হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি সাতক্ষীরা শহর থেকে হঠাৎ সুন্দরবন দেখার জন্য যাত্রা করেছিলাম সেই ভ্রমণ কাহিনী ও ফটোগ্রাফি নিয়ে। তাই চলুন আর দেরি না করে এখনি মেন বিষয় চলে যাওয়া যাক।
ভ্রমণ করতে আমরা কে না ভালোবাসি, যখনি সুযোগ পাই মন চায় ছুটে যায় দেশের যে কোন ভালো লাগার প্রান্তরে। দেখে আসি দেশের বৈচিত্র্যময় রূপ। ঠিক তেমনি ভালোলাগার একটা অনুভূতি নিয়ে আমি আর আমার দুই বন্ধু সুন্দরবনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলাম। আমরা তিন বন্ধু অবস্থান করছিলাম সাতক্ষীরা সাদরে। চারুকলা বিভাগে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। পরীক্ষার মাঝখানে দুইটা দিন আমাদের ছুটি ছিল। তাই তিন বন্ধু মিলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলাম আমরা এই দিনগুলো লস না করে ঘুরতে যাব সুন্দরবনে। তবে সুন্দরবনে কোন পথ দিয়ে যেতে হবে? কতটা দূর? সেটা কিন্তু ওই মুহূর্তে আমাদের জানা ছিল না। আমরা মেহেরপুর থেকে ২৫ জন একসাথে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম সাতক্ষীরায়, তাই অন্যান্যদের বলেছিলাম আমাদের সাথে কেউ সুন্দর বনে ঘুরতে যাবে কিনা, কেউ রাজি হয়েছিল না যেহেতু মেহেরপুর থেকে সাতক্ষীরায় এসেছে পরীক্ষা দিতে দীর্ঘ একটা খরচের ব্যাপার-স্যাপার রয়েছে। আবার যদি সেখান থেকে সুন্দরবন ভ্রমণ করতে যায় অবশ্যই সেখানে অনেক টাকা খরচ হতে পারে এই ভাবনায় অচেনা জায়গায় হুট করে কেউ যেতে রাজি হল না। আমাদের তিন বন্ধুর মধ্যে এই বিষয়টা আর নড়চল হলো না রাত পোহালেই চলে যাব সুন্দরবনের উদ্দেশ্যে তবে তার আগে সুন্দরবন সম্পর্কে ধারণা নেয়া উচিত তাই আমরা তিন বন্ধু আগে গুগল ম্যাপ থেকে দেখে নিলাম সাতক্ষীরা সদর থেকে সুন্দরবনে কোন পথ দিয়ে যেতে হবে আর কতদূর। আমরা গুগল ম্যাপ ধরে বিশেষ বিশেষ স্থান দেখে নিলাম সাতক্ষীরা থেকে দেবহাটা এরপরে কালীগঞ্জ তারপর শ্যামনগর আর এই শ্যামনগর থেকে আমরা সুন্দরবনের অবস্থান করব। সব মিলে কিন্তু ১০০ কিলোরও দূরে। সাতক্ষীরা সদর থেকে যা অনেক দূর। যেদিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলাম তার পরের দিন আমরা তিন বন্ধু মিলে আবাসিক হোটেল থেকে বের হয়ে পড়লাম এরপর একটি হোটেলের যে তিন বন্ধু খেয়ে নিলাম এরপর রাস্তায় মানুষের কাছে জানতে চাইলাম সেখানকার বাসের বিষয়গুলো। কয়েকজনের সহায়তায় লোকাল বাসের মাধ্যমে আমরা যাওয়া শুরু করলাম। অনেকেই বলেছিল এখান থেকে দৈর্ঘ্য শ্যামনগরের পথে কোর্সের গাড়িগুলা যায়। নতুন স্থান পায় আমরা দেখতে দেখতে যাবো বলে লোকাল বাসে উঠেছিলাম। সাতক্ষীরা সদর থেকে যাত্রা পথে কিছুটা পার হয়েই দেখতে পেলাম সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এই কলেজ টার নাম অনেকবার শুনেছি, সুন্দরবনের ভ্রমণ করতে যাওয়ার পূর্বে ভেবেছিলাম এই কলেজের এরিয়া ঘুরতে যাব কিন্তু তা হয়ে উঠেছিল না,তবে সুন্দরবনের দিকে যাত্রার পথে দেখতে পেরে বেশ ভালই লাগছিল অবশ্য কিছুটা সময়ের জন্য বাস সেখানে দাঁড়িয়েছিল। আর এই মুহূর্তে আমি চেষ্টা করেছিলাম কিছু ফটোগ্রাফি করার জন্য পাশাপাশি আমার বন্ধুরাও।
Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন
এরপর কিছুটা পথ এগিয়ে যেতে বাজারের দিকে আমার নজর পরলো এবং সেখানে লক্ষ্য করলাম নতুন কোন একটা জিনিস যেটা আমি পূর্বে কখনোই দেখিনি বা নাম শুনিনি। লক্ষ্য করে দেখলাম ফল বিক্রেতারা এই ফলটি বিক্রয় করছে, বাসের মধ্যে জানার চেষ্টা করলা সবাই বললো এটা পানি জাতীয় একটি ফল, নামটা অবশ্য আমার এই মুহূর্তে স্মরণে নেই। তবে এই ফল নাকি বিলে বেশি হয়ে থাকে যা শাপলা ফুলের মতো করে তুলতে হয়। এগুলা ১০ টাকার প্যাকেট বিক্রয় করে থাকে বাজারে। এই ফলটি খাওয়ার জন্য আমার আর মিলনের তো বেশ ইচ্ছে হচ্ছিল সেই সময়, তাই মিলনকে বললাম ফেরার পথে কিনলেই হবে। আমরা যে তিন বন্ধু সাতক্ষীরা থেকে সুন্দরবনে যাচ্ছিলাম তার মধ্যে আমার প্রাণপ্রিয় দুই বন্ধু জুলহাস আর মিলন। তারা পাশে থাকলে যেন সারা দুনিয়া ঘুরে আসা যায়, এতটাই ভালো তারা।
Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন
এরপর কিছুটা পথ এগিয়ে আমাদের বাস অবস্থান করল দেবহাটা থানার মধ্যে। আমরা সারা পথ খুব ভালোভাবে নজর করে দেখতে দেখতে যাচ্ছিলাম নতুন এই অঞ্চলের চেহারা। তাই লোকাল বাস যেন আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো মনে হচ্ছিল যেহেতু কোর্সের বাসগুলো দ্রুত চলে যায়। আমরা তো যাচ্ছিস নতুন এলাকা শুধু দেখার জন্য, তাই লোকাল বাস বলে কিছু মনে হচ্ছিল না আমাদের আমরা। শুধু পথের দিকে তাকাতে তাকাতেই যাচ্ছি আর নতুন কিছু দৃষ্টিগোচর হচ্ছে এবং আনন্দ বোধ করছি। রানিং বাসে যতটা সম্ভব চেষ্টা করেছি বিশেষ কোনো স্থান ক্যামেরা বন্দি করার জন্য।
Photography device: Infinix hot 11s
Debhata
সাতক্ষীরা দেবহাটায় আমাদের গাড়ি কিছুটা সময়ের জন্য থেমেছিল, এরপর আবার গাড়ি রানিং হয়। আমরা আগের মতোই দেখতে দেখতে চলতে থাকি এরপর আমাদের গাড়ি নালতা নামক স্থানে আসলো সেখানে কিছুটা সময় অবস্থান করল। এভাবে দীর্ঘ পথ চলতে চলতে আমাদের এই লোকাল বাস এসে থামল কালীগঞ্জে। কালিগঞ্জ বাস টার্মিনালে বাস আমাদের নামিয়ে দিল বলল এই গাড়ি আর সামনের দিকে যাবে না এই টার্মিনাল থেকে আপনারা শ্যামনগরের বাসে উঠে পড়ুন সেখানে গিয়ে আপনারা শ্যামনগরে নামবেন এবং তারপর আপনারা নিজ গন্তব্যে যাওয়ার জন্য এক এক মানুষের সহায়তা গ্রহণ করবেন। আমরা বাস-আলা ভাইদের কথামতো শ্যামনগরের বাসে উঠে পড়লাম এবং আবারও google ম্যাপে তাকিয়ে দেখলাম সাতক্ষীরা থেকে কতদূর এসেছি আর কতদূর যেতে হবে। এভাবেই সুন্দরবনে যাওয়ার যাত্রার প্রথম জার্নিটা সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানীতে সম্পন্ন হয়েছিল, এরপর কালিগঞ্জ থেকে শ্যামনগরের পথে যাত্রা আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো খুব শীঘ্রই। আশা করি দ্বিতীয় পর্যায়টি আপনারা দেখার অপেক্ষায় থাকবেন।
Photography device: Infinix hot 11s
Nalta
Photography device: Infinix hot 11s
Kaliganj
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |