প্রকৃতির কোলের ঠিকানা লাটাগুড়ি/১০% পেআউট লাজুক খ্যাঁক-কে
নমস্কার বন্ধুরা,
আশা করি সবাই ভালো আছেন।সুস্থ আছেন।আজ আমি আপনাদের সঙ্গে লাটাগুড়ি ফরেস্টে থাকার কিছু মুহুর্ত ভাগ করে নিচ্ছি। আশা করি সকলের ভালো লাগবে।
আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন আমি দুমাস আগে ঝালং এ ঘুরতে গিয়েছিলাম । এই ঘুরতে যাওয়া ব্যাপারটা আমার খুব ভাগ্যের উপর নির্ভর করে ।এই কারণেই কথাটা বললাম যখনই আমি ভাবি মা-বাবার সাথে কোথাও ঘুরতে যাবো ঠিক সেই সময়গুলোতেই আমার পরীক্ষা পড়ে যায় ।আর এমন ভাবে পরীক্ষা পড়ে যেটা আমি মিস করে কোথাও যেতেও পারবো না। এই পরীক্ষার জন্য আমি অনেক জায়গায় ঘুরতে যেতে পারিনি কিন্তু পরীক্ষাই আগে, তাই ঘুরতে যাওয়া বাদ দিয়ে আমাকে পরীক্ষা দিতে হয়েছে । এই বার ও ঠিক তাই ,যখনই ঝালং যাওয়ার কথা হয় সেই সময় পরীক্ষার কোনো কথাই ছিল না হঠাৎ করে যাওয়ার এক সপ্তাহ আগে পরীক্ষা ফেলে দেয় । কি অদ্ভুত কপাল আমার সে এক বিশাল বড় কাহিনী তাও অল্প করেই বলছি যেহেতু কলেজ টেস্ট ফেলেছিল। তার মধ্যে বলেছিল এই নম্বর ফাইনাল এ যোগ করা হবে । ব্যাস আমি তখন বুঝেই গিয়েছিলাম যে এই বার এর ঘোরাও তাহলে ক্যান্সেল । আমি প্রিন্সিপালের সাথে কথা বলে পরীক্ষা না দিয়েই ঘুরতে গেছিলাম ,আর প্রিন্সিপাল পারমিশন দিয়েছিল এই শর্তেই যে সবাই পরীক্ষা দিলেও আমি ঘুরে এসে একাই পরীক্ষা দেব। যাই হোক পরে আর সেটা দিতে হয়নি। কারণ ওই পরীক্ষার দুই সপ্তাহ পরে আমার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়ে যায়।
জলঢাকা নদীর ধারে এক অপূর্ব ট্যুরিস্ট স্পট হল ঝালং। আর লাটাগুড়ি হলো ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তরাঞ্চলের জলপাইগুড়ি জেলায় নেওড়া নদীর তীরে অবস্থিত একটি ছোট শহর। আসলেই এই জায়গাই ঘুরতে যাওয়াটা আমার জন্যই ।কারণ মা-বাবা প্রত্যেক বছর কোথাও না কোথাও ঘুরতে গেলে আমাকে যে কোনো ভাবেই হোক সে টিকিটটা ক্যান্সেল করতে হয়। কিন্তু এবার আমি ভেবেই রেখেছিলাম যে যাই হয়ে যাক আমি ঘুরতে যাবই। আমি এই আগস্ট এ ঝালং গিয়েছিলাম। জায়গাটা এতটাই সুন্দর যে চোখে না দেখলে সেই প্রকৃত অপরূপ রূপ কল্পনাই করা যাবে না। যেমন পাহাড় ,তেমন ঝরনা, তেমন প্রকৃতি। সব যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে । এখানে আমরা তিন দিনের জন্য গিয়েছিলাম ।প্রথম দিন আমরা লাটাগুড়ি ফরেস্টে উঠেছিলাম। এই ফরেস্টটি একদম গরুমারা অরণ্যের খুব কাছে । এই রিসোর্টটি এমন একটি জায়গায় ছিল যেখানে আমরা তিন দিন কোনো প্রকার গাড়ির আওয়াজ পাইনি। এতটাই নিঃশব্দ নিশ্চুপ ছিল জায়গাটা।শুধু প্রকৃতিকে অনুভব করেছি যেন প্রকৃতির সাথে মিশে গিয়েছিলাম এক প্রকার। ঘন অরণ্যের স্বাদ আর নির্জনতা এবং বন্য প্রাণীদের যদি সচক্ষে দেখার ইচ্ছে হয় তাহলে এরকম একটা জায়গা ঘোরার জন্য বেস্ট ।আমরা যেদিন গিয়েছিলাম সেই দিনটা প্রায় বৃষ্টির মধ্যেই কেটে গিয়েছিল। কারন বর্ষার সময় গিয়েছিলাম ।বৃষ্টি ধোয়া জলে জঙ্গলের গাছগাছালিগুলো যেন এখন আরও সবুজ হয়ে গেছিল।যেখানেই তাকাচ্ছিলাম নানান রকমের গাছ, আর নয় চা বাগান। আর বিকেল হলেই সন্ধ্যা প্রদীপের মত জ্বলে উঠত জোনাকি। আমাদের রিসোর্টটা একদম নিরিবিলি জায়গায় নেওড়া নদীর ধারে ছিল।
ব্যালকনি থেকে
আর যেটা না বললেই নয় ,এই রিসোর্টের সামনে প্রায় হাতি আসে যাই হোক এতটাও সৌভাগ্য হয়নি ওই দুদিনের মধ্যে হাতি দেখার। যেহেতু তিনদিনের জন্য গিয়ে ছিলাম সেহেতু এই তিনদিনের মধ্যে অনেক গুলো জায়গা ঘুরেছিলাম ।সেই জায়গাগুলো আমি কয়েকদিন পরে আপনাদের সাথে ভাগ করে নেবো ।আজ আমি আপনাদের সাথে সেই লাটাগুড়ি ফরেস্টে থাকার রিসোর্ট এবং তার চারিপাশে প্রকৃতির কিছু ছবি ভাগ করে নিলাম।আশা করি আপনাদের সকলের খুব ভালো লাগবে।
আপু,মাঝে মাঝে এমন হয় সবাই ঘুড়তে যেতে পারলে ও আমাদের কোন কোন পরীক্ষার জন্য যাওয়া হয়ে উঠে না।কিংবা কোন আত্নীয় স্বজনদের অনুষ্ঠান গুলো আমাদের পরীক্ষার সময়ই পরে😆।যাই হোক তবে এবার প্রিন্সিপাল সাথে কথা বলে বাবা মায়ের সাথে ঝালং ঘুড়তে যেতে পেরেছেন।ছবিগুলো দেখে মনে হচ্ছে প্রকৃতি আজ নতুন সাজে সেজেছে।সব মিলয়ে সুন্দর আপু।ধন্যবাদ
আপু আমারও পরীক্ষা চলছে অনেক জায়গা ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু মনের বিরুদ্ধে হয়ে যেতে পারছি না। সত্যি খারাপ লাগে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার মুহূর্তে পরীক্ষা থাকলে। যেটা প্যারাময় মনে হয় যাই হোক তবুও গুরুত্বপূর্ণ এবং জীবনের অগ্রগতির জন্য পরীক্ষা তো দিতেই হবে। দারুন সময় অতিবাহিত করেছিলেন ঝালং জায়গাটিতে। আসলে বিভিন্ন জায়গায় নতুনত্বের সাথে পরিচিত হতে পেলেই ভালো লাগে।
যাক আপু প্রতিবারের মতো এবারের ঘুরতে যাওয়াটা আপনার ক্যান্সেল হয়নি । প্রিন্সিপালের সঙ্গে কথা বলে ঠিকই ঘুরতে গিয়েছিলেন এবং প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করেছিলেন। আসলেই জায়গাটা অনেক সুন্দর দেখে মনে হচ্ছে । চা বাগান আমার কাছে ও ভীষণ ভালো লাগে । চা বাগানের ফটোগ্রাফি খুব সুন্দর হয়েছে । এরকম নির্জন পরিবেশে পরিবারের সাথে সময় কাটাতে সত্যিই ভীষণ ভালো লাগে ।ভালো ছিল।ধন্যবাদ।
পরিবারের সাথে ঘুরতে যেতে সবসময়ই ভালো লাগে। যদি পরীক্ষা জন্য ঘুরতে যাওয়া বাতিল করতে হয় তাহলে মন খারাপ হওয়ারই কথা।পরীক্ষা বাতিল করে ঘুরতে গিয়ে খুব ভালো করেছেন দিদি। এতো সুন্দর সবুজ প্রকৃতির মাঝে কিছুদিন সময় কাটানো সত্যি ভাগ্যের ব্যাপার।ব্যালকনি থেকে প্রকৃতি মুগ্ধ করার মত। অনেক ধন্যবাদ দিদি সুন্দর এই মূহুর্তটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
এটা ঠিক দিদি যখনি কোনো পরিকল্পনা করা হয় ৷তখনি কিছু না কিছু ঝামেলা পরে যায় ৷ এটা আসলে নতুন কিছু নয় ৷ তবে যাই হোক এবার আপনি যে লাটাগুড়ি গিয়েছেন ৷
আমি তো শুনে একটু অবাক হলাম যে আপনি তিন দিন থেকেও কোনো গাড়ির বা অন্য কিছুর শব্দ পান নি ৷ তাহলে তো বঝাই যাচ্ছে যে কতটা নির্জন জায়গা ৷ মাঝে মাঝে এসব জায়গায় একা কাটতে অনেক ভালো লাগে ৷ প্রকৃতির সাথে একটা মিল খুজে পাওয়া যায়৷ আমি নিশ্চিত আপনি বেশ চমৎকার একটি সময় অতিবাহিত করেছেন ৷
ভালো লাগলো গল্পটি পড়ে ৷
অনেক আগে আপনার একটা লেখায় পড়েছিলাম এই ব্যাপারটা, ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান হলেই পরীক্ষা এসে গন্ডগোল পাকিয়ে দেয়। তবে এ যাত্রায় প্রিন্সিপাল স্যার বেশ সহযোগিতা করেছেন দেখছি। সব থেকে বেশি ভালো লাগলো নদীটার নাম , জলঢাকা। নদীর পাশে সবুজ প্রকৃতির মাঝে তিন দিন সময় কাটানো মানে পুরোপুরি প্রকৃতির সাথে মিশে যাওয়া। ঘুরতে যাওয়ার পরবর্তী মুহূর্তগুলো দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
পরিবারের সাথে নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালো লাগে। আর প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যময় জায়গায় ভ্রমণ করেছেন। সত্যি দিদি আপনার ভ্রমণের গল্প খুবই ভালো লাগলো। ফটোগ্রাফি গুলো ছিল খুবই সুন্দর, আমার খুবই ভালো লেগেছে।
কথাই আছে না যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই রাত পোহায়।আসলে পরিক্ষা আসলে যত অনুষ্ঠান ও ঘোরাঘুরি পড়ে।আপনি এবার প্রিন্সিপাল সাথে কথা বলে মা বাবার সাথে ঝালং এ ঘুরতে যেতে পেরেছেন জেনে অনেক ভালো লাগল। সত্যিই দিদি বৃষ্টি ধোয়া জলে জঙ্গলের গাছগাছালিগুলো যেন আরও সবুজ হয়ে উঠেছে। ধন্যবাদ আপনাকে।