেখতে খুবই ভালো লাগতো। মাঝখানে পাটকাঠি, খড় দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে চারি পাশে লোকজন আগুন পোহাতে থাকতো। এই দৃশ্যগুলো দেখা যেত অনেক ভোরবেলায় এবং সন্ধার সময়। জানিনা এখনও কী এভাবে লোকজন আগুন পোহায়? কুয়াশা ঘেরা সকাল তখন খুবই ভালো লাগত।আর হরেক রকমের শীতের পিঠগুলো খেতে দারুন লাগতো। তবে আমাদের ওখানে বেশি বানানো হতো ভাপা পিঠা, আর সেমাই পিঠা। এই দুটি পিঠা আমার খুবই পছন্দের। খেজুরের গুড় দিয়ে বানানো এই পিঠাগুলো সত্যি খুবই উপভোগ্য ছিল। আমাদের এখানে যদিও ভাপা পিঠা কিনতে পাওয়া যায় কিন্তু এই ধরনের স্বাদ পাওয়া যায় না। শীত আসলে খুব মিস করি ওই পিঠা গুলো।

04FB6880-07B6-48C7-BBC4-F646C07F139A.jpeg

আমার বড় মেয়ে ৪/৫ বছর আগের ফটোগ্রাফি

আর ইংল্যান্ডের শীতের আনন্দ হচ্ছে তুষারপাত।সবাই খুব উপভোগ করে। স্নো পড়লে প্রকৃতি সাদা চাদরে মুড়ে থাকে যা দেখতে খুবই চমৎকার লাগে।সবচেয়ে বেশি উপভোগ করে বাচ্চারা। তারা সকলে এ সময় স্নোম্যান , স্নোবল বানাতে ব্যস্ত থাকে স্নো দিয়ে। শীত তাদেরকে কাবু করতে পারেনা। তবে এই তিন চার বছর ধরে ইংল্যান্ডে স্নো খুব কম পড়ছে। আগের মত এত বেশি পড়ে না। সাধারণত ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে এ দেশে স্নো পড়ে।

যাইহোক শীত নিয়ে কিছু অনুভূতি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে।

এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন। পরবর্তীতে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।

ধন্যবাদ,

@tangera

1927F0BC-A81B-459C-A2F6-B603E4B2106C.png


👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :

👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :

VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png

Sort:  
 2 years ago 

বাংলাদেশের গ্রামে এখনো সেরকম শীত আছে কিনা বিষয়টি আমার জানা নেই। ইংল্যান্ডের শীতের আনন্দ তুষারপাতে। আর বিষয়টি অত্যন্ত চমৎকার বলে আমার মনে হচ্ছে। । স্নো পড়লে প্রকৃতির সাদা চাদরে মুড়ে থাকার দৃশ্যগুলি বই দেখেছিলাম। আর এসব দৃশ্য দেখে বাচ্চারা খুব আনন্দে মেতে উঠে। বাহ্ ইংল্যান্ডের শীত তো অনেক চমৎকার।

 2 years ago 

চমৎকার হলেও কিন্তু প্রচণ্ড ঠাণ্ডা পড়ে আপু। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

গ্রামেও কি এখন আর সেই আগের শীতের আমেজ রয়েছে। এখন আর আগুন পোহাতে খুব কম দেখা যায় লোকজনকে। পুরনো দিনের স্মৃতি মনে পড়ে গেল আপনার শীতের কাহিনী পড়ে। সকালবেলা খেজুরের রস পারা এবং সবাই মিলে সেই রস মুড়ি দিয়ে খাওয়া। কত বছর হয়েছে যে খেজুরের রস খাই না। পুরনো দিনের ফিরে যেতে খুব মন চায়। কিন্তু তা আর কখনোই সম্ভব নয়।

 2 years ago 

ইস মুড়ির কথা তো ভুলেই গিয়েছিলাম। মুড়ি দিয়ে রস খেতে যে দারুন লাগতো আমার। অনেক ধন্যবাদ তোমাকে।

 2 years ago 

গ্রামেও শীত এখন আর আগের মত নেই।তবে ইংল্যান্ডের শীত উপভোগ করার মতো ই দেখছি।😍😍 😍সুন্দর তুষারপাত এ শীতের অনুভূতি সত্যিই অসাধারণ আমার মনে হয়। চারিদিকে সাদা চাদরে মোড়ানো।আমার ই তো দেখে এত ভাল লাগলো, বাচ্চারা তো আরো বেশি মজা পাবে স্বাভাবিক। শেয়ার করে দেখার সুযোগ করে দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু। অনেক শুভকামনা রইলো আপনার আর আপনার পরিবারের জন্য। 🥰🥰🥰

 2 years ago 

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

জি আপু সবকিছু আগের মতোই আছে।কালের বিবর্তনে গ্রাম গুলোতে এখন শহরের হওয়া লাগলেও এখনও লোকজন পাটকাঠি দিয়ে আগুন ধরিয়ে আগুন পোহায়।তারপর গাছিরা এখনও খেজুরের রস দিয়ে গুড় বানায়।কিন্তু বর্তমান খেজুর গাছ কম দেখা যাওয়ার আগের মতো ভালো গুড় হয়তো পাওয়া যায়না।তবে এখনও এই প্রথা আছে।আপনাদের বাড়িতেও এভাবে খেজুরের রস এনে লাইন দিয়ে রাখা হতো সকালে উঠতে দেরি হলে আর সকালে খাওয়ার মতো মজা পেতেন না।আমাদের বাড়িতেও একই অবস্থা।জি আপু এটা কিন্তু ঠিক বলেছেন সেমাই আর ভাপা পিঠা বেশি হয় গ্রামে। আপু আপনার শীত নিয়ে অনুভূতি দারুন লেগেছে,শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে আপু।

 2 years ago 

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু মনোযোগ দিয়ে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য।

 2 years ago 

আমাদের এই গ্রামের দিকে তো শীতকালে অনেক কিছুই দেখা যায় যেমন পিঠাপুলি তৈরি করা সন্ধ্যা হলেই আগুন পোহাতে বসা অনেক কিছু। শীতকাল আমার খুবই প্রিয়। সত্যিই সকাল সকাল উঠে তাজা তাজা খেজুরের রস খাওয়ার মজাটাই ছিল আলাদা। আমাদের গ্রামের দিকে তো খেজুরের রস খুবই কম পাওয়া যায়। কিন্তু আমরা মাঝেমধ্যেই সকালবেলায় ভরে ভরে উঠে চলে যায় খেজুরের রস খাওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায়। ছোটবেলার ও অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে শীতকালে। যেগুলো এখনো মনে পড়েলে খুবই ভালো লাগে। সবাই মিলে একসাথে গরম গরম পিঠা খাওয়ার মজাটাই ছিল আলাদা। এবং খরকুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহানোর সেই মুহূর্ত খুবই ভালো ছিল। আপনি তো মনে হয় অনেক মজা করেছিলেন শীতকালে। আপনার এই পোস্ট করে ভীষণ ভালো লাগলো।

 2 years ago 

জ্বী ভাইয়া এগুলো সবই ছোটবেলার স্মৃতি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 
আপনার পোস্ট পড়ে কিছু মুহূর্তের জন্য সেই ছোটবেলার শীতের সকালে চলে গিয়েছিলাম । আপনার কথার সাথে আমি একমত শীত উপভোগ করতে হলে গ্রামে যেতে হবে। গ্রামের সকালের রোদ, মায়ের হাতের পিঠা, খেজুরের রস এইসব শহরে পাওয়া যায় না। লন্ডনের শীতের কিছু আমেজ আপনার পোস্ট পড়ে জানতে পারলাম। আপনার মেয়েকে সাদা স্নো এর উপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কিউট লাগছে। ধন্যবাদ আপু।
 2 years ago 

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

হুম শীত মানেই অনেক কিছু নতুন নতুন ৷ তবে বর্তমান সময়ে শীত গ্রামে বেশ পড়েছে ৷ তবে শহরে তেমন একটা নেই ৷ গ্রামের মানুষ সেই কুয়াশা ভরা সকালে ওঠে খেজুর গাছ থেকে রস পেরে এরপর গ্রামে গ্রামে বিক্রি ৷ আবার গুড় তৈরি ৷ আর বাড়িতে পিঠা বানানোর ধুম৷ সত্যি বলতে এই শীতের সময় টাতে বেশ চমৎকার অনুভুতি মনে জাগে ৷
ধন্যবাদ আপু শীতের কিছু বিষয় তুলে ধরবার জন্য ৷

 2 years ago 

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

আপনার পুরনো শীতের অভিজ্ঞতাটা পড়ে বেশ ভালো লাগলো। হ্যাঁ, সময়ের সাথে সাথে পরিস্থিতি, স্থান, কাল,পাত্র সবই পরিবর্তন হয়। তবুও থাকার মধ্যে থেকে যায় বেশ কিছু তরতাজা স্মৃতি।যেগুলো চাইলেও জং পড়ে না। আপনি এখন যে জায়গায় থাকেন,সেটা তো শীতেরই দেশ। বারো মাসই প্রায় ঠান্ডা থাকে। তবে শীতকালে যে স্নোফল হয় সেটা সত্যিই দুর্দান্ত।

 2 years ago 

জ্বী আপু, কিন্তু এখন আর আগের মত তেমন স্নো পরেনা। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.032
BTC 63683.34
ETH 2754.57
USDT 1.00
SBD 2.64