ঐতিহ্যের পুজোয় বাগবাজার সার্বজনীন। //১০% পেআউট লাজুক খ্যাঁক-কে

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমস্কার বন্ধুরা,


আশা করি সবাই ভালো আছেন।সুস্থ আছেন।আজ আমি আপনাদের সঙ্গে বাগবাজার সার্বজনীন দুর্গাপূজার কিছু মুহুর্ত ভাগ করে নিচ্ছি। আশা করি সকলের ভালো লাগবে।


বাগবাজার সার্বজনীনের পুজোর সূচনা ঘটে ১৯১৯ সালে৷ এই পুজো শুরু হয়েছিলো স্থানীয় নেবুবাগান লেন ও বাগবাজার স্ট্রিটের মোড়ে ৫৫ নম্বর বাগবাজার স্ট্রিটে । তখন এই বারোয়ারী পূজার নাম ছিল ‘নেবুবাগান বারোয়ারি দুর্গা পুজো’। এখানেই কয়েক বছর পুজো হয়। ১৯২৪ সালে পুজোটি সরে যায় বাগবাজার স্ট্রিট ও পশুপতি বোস লেনের মোড়ে। ১৯৩০ সালে বিখ্যাত আইনজীবী তথা তৎকালীন কলকাতা পুরসভার অল্ডারম্য‌ান দুর্গাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচেষ্টায় বাগবাজার সার্বজনীন দুর্গাপূজাটি বর্তমান চেহারা পায়। নাম হয় ‘বাগবাজার সার্বজনীন দুর্গোৎসব ও প্রদর্শনী’। তারই উদ্য‌োগে বাগবাজার সার্বজনীন দুর্গাপুজো উঠে আসে কর্পোরেশনের মাঠে। তৎকালীন মেয়র সুভাষচন্দ্র বসু সানন্দে এই অনুমতি দেন। ১৯৩৬ সালে এই পুজোর সভাপতি হয়েছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বহু প্রথিতযশা ব্যক্তিদের নাম বাগবাজারের পুজোর সঙ্গে জড়িয়েছে। যাঁদের মধ্যে ছিলেন আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, স্যার হরিশঙ্কর পাল ছিলেন অন্যতম।

WhatsApp Image 2022-10-15 at 11.39.12 PM.jpeg

WhatsApp Image 2022-10-15 at 11.39.10 PM (1).jpeg


উত্তর কলকাতায় অনেক বড় বড় পূজা প্যান্ডেল হয় ।এমন অনেক জায়গা আছে যেখানে থিমের উপর ভিত্তি করে পুজো হয় । দক্ষিণ কলকাতায় যেমন দুর্গাপুজো উপলক্ষে ভিড় হয় তেমনিই উত্তর কলকাতায় ভিড় হয়। বলতে গেলে উত্তর কলকাতাতেই পুজো মন্ডপ গুলোতে সবচেয়ে বেশি ভিড় থাকে। যাইহোক উত্তর কলকাতায় অবস্থিত বাগবাজারের মা দুর্গা প্রতিমা খুবই বিখ্যাত।ওখানকার পুজো সাবেকি ভাবে করা হয় ।বাগবাজারের দেবীমূর্তির অমন মোহনীয় ডাকের সাজ, সাবেকি একচালার মুন্সিয়ানা আর দেবীর বরাভয়দাত্রী দুই চোখ না দেখলে যেন কোনো বাঙালিরই পুজো দেখা সম্পূর্ণ হয় না। কলকাতার বেশিরভাগ মানুষই আছে বাগবাজারে এই ঠাকুর না দেখলে যেন তাদের পূজা পরিক্রমা সম্পন্ন হয় না। এখানে কোন থিম বেস করে পূজা হয় না। এখানকার দুর্গা প্রতিমাই হচ্ছে আসল ।এই দুর্গা প্রতিমা দেখার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে লোক ছুটে আসে।

WhatsApp Image 2022-10-15 at 11.39.10 PM.jpeg

WhatsApp Image 2022-10-15 at 11.39.11 PM (2).jpeg

বিশাল প্রতিমা, বিরাট মুকুট। এই ঠাকুর না দেখলে কলকাতার মন ভরে না।


WhatsApp Image 2022-10-15 at 11.39.12 PM (4).jpeg

WhatsApp Image 2022-10-15 at 11.39.13 PM.jpeg


এই পূজাটি একটি মাঠের মধ্যে হয় এবং এখান থেকে বেরিয়ে একটি ছোট মেলা হয় ।আমি দশমীর দিন গেছিলাম ।এই বাগবাজারে অনেক বড় করে সিঁদুর খেলা হয়। আর দশমীতে এই মায়ের বিসর্জন হয় ।এই দশমীর দিন সিঁদুর বরণে ছোট থেকে বড় প্রত্যেকটি মানুষ মেতে ওঠে ।আর এখানকার সিঁদুর খেলা ও খুবই বিখ্যাত। পুজোর কটা দিন যেরকম ভাবে ভিড় হয় দশমীর দিনও তার থেকেও বেশি ভিড় হয় শুধুমাত্র সিঁদুর খেলার জন্য।


WhatsApp Image 2022-10-15 at 11.39.11 PM.jpeg

WhatsApp Image 2022-10-15 at 11.39.12 PM (3).jpeg



দুর্গাপুজোর ইতিহাসে যত রদবদলই আসুক না কেন, নানা থিমের চমকে দর্শক যত মোহিতই হোক, সাবেকিয়ানা আর আভিজাত্যে বাগবাজারের মাতৃপ্রতিমা চিরকাল স্বাতন্ত্র্য আদায় করে নিয়েছে।


ধন্যবাদ

Sort:  
 2 years ago 
বাগবাজার সার্বজনীন দুর্গোৎসবের ইতিহাস পড়ে বেশ ভালো লাগলো ৷ অনেক পুরনো একটি মন্দিরে বছরের পর বছর পুজো হয়েই আসছে ৷ এর মাঝে অনেক বহু প্রথিতযশা ব্যক্তিদের নাম বাগবাজারের পুজোর সঙ্গে জড়িয়েছে যেনে বেশ ভালো লাগলো ৷ আপনি সেই বাগবাজার সার্বজনীন পূজা মন্ডপে বেশ ভালোই সময় কাটিয়েছেন ৷ সেখানকার মায়ের মূর্তি গুলো সত্যিই চমৎকার ৷ ধন্যবাদ দিদি আপনাকে, আপনার মাধ্যমে বাগবাজারের মায়ের মূর্তি দর্শন করতে পারলাম ৷এবং আবারও অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে , আপনার সুন্দর মুহূর্ত গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করা জন্য ৷
 2 years ago 

১৯৩৬ সালে এই পুজোর সভাপতি হয়েছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু

আমি ভেবেছিলাম আপনি হয়তো নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোস এর কথা বলছেন। বাগবাজার সার্বজনীন এর ইতিহাস ঐতিহ্য সবকিছুই দেখছি সমৃদ্ধ। এবং অনেক আগে থেকে এখানে উৎযাপন করা হয় দূর্গাপূজা। দারুণ ছিল দিদি। ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।

 2 years ago 

বাগবাজার সার্বজনীনের পুজোর শুরু ত অনেক আগে থেকে সেই ১৯১৯ সাল।এই পুজোর অনেক ইতিহাস আপনার লেখা পড়ে বোঝা গিয়েছে। সুভাষচন্দ্র বসু অনেক বড় মাপের একজন নেতা ছিলেন এবং উনি এই বাগবাজার সার্বজনীন পুজোর সভাপতি ছিলেন মানে বিশাল বেপার। কলকাতার পুজো কখনো দেখা হয়নি তবে লেখা পড়ে বোঝেছি দক্ষিণ এবং উত্তর কলকাতায় পুজোতে অনেক মানুষ ভীড় করে। বাগবাজার সার্বজনীন পুজো মাঠে হলে ত অনেক বড় হয় নিশ্চয়ই। মেলায় যেতে আমার খুব ভাল লাগে। আপনার সিঁদুর খেলার পোস্ট আমি পড়েছিলাম, আপনি খুব আনন্দ করেছেন।ধন্যবাদ দিদি।

 2 years ago 

দিদি
বাগবাজার সার্বজনীনের পুজোর ইতিহাস ও পুজোর সুচনা জানতে সম্পর্কে পারলাম ৷ ১৯১৯ সাল থেকে শুরু করে বেশ বড় মহা ব্যক্তি গন মিলে পুজো করে আসছে ৷ ভালো লাগলো পুজো হওয়ার ঘটনাটি পড়ে৷
আর দিদি পুজোর বাকি দিন গুলোর চেয়ে দশমীর দিন বেশি মানুষ হয় ৷ সিঁদুর খেলা নিয়ে আর আগের পোষ্টটি পড়েছিলাম ৷

 2 years ago 

এত সুন্দর ইতিহাস পড়তে অনেক ভালো লাগছিল দিদি , মূর্তিগুলো দেখতে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে দশমীর দিন গিয়ে পুজোতে আপনি অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন, হোলি খেলার মুহূর্তটা আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। ‌ এই পোস্টটি থেকে অনেক কিছু শিখলাম , আশা করি এমন চমৎকার পোস্টগুলো আপনি ভবিষ্যতে আমাদের মাঝে আরো শেয়ার করবেন।

 2 years ago 

ছোট দিদি, সেই প্রতিযোগিতা থেকেই দেখছি আপনার উপস্থাপনা । বিশেষ করে প্রতিটি পূজো রিলেটেড কনটেন্ট গুলো ছিল বেশ আকর্ষণীয়। কারণ প্রথমত শুরুটাই ছিল বিগত সময়ের তথ্য গুলো দিয়ে । যেটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

আপনি সত্যিই ভীষণ মেধাবী ।

 2 years ago 

যাক আপনার পোস্ট পড়ার সুযোগে সার্বজনীন এই পুজোর ইতিহাস সম্পর্কে ধারনা পেলাম দিদি। ১০৩ বছর ধরে চলে আসছে এই উৎসব। ছবি গুলো দারুণ তুলেছেন দিদি। তবে যেসব বিখ্যাত ব্যাক্তি দের কথা বললেন তাদের মনে হচ্ছে চিনিনা আমি। আসলে ভারতে ইতিহাস সম্পর্কে একটু ধারনা কম।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.034
BTC 64333.84
ETH 2760.35
USDT 1.00
SBD 2.65