পিরামিড রহস্য
নমস্কার বন্ধুরা,
আশা করি সবাই ভালো আছেন।সুস্থ আছেন।আজ আমি আপনাদের সঙ্গে পিরামিড এর রহস্য এর প্রতি কিছুটা আলোকপাত করবো।
মিশরের পিরামিড তৈরি নিয়ে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে একাধিক গবেষণা,তত্ত্ব ও কল্পনা করা হয়েছে।পিরামিডের স্থাপত্যশৈলী ও নির্মাণ প্রযুক্তি এখনো মানুষের কাছে বিস্ময়ের বিষয়।পিরামিড তৈরির বিষয়ে কিছু সাধারণ ধারণা যেমন শ্রমিকদের বিশাল সংখ্যা,উন্নত গাণিতিক দক্ষতা এবং কঠোর পরিশ্রমের কথা বলা হলেও এর পিছনের গোপন রহস্যের কিছু ভিন্ন এবং তুলনামূলকভাবে কম প্রচলিত দিক নিয়ে আমরা একদম unique আলোচনার দিকে যাই।
পিরামিডগুলোর বিশেষ আকৃতি এবং অবস্থান শুধু মাটির উপর ভিত্তি করেই নয় বরং মহাজাগতিক সূক্ষ্ম হিসাবের ভিত্তিতেও তৈরি হতে পারে।বলা হয়, গিজার বৃহত্তম পিরামিডগুলোর অবস্থান পৃথিবীর ভূমধ্যরেখার সাথে খুবই ঘনিষ্ঠভাবে মিলে যায়।এছাড়াও, এই পিরামিডগুলোর একদিকে খেয়াল করলে অরিয়ন নক্ষত্রমণ্ডলের বেল্টের তিনটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের সাথে এর অবস্থানের মিল লক্ষ্য করা যায়।অনেক গবেষক মনে করেন,মিশরীয়রা পিরামিডকে মহাজাগতিক শক্তি সংগ্রহের কেন্দ্র হিসেবে দেখত এবং এই আধ্যাত্মিক দিকের কারণে পিরামিড তৈরি করা হয়েছিল।
পিরামিড তৈরির জন্য মিশরীয়রা যেভাবে বিশালাকার পাথরখণ্ড স্থানান্তর করেছিল তা এখনও একটি রহস্য।একটি কম প্রচলিত তত্ত্ব অনুযায়ী প্রাচীন মিশরীয়রা সোনিক (ধ্বনির) শক্তি ব্যবহার করেছিল পাথর সরানোর জন্য। কিছু গবেষকের ধারণা,মিশরীয়রা এমন ধরনের ধ্বনি বা কম্পন তৈরি করতে পারত যা পাথরের ভরকে সাময়িকভাবে হ্রাস করে তুলতো ফলে পাথরগুলো সহজেই স্থানান্তর করা যেত।যদিও এই ধারণাটি অত্যন্ত উদ্ভট শোনাতে পারে তবে প্রাচীন সভ্যতায় সোনিক শক্তির ব্যবহার নিয়ে কিছু আভাস পাওয়া গেছে।
পিরামিডের আকৃতি এবং এর প্রতিটি কোণের নির্ভুলতা বিস্ময়কর।একটি তত্ত্ব অনুসারে, পিরামিডের আকৃতি ভূগোল এবং মহাবিশ্বের কিছু প্রাকৃতিক শক্তির সাথে সম্পর্কিত। পিরামিডের আকৃতি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল যা একটি বিশেষ শক্তিকে কেন্দ্রীভূত করে এবং ভেতরে থাকা ফারাওদের আত্মাকে আকাশে পাঠানোর প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে। পিরামিডের আকৃতিকে শুধু প্রতীকী হিসেবে নয়, বরং এটি একটি বিশেষ জ্যামিতিক আকৃতি যা শক্তি এবং সুরক্ষা প্রদানে সক্ষম বলে ধারণা করা হয়।
পিরামিডগুলোর চমৎকার অবস্থান এবং এর চারপাশের পরিবেশের উপর এর প্রভাব নিয়ে এক ধরনের অপটিক্যাল ইলিউশনও যুক্ত করা হয়।মিশরীয় স্থপতিরা পিরামিডের উপরিভাগে এমনভাবে পাথর সাজিয়েছিল যে সূর্যালোক পড়ার সময় একটি বিশেষ ধরনের আলোর প্রতিফলন তৈরি হয়।এতে মনে হয় পিরামিড উজ্জ্বল হচ্ছে বা আকাশের সাথে মিশে যাচ্ছে। এই ধারণা মিশরীয় ধর্মের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে,যেখানে ফারাওদের দেবতা বলে মনে করা হতো এবং তাদের পরলোকগমনকে সূর্য দেবতা রা'র সাথে একত্রিত হওয়া হিসেবে দেখা হতো।
অনেক সময় পিরামিড তৈরিতে নিখরচায় শ্রমিকদের ধারণা করা হয়,তবে নতুন গবেষণা ইঙ্গিত দেয় যে শ্রমিকরা বিশেষ প্রশিক্ষিত এবং পেশাদার ছিল।মিশরীয় সমাজের অভ্যন্তরে শ্রমিকদের জন্য বিশেষ কর্মব্যবস্থা ছিল যেখানে তাদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য, বাসস্থান এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হয়েছিল।এমনকি পিরামিড তৈরির সময়কালীন শ্রমিকদের হাড়ের বিশ্লেষণও দেখায় যে তাদের নিয়মিত শারীরিক চর্চা এবং চিকিৎসা সুবিধা দেওয়া হতো।এ থেকেও বোঝা যায় যে মিশরীয়রা একটি সুগঠিত এবং সংগঠিত কর্মপ্রক্রিয়া চালু করেছিল যা পিরামিড তৈরির জন্য অপরিহার্য ছিল।
একটি ভিন্ন তত্ত্ব অনুসারে,পিরামিডগুলি শুধুমাত্র সমাধিক্ষেত্র নয় বরং বৈজ্ঞানিক গবেষণার স্থান হিসেবেও ব্যবহৃত হতে পারে।মিশরীয়রা তাদের উন্নত জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং গাণিতিক জ্ঞান ব্যবহার করে পিরামিডগুলোকে এমনভাবে ডিজাইন করেছিল যা বিভিন্ন মহাজাগতিক এবং প্রাকৃতিক ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যবহার করা যেত।কিছু গবেষক মনে করেন, পিরামিডগুলোতে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি রাখা হতো যা মহাকাশ এবং পৃথিবীর মধ্যে শক্তির সংযোগ তৈরি করতে সক্ষম ছিল।
মিশরের পিরামিডের নির্মাণ রহস্য এখনো মানবজাতির ইতিহাসে সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এবং অনন্য ঘটনা।এর সাথে জড়িত আধ্যাত্মিকতা, বৈজ্ঞানিক ক্ষমতা এবং প্রাচীন প্রযুক্তির মিশ্রণ প্রমাণ করে যে পিরামিড শুধুমাত্র সমাধিক্ষেত্র নয় বরং প্রাচীন মিশরের অসাধারণ স্থাপত্য ও মননশীলতার প্রতীক।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
অনেকের মতে তো পিরামিড মানুষের না এলিয়েনের তৈরি। তবে আমি এটা কখনোই বিশ্বাস করি না। হ্যা ঐসময় কোন উন্নত টেকনোলজি ছিল না কিন্তু এটা মানুষের তৈরি। ঐসময়ের মানুষের দক্ষতা সত্যি প্রশংসনীয়। যদিও এটা এখনও পৃথিবীর মানুষের কাছে একটা রহস্য। দারুণ লিখেছেন আপনি দিদি।
পিরামিড নিয়ে রহস্যের শেষ নেই। পিরামিড নিয়ে দীর্ঘদিন বৈজ্ঞানিক গবেষণাও চলেছে। তবে এখনও কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারে না,পিরামিড মানুষের তৈরি নাকি এলিয়েনের তৈরি। যাইহোক মিশরের পিরামিড সরাসরি দেখার ইচ্ছে রয়েছে। বেশ ভালো লাগলো পোস্টটি পড়ে। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ বৌদি।
বেশ সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন আজকের লেখাটি দিদি, সত্যি বলতে পিরামিডের আকৃতি এবং এর পাথরগুলোর অবস্থান নিয়ে অনেক তত্ব প্রচারিত হলেও এখনো এটা একটা রহস্য রয়ে গেছে। অনেক ধন্যবাদ