তারাপীঠের তারা মন্দিরে পর্ব -২
নমস্কার বন্ধুরা,
আশা করি সবাই ভালো আছেন।সুস্থ আছেনগত পর্বে আমি তারাপীঠ যাওয়ার কিছু কথা আপনাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছিলাম।আজকে আমি তারাপীঠে পূজো দেওয়ার কিছু মুহূর্ত ভাগ করে নিচ্ছি। আশা করি সকলের ভালো লাগবে।
আমরা যখন হোটেলে পৌঁছেছিলাম তখন প্রায় ৩:৪৫ মতো বাজে। যথারীতি আর কিছুক্ষণের মধ্যেই ভোর হয়ে যাবে তাই স্নান করে রেডি হয়ে গেলাম ।কারণ যত বেলা হয়ে যাবে ততই ভিড় বাড়তে থাকবে আর তার মধ্যে মঙ্গল ও শনিবার করে ভক্তের সংখ্যা অনেক বেশি থাকে।লক্ষ লক্ষ ভক্ত তারাপীঠে মায়ের কাছে পূজা দিতে আসে। কত মানুষ আছেন যারা ভোর তিনটে থেকে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, প্রায় ৫-৬ঘন্টা দাঁড়ানোর পর এখানে পূজা দিতে পারে। শুধু এখানে আমার একটা জিনিসই একটু খারাপ লাগে সেটা হল যারা জেনারেল লাইনে দাঁড়ায় তারা প্রায় ছয় ঘন্টার কাছাকাছি লাইন দিয়ে দাঁড়ালে পুজো দিতে পারে , তাছাড়াও এখানে ২০০ টাকার, ৫০০ টাকার ,১০০০ টাকার লাইন দিয়ে দাড়ানোর ব্যবস্থাও আছে। এক প্রকার বলা যায় যে পূজো দেওয়ার ব্যবস্থাটা ব্যবসার মতো হয়ে গেছে ,ভক্তি ভরে মায়ের কাছে পুজো দিতে আসলে এই টাকা নেওয়ার জায়গাটা ঠিক মেনে নিতে পারি না। যাই হোক এই ৫০০ টাকা হাজার টাকা লাইনের একটাই ব্যাপার যে বেশিক্ষণ দাড়াতে হয় না কম করে দেড় থেকে দুই ঘন্টার মধ্যে পূজা দেওয়া হয়ে যায় ।
এই তারাপীঠে কেন এত ভক্ত পুজো দিতে আসে সেটা একটু বলে নিই,বাংলার অন্যতম প্রধান পূজিত দেবী হল কালী। নানা রূপে, নানা জটিল বিমূর্ততায় বাংলা জুড়ে এই শক্তির দেবী পূজিত হন।হিন্দু পুরাণ অনুসারে, শিবের রুদ্র তাণ্ডবের ফলে সতীর দেহের নানা অংশ বহু স্থানে ছড়িয়ে পড়েছিল। তার থেকে ভারত জুড়ে বিভিন্ন সতীপীঠের জন্ম হয়েছে। তারাপীঠকেও ৫১টি সতীপীঠের অন্যতম বলে মনে করা হয়। সতীর চোখের ঊর্ধ্বনেত্রের মণি অর্থাৎ তারা পড়ায় দ্বারকা নদীর পুব পাড়ের চণ্ডীপুর আজ তারাপীঠ।
আমরাও প্রায় ভোর পাঁচটা দিয়ে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে নটায় গিয়ে পুজো দিতে পেরেছি । এই এতক্ষণ লাইন দেওয়া তখনই সার্থক হয়ে যায় যখন তারা মায়ের সেই রূপ দেখতে পাই, যতই দেখি ততই মনে হয় চোখ জুড়িয়ে যায়। তাও এখানে বেশিক্ষণ পূজো দেওয়ার জন্যে সময় দেওয়া হয় না ,এতক্ষণ লাইন দিয়ে দাঁড়ালে প্রায় এক মিনিটের বেশি ওখানে দাঁড়াতে দেওয়া হয় না । তার মধ্যেই মায়ের কাছে সুন্দর করে প্রার্থনা করে মন্দির থেকে বেরিয়ে এলাম। ওখান থেকে বেরিয়ে আশেপাশে আরও কিছু মন্দির আছে সেখানেও পূজো দিলাম ।
এরপর পুজো দিয়ে বেরিয়ে সামনে একটি হোটেল থেকে সকালে ব্রেকফাস্ট করে নিলাম। ব্রেকফাস্ট করেই আবার তারাপীঠের আশেপাশের কিছু জায়গা ঘোরার ছিল, তার জন্য আবার রেডি হয়ে বেরোলাম ।সেই ঘোরার জায়গাগুলো আপনাদের সাথে পরের পর্বে ভাগ করে নেবো।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আজ শত ব্যস্ততার মাঝেও তোমার পোস্টটা দেখতে এলাম কারণ তুমি বলেছিলে তারাপীঠের পরবর্তী পর্ব ভাগ করে নেবে। অনেক ছোটবেলায় গায়ে ছিলাম। এত সুন্দর ঢালাই করা ব্যাবস্থা ছিলো না। মাটিতেই দাঁড়াতে বা বসতে হত লাইনে দাঁড়িয়ে পা ব্যথা হলে। তোমরা ভোর ৫.৩০ লাইন দিয়েছো দেখলাম। আমরাও তেমনই দিয়েছিলাম। আসলে প্রচন্ড ভিড় হয়।ধন্যবাদ অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়ার জন্য।
দিদি সারা রাত জেগে থেকে এত লম্বা লাইন শেষ করে পূজো দিয়ে আবার ঘুরাঘুরি করতেও বের হয়ে গেলেন। আমি হলে তো সাথে সাথে ঘুমিয়ে পড়তাম। আমি আবার সারারাত জেগে থাকে সারাদিন পরে ঘুমাই। পরিবারের সবাই মিলে খুব সুন্দর সময় কাটাচ্ছেন। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য।
আসলেই বাধ্য হয়ে বের হতে হয়েছিল কারণ পুজো দিয়ে এসে আমি আর চোখে কিছু দেখতে পাচ্ছিলাম না এত ঘুম পাচ্ছিল 🥺😄 ।আর এদিকে যেহেতু একদিনের ট্যুর ছিল তাই একপ্রকার জোরযাবস্তিতেই বেরিয়ে ছিলাম।
আপু ধর্ম নিয়েও ব্যবসা আসলেই এই জিনিসটা মেনে নেওয়ার মতো নয়। ২০০ টাকা, ৫০০ টাকা, ১০০০ টাকা নিয়ে লাইনে দাঁড়াতে দেয়া হয় ব্যাপারটি সত্যি অপ্রীতিকর। আর এই টাকা দিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে পুজো দেয়াটা ব্যবসার মতোই মনে হচ্ছে। কিন্তু কি আর করার, যেহেতু উপচে পড়া ভিড় সকলেই চাইবে কে কার আগে পুজো দিতে পারে। ভোর পাঁচটায় লাইনে দাড়িয়ে অবশেষে নয়টার দিকে পুজো দিতে পেড়েছেন এটাই স্বস্তির কথা। ভালই ভালই পরিবারসহ পুজো দিয়ে, বেশ সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো। আপনার পুরো পরিবারের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
হ্যাঁ দাদা আপনি একদমই ঠিক বলেছেন এখানে যে যত বেশি টাকার লাইনে দাঁড়াবে সে ততো আগে পুজো দিতে পারবে ।আসলেই ব্যাবসা হয়ে গেছে পুজোর জায়গা গুলোতে । অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
এখন যে কোন জায়গায় গেলেই সবকিছুতেই ব্যবসা শুরু করে দেয়। কিন্তু ধর্মের কাজে যদি এরকম ব্যবসা শুরু করে তাহলে সেটা সত্যিই মেনে নেওয়া যায় না। কিন্তু ধর্মটাকে কেন্দ্র করেই এখন সব থেকে বেশি ব্যবসা চলছে। কারণ মানুষ তো এখানেই দুর্বল। রাতের বেলায় জার্নি করে, ভোর পাঁচটায় আবার লাইনে দাঁড়িয়ে নয়টায় পুজো দেওয়া, তারপর আবার কিছুটা ঘুরতে বেরিয়েছেন। সবকিছু পড়তেই যেন আমি একেবারে অসুস্থ হয়ে পড়লাম। আসলে এতটা ধকল সহ্য হবে না। তবে আপনাদের সবাইকে একসাথে দেখে ভীষণই ভালো লাগলো।
অনেক কষ্ট করে পুজো দিতে গিয়েছেন দিদি।পুজো দিতে গিয়ে আপনাকে দেখি বেশ সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে দিদি। আসলে এই জায়গা গুলোতে গিয়েও টাকা দিয়ে কাজ করতে হয় সেটা সত্যি অনেক দুঃখজনক ব্যাপার। আসলে সবখানেই ব্যবসার মতো হয়ে গেছে। তবে যাই হোক অনেক কষ্টের পর যখন পূজো দিতে পেরেছেন তখন নিশ্চয়ই মনের কষ্ট সব দূর হয়ে গেছে।♥️♥️♥️
এই লাইনে দাঁড়ানোর কষ্টটা বুঝি আমি,কারণ প্রায় সময় দাঁড়াতে হয়।আর এটা ঠিক,আসলে যে কাজের জন্যে যাওয়া হয় সে কাজ পূর্ণ হলে খুবই ভালো লাগে।
হুম দিদি মা কালীর দেহ অংশ যেখানে যেখানে পরেছিল ৷ সেখানে সেখানে বড় বড় মন্দির হয়েছে ৷ যেটা আমিও শুনেছি ৷
যা হোক বর্তমানে সব জায়গায় ব্যাবসা করে কিছু অসাধু মানুষ ৷ তারা কী এটা বোঝে না ৷ যারা যারা পুজো দিতে গিয়েছে ৷ সবাই ভক্ত এখানে সবাই সমান ৷ তাই ধর্য ধরে পুজো দেওয়ার দরকার ৷ কিন্তু কেউ কেউ টাকার বিনিময়ে আগে পুজো দিতে পারছে ৷ বিষয়টা সত্যি দৃষ্টি কটু লাগলো ৷
যা হোক আপনারা সবাই পুজো দিতে পেরেছেন ৷ সেটাই বড় বিষয় ৷
পরের পোষ্টের জন্য অপেক্ষা ৷
জয় মা তারাপীঠ 🙏🙏
টাকার কদর সব জায়গাতেই ,ঘুষ খাওয়া ছাড়া এখনকার মানুষ কোনো কাজই করতে পারে না,আর এভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে আসলেই অনেক কষ্টকর একটা বেপার , আমার কাছে এই জিনিসটা সব থেকে বেশি কষ্টকর লাগে।
দিদি স্টেশন থেকে হোটেলে পৌঁছে রাতে আর ঘুমাননি স্নান করে আবার পূজার জন্য লাইনে দাড়িয়ে গেলেন। তবে আপু আপনারা কত টাকার লাইনে দাড়িয়ে ছিলেন সেটা জানতে চেয়েছিলো আমার অবুঝ মন হি হি হি। তারাপীঠের তারা মন্দিরে এত মানুষ যায় যে পুজো দিতে চার পাঁচ ঘন্টা সময় লাগে। খুব বিখ্যাত মন্দির। যায়হোক দিদি পরের ছবি গুলো দেখার অপেক্ষায় রইলাম।