তারাপীঠের তারা মন্দিরে পর্ব -৪

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

নমস্কার বন্ধুরা,


আশা করি সবাই ভালো আছেন।সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের সঙ্গে তারাপীঠের শেষ পর্ব অর্থাৎ চতুর্থ পর্ব ভাগ করে নিচ্ছি ।এই পর্বে আমি তারাপীঠের পারিপার্শ্বিক আরো দুটো মন্দির এবং তারাপীঠ থেকে বাড়ি ফেরার কিছু ঘটনা আপনাদের সাথে ভাগ করে নেবো।আশা করি এই পর্বটি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


আমরা তারাপীঠে ভারতসেবা আশ্রম থেকে বেরিয়ে এসে তারাপীঠের একটি ইসকনের মন্দিরে গিয়েছিলাম।আগেই বলেছিলাম যে মন্দির থেকে পুজো দিয়ে এসে যখন বেরোনোর কথা ছিল তখন বেরোতে পারিনি কারণ আমরা সবাই খুবই ক্লান্ত ছিলাম তবুও ঘুরতে এসে আনন্দ করবো বলে সবাই মিলে বেরিয়ে ছিলাম।তাতে করে দেড় ঘন্টা লেট হয়ে গেছিল, বেরোনোর কথা নটার সময় ছিল কিন্তু বেরোতে বেরোতে এগারোটা বেজে গেছিল। যাই হোক অনেকটাই টাইম হয়ে গেছিল কিছু কিছু মন্দির আছে যে মন্দিরগুলো বারোটার সময় বন্ধ রাখে ঠাকুরের ভোগ দেওয়ার জন্য, তো সেরকমই যখন দুটো মন্দির দেখে আমরা ওই ইসকনের মন্দিরে গিয়েছিলাম। ওই ইসকনের মন্দির বাইরে থেকে দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি ভিতর থেকেও ভীষণ সুন্দর ।কিন্তু ইসকনের মন্দিরেরর ভিতরে ঢোকার পর মন্দির কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল। সেহেতু আমরা ভিতরে ঢুকলেও সেভাবে কিছু দেখতে পারিনি ।কিন্তু বাইরে থেকে যতটা দেখেছি আমাদের সবার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আর ভীষণ সাজানো এবং সুন্দর একটি মন্দির ।তার সাথে এখানে থাকার ব্যবস্থাও রয়েছে ।


WhatsApp Image 2022-11-30 at 11.34.47 PM.jpeg

WhatsApp Image 2022-11-30 at 11.34.48 PM.jpeg

WhatsApp Image 2022-11-30 at 11.34.50 PM.jpeg

WhatsApp Image 2022-11-30 at 11.34.49 PM (2).jpeg

WhatsApp Image 2022-11-30 at 11.34.48 PM (1).jpeg

WhatsApp Image 2022-11-30 at 11.34.49 PM (1).jpeg

WhatsApp Image 2022-11-30 at 11.34.49 PM.jpeg

এরপর এখানে কিছুক্ষণ থেকে বাদবাকি আরও দুটো মন্দির বাকি ছিল সেটা দেখার জন্য গাড়িতে উঠে গেলাম। সেটা একটু দূরে ছিল যাই হোক এরপর যে মন্দিরে গিয়েছিলাম সেই মন্দিরটিতে ফোন একেবারেই এলাউ ছিল না তাই ফোন বাইরে রেখে তারপর মন্দিরে প্রবেশ করতে হয়েছিল সেই কারণে সেখানকার কোনো ছবি আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারলাম না। যাই হোক মন্দিরটি নবনির্মিত ছিল তাই সুন্দর ছিল বেশ আর অনেকটা জায়গা জুড়ে ছিল। তাই খুব কম সময়ের মধ্যে সেখান থেকে আমরা বেরিয়ে গেলাম ততক্ষণে আমাদের মোটামুটি সব জায়গা দেখা কমপ্লিট হয়ে গেছিল ।শুধু একটাই মন্দির বাকি ছিল সেটা ছিল নলাটেশ্বরী মন্দির ।আর এই মন্দির খুব খুব জাগ্রত। এই মন্দিরটি অন্যান্য মন্দিরের থেকে একটু দূরেই ছিল । তাই ওই মন্দিরে পৌঁছাতে পৌঁছাতে দুটো বেজে গেছিল। ৫১ পীঠের অন্যতম বীরভূমের নলহাটির নলাটেশ্বরী মন্দির। কথিত আছে, এখানে সতীর গলার নলি পড়েছিল। নলাটেশ্বরী থেকেই এলাকার নাম নলহাটি। নলহাটির মাঝে রয়েছে ছোট্ট জঙ্গলাবৃত অনুচ্চ এক টিলা। তারই এক প্রান্তে দেবী নলাটেশ্বরীর অধিষ্ঠান। এরপর কাকীমনি আর মা এই মন্দিরে গিয়ে পুজো দিল ।আর আমি নিচেই বসেছিলাম ।কারণ আমার তখন ভীষণ ঘুম পাচ্ছিল। তবুও সবার পূজা দেওয়ার পর আমি একবার গিয়ে ঠাকুর দর্শন করে এসেছিলাম ।এবং আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। এখানেই মোটামুটি তারাপীঠের সাইডসিন গুলো দেখার পর্ব শেষ করলাম । খুব সুন্দর লেগেছিল প্রত্যেকটি জায়গা।

WhatsApp Image 2022-11-30 at 11.39.00 PM.jpeg

WhatsApp Image 2022-11-30 at 11.36.37 PM.jpeg

এরপর ওখান থেকে বেরিয়ে আমাদের হোটেলের কাছাকাছি জায়গা থেকে দুপুর বেলা খাওয়া-দাওয়া করে ৪ টের দিকে হোটেলে ঢুকে আর কোনো দিকে না তাকিয়ে ঘুম দিলাম ।ঘুম থেকে উঠতে উঠতে মোটামুটি আটটা বেজে গিয়েছিল আর আমাদের ফেরার ট্রেন ছিল রাত তিনটের সময় ,তাই জন্য মোটামুটি আমরা সাড়ে বারোটার দিকে হোটেল ছেড়ে দিই। এবং সেখান থেকে স্টেশন পৌছাতে পৌঁছাতে প্রায় 1:30 টা ।ওখানে গিয়ে প্রথমে আবার সবাই একসাথে চা খেলাম যেহেতু আমাদের হাতে দেড় ঘন্টা টাইম ছিল তাই আমরা ওয়েটিং রুমেই ওয়েট করেছিলাম দেড় ঘন্টা।

WhatsApp Image 2022-11-30 at 11.34.52 PM.jpeg

WhatsApp Image 2022-11-30 at 11.34.52 PM (1).jpeg

WhatsApp Image 2022-11-30 at 11.34.53 PM.jpeg


এবার একটা মজার ঘটনা বলি আমরা যে ট্রেনটাতে ফিরবো সেটা ছিল পদাতিক ডাউন। ২:৫৫ তে হঠাৎ করে অ্যানাউন্সমেন্ট হয়েছে যে পদাতিক আপ ট্রেন আসছে তখন ঠিকমতো বুঝতে না পারায় অন্য একটি স্টেশনে চলে যাই সেই ট্রেনটা ধরার জন্য। খুব অদ্ভুতভাবে যখন ট্রেনটা আসে ওই ট্রেনে উঠে নিজেদের সিট খুঁজতে শুরু করি যে সিট নাম্বার গুলো আমাদের ছিল সেগুলোতে দেখি অন্য লোক আছে ,সবচেয়ে মজার ব্যাপার ট্রেনে ওঠার সাথে সাথেই টিটি আমাদের আমার ডাকতে থাকে যে টিকিট দেখানোর জন্য আর টিকিট দেখানোর সাথে সাথেই তৎক্ষণাৎ নেমে যেতে বলেএবং বলে আমরা ভুল ট্রেনে উঠেছি ।মানে সে যে কি পরিস্থিতি তা বলে বোঝাতে পারবো না পরে জানতে পারি ট্রেনটি কুচবিহার এর দিকে যাচ্ছিল , ওই আমরা যদি ওই সময় ট্রেন থেকে নামতে না পারতাম তাহলে ডাইরেক্ট ট্রেনটা কুচবিহার থামতো ।আর ট্রেন থেকে সবার নামার সাথে সাথেই এক সেকেন্ডের মধ্যে ট্রেন ছেড়ে দেয় ।যাই হোক সেই যাত্রায় বেঁচে গিয়েছিলাম শুধুমাত্র ভুল শুনেছিলাম বলে এরকম একটা পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে ছিলাম। এরপর ঠিকঠাক ট্রেনে উঠে সকাল সাতটার দিকে নেমে গেলাম এবং আটটার মধ্যে বাড়ি পৌঁছে গেলাম । একদিনের জার্নি আমাদের খুব সুন্দর হয়েছিল এবং খুব মজাও করেছিলাম আর সবশেষে দারুন একটা অভিজ্ঞতা হয়েছিল। এখানেই শেষ করলাম তারাপীঠের পর্বটি।

WhatsApp Image 2022-11-30 at 11.34.53 PM (1).jpeg


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


ধন্যবাদ।সবাই ভালো থাকবেন।

BoC- linet.png
-cover copy.png

|| Community Page | Discord Group ||


image.png

Sort:  
 2 years ago (edited)

আপনার পোস্টগুলো পড়ে ভালো লাগে, বিশেষ করে আপনি খুব সুন্দর ভাবে যেকোন বিষয় সম্পর্কে অনেক কিছুই বলেন। যেমন আজকে নলহাটির নলাটেশ্বরী মন্দির নামকরণ এবং সম্পর্কে ও অনেক কিছু জানতে পেরেছি। তবে এটা শুনে খুবই খারাপ লাগলো আপনারা প্রথমেই ভুল শুনে অন্য একটা ট্রেনে উঠে গিয়েছেন। যদি তৎক্ষণাৎ টিকিট চেক করা না হতো তাহলে তো ভুল জায়গায় চলে যেতেন। সত্যিই অনেক খারাপ একটি পরিস্থিতি হয়ে গেছিল। তারপর যে ভালোয় ভালোয় ফিরতে পেরেছেন এটাই ভালো লাগলো। সত্যি অনেক সুন্দর একটা জার্নি ছিল। আপনার পরিবারের সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল আপু।

 2 years ago 

তারাপীঠের মন্দিরে খুবই সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করেছেন। মন্দিরের ফটো দেখে গুলো দেখে খুবই ভালো লাগলো। আজকের পোস্টটি খুবই সুন্দরভাবে সাজিয়ে ধরেছেন,বর্ণনা ছিল অসাধারণ

 2 years ago 

তারাপীঠের মন্দিরে খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন দেখে অনেক ভাল লাগলো দিদি।পরিবারের সবাইকে নিয়ে কোথাও গেলে ভালো ই লাগে।তবে ফেরার পথে ভুল ট্রেনে উঠে কি একটা ঝামেলা 🤔 যাই হোক নেমে পরেছিলেন তাই রক্ষে।ধন্যবাদ দিদি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আমি তো ভেবেছিলাম আগেরটাই তারাপীঠের শেষ পর্ব ছিল।যাক বাবা অন্ততপক্ষে কোচবিহার যেতে হয়নি। নাহলে আরো সমস্যা হয়ে যেতো।এই ভুল অনেকেরই হয়।আপ ডাউন অনেক সময় না চেক করেই আমরা ভুল ট্রেনে উঠে পড়ি। একই কান্ড আমার একবার ফ্লাইট এর ক্ষেত্রে হচ্ছিল একা ফিরতে গেলে যা হয় প্রথমবার আর কি তারপর থেকে আর ফ্লাইটে যদি কোন অসুবিধা হয়না। যদি কলকাতায় আসার ফ্লাইট এর বদলে আমেদাবাদ যাওয়ার ফ্লাইটে উঠে পড়তাম কি কেলেঙ্কারিটা হত!যদিও তার আগেই আমাকে আটকে দিতে ওরা তাও ভয় লাগে একা একা সেই প্রথমবার তো এই অভিজ্ঞতাটা পড়ে আমারটা মনে পড়ে গেল।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 67753.34
ETH 3502.65
USDT 1.00
SBD 2.82