মুখ বাঁকা কুকুরের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার গল্প
হাই বন্ধুরা!
আমার গল্পের রাজ্যে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগতম। পূর্বসপ্তার ন্যায় আজকে উপস্থিত হয়ে গেলাম সুন্দর একটি গল্প নিয়ে। যে গল্পের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন আমার জীবনে কোন একটা লুকিয়ে থাকা ঘটনা। একজনের জানা ঘটনা অন্য জনের মাঝে ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয় অজানা তথ্য। ঠিক তেমনি সুন্দর একটি গল্প নিয়ে উপস্থিত হয়েছি আজ। আশা করি স্মৃতিচারণ মূলক এই গল্প আপনাদের অনেক অনেক ভালো লাগবে। তাই চলুন আর দেরি না করে গল্পটা পড়ি এবং গল্প পড়ার আনন্দ উপভোগ করি।
আমি একদম ছোটবেলা হতে ভোরে ঘুম থেকে উঠে রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করি। এটা আমার ছোট থেকে অভ্যাস হয়ে গেছিল। ঠিক এমনই একটা সময়। সম্ভবত প্রাইমারিতে পড়ি। কিন্তু ভাবলে মনে হয় একদম সেদিন কোর কথা। ভোরে ঘুম থেকে উঠেছি। বাড়িতে কেউ এখনো রুম থেকে বের হয়নি। আমি গেট খুলেছি। এরপর রাস্তার দিকে বের হয়েছি। সম্ভবত কার্তিক মাস। সকালে হালকা হালকা কুয়াশা ভাব। শীতের আগমন এমন সকালবেলা। আমি সোজা গেট থেকে বের হয়ে রাস্তায় গিয়ে বসে পড়েছি একটা ইপিলিপি গাছের গোড়ায়। এই গাছটা আমাদের এলাকায় ব্যাপক পরিচিত ছিল এবং রাস্তার দুই পাশে লাগানো ছিল। প্রত্যেক দিনের মতো ঐদিন বসা মাত্রই চারি পাশের লক্ষ্য করতেই পশ্চিম সাইট থেকে ৬ থেকে ৭ টা কুকুর এসে আমাকে ঘিরে ধরল। তবে তার মধ্যে সুপরিচিত একটা কুকুর ছিল, সেটা পাড়া গায়ে "মুখ বেকা" কুকুর নামে পরিচিত। আর এ মুখ বাঁকা কুকুরের আতঙ্কে পাড়ার বেশিরভাগ মানুষ। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন মানুষকে কামড় দিয়েছে। বিশেষ করে কম বয়সী ছেলেদের। তাই পাড়ার অনেক মানুষ কুকুরটাকে মারার চেষ্টা করেও পেরে উঠে নাই।
কিন্তু ঐদিন সকালে যে হঠাৎ আমার সাথে এমন একটা পর্যায় সৃষ্টি হবে কখনোই ভাবি নাই। আমি হাতমুখ না ধুয়ে কোন প্রকার ফ্রেশ না হয়েই,শুধু ঘুম থেকে উঠেই বের হয়ে সেখানে। তাই এদিকে ওদিকে তাকানো হয়েছিল না সেভাবে। যার জন্য আশেপাশে কুকুর আছে কিনা খেয়াল করা হয়নি। প্রথমে একটা নেড়ি কুত্তা। আমার পিছনে এসে জোরে জোরে ঘেউ ঘেউ শুরু করল। এরপর বাকি 6 টা কুত্তা আমাকে ঘিরে ধরল। আমি কান্নার দৃষ্টিতে জোরে জোরে ছেই ছেই বলতে থাকলাম। আমার এমন কন্ঠের সাউন্ড শুনে হঠাৎ আব্বা জানালা খুলে দেখে কুকুরে অ্যাটাক করেছে আমাকে। আব্বা আতঙ্কে ওই মুহূর্তে কি করবে বুঝতে পারছিল না। রুম থেকে দৌড়ে আসতে আসতে কুকুরে ততক্ষণে আমাকে কামড় দিবে। এদিকে জানালা দিয়ে চিৎকার করলেও কুকুরে শুনবে না।
তবে আমি আমার সাধ্যমত্ব সজোরে চিৎকার করে শব্দ করতে থাকলাম ছেই ছেই। দুই থেকে তিনটা কুকুর আমার গা পান লাফ দিয়ে উঠলো। আমি সাহসের সাথে হাত পা নেড়ে মার মুখি হয়ে চিৎকার করতে থাকলাম। এরপর লক্ষ্য করলাম একটি নেড়ি কুত্তা দৌড়াতে দৌড়াতে দূরে চলে গেল। এরপর অন্যান্য কুত্তাগুলো আমার পানে শুধু ঘেউ ঘেউ করতে থাকলো লাফিয়ে কামড়াতে যাচ্ছিল কিন্তু কামড়াচ্ছিল না। আর এভাবেই কুত্তাগুলো হঠাৎ আমার থেকে দৌড়ে দৌড়ে চলে গেল। ততক্ষণে আমার জান শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। রাস্তায় কোন মানুষজন নাই। এরপর কুকুর গুলো যখন একটু দূরে হয়ে গেল। ততক্ষণে লক্ষ্য করে দেখলাম আমার আব্বা গেটের বাইরে চলে এসেছে। আর এদিকে আমি কুকুর থেকে আশঙ্কা মুক্ত হয়ে রাস্তা ছেড়ে বাড়ির দিকে পা বাড়ালাম। আর এভাবে মহান সৃষ্টির সহায়তায় আমি দিনের শুরুতে হঠাৎ বিপদ থেকে মুক্তি পেলাম।
গল্পটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফি | ঘটনাস্থল এরিয়া |
---|---|
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Infinix Hot 11s |
লোকেশন | জুগীরগোফা |
বিষয় | অতীত ঘটনা |
ঠিকানা | গাংনী-মেহেরপুর, বাংলাদেশ |