দাদার দেয়া বিনা তেলে জলে মজার চিকেন রেসিপি কনটেস্ট
আসসালামুআলাইকুম,
বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করি ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
আজকে আমিও হাজির হয়ে গেলাম দাদার দেওয়া চমৎকার এই ইউনিক রেসিপি কনটেস্ট এ অংশগ্রহনের মাধ্যমে। দাদার দেয়া পোস্টটি দেখেই প্রথমে ভেবেছিলাম প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করব কিন্তু করবো করবো বলে আর সময় হচ্ছিল না।দাদার কাছ থেকে পরে জানতে পারলাম এখনও সময় আছে তাই দ্রুত অংশগ্রহণ করে ফেললাম।পানি ছাড়া চিকেন রান্না করা যায়, কিন্তু তেল ছাড়া কখনও কোন তরকারি রান্না করিনি।এছাড়া আলু, পিঁয়াজ, মরিচ, আদা, রসুন আগুনে পুড়িয়ে, তারপর আবার শিল পাটায় বেটে। ভাগ্যিস বাংলাদেশ থেকে শিলপাটা এনেছিলাম, তা না হলে এই অদ্ভুত কনটেস্টে অংশগ্রহণ করতে পারতাম না, চমৎকার এই অভিজ্ঞতা হতে বঞ্চিত হতাম। অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে এই রেসিপি থেকে।আগে আমার মা চাচিদেরকে দেখতাম আদা,রসুন, হলুদ, জিরা, পেঁয়াজ সবকিছুই শিল পাটায় বেটে রান্না করত।পাটায় বাটা যে এত কষ্টকর ব্যাপার ও সময় সাপেক্ষ তা আগে কখনও বুঝিনি।এইবার দিয়ে আমি মোট তিনবার পাটায় বেটেছি, তাও আবার আমার বাংলা ব্লগের কনটেস্টের জন্য দুইবার এবং এর আগেও একবার চিংড়ি শুটকি বেটেছিলাম। তবে এই রেসিপিটি করতে গিয়ে আমার ছোটবেলার মায়ের রান্নার সেই স্বাদটা ফিল করেছি কিছুটা।এই যুগে এখন আর কেও পাটায় বাটেনা।সবকিছু বেটে রান্না করলে আসলেই স্বাদটা অনেক মজার হয়।
প্রথমেই রেসিপিটা আমার কাছে অদ্ভুতই লেগেছিল, কারণ তেল ছাড়া কিভাবে চিকেন রান্না করা যায়।আর খেতে মনে হয় মোটেও স্বাদ হবেনা।কিন্তু রান্নার পরে খেয়ে দেখি খেতে তো দারুন স্বাদের। বাচ্চাদের নিয়ে ভয় পেয়েছিলাম, ভেবেছিলাম খেতে পারবে কিনা? কিন্তু তারাও খুব মজা করে খেয়েছে।আমি এখানে শুধুমাত্র চিকেনের লেগের পিসগুলো ব্যবহার করেছি।এই পিস গুলো অনেক বড় বড় ছিল তাই আমি এখানে ৭ পিস ব্যবহার করেছি। আর এখানে কারিপাতা ও লেমন গ্রাস পায়নি তাই দিতে পারিনি। আর ধনেপাতার কুচির কথা ভুলে গিয়েছিলাম।আমার পেঁয়াজ ও টমেটো সাইজগুলো অনেক বড় বড় ছিল তাই একটু কম ব্যবহার করেছি। আর এখানে আমার তারের জালি ছিল না তাই আমি ওভেনের গ্রিল টি ব্যবহার করেছি পোড়ানোর জন্য।এছাড়া বাকি সবকিছুই একদম দাদার নিয়মে করেছি।আশা করি আমার রেসিপিটি আপনাদের ভালো লাগবে।চলুন চলে যাওয়া যাক তাহলে মূল পর্বে।
চলুন দেখে নেয়া যাক রেসিপিটি তৈরি করতে আমাদের কি কি উপকরণ এবং কতটুকু পরিমান লাগবেঃ
উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|
চিকেন | দেড় কিলো |
টক দই | ৫০ গ্রাম |
গোল আলু | ৪ টি |
টমেটো | ২ টি |
পেঁয়াজ | ৩টি |
রসুন | ২ টি |
আদা | ১ টি মাঝারি খন্ড |
কাঁচা মরিচ | ৩ টি |
শুকনো মরিচ | ২ টি |
তেজপাতা | ৪ টি |
গোটা জিরা | দুই চিমটি |
জিরের গুঁড়ো | আধ চা চামচ |
হলুদ | দুই চা চামচ |
লবন | স্বাদ মতো |
দারচিনি, লবঙ্গ, গোলমরিচ, এলাচ | প্রত্যেকটা ৫-৬ টা করে গোটা |
কার্যপদ্ধতিঃ
![]() | ![]() |
---|
![]() | ![]() |
---|
প্রথমেই মাংসগুলো পানিতে ভিজিয়ে রেখেছি বরফ ছাড়ানোর জন্য।এরপর ভালোভাবে ধুয়ে পরিস্কার করে এর সাথে টক দই, জিরা, হলুদ এবং লবন মেখে ৪০ মিনিট মেরিনেট করে রেখে দিয়েছি।
![]() | ![]() |
---|
এরপর পেঁয়াজ গুলো কেটে নিয়েছি।
![]() | ![]() |
---|
এরপর আমার কুকারের উপর ওভেনের ট্রে বসিয়ে নিয়েছি। এরপর পেঁয়াজ কুচিগুলো বসিয়ে দিয়েছি ফ্রাই করার জন্য।
![]() | ![]() |
---|
![]() | ![]() |
---|
এরপর আলু গুলো কেটে পুড়িয়ে নিয়েছি।
![]() | ![]() |
---|
এরপর আদা, রসুন, কাঁচা মরিচ ও লালমরিচ পুড়িয়ে নিয়ে পাটায় নিয়ে নিয়েছি বেটে নেওয়ার জন্য।
![]() | ![]() |
---|
এরপর কিছু পেঁয়াজ রেখে সবগুলো পোড়া উপকরণ গুলো পাতায় বেটে নিয়েছি। এরপর গরম মসলাগুলো আধা ভাঙ্গা করে নিয়েছি।
![]() | ![]() |
---|
এরপর টমেটো দুটি কেটে নিয়েছি।
![]() | ![]() |
---|
এরপর কুকারে হাঁড়ি বসিয়ে তাতে মেরিনেট করা মাংসগুলো দিয়ে দিয়েছি।
![]() | ![]() |
---|
এরপর টমেটো ও লবণ দিয়ে মাখিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে অল্প আঁচে রেখে দিয়েছি।
![]() | ![]() |
---|
![]() | ![]() |
---|
এরপর চিকেন থেকে পানি বের হওয়া শুরু হলে তখন আলু ও বাকি পেঁয়াজ গুলো এবং বেটে নেওয়া উপকরণগুলো দিয়ে মাখিয়ে অল্প আঁচে রেখে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রেখেছি।
![]() | ![]() |
---|
এরই ফাঁকে জিরা গুলো ফ্রাই করে বেটে নিয়েছি।
![]() | ![]() |
---|
এরপর মাংসগুলো সিদ্ধ হয়ে গেলে রান্না প্রায় শেষের দিকে তখন আধাভাঙ্গা মসলাগুলো দিয়ে দিয়েছি।
![]() | ![]() |
---|
এরপর কিছুক্ষণ পরে বাটা জিরা গুড়াগুলো দিয়ে কয়েক মিনিট রেখে দিয়েছি।
ব্যাস হয়ে গেল আমার দাদার দেয়া বিনা তেলে জলে মজার চিকেন রেসিপি।
পরিবেশনের জন্য রেডি।
Photographer | @tangera |
---|---|
Device | I phone 13 Pro Max |
বন্ধুরা এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন।আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে।
পরবর্তীতে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।
ধন্যবাদ,
👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :
VOTE @bangla.witness as witness
OR
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
বুঝলাম আর দেখলাম, দাদার রেসিপিটি সবাই কতটা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছে এবং কতটা স্বাদের হয়েছে রেসিপিগুলো, সত্যি বেশ মুগ্ধ হৃদয়। মনে হচ্ছে আমিও ভুল করেছি রেসিপিটি ট্রাই না করে। কিন্তু চিন্তা হচ্ছে তৈল কোম্পানীগুলোর কি হবে? হা হা হা।
এখনও সময় আছে ভাইয়া বানিয়ে খেয়ে দেখেন, দেখবেন আর তেল কিনতে হবে না।
চেষ্টা করলে বিনা তেলে জলে কিন্তু ভালো রকমের চিকেন ফ্রাই করা সম্ভব। আজ আপনি আমাদের মাঝে এই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন। অংশগ্রহণ করে অসাধারণভাবে রান্নার কার্যক্রম করে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। যেখানে ওভেনের টের সহায়তায় কাজ চালিয়েছেন। অনেক সুন্দর ছিল আপনার রেসিপি প্রস্তুতের প্রক্রিয়া।
বিনা তেলে জলে মজার চিকেন রেসিপি দেখে সুস্বাদু মনে হচ্ছে, তাই আমরা খেতে ইচ্ছা করছে। এতো মজাদার রেসিপি ধাপে ধাপে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আপনার অংশগ্রহণ দেখে আমিও ভাবছিলাম যে আপনি পাটা কোথায় পেলেন। আসলেই ভাগ্য ভালো পাটা নিয়ে গিয়েছিলেন। তা না হলে তো এই রেসিপি তৈরি করতে পারতেন না। আমিও বাচ্চাদেরকে নিয়ে ভয়ে ছিলাম যে খেতে পারবে কিনা। কিন্তু বানানোর পর দেখলাম যে সবাই বেশ মজা করে খেয়েছে। আসলে অদ্ভুত
মজাদার রেসিপির কথা বলেছেন দাদা। আপনার রেসিপিটি দেখে মনে হচ্ছে খুব মজাদার হয়েছে।লেগ পিস আমার খুবই পছন্দের। এজন্য আরো বেশি লোভনীয় লাগছে আমার কাছে।
আসলে একেবারে অদ্ভুত একটা কনটেস্ট এর কথা দাদা আমাদেরকে বলেছেন। আসলে আমিও ভাবতেছিলাম এই রেসিপিটা তৈরি করলে কি রকম হবে খেতে। তবে আসলে এই রেসিপিটা তৈরি করার পরই বুঝে গিয়েছে এটা সত্যি অনেক বেশি সুস্বাদু। আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে পাটা না নিয়ে যেতেন তাহলে এই রেসিপিটা তৈরি করতে পারতেন না। ভাগ্যিস আপনি নিয়ে গিয়েছিলেন তাইতো অংশগ্রহণ করতে পেরেছেন। তবে বাচ্চারাও খুব মজা করে খেয়েছিল শুনে ভালো লাগলো।
বিনা তেলে ও জলে মজাদার রেসিপি তৈরি করেছেন। এই চিকেন রেসিপি দেখে যেন খেতে ইচ্ছা করছে, আর এত সুস্বাদু এবং মজাদার ইউনিক রেসিপি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপু আপনাকে অভিনন্দন জানাই এই তেল আর জল ছাড়া চিকেন রান্নায় অংশগ্রহণ করার জন্য। আপনার মতো আমিও কারি পাতা আর লেমন গ্রাস পাইনি।তবে ধনিয়া পাতা কুচি দিয়েছি।আপনার মতো আমিও ভয়ে ছিলাম বাচ্চারা খেতে পারবে কিনা কিন্তু টেবিলে দেয়ার সাথে সাথে আমার ছেলে খেয়ে বলল, দারুন মজা হয়েছে।যদিও আমি তেল আর পানি ছাড়া করেছি কিছুই বলিনি।ছেলে বলল,বারবিকিউর মতো টেস্ট। যাই হোক আপনি ও সফল হলেন।রেসিপি দারুন হয়েছে। আর মেয়েরাও মজা করে খেয়েছে।ধন্যবাদ আপু।আসলে তেল ছাড়া খাওয়া গেলে খুব ভালোই হতো।শুভকামনা রইলো আপু।
দাদার দেওয়া রেসিপি বিনা তেলে জলে খুব সুন্দর করে মুরগির মাংস রান্না করেছেন আপু।মনে হচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে।আসলে এটি খুবই ইউনিক এবং সাস্থ্য সম্মত একটি রেসিপি।আপনাকে ধন্যবাদ আপু এইভাবে তৈরি করে রেসিপিটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপু আপনিও এই ইউনিক এবং অদ্ভুত রেসিপি টা ট্রাই করেছেন জেনে ভালো লাগলো। আপনি তো দেখছি বাংলাদেশ থেকে এই পাটা নিয়ে নিয়েছিলেন। না হলে তো রেসিপিটা তৈরি করতে একেবারেই পারতেন না। তবে আপনার বাচ্চারাও তাহলে খুব মজা করে খেয়েছিল বিনা তেলে জলে চিকেন রেসিপি টা। এমনিতেই এই রেসিপিটা দেখেই বুঝতে পারছি অনেক বেশি মজাদার এবং সুস্বাদু হয়েছিল। তবে যাই হোক মজা করে খেতে পেরেছিলেন এটা জেনে ভালো লেগেছে।
সত্যি আপু এখন আর কেউ শিল পাটায় মশলা বাটতে চায় না। তাই তো এই রেসিপির মাধ্যমে সবাই আবারও নিজের শৈশব স্মৃতিতে ফিরে গিয়েছিল। আপু আপনি বাংলাদেশ থেকে শিল পাটা নিয়ে গিয়েছিলেন বলেই এই দারুন রেসিপি তৈরি করতে পেরেছেন। সত্যি আপু চিকেনের রেসিপি দারুন হয়েছে।