'ভাইফোঁটায় কাটানো আনন্দের মুহূর্ত '। //১০% পেআউট লাজুক খ্যাঁক-কে
নমস্কার বন্ধুরা,
উৎসব প্রিয় বাঙালি দের কাছে বিশেষ আকর্ষণীয় উৎসব হলো ভাইফোঁটা ভাতৃদ্বিতীয়া। সাধারণত বাঙালি হিন্দু বিশুদ্ধ পঞ্জিকা অনুযায়ী কালীপুজোর ঠিক ২দিন পরেই কার্তিক মাসের শুক্লা তিথিতে উৎসব পালিত হয়।
ভাইফোঁটা হলো ভাই বোনের স্নেহ ভালোবাসা ও আত্মিক প্রাণের উৎসব। হিন্দুরা বিশ্বাস করে ভাই এর জীবনকাল বৃদ্ধিতে বোনের প্রার্থনা অনেক কাজে লাগে, শুধু হিন্দুরা নয় আমার মনে হয় প্রত্যেক ভাই-বোনই এই দিনটাকে বিশেষ ভাবে উদযাপন করে। এক এক জায়গায় ভাইফোঁটা এক একনামে পরিচিত। এই লোকপার্বণের অন্তঃস্থলে রয়েছে এক পৌরাণিক গল্প বিবস্বান ও সরন্য পুত্র যম ও কন্যা যমুনা ছিল জমজ ভাই বোন। এই দুই ভাই ও বোনের মধ্যে ছিল গভীর স্নেহ-ভালবাসা ও নিবিড় সম্প্রীতির বন্ধন।যম স্বয়ং মৃত্যুর দেবতা। যেখানে তিনি হলেন সকলের মরণ-বাঁচন নির্ধারক, সেই তাঁর অমরত্ব কামনায় যমুনা কার্তিক মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে যমের কপালে ফোঁটা দিয়েছিলেন। সেই কাজই' যম দ্বিতীয়া' নামে খ্যাত। পঞ্জিকাতে যমদ্বিতীয়া কথা উল্লেখ আছে। পরবর্তীকালে মর্তলোকে বোনেরা যমুনার প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করেই এই দিনটিতে ভাইয়ের পরম আয়ু বৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনা করে ফোঁটা দিয়ে থাকে।
এবার আসি আমার কথায়। খুব ব্যস্ততার মধ্যেই আমার ভাইফোঁটার দিনটি কেটে যায়। এই দিনটাতে একসঙ্গে বসে একা অপরকে ফোটা দেওয়া, এক সঙ্গে সারাদিন এলাহি খাওয়া-দাওয়া,আড্ডা দেওয়া,হৈহুল্লোড়, ছবি তোলা এই নিয়েই কি করে যে সুন্দরভাবে এই দিনটা চলে যায় বুঝতেই পারিনা।
যেহেতু ভাইফোঁটা বলে কথা সেহেতু সকাল সকালই ঘুম ভেঙ্গে যায় আমার। তাই সকাল সকাল উঠে গেলাম। সকালে উঠে তাড়াতাড়ি স্নান করে রেডি হয়ে ভাইফোঁটা দিতে বসে গেলাম।আগেই বলেছিলাম আমরা যৌথ পরিবারে থাকি। আমরা পাঁচ বোন আর দুই ভাই। সত্যি কথা বলতে আমার যে বড় ভাই সে আমার থেকে ৭ বছরের ছোট এবং যে ছোট ভাই সে আমার থেকে ১৩ বছরের ছোটো। অনেকটাই ছোটো। তাই জন্যই ছোটো ভাইটা খুব দুষ্টু,সারাক্ষণ দুষ্টুবুদ্ধি মাথার মধ্যে চলতে থাকে।কিন্তু হ্যাঁ সব কথা শোনে।এই দুটো ভাই আমাদের সবারই খুব আদরের এবং সবথেকে ভালোবাসার। এই ভাইফোটাতে যখন আমাদের পাঁচ বোনের সাথে ভাইরা না খেয়ে বসে থাকে,ফোঁটা নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করে তখন একটা আলাদাই আবেগ,অনুভূতি কাজ করে।যাই হোক তাই জন্য তাড়াতাড়ি ফোটা দিতে বসে গেলাম।
ভাইকে আসনে বসিয়ে শুরু হয় ফোঁটা দেওয়ার অনুষ্ঠান।কাঁসা বা পিতলের থালায় ধান-দূর্বা, বাড়িতে আমপাতায় পারা কাজল, চন্দন সাজিয়ে রাখা হয় ভাইয়ের সামনে।সঙ্গে থাকে ঘিয়ের প্রদীপ ও শঙ্খ।আর মুখ মিষ্টি করার জন্য থাকে ভাইয়ের পছন্দ সমস্ত মিষ্টিও।
এবার ভাইকে কপালে চন্দনের ফোটা দেওয়ার সময় ছড়া কেটে বললাম -
'ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা
যম দুয়ারে পড়লো কাঁটা
যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা।
আমি দেই আমার ভাইকে ফোঁটা'।
এই ছড়া কেটে কপালে তিনবার ফোটা দিয়ে দিলাম,চন্দনের ফোটা দিয়ে, শাখ বাজিয়ে ধান -দূর্বা মাথায় দিয়ে আশীর্বাদ করে মিষ্টি খাইয়ে দিলাম।
আমার ভাইফোঁটা দেওয়ার পর সমস্ত বোনেরা ভাইফোঁটা দিয়ে দিলো।
এইবারই তো হল আসল জিনিস ভাই বোনের উপহার দেওয়া নেওয়া।ভীষণ মজা হয় এই সময়।
এইভাবে দুই ভাইকে ফোঁটা দিয়ে ভাইফোঁটা পর্ব আপাতত আমার বাড়িতে শেষ হলো।
এবার হল মামার বাড়িতে যাওয়ার পালা আবার তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে বেরিয়ে গেলাম।মামার বাড়ি থেকে আমার বাড়ির দূরত্ব ২০মিনিটের।তাই তাড়াতাড়ি পৌঁছে ও গেলাম।আবার এখানে আমার তিন দাদাকে ফোঁটা দিতে হয়। আলাদাই ভালোবাসা আমার একইভাবে তিন দাদাকে একসাথে ফটো দিয়ে দিলাম।
এবার গিফটটা অনলাইন মাধ্যমেই হয়ে গেছে। তাই আর দেখাতে পারলাম না।ও হ্যাঁ তার সাথে একটা চকলেট আছে যেটা একটা দাদা দিয়েছে ওটাই আপনাদের সাথে ভাগ করে নিলাম।
এবার হলো দুপুরের খাওয়া-দাওয়া পর্ব।ভাইফোঁটা দিতে দিতে অনেক বেলা হয়ে গেছিল খাওয়া-দাওয়া করতে।স্পেশাল দিনের স্পেশাল খাবার বলে কথা।একটু অপেক্ষা করতে ও ভালো লাগে।বসে পড়লাম সব ভাইবোন না একসাথে খাওয়া দাওয়ার জন্য।
এত খাবার খাওয়াটাটাই খুব চাপের।যাইহোক মজা করলাম 🤭।খাওয়া-দাওয়া শেষ করে এবার শুরু হলো দাদা দিদিদের সাথে আড্ডা দেওয়া, ফটো তোলা।
কিছুক্ষণ পর এক দাদা বললো যে কালি পুজোতে কিছু বাজি রেখে দিয়েছিল ভাইফোঁটার জন্য। বিকেল হতেই সেগুলো জ্বালালাম।বাজির মধ্যে ছিল চারটে তুবড়ি আর দুটো তারাবাজি এগুলো দেখার মত ছিল। সেই ভিডিওটা আমি আপনাদের সাথে ভাগ করে নিলাম।
আপনার ভাইফোঁটার দিনটি খুব জাঁকজমকভাবে করেছেন। অনেক আনন্দ ফুর্তির করেছেন এবং অনেক সুন্দর করে সাজিয়েছেন। এবং অনেক সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে বর্ণনা করেছেন। তবে আপনার ভাইফোঁটার মুহূর্তগুলি খুবই সুন্দর ছিল। ফটোগ্রাফি গুলো অনেক ভাল হয়েছে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি।
অনেক ধন্যবাদ দাদা আপনাকে।
দিদি যৌথ পরিবারে থাকলে যে কোন উৎসবের মজা টা যেন আরো কয়েক গুণ বেড়ে যায়। খুব ভালো লাগলো এত গুলো ভাইবোন সবাই এক সাথে মিলে ফোটা দিয়েছেন। এই দিনটার মহত্ত্ব সত্যি অন্য রকম পুরো। সারা বছরের অপেক্ষায় থাকা এই খুনসুটির জন্য। আর সবাই এক সাথে যে খেতে বসেছেন এই মুহূর্ত টা আমার কাছে দারুন লেগেছে। ভালো থাকবেন দিদি। ভালো থাকুক ভালোবাসার এই সম্পর্ক গুলো ❤️
ঠিকই বলেছেন আপনি কোনো অনুষ্ঠান হলে তো কোনো কথাই নেই। আর একসাথে খাওয়ার আনন্দটাই আলাদা। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাই ফোঁটার দিনটি খুবই জাঁকজমক ভাবে পালন করেছেন। যৌথ পরিবার হলে অনেক মজা হয়।আপনার পোস্ট দেখে খুব ভালো লাগলো এত ভাই বোন সবাই মিলে ফোঁটা দিয়েছেন আপনারা। আবার সবাই মিলে একসঙ্গে খেতে বসেছে এই আনন্দটাই আলাদা। আপনার ভাইফোঁটার এত সুন্দর মুহূর্ত টি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ দিদি।
হ্যাঁ দিদি যৌথ পরিবারে সত্যি ভীষণ মজা হয়। অনেক ধন্যবাদ দিদি আপনাকে।
দিদি আপনি অনেক চমৎকার ভাবে ভাই ফোটার দিনটি কাটিয়েছেন।আপনার পোস্টটি পড়ে আর ফটোগ্রাফি গুলো দেখে মনে হচ্ছে।পরিবারের সাথে অনেক জাঁকজমক ভাবে সময়টুকু কাটিয়েছেন।ভাই ফোঁটার সুন্দর মুহূর্তটুকু শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ দিদি।
হ্যাঁ প্রত্যেক বছর এই ভাইফোঁটার দিনটি আমি খুব সুন্দর ভাবেই সময়টা কাটাই।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
অসাধারণ মুহুর্তে কাটিয়েছেন, দেখেই বোঝা যাচ্ছে দিদি।
ভাইফোটার শুভেচ্ছা, শুভকামনা রইলো এতো সুন্দর একটা মোমেন্ট শেয়ার করার জন্য।