আমার সবজি বাগানের বর্তমান অবস্থা

in আমার বাংলা ব্লগlast year
আসসালামু আলাইকুম

IMG_20230705_053951_8.jpg



হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি আমার সবজি বাগানের বিভিন্ন প্রকার সবজি নিয়ে, তাই চলুন দেরি না করে এখনই বিস্তারিত আলোচনা শুরু করা যাক।


ফটোগ্রাফি সমূহ:


১ নং ফটোগ্রাফি

আপনারা জানেন আমি সবজি প্রিয় মানুষ, ছোট থেকে সবজি উৎপাদন করতে বেশি পছন্দ করি। তাই আমি আমাদের পুকুর পাড়ে চেষ্টা করে থাকি বিভিন্ন প্রকার সবজি উৎপাদন করার জন্য। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি বিভিন্ন প্রকার সবজি উৎপাদন করেছি সেই সমস্ত সবজির বর্ণনা এবং ফটোগ্রাফি নিয়ে। আশা করি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে আমার এই সুন্দর ফরমালীন মুক্ত সবজি গুলো দেখে। প্রথম পর্যায়ে আমি আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে এসেছি কুমড়া,এখানে প্রথমে আপনারা লক্ষ্য করে দেখছেন যে চাল কুমড়া গাছের লম্বালম্বি একটি বান। এই চালকুমড়া গাছের বান আমি নিজে হাতে দিয়েছি। চাল কুমড়া গাছের বীজ বাপনের পূর্ব মুহূর্তে একদিন সন্ধ্যাকালীন মুহূর্তে চাঁদনী রাত এমন একটা সময়ে ছয়টা থানা করেছিলাম চাল কুমড়া গাছ লাগাবো বলে। সারাদিন প্রচন্ড রোদ গরম থাকায় দিনের বেলায় সাহস পায়নি মাটি কুপিয়ে সবজি লাগানোর থানা তৈরি করব, তাই একদিন চাঁদনী রাতে আমি যখন পুকুর বেড়াতে এসেছিলাম, হঠাৎ মাথায় আসলো যদি আমি চাঁদনী রাতে কাজ করে যেতে পারি তাহলে খুব সহজেই এখানে এডভান্স চাল কুমড়া ফলাতে পারবো। তাই আমি তারপরের দিন বিকেল টাইমে কোদাল নিয়ে পুকুরে এসে হাজির হলাম। মাছের খাবার দেয়া শেষে অনলাইনে কাজ করতে থাকলাম। এইভাবে অনেকটা সময় পার হয়ে গেল। তারপরে চাঁদ উঠল, সন্ধ্যাকালীন মুহূর্তে চাঁদের আলোয় যথেষ্ট দেখতে পারছিলাম তাই শুরু করে দিলাম এই জায়গায় গর্ত খোড়া অর্থাৎ থানা তৈরি করা। হয়তো একটু একটু ঘেমে যাচ্ছিলাম তার পরেও মাঠে ফুরফুরে হাওয়া চাঁদনী রাতে তেমন একটা বেশি ক্লান্ত বোধ করছিলাম না। এভাবেই ছয়টি গর্ত করে ফেলেছিলাম। কিছুদিন পরে বাড়ি থেকে কম্পোস্ট সার নিয়ে গিয়ে গর্তগুলোতে ভরাট করে দিলাম। এরপর সাবমারসিবল পাম্প দিয়ে প্রত্যেকটি থানা খুব সুন্দর করে ভিজিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর আমার বন্ধু মারুফ প্রত্যেকটা থানায় চালকুমড়া গাছের বীজ লাগিয়ে দিয়েছিল। সেই থেকে এই সুন্দর চাল কুমড়া গাছ জান্মীয়ে বড় হতে থাকলো,আর আমি পাশাপাশি নিজের বাড়ি বাঁশ ঝাড় থেকে বাস নিয়ে গিয়ে এমন সুন্দর আড়া করে দিলাম। মাঝেমধ্যে গাছগুলোর গোড়ায় ইউরিয়া পানিতে গুলিয়ে গুলিয়ে দেওয়া শুরু করলাম। আর এমন সুন্দর চাল কুমড়া গাছ হয়ে গেল। এখন বেশ অনেকগুলো কুমড়া ধরা শুরু হয়ে গেছে।

IMG_20230705_053855_7.jpg

IMG_20230705_053931_6.jpg

IMG_20230705_054033_7.jpg

IMG_20230705_054150_322.jpg

IMG_20230705_054314_753.jpg

IMG_20230705_054413_317.jpg

Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স

২ নং ফটোগ্রাফি

শুধু চালকুমড়ায়ে নয় পুকুর পাড়ে রয়েছে ঝিঙ্গা গাছ। একইভাবে পুকুর পাড়ে ঝিঙ্গা গাছ লাগিয়েছিলাম, তবে এটা হাইব্রিড তাই অনেক বড় বড় ঝিঙ্গা ধরছে। প্রচন্ড রোদ গরমের ঝিঙ্গা গাছের বৃদ্ধি তেমন একটা ছিল না। তবে একমাস আগে আমরা বৃষ্টির জন্য অনেক অপেক্ষা করেছিলাম। সেই বৃষ্টির পর থেকেই যেন এই গাছগুলো অনেক বৃদ্ধি পেয়ে গেছে, পাশাপাশি আরও বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য আমি বাঁশ দিয়ে ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এখন গাছে গাছে ঝিঙ্গা ধরা শুরু হয়েছে।

IMG_20230705_060630_6.jpg

IMG_20230705_060650_2.jpg

Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স


৩ নং ফটোগ্রাফি

বর্তমান ঝালের দাম হায়। হাজার টাকার উপরে। বাজার থেকে কাঁচা ঝাল কিনে খাওয়া বড়ই কঠিন আমাদের মত মানুষের জন্য। তবে আলহামদুলিল্লাহ আমার পুকুরের বাউরিতে দেড়শ থেকে ২০০ ঝালে গাছ রয়েছে। এতদিন ঝাল ধরে ছিল না, তবে বেশ কয়েকদিন লক্ষ্য করছি ঝাল গাছে ফুল এসেছে কয়েকটা গাছে ঝাল ধরা শুরু হয়েছে। আশা করি খুব শীঘ্রই আমার প্রত্যেকটা ঝাল গাছের ঝাল ধরা শুরু হবে এবং এই থেকে আমার বাড়ির প্রয়োজন মিটাতে পারবো। তবে এই সময়ে পুকুর পাড়ে ঝালগাছে পিপড়ার খুবই অত্যাচার। হয়তো এই অত্যাচার বন্ধ করার জন্য বিশেষ কোনো পদ্ধতি অবলম্বন করতে হতে পারে। যেহেতু এটা পুকুরের পাড় তাই বন জঙ্গলে ঘেরা। তাই এমন জায়গায় থেকে ঝালের আশা করা বড়ই কঠিন।

IMG_20230705_060056_5.jpg

IMG_20230705_060114_0.jpg

IMG_20230705_060233_8.jpg

Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স

৪ নং ফটোগ্রাফি

বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি শাকের নাম পুঁই শাক। আর পুঁইশাক আমার এতটাই ফেভারিট তা মুখে বলে বোঝানো সম্ভব নয়। আমার পুকুর পাড়ে অন্যান্য সবজির মধ্যে এটা যেন অন্যতম। আমি এই পুঁই শাক এতটাই পছন্দ করি তাই অগ্রিম একটি পুঁই শাক বান তৈরি করে ফেলেছি পুকুর পাড়ে। মাত্র দুইবার ইউরিয়া সার প্রয়োগ করে এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে,প্রত্যেক দিন প্রায় শাক তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। শুধু নিজেদের খাওয়াই নয় এখান থেকে আত্মীয়স্বজনেরও দেয়া হয়েছে। আমি আশা করি এই আষাঢ় শ্রাবণ মাস থেকে শুরু করে মাঘ ফাল্গুন মাস পর্যন্ত এ পুঁই শাক খেতে পারবো। আর এভাবে নিজে যদি উৎপাদন করি যায় বিভিন্ন শাকসবজি, তাহলে কতটা নাই ফরমালিনমুক্ত শাকসবজি খেতে পারবো এবং পরিবারের সদস্যদের সুস্থ রাখতে পারব। আশা করি এই ধারা অব্যাহত রাখতে পারব দীর্ঘদিন। আর এভাবে শাকসবজি উৎপাদন করে নিজের খাওয়া পাশাপাশি আর্থিক দিক থেকে কিছুটা হলেও লাভবান হতে পারব। তাই আশা করব, আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির অন্যান্য ভাইবোনেরা যারা আমার এই পোস্ট পড়তে এসেছেন সকলেই পড়ে থাকা জায়গায় এভাবে সবজি ফলাবেন। এই থেকে অন্যান্য মানুষেরা জানবে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সদস্যরা সকল দিক থেকেই একটিভ এবং কর্মদক্ষশীল।

IMG_20230705_060759_1.jpg

IMG_20230707_185515_003.jpg

IMG_20230707_185445_279.jpg

IMG_20230707_185409_950.jpg

Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স

R6TbvATub8MquGoqJZ4SE2UCpaUQzmNnWQxvJGwvYApXWE4KsVzC8vNNXWgtz7hrfoYPSrjupZgj7VtKhrH935ua1PLs4Vr7KiYnVAy3oD...tCNiac63XNuwJJZPbTjHfGPYJH4BJoHgX8HdohSPrSasKvArV8wiiFV7ntYqz66tLZiqG67BKrPAveZFRs3vaqucpJgsaE3qA6Rwasb2fYDx3U5dXGLwwRdyH8.png


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif

Sort:  
 last year 

ভাইয়া আপনার সবজি গুলো দেখে সত্যি অনেক ভালো লাগল। আসলে ভাইয়া বর্তমান সবজির যে দাম বলার মতো নয়।আপনার তো দারুণ বুদ্ধি চাঁদনী রাতে এভাবে কাজ করেছেন।আর ঝালের কথা কি বলবো অনেক দাম আপনি অনেক ভালো করেছেন কিছু ঝাল গাছ লাগিয়ে। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

হ্যাঁ বর্তমানে সবজির অনেক দাম তাই চেষ্টা করেছি নিজে কিছু তৈরি করে সহযোগিতার হাত বাড়ানোর

 last year 

ভাই আপনার সবজি বাগানে তো বেশ কিছু সবজি তৈরি করেছেন। আসলে বর্তমানে সবজি যে দাম তাতে নিজের বাড়িতে তৈরি করে খাওয়াটাই সবচেয়ে ভালো। আপনি চাল কুমড়ো পুঁইশাক কাঁচা মরিচ আরো কিছু সবজি তৈরি করেছেন। এগুলো তৈরি করা দেখেন না নিজের কাছে ভীষণ ভালো লাগলো ভাইয়া। নিজেদের প্রয়োজনে খাবারগুলো যদি আমরা নিজের উৎপাদন করতে পারি তাহলে একদিকে যেমন আমরা টাটকা খেতে পারে অন্যদিকে এগুলোর দামও অনেক কম হয় হয়।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

চেষ্টা করেছি বিভিন্ন প্রকার সবজি উৎপাদন করতে

 last year 

সবজি বাগান করতে আমরা সকলেই অনেক বেশি পছন্দ করি বিশেষ করে বাড়ির আঙিনায় যদি খোলা জায়গা থাকে তাহলে সেই আঙ্গিনায় সবজি বাগান করতে অনেক বেশি ভালো লাগে। আপনি খুবই চমৎকারভাবে আমাদের মাঝে সবজি বাগানের ফটোগ্রাফি তুলে ধরেছেন অনেক প্রকার সবজি রয়েছে আপনার বাগানে দেখে ভালো লাগলো। বিশেষ করে টাটকা পুইশাকের সবজি দেখে নিজেকে কন্ট্রোল করা অনেকটাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে মনে হচ্ছে আপনার বাসায় গিয়ে টাটকা পুঁইশাক নিয়ে আসি। যাই হোক শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

এটা আমি ছোটবেলা থেকেই পড়ে আসছি বইতে এবং পাশাপাশি চেষ্টা করছি তৈরি করতে

 last year 

আপনার সবজি বাগানে তো দেখছি অনেক ধরনের সবজি উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছেন। আপনার এই বুদ্ধিটা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে কেননা ইউরিয়া গুলিয়া যদি গাছের গোড়াতে দেয়া যায় তাহলে গাছ খুব তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পায়।

 last year 

আরো অনেক সবজি রয়েছে যা দেখানো হয়নি

 last year 

আপনার সবজি বাগান থেকে মন অনেক জুড়িয়ে গেল এত সুন্দর সবজি বাগান সত্যি আমার অনেক ভালো লেগেছে। এই ধরনের সবজি বাগান আমি যখন গ্রামে ছিলাম তখন করতেই থাকতাম বেশ ভালই লাগতো আমার কাছে। তবে গ্রামে মায়ের বাসায় গেলে এমন সুন্দর সুন্দর সবজি বাগান দেখি। এ ধরনের তাজা শাক-সবজি খেতে অনেক ভালো লাগে। আপনি আরো সুন্দরভাবে এগিয়ে যান। আমি মনে করি এটি অনেক সুন্দর একটি পরিকল্পনা আপনার আশাকরি সফল হবেন লেগে থাকুন।

 last year 

চেষ্টা করেছি আপু পুকুর পাড়ে এমন সবজির তৈরি করতে

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.17
JST 0.031
BTC 87962.02
ETH 3341.45
USDT 1.00
SBD 2.89