মজার একটি ঘটনা।। //১০% পেআউট লাজুক খ্যাঁক-কে

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমস্কার বন্ধুরা,


আশা করি সবাই ভালো আছেন।সুস্থ আছেন।আজ আমি আপনাদের সঙ্গে একটি মজার ঘটনা ভাগ করে নিচ্ছি। আশা করি সকলের ভালো লাগবে।


আজ যে গল্পটা করবো সেটা হচ্ছে ২০২০ সালে করোনার সময়। আপনারা সবাই জানেন ওই সময় সকলেই ঘরবন্দী অবস্থায় ছিল। মার্চ থেকে জুন-জুলাই পর্যন্ত কিন্তু যতটা না বেরোলেই নয় ততটুকুই সবাই বের হয়েছিল। কিন্তু জুলাই আগস্ট এর পর থেকে আস্তে আস্তে মানুষ যথেষ্ট পরিমাণে প্রটেকশন নিয়ে বের হয়েছিল। আমাদের এই কলকাতায় অক্টোবরে মিলিনিয়াম পার্কে গঙ্গাবক্ষে ভ্রমণের জন্য একটি ক্রুজ পরিষেবা চালিত হয়েছিল। এখন হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ তাই কিছু নতুন শুরু হলেই সেই খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে আর তার মধ্যে যদি সেটা খুব ইন্টারেস্টিংকিছু হয় তাহলে তো কোনো কথাই নেই। আমরা তখন সবাই জানতাম যে ক্রুজ পরিষেবা চালু হচ্ছে গঙ্গাবক্ষে। মজার ঘটনা ঠিক এখানেই ক্রুজ বলতে আমরা বুঝি যে অনেক বড় রিলাক্স করার জায়গা থাকবে, যেখানে খুব সুন্দর সাজানো থাকবে ,খাওয়া দাওয়ার ভালো ব্যাবস্থা থাকবে , ঠিক সেই সময় নেটে ক্রুজের একটি ফেক ছবি ভাইরাল হয়ে যায় ,যেটা দেখে সবাই বিশাল উৎসাহী হয়ে গেছিলাম যে সেখানে যাওয়ার জন্য । সবার মুখে মুখে তখন একটাই কথা ছিল যে কবে এই ক্রুজে সবাই ঘুরতে যাবে! যেহেতু আমরা এই পরিষেবা প্রথম চালিত হওয়ার ডেটটা জানতাম আর সেটা হচ্ছে অক্টোবরের ১ তারিখ । তাই প্রথম দিনই এই ক্রুজে যাবো বলে ৫ টায় পৌঁছে গিয়ে ছিলাম।আর এই ক্রুজ সেদিন চলেছিল চারটে থেকে সাড়ে পাঁচটা আবার ছটা থেকে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত। আর আমি পাঁচটায় পৌছে আর ওই জায়গার অবস্থা দেখে আমার চক্ষু তো তখন চড়ক গাছ ।ওখানে গিয়ে দেখছি লোকে এই ক্রুজ চড়ার জন্য দুপুর বারোটা দিয়ে লাইন দিয়েছে টিকিট নেওয়ার জন্য। কত দূর-দূরান্ত থেকে যে লোক এসেছিল তা আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না। তো বুঝতেই পারছেন আমার সেই দিন যে কোনোভাবেই চান্স হবার নয় ।তাও আমি হাল ছাড়িনি, ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিয়ে আমরা বন্ধুরা চারটে টিকিট সেদিন কেটে নিয়েছিলাম । প্রত্যেকটি টিকিটের মূল্য ছিল 39 টাকা। আর আরেকদিকে টিকিট ও ক্লোজ করেনি । যেই আসছিল তাকেই টিকিট বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু এটা কেউ বলছিল না যে কোনভাবেই আর সম্ভব নয়।

WhatsApp Image 2022-09-20 at 12.12.29 AM.jpeg

এই হলো সেই ভাইরাল হওয়া ছবি🥺


যাই হোক আমি তো সেই পাঁচটা থেকে অপেক্ষা করছি ছটার ক্রুজে উঠবো বলে । ব্যাস যেই ছটা বেজেছে সব লোক একেবারে হুড়মুড়িয়ে ক্রুজে উঠার জন্য চলে এসেছে। তাই জন্য সেদিন আমাদের জায়গা হলো না। তাই আমি পরের দিনের জন্য আবার টিকিট কেটে রেখে দিয়েছিলাম যাতে টিকিটের জন্য কোনো সমস্যা না হয়🤭 । আমার মত এরকম সেদিন অনেকেই করেছিল।


WhatsApp Image 2022-09-19 at 11.57.57 PM (1).jpeg

আমি তারপরের দিন এসেছিলাম অর্থাৎ ২ অক্টোবর।সেইদিন আমাদের ছুটি থাকে গান্ধীজীর জন্ম দিবস উপলক্ষে । ওইদিন আমরা ছটার সময় ক্রুজে উঠেছিলাম । সবচেয়ে অবাক করার বিষয় যেটা আমরা ক্রুজ বলে চিনে ছিলাম বা এত নেটে ছবি দেখেছিলাম আসল ক্রুজ ছিল একটা লঞ্চকে বেলুন দিয়ে সাজিয়ে ক্রুজ বলে চালিয়েছিল। আমরা তো সবাই একেবারে দেখে হতভাগ যে কি ছবি দেখেছিলাম আর কোথায় উঠছি। যাই হোক কি করা যাবে উঠে দেখলাম অনেকগুলো চেয়ার পাতা রয়েছে বসার জন্য। যেখানে বসে গঙ্গার দৃশ্য উপভোগ করা যাবে। তার সাথে রবীন্দ্র সংগীত চলছে । এবং চা , কফির ব্যবস্থাও ছিল। এই ক্রুজ সারদা মায়ের ঘাট থেকে ভূতনাথ মন্দির,নিমতলা ঘাট, বিবাদীবাগ ঘাট ও প্রিনসেপ ঘাটের উপর দিয়ে গিয়েছিল। সত্যি কথা বলতে প্রথম ৩০ টা মিনিট খুব ভালো লাগলেও তারপরের এক ঘন্টা খুব একটা ভালো লাগছিল না ।খুব বোর হয়ে যাচ্ছিলাম ।কারণ যেভাবে উৎসাহিত করা হয়েছিল সেই রকম কোনো কিছুই ছিল না। আসলেই এখানে যদি অনেকে মিলে আসা যায় তাহলে হয়তো ভালো লাগবে। কিন্তু যেহেতু আমরা মাত্র দু তিনজন বন্ধু এসেছিলাম ।তাই আমার কাছে সেদিন অতটা ভালো লাগেনি । কিন্তু হ্যাঁ পরে আবার আসার ইচ্ছে ছিল এখনো পর্যন্ত আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি ।তাছাড়াও এই পরিষেবার লক্ষ্য ছিল মানুষকে গঙ্গাবক্ষে ভ্রমণের সুযোগ করে দেওয়া ।তার সাথে গঙ্গার দু'পাশে ছড়িয়ে থাকা ঐতিহাসিক স্থাপত্য আর ইতিহাস সকলের সামনে তুলে ধরা এই ভ্রমণের মাধ্যমে।

WhatsApp Image 2022-09-19 at 11.57.58 PM (1).jpeg

WhatsApp Image 2022-09-19 at 11.57.59 PM (2).jpeg

WhatsApp Image 2022-09-19 at 11.57.59 PM.jpeg

WhatsApp Image 2022-09-19 at 11.57.58 PM.jpeg

WhatsApp Image 2022-09-19 at 11.58.00 PM (1).jpeg

WhatsApp Image 2022-09-20 at 12.03.24 AM.jpeg

WhatsApp Image 2022-09-20 at 12.11.11 AM (1).jpeg

আরেকটা কথা যেটা না বললেই নয়, এই ক্রুজে চড়তে মনে হয় কলকাতার কোনো মানুষ বাকি ছিল না।আর হ্যাঁ যে ছবি আমরা দেখে এসেছিলাম তা থেকে সম্পূর্ণই আলাদা অভিজ্ঞতা হয়েছিল। কিছু কিছু ঘটনা এমন ঘটলে সারা জীবন মনের মধ্যে থেকেই যায়। সব মিলিয়ে সেদিন মোটামুটি ভালোই মজা হয়েছিল।

ধন্যবাদ

Sort:  
 2 years ago 

একটা লঞ্চকে শুধুমাত্র বেলুন দিয়ে সাজিয়ে ক্রুজ বানিয়ে দিল তারা🤔😇 । দিদি ব্যাপারটা অনলাইনে কোন প্রোডাক্ট দেখে কেনার মত অবস্থা হয়ে গেল। অনলাইনে দেখতে এক রকম, বাড়ি আসার পরে অন্যরকম হয়ে যায়। যাই হোক তারপরও তারা মানুষকে গঙ্গাবক্ষে ভ্রমণের সুযোগ করে দিয়েছে সেই জন্য তাদের একটু ধন্যবাদ জানানো উচিত।

 2 years ago 

বর্তমানে অনলাইনের যুগ টাই এমন।দেখা যায় পাহাড় কিন্তু বের হয় ইদুর।এবার গেলে অনেক বন্ধুবান্ধুব নিয়ে যাবেন দিদি।বন্ধুরা থাকলে নরক কেও স্বর্গ মনে হয়। বন্ধুদের নিয়ে চা খেতে খেতে গঙ্গার বুকে আড্ডা দিতে খারাপ লাগবে না।

 2 years ago 

যেকোনো জিনিস আপো যেরকম দেখায় আসলে সেরকম থাকে না। এডভারটাইসমেন্ট এর জন্য যেকোন জিনিস খুব সুন্দর এবং আকর্ষণীয় দেখায়। তবে এটা আপনি একদম ঠিক বলেছেন আপু কোথাও ঘুরতে গেলে অনেক লোকজন মনে করতে গেলে খুব ভালো লাগে। গঙ্গার ঘাট প্লাস রবীন্দ্র সংগীত প্লাস চা কফি, মনে হয় প্রথমে খুব সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন। যাইহোক আপু পরে আবার গেলে কিন্তু অবশ্যই আমাদের সাথে শেয়ার করবেন। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

দিদি নামটা দেখে সবাই অবাক হয়ে গেছিলো। তাই আর কেউ যাচাই করেনি। ক্রুজের নামটা দেখে তো বুঝা যায় না যে আসলে সেটা কি। সবাই বুঝছে একরকম বাস্তবে হলো আরেক রকম। যায় হোক সুন্দর একটি অভিজ্ঞতা হলো। ধন্যবাদ দিদি।

 2 years ago 

একটি লঞ্চকে বেলুন দিয়ে সাজিয়ে ক্রুজ বানানোর বিষয়টা জানতে পেরে আমি সত্যিই বিস্মিত হয়ে গেলাম। আপু লঞ্চে বসে রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশনের বিষয়টি সত্যিই অনেক দারুন ছিল। পাশাপাশি এরকম মুহুর্তে চা ও কফি মানের আনন্দে গঙ্গার সৌন্দর্য উপভোগ করার মজাই আলাদা।

 2 years ago 

দিদি বিরক্ত লাগলেও রিভার ক্রুজের ফটোগ্রাফি গুলো কিন্তু অসাধারণ হয়েছে। রাতের বেলা ঝলমলে রঙ্গিন ময় হয়েছে। আসলে ভ্রমণ কিন্তু আনন্দময় হয়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাময়িক বিচ্যুতি ঘটে। আপনার এই অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

ক্রুজ কতৃপক্ষ আপনাদের সঙ্গে মাইন্ড গেম খেলেছে দিদি । তবে এমন অভিজ্ঞতা থাকা ভালো , যাইহোক তাও গঙ্গার বুকে লঞ্চে ঘোরাঘুরি করেছেন এইটাও কিন্তু ভিন্ন রকম একটা অনুভূতি দিয়েছে দিদি ।

 2 years ago 

হা হা হা হা অনেকটাই বোকা বনে গিয়েছিলেন, মানে দেখালো লাক্স সাবান কিন্তু দিলো হুইল সাবান। বেশ মজা পেয়েছি, তবে চেয়ারে হলেও বসে বসে যে গঙ্গার দৃশ্যগুলো উপভোগ করতে পেরেছিলেন সেটাই বা কম কিসে। স্কুল জীবনে এই রকম ভ্রমনে খুব যেতাম কিন্তু বড় হওয়ার পর আর সুযোগই পাচ্ছি না সংসারের চাপে, আস্তে করে বললাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 59631.75
ETH 2622.60
USDT 1.00
SBD 2.41