ইংল্যান্ডে বিভিন্ন ধরনের বেনিফিট সম্পর্কে কিছু ধারণা
আসসালামুআলাইকুম,
সবাই কেমন আছেন ? আশা করি ভালই আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।আজকে ইংল্যান্ডে বিভিন্ন ধরনের বেনিফিট সম্পর্কে একটি ছোট্ট ধারণা দিতে হাজির হয়ে গেলাম আপনাদের সাথে। এর আগে জিপি সম্পর্কে একটি ধারণা আপনাদের দিয়েছিলাম এবং ওই পর্বে বলেছিলাম চিকিৎসা ক্ষেত্র ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের বেনিফিট এদেশের জনগণ পেয়ে থাকেন, সেগুলা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি। আসলে ইউ,কে তে যারা থাকেন তারা সরকার থেকে বিভিন্ন ধরনের বেনিফিট পেয়ে থাকেন।এই দেশের সুযোগ-সুবিধা অন্যান্য দেশ থেকে অনেক বেশি, তাই সবাই ছুটে আসে ইউ,কে তে বসবাসের জন্য। ইংল্যান্ড একটি মাল্টিন্যাশনাল কান্ট্রি, তাই এখানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই মিলেমিশে বসবাস করে। আমার মনে হয় পৃথিবীর কোন দেশের জনগণই বাদ পড়েনি এ দেশে বসবাসের ক্ষেত্রে।যাই হোক চলুন চলে যাওয়া যাক তাহলে মূলপর্বে।
একটি দেশে শুধু ধনীরাই বসবাস করে না, ধনী দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত সকলেরই বসবাস থাকে প্রতিটি দেশে।কিন্তু এদেশের দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের লোকেরা সরকার থেকে বিভিন্ন ধরনের বেনিফিট পেয়ে থাকেন যে কারনে বাংলাদেশের মতো এত কষ্টে জীবন যাপন করে না তাঁরা।তাদের প্রতি সরকারের একটি সুনজর রয়েছে। ইনকামের একটি নির্দিষ্ট রেট রয়েছে, ওই রেট এর উপরে গেলে কেউ বেনিফিট পাবেনা।আর ওই রেটের মধ্যে থাকলে মান্থলি একটি নির্দিষ্ট অ্যামাউন্ট দেয়া হয় যা দ্বারা সহজেই সবাই চলতে পারে। যারা কোন কাজ করতে পারেন না বা শারীরিক প্রবলেম রয়েছে তারাও বিভিন্ন ধরনের বেনিফিট পেয়ে থাকেন। পরিবারের সদস্য সংখ্যার উপর ভিত্তি করে তারা বেনিফিট দিয়ে থাকেন। আবার পরিবারের কোনো সদস্য মানসিক প্রতিবন্ধী থাকলে তার জন্যও এক্সট্রা বেনিফিট দেয়া হয়। job এর ক্ষেত্রে ধরুন আজকে কারও job চলে গিয়েছে, সে যদি সাথে সাথে এপ্লাই করে তাহলে যেদিন থেকে তার job চলে গিয়েছে সেদিন থেকেই সে বেনিফিট পাবে। সে যদি পূর্ব থেকেই বেনিফিট পেয়ে থাকেন তবে job চলে যাওয়ার কারণে তার বেনিফিট তখন দ্বিগুণ হবে।
এবার আসছি চাইল্ড বেনিফিট নিয়ে।15 বছর বয়স পর্যন্ত এটি দেয়া হয়, অর্থাৎ বাচ্চাদের বয়স 16 বছরের কম - বা 16 থেকে 20 বছর বয়সী এবং তখনও যদি তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে থাকে তাহলে বেনিফিট পাবে। এটি জন্মের পর থেকেই দেয়া শুরু হয়। এক্ষেত্রে প্রথমে যে বাচ্চা জন্মগ্রহণ করে তাকে প্রতি সপ্তাহে 20 পাউন্ড করে দেয়া হয়, এরপর দ্বিতীয় বাচ্চা হলে তাকে দেওয়া হয় 16 পাউন্ড, এরপর ৩য় যে বাচ্চা হলে সে পাবে 13 পাউন্ড। এরপর পরবর্তীতে যে বাচ্চাগুলো হবে তারা কোন বেনিফিট পাবেনা। আগে এই সিস্টেম ছিলনা যতগুলো বাচ্চা হোক না কেন প্রত্যেকেই সমান করে অর্থাৎ বিশ পাউন্ড করে প্রতি সপ্তাহে পেত, কিন্তু এই সিস্টেম এখন উঠে গিয়েছে। প্রায় 12 বছর আগে এই সিস্টেম ছিল। আগেকার মায়েরা সন্তান জন্ম দিয়ে অনেক লাভবান হতো,এমনকি যখন বাচ্চা জন্ম দিত তখন প্রতিবার দুই হাজার পাউন্ড করে পেত প্রতিটি মা।
এবার আসছি pension এর বিষয়টি নিয়ে। নারী অথবা পুরুষ যে কারো বয়স 66 বছর হলে সপ্তাহে তারা 160 পাউন্ড করে পাবে অন্যান্য বেনিফিটের সাথে। আর যারা বেশি বেশি করে ট্যাক্স দিয়েছেন তাদের বেনিফিট আরো বেশি। সুতরাং এদেশে বৃদ্ধ বয়সেও কোন কোন প্রবলেম নেই টাকা পয়সার। যা দেওয়া হয় মোটামুটি ভালোই চলে যায়।আর যাদের দেখার কেউ নেই তাদেরকে নেওয়া হয় ওল্ড কেয়ারে। আমাদের দেশে ওই বৃদ্ধ মানুষ গুলোর অবস্থা একবার ভেবে দেখুন। যাদের অনেক টাকা-পয়সা ছিল তারাও কিন্তু বৃদ্ধ বয়সে পরের বোঝা হয়ে যায়, আর যাদের টাকা পয়সা নেই তাদের অবস্থা একবার ভাবুনতো? কত করুণ পরিণতি হয় তাদের ওই বয়সে।
যদি এই বেনিফিট গুলোর সিস্টেম পৃথিবীর সকল দেশেই থাকতো তাহলে কতই না ভালো হতো, তাই না? খুব কষ্ট লাগে যখন দেখি বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষগুলো টাকার অভাবে ভালোভাবে চিকিৎসা নিতে পারে না, টাকার অভাবে ওষুধ কিনতে পারে না, টাকার অভাবে ভালোভাবে দুবেলা-দুমুঠো ভাত খেতে পারেনা। খুব ইচ্ছে করে অসহায় ওই মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াতে, খুব ইচ্ছে করে তাদের মুখে হাসি ফুটাতে, কিন্তু আমার তো আর সেই সামর্থ্য নেই।😢
বন্ধুরা এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন।আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে।
পরবর্তীতে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।
ধন্যবাদ,
👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আপু কি আর বলব এই জন্যই ওই দেশটা এত উন্নত আর আমরা দিন দিন আরো অধপতনে যাচ্ছি। একটা দেশ তার নাগরিকদের জন্য কতটুকু সুযোগ সুবিধা দিতে পারছে তা থেকেই বোঝা যায় দেশটা কত উন্নত। সত্যি বলতে কি আমরা নিজেরাই ভালোনা, আমাদের হাড়ে মাংসে ঢুকে গেছে দূর্নিতী। তাই এ অবস্থা।
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া, জানিনা কবে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ দেখতে পাবো আমরা?অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ইংল্যান্ডের এই সিস্টেমগুলো সত্যি অনেক ভালো লাগলো। সবার প্রতি সমান নজর। আর আমাদের দেশের দিকে তাকানোর উপায় নেই আপু। সত্যি বলতে আমাদের দেশের গরীব মানুষ গুলোর এতটাও খারাপ অবস্থা হতো না যদি দুর্নীতির মান টা কমিয়ে আনা যেত। আমার মনে হয় দুর্নীতির জন্য এই অসহায় মানুষ গুলো আরো বেশি ভুগছে দিন দিন। বাইরের দেশের এই সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্যই হয়তো এই দেশ থেকে প্রতিনিয়ত সবাই বাইরে সেটেল হওয়ার চেষ্টা করছে। কি আর বলবো। লেখা গুলো পড়ে অনেক কিছু জানলাম আপু।
আমারও অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া কষ্ট করে আমার পোস্টটি পড়েছেন দেখে।
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া দুর্নীতিতে বাংলাদেশ একেবারে ভরে গিয়েছে। জানিনা কবে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ পাবো আমরা।
ছোট থেকে শুরু করে একদম বৃদ্ধ বয়স্ক পর্যন্ত সবার প্রতি বেনিফিট সিস্টেমটা চালু আছে বলেই দেশটিতে কোন অভাব অনটন নেই আর দেশের মানুষ কখনো না খেয়ে থাকে না এর জন্যই তারা উন্নত দেশ। আমাদের দেশে একজন লোকের প্রচুর পরিমাণে টাকা আছে আবার একজন তিন বেলা খাবার পাচ্ছে না কিন্তু সেখানে একটা নির্দিষ্ট এমাউন্ট আয় করার পরে পরবর্তীতে টাকাগুলো অসহায় বা অভাব অনটন যাদের চলছে তাদের মাঝে ভাগ করে দেওয়া হয় সিস্টেমটা ভালো লেগেছে।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া কষ্ট করে আমার পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য।
মাথা ঘুরে গেছে আপনার পোস্টে শুধু বেনিফিট আর পাউন্ড বাদে কিছুই তো নেই। এতোকিছু জানতামই না। সত্যি এগুলো আমাদের মতো স্বল্প আয়ের দেশের জনগণের জন্য স্বপ্ন। তবে সিস্টেম টা দারুণ। এটাই প্রমাণ হয় ঐদেশের সরকার জনগণ কে নিয়ে কতটা ভাবে।।
আমারও অনেক ভালো লাগলো আমার পোস্ট থেকে আপনি অনেক কিছু জানতে পেরেছেন, ধন্যবাদ আপনাকে।
ইংল্যান্ডের বেনিফিটের কথা এমনিতে শুনেছি কিন্তু এরকম ডিটেলসে কিছুই জানতাম না। এখানে দেখছি সব ধরনের বেনিফিট পাওয়া যায়। কারো দেখছি চাকরি চলে গেলেও বেনিফিট দিগুন হয়ে যায়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও অনেক ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়। যে সুবিধাটা এখন নেই সেটা আগে ছিল বেশ ভালই ছিল। বয়স্কদের জন্য আলাদা সুবিধা। আসলে ঠিকই বলেছেন প্রত্যেকটা দেশে যদি এই ধরনের সুবিধা পাওয়া যেত তাহলে মনে হয় মানুষ খুব ভালো থাকতো। আর আমাদের দেশের অবস্থা সেটা কি বলবো। বয়স্করা কতটা কষ্টে থাকে আর অন্যান্য মানুষের আর টাকা-পয়সার জন্য ঠিকভাবে বাচ্চা মানুষ করতে পারে না। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে আজকে অনেক কিছুই জানতে পারলাম।
আমারও অনেক ভালো লাগলো আপু আমার পোস্ট থেকে আপনি অনেক কিছু জানতে পেরেছেন, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ইউ কে তে অনেক ধরনের বেনিফিট পাওয়া যায় তা শুনেছি কিন্তু ডিটেইলস জানতাম না। আপনার পোস্টের মাধ্যমে আজ ইউ কের অনেক বেনিফিট সম্পর্কে জেনেছি। আমাদের দেশের মত যে সব দেশ আছে সেখানে জাতি ধর্ম বর্ণ এসবের কারণেই আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। কিন্তু ইউ কে তে এগুলো নেই জেনে ভাল লাগলো। ইউ কে তে ১৫ বছর পর্যন্ত একটি বাচ্চার খরচ দেয়, কারো জব চলে গেলে তাকে বেনিফিট দেয়া হয় এবং বৃদ্ধ হয়ে গেলে বিশেষ করে ৬৬ বছর পার হয়ে গেলে তাকেও বেনিফিট দেয়া হয়। এগুলা আসলে অনেক বড় ব্যাপার। এই ধরনের ফেসিলিটি থাকলে কোন দেশে আর সমস্যা থাকতো না। আপনি ঠিকই বলেছেন বাংলাদেশে অনেক মানুষ ঠিকভাবে চিকিৎসা করতে পারে না, বাচ্চাদের লালন পালন করতে পারেনা টাকার অভাবে। আশা করছি বাংলাদেশেও একসময় এই ধরনের ফেসিলিটি পাওয়া যাবে। ধন্যবাদ আপু।
এটি আমাদের সকলেরই কাম্য একদিন বাংলাদেশেও এ ধরনের ফ্যাসিলিটি আসবে। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে মনোযোগ সহকারে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য।
আপনার আজকের পোষ্টের মাধ্যমে ইংল্যান্ডের বেনিফিট সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম। আমাদের দেশে এইসব সুযোগ সুবিধার এক পারসেন্টও নেই । এজন্য সবাই বিদেশে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকে। আমার কাছে সব থেকে ভালো লেগেছে যে বৃদ্ধ বয়সের সুযোগ সুবিধা । কারণ একজন মানুষ সব থেকে বেশি অসহায় হয়ে যায় বৃদ্ধ বয়সে। পুরোপুরি সন্তানের উপর ডিপেন্ডেন্ট হয়ে যায়। যদি এই সন্তানরা মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে তার শেষ বয়সে আর দুঃখের সীমা থাকে না। যা আমাদের দেশে অহরহ দেখা যায়।
একদম ঠিক কথা বৃদ্ধ বয়সে মানুষ বেশি অসহায় থাকে, আর এ সময় যদি তার নিজের কিছু অর্থ হাতে থাকে তাহলে অনেক ভালোভাবেই তার দিনগুলো কেটে যায়।
ইংল্যান্ডের বেনিফিট গুলো সম্পর্কে আমি আগে থেকে অবগত ছিলাম জানি ওখানে এই ধরনের বেনিফিট গুলো এখনো এভেলেবেল রয়েছে। তবে পোস্টের শেষের দিকে পড়ে আমার মনটাও খারাপ হয়ে গেল আসলেই বাংলাদেশের মানুষ দরিদ্রের কারণে ঠিকমতো খেতেও পারে না চিকিৎসাও হতে পারেনা দিন শেষে অনেকে আবার চিকিৎসার অভাবে মারাও যায় 😢
এটাই সবচেয়ে কষ্টের ব্যাপার চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাওয়া। কিন্তু এ দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা সবার জন্যই ফ্রি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ইংল্যান্ডের এই সিস্টেমগুলো সত্যি আমার জানা ছিলনা। সবার প্রতি সমান নজর বেশ ভালো লাগলো। আপু আপনার পোস্টের মাধ্যমে আজ ইউ কের অনেক বেনিফিট সম্পর্কে জাননতে পারলাম।আপু সেই তুলনায় আমাদের দেশে এখনও অনেক পিছিয়ে। আপনার পোস্ট দেখে অজানা অনেক তথ্য জেনে অনেক ভালো লাগলো। এত সুন্দর তথ্যবহুল একটি পোস্ট করার জন্য, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।♥♥
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু মন্তব্যের জন্য।