বই পড়া কেন জরুরি?
নমস্কার বন্ধুরা,
আশা করি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।ছোটোবেলা থেকেই আমি বই পড়তে খুব ভালোবাসি ।পড়ার বইয়ের পাশাপাশি প্রচুর গল্পের বই পড়েছি ।সত্যি বলতে এখন যত দিন যাচ্ছে বই পড়ার প্রতি ভালোবাসা থাকলেও সেই সময়টা হয়ে ওঠে না। আবার সময় হয়ে ওঠেনা বললেও ভুল হবে। হয়তো ওই সময়টা ফোন ঘাঁটছি। কিছুদিন যাবত একটা জিনিস খুব মনে হচ্ছে যে ফোন ঘাটতে আমরা যে সময়টা নিই ওই সময়টা যদি আমরা কোনো বই পড়ি তাহলে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি ।এবং মন অনেক ভালো থাকে তাতে তাই চেষ্টা করছি যতটা ফোন থেকে দূরে থাকা যায় এবং বই পড়ে যেন সেই সময়টাকে কাজে লাগানো যায় ।তাই আজ আপনাদের সঙ্গে বই পড়ার কিছু উপকারিতা আলোচনা করে তুলে ধরলাম ।আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
মানব সভ্যতার শুরু থেকে জ্ঞান অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে বই মানুষের জীবনে অমূল্য অবদান রেখে চলেছে। বই পড়ার মাধ্যমে মানুষ নতুন জ্ঞান, দৃষ্টিভঙ্গি এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করে। বর্তমান প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বে বই পড়ার গুরুত্ব অনেকের কাছে কমে গেলেও গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, বই পড়ার অভ্যাস আমাদের মস্তিষ্কের বিকাশ, সামাজিক জীবন এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।
মস্তিষ্কের বিকাশ :
বই পড়া আমাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ায় এবং মানসিক শার্পনেস বজায় রাখতে সাহায্য করে। নিউরোসায়েন্সের গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত বই পড়া আমাদের মস্তিষ্কের নিউরোন সংযোগকে শক্তিশালী করে এবং এর ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ে। একটি গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, যারা নিয়মিত বই পড়েন, তাদের আলঝাইমার রোগের ঝুঁকি কমে যায়। এছাড়া, বই পড়া মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশকে উদ্দীপ্ত করে, যার ফলে চিন্তাশক্তি ও সমস্যার সমাধানের দক্ষতা বাড়ে।
মানসিক স্বাস্থ্য ও মানসিক প্রশান্তি:
বই পড়া মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মানসিক চাপ বা উদ্বেগ কমাতে বই পড়া অত্যন্ত কার্যকর। বিশেষ করে সাহিত্যিক বই পড়ার মাধ্যমে মানুষ নিজেকে ভিন্ন জগতে নিয়ে যেতে পারে, যা মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়। যুক্তরাজ্যের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত বই পড়েন, তাদের মানসিক চাপ ৬৮% কমে যায়। এছাড়া, বই পড়ার মাধ্যমে ডিপ্রেশন ও উদ্বেগ কমানোর জন্য এক ধরণের "বিবলিওথেরাপি" এর ব্যবহারও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
ভাষাগত দক্ষতা ও জ্ঞান বৃদ্ধি:
বই পড়া ভাষাগত দক্ষতা বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। বই পড়ার মাধ্যমে আমরা নতুন শব্দ, বাক্যগঠন ও ভাষার ব্যবহার সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করি। এর ফলে মৌখিক ও লিখিত যোগাযোগ দক্ষতা উন্নত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ছোট বেলা থেকেই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলে, তাদের ভাষাগত জ্ঞান ও শিক্ষাগত পারফরম্যান্স অনেক ভালো হয়। তাছাড়া, বই পড়ার মাধ্যমে বৈশ্বিক জ্ঞানও বৃদ্ধি পায়, যা আমাদের বিভিন্ন সংস্কৃতি, ইতিহাস ও বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার সম্পর্কে জ্ঞান দেয়।
সমালোচনামূলক চিন্তাশক্তি ও কল্পনাশক্তি বৃদ্ধি:
বই পড়া আমাদের সমালোচনামূলক চিন্তাশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। একটি ভালো বই পড়ার সময় আমরা নানা ধরনের তথ্য ও ধারণার মুখোমুখি হই, যার ফলে আমাদের চিন্তাধারা গভীর হয়। তাছাড়া, উপন্যাস বা কল্পকাহিনী পড়ার সময় আমাদের কল্পনাশক্তিও বৃদ্ধি পায়, যা সৃজনশীলতার বিকাশে সহায়ক। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, যারা নিয়মিত বই পড়েন, তারা সমস্যার সমাধানে সৃজনশীল সমাধান খুঁজে পেতে সক্ষম হন।
সামাজিক সংযোগ ও সহানুভূতি বৃদ্ধি:
বই পড়ার মাধ্যমে আমরা ভিন্ন ভিন্ন মানুষের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতির সঙ্গে পরিচিত হই। এটি আমাদের মধ্যে সহানুভূতি বৃদ্ধি করে এবং সামাজিক সংযোগে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সামাজিক মনোবিজ্ঞানের গবেষণায় দেখা গেছে, গল্প বা উপন্যাস পড়ার সময় পাঠকরা চরিত্রগুলির সঙ্গে মানসিকভাবে সংযুক্ত হন, যা তাদের বাস্তব জীবনে সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়।
বই পড়ার অভ্যাস আমাদের জীবনে বহুমুখী প্রভাব ফেলে। এটি শুধু আমাদের মস্তিষ্কের বিকাশ ও জ্ঞান বৃদ্ধি করে না, বরং আমাদের মানসিক ও সামাজিক জীবনের উন্নতি ঘটায়। আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর যুগে বই পড়ার অভ্যাস কমে গেলেও, এর গুরুত্ব কমেনি। তাই আমাদের জীবনের প্রতিটি স্তরে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
এই প্রশ্নটার সম্মুখীন আমাকেও হতে হয়। অনেকেই বলে বই পড়ে কী লাভ। অধিকাংশ সময় আমি তাদের সাথে তর্কে যায় না। চমৎকার লিখেছেন আপু। ভালো একজন লেখকের বই পড়া মানে তার সাথে কথা বলা। চমৎকার লিখেছেন আপনি। খুবই ভালো লাগল।
বই পড়ার সবগুলো পয়েন্ট একদম যুক্তি সঙ্গত দিদিভাই, আমি এটা নিজেই অনুধাবন করতে পারি।
ভালো লাগলো লেখাটি।
আসলে দিনদিন আমরা মোবাইলের প্রতি চরমভাবে আসক্ত হয়ে যাচ্ছি। যে সময়টা আমরা মোবাইলের পিছনে ব্যয় করি,সেই সময়টা যদি বইয়ের পিছনে ব্যয় করতাম, তাহলে সেটা আমাদের জন্য সবদিক দিয়েই ভালো হতো। যাইহোক আপনি বই পড়ার উপকারিতা সম্পর্কে দারুণ আলোচনা করেছেন। পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
বই পড়া সত্যি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমরা অনেক সময় বই পড়ার প্রতি আগ্রহী হই না। দিদি আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। এখন থেকে চেষ্টা করবো বই পড়ার প্রতি আগ্রহী হওয়ার।