গল্প: তেঁতুল গাছে মৌমাছির সম্মুখীন
হাই বন্ধুরা!
আমার গল্পের রাজ্যে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগতম। পূর্বসপ্তার ন্যায় আজকে উপস্থিত হয়ে গেলাম সুন্দর একটি গল্প নিয়ে। যে গল্পের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন আমার জীবনে কোন একটা লুকিয়ে থাকা ঘটনা। একজনের জানা ঘটনা অন্য জনের মাঝে ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয় অজানা তথ্য। ঠিক তেমনি সুন্দর একটি গল্প নিয়ে উপস্থিত হয়েছি আজ। আশা করি স্মৃতিচারণ মূলক এই গল্প আপনাদের অনেক অনেক ভালো লাগবে। তাই চলুন আর দেরি না করে গল্পটা পড়ি এবং গল্প পড়ার আনন্দ উপভোগ করি।
Huawei P30 Pro-40mp
আমাদের চারটা তেঁতুল গাছ ছিল। তার মধ্যে একটা বর্তমান রয়েছে। যে কাজটা সবচেয়ে বড় ছিল সেই গাছটা রয়ে গেছে। একদিন আমি তেঁতুল পেকেছে কিনা যাচাই করার জন্য এবং বাড়িতে খাওয়ার জন্য গাছে উঠবো সিদ্ধান্ত নিলাম। কারণ তেঁতুল গাছ অন্যান্য গাছের তুলনায় ভিন্ন। গাছে উঠতে মন চাইলেও অলসতা লাগতো। কারণ তেঁতুল গাছের ডালপালা গায়ে হাচোর লাগলে কেটে যায়। যখন তেঁতুল গাছে উঠতাম একটা বিষয় নিশ্চিত থাকতাম,গায়ের কোন অংশ কেটে যাবেই রক্ত বের হবেই। ঠিক তেমনি একটা মুহূর্তে বেশ উৎসাহের সাথে তেঁতুল গাছে উঠছিলাম। আমাদের গাছটা যথেষ্ট উঁচু। অনেক উপর থেকে ডালপালা। বুঝতে পারছেন নিচের অংশ কষ্ট করে উঠে লাগে। নিচের অংশ অতিক্রম করে যেখান থেকে ডাল শুরু সে পর্যন্ত উঠে গেছি। তবে তেঁতুল গাছের তেতুলগুলো ডালের লাস্টের দিকে হয়ে থাকে এজন্য মোটা ডাল অতিক্রম করে ডালের লাস্টের দিকে যাওয়া লাগে এবং সেখান থেকে পাড়া লাগে। আমার চিন্তাধারা ছিল একদম উপরের অংশে গিয়ে তেঁতুল পাড়বো। কারণ আমাদের তেতুল গাছের একদম উপরের অংশে বসে থাকার মত সুন্দর জায়গা রয়েছে। মেলা ডালে আচ্ছন্ন সেই জায়গাটা। আমি প্রত্যেক বছর পাকা তেঁতুল পাড়ার জন্য গাছে উঠে থাকি বেশ কয়েকবার, আর উপরের সেই অংশে কিছুটা সময় বসে রেস্ট নিয়ে থাকি।
যাইহোক আমি একদম উপরের অংশে উঠে চলে গেলাম। সেখানে পরীক্ষা করে দেখলাম কোন তেতুল পাকে নাই। কোনরকম পাকার মত হয়ে আসছে। আমরা জানি মাঘ মাসে তেতুল তাকে। আর শীতের সময় সরিষা ফুল হয় মাঠে অনেক বেশি। তাই মৌমাছির চাক বাঁধে বিভিন্ন গাছে, আর মাঠে ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে। অর্থাৎ শীতের সময় মৌমাছির চাকের প্রবণতা বেড়ে যায় যেখানে সেখানে বড় কোন গাছের ডালে। আমি তো এত কিছু মাথায় রাখি নাই। শুধু তেঁতুল পেকেছে কিনা এই চিন্তা নিয়ে গাছের উপরে চলে গেছি। একটু নিচের দিকে লক্ষ্য করে দেখি আমি যে জায়গা অতিক্রম করে উপরে চলে এসেছি ঠিক সেই জায়গায় ডালের নিচে দেখার মত একটি মৌমাছির চাক। আমি যে মৌমাছির চাককে অতিক্রম করে উপরে চলে গেছি ভুলেও টের পাই নাই। কিন্তু যখন আমার চোখে বাঁধলো উপর থেকে তখন তো বেশ মুশকিলে পড়ে গেলাম। এখন উপর থেকে মৌমাছির চাক অতিক্রম করে নিচে নামবো কি করে?
মাঝে মাঝে ভয়ে আমার গা শিউরে উঠতে থাকলো। ওঠার সময় উঠে গেছি চোখে বাধে নাই নামার সময় যদি নেমে যেতাম চোখে না বাধ্য তাহলেই তো ভালো হতো। মাঝেমধ্যে লক্ষ্য করে দিখলাম, মৌমাছির চাক থেকে মাছি আসা যাওয়া করছে প্রতিনিয়ত। আমি যখন গাছের উপরে বসে লক্ষ্য করি তখন দেখলাম একসাথে অনেকগুলো উড়ে যাচ্ছে আবার একসাথে অনেকগুলো করে এসে চাকে বসছে। এদিকে বিভিন্ন তেতুলে হাত লাগিয়ে দেখলাম তেঁতুল এখনো পাকার মত হয়নি। সম্ভবত মাঘ মাসের আগের সময় হবে তাহলে। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম তেঁতুল আর নয় আগে নিজেকে বাসায়। এখন কিভাবে নামবো সে চিন্তা মনের মধ্যে। হঠাৎ কোনো কারনে ভয় পেলে একটু থামতে হয় এবং চিন্তা করতে হয়। ঠিক তেমনি আমি তেতুল গাছের উপরের সেই স্থানে থামলাম এবং চিন্তা করলাম। এরপর ভাবলাম অতি সাবধানতার সাথে মোটা ডাল ধরে নেমে যাব। কিন্তু মৌমাছির চাকতো সেই ডালেই রয়েছে নিচের অংশ। একজন মানুষ সোজাসুজি হাত লম্বা করে দাঁড়ালে বগলের নিচ অংশ যেমন হয়। গাছের ঠিক তেমন অংশে মৌমাছির চাকটা ছিল। তবুও গাছে উঠে গেছি টের পায় নাই, আসলে চারটা বিপরীত পাশে ছিল তাই।
এবার আমি বুদ্ধি করলাম। আস্তে আস্তে নিচের দিকে অগ্রসর হলাম। আশেপাশের অন্যান্য সেই ডাল ছিল সেই ডালগুলো ধরে কোনমতে নিচের দিকে আসতে থাকলাম। কিন্তু যেই মুহূর্তে মৌমাছির চাকরির কাছে উপস্থিত হলাম, তখন ভয়ে আমার হাত ফসকে যাওয়ার মত হলো। আর আমার হাত পা কাপার সাথে সাথে গাছ জোরে কাঁপুনি দিয়ে উঠলো। ইতোমধ্যে লক্ষ্য করলাম মৌমাছির চাক থেকে মাছিগুলো গা ঝাড়া দিয়ে উঠলো। আমি থমকে উঠে যেন থেমে গেলাম থরথর করছে বুক। এই মুহূর্তে সব মৌমাছি যদি আমাকে অ্যাটাক করে কিছু করার নেই। তবে পূর্ব একটা কথা স্মরণ করেছিলাম। যতক্ষণ না মৌমাছি চাকে আঘাত করা হবে ততক্ষণ তারা কামড়াবে না। সামান্য এক বিদ্যার ব্যবধান। একই স্থানে আমাদের অবস্থানে। কতটা সাহস আর কতটা ঘরের অনুভব বুঝতেই পারছেন। যারা মৌমাছির চাক থেকে মধু সংরক্ষণ করে তারাও মৌমাছি চাকরির কাছে যেতে আগুন ও ধোয়ার ব্যবস্থা রাখে। আর আমি তো সেখানে খালি হাতে, নেই কোন প্রোটেকশন।
এরপর ধীরে ধীরে আমি আবারো নিচের দিকে নামতে থাকলাম। পায়ের নিচে দুইটা ডাল রয়েছে। প্রথম যে ডালটা সেই ডালটা মৌমাছির চাকের পাশ দিয়ে বের হয়ে গেছে। একটু জোরে পা রাখলেই মৌমাছিগুলো সাড়া করবে। তাই সেই জায়গাটা অতিক্রম করলাম। এখন ভয় আরো বেশি। এতক্ষণ মৌমাছির চাক ছিল পায়ের এক বৃদ্ধা নিকটে। পা নামিয়ে দিয়েছি নিচে, এখন মৌমাছির চাক আমার চোখ মুখের থেকে এক হাত দূরে। তাহলে বুঝতে পারছেন কতটা ভয়ানক মুহূর্ত তখন আমার। আর সেই মুহূর্তে অনেকগুলো করে মৌমাছি তো উড়ে চলে যাচ্ছে মধু সংরক্ষণ করতে আবার উড়ে আসছে। পায়ের দিকে লক্ষ্য করলাম হাতের দিকে লক্ষ্য করলাম। এরপর আবার নীরবে ধীরে ধীরে মাথা নিচু দিকে নামাতে থাকলাম। যেখানে গাছে উঠে যেতে দুই মিনিট সময় লাগে, সেখানে সামান্য একটু অংশ পার হতে আমার দশ মিনিট লেগে যাচ্ছে আর এদিকে প্রচন্ড গা ঘেমে যাচ্ছে ঠান্ডার সময়।
আর এভাবেই বেশ ধীরে ধীরে সাবধানতার সাথে একটা মুহূর্তে আমি গাছে নিচে নেমে আসলাম। এরপর সেখান থেকে নেমে একটু দূরে বসে এমন শান্তির নিশ্বাস ফেললাম, যেন মরণের কাছ থেকে বেঁচে ফেরার মতন।
গল্পটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফি | মৌমাছির গল্প |
---|---|
বিষয় | অতীত ঘটনা |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Huawei P30 Pro-40mp |
ঘটনার লোকেশন | জুগীরগোফা |
ব্লগার | Sumon |
ঠিকানা | গাংনী-মেহেরপুর, বাংলাদেশ |
খুব ভয়ানক একটি গল্প শেয়ার করেছেন আপনি। গাছে ওঠা আবার সেখানে মৌমাছির চাক। সেটাকে অতিক্রম করে নেমে আসা বেশ দুঃসাধ্য ব্যাপার। হয়তো আপনার কপাল ভালো ছিল এই জন্য আপনি মৌমাছির কামড় ছাড়াই নামতে পেরেছেন। বিষয়টা আমাদের মাঝে শেয়ার করে জানার সুযোগ করে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
গল্পটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
ছোট বেলাতে এমন কেউ নেই যে মৌমাছির তারা খায়নি। তেঁতুল গাছে উঠে মৌমাছি সম্মুখীন হয়েছেন এটা খুবই ভয়ানের একটা ব্যাপার। তো সব থেকে ভালো বিষয় এই যে আপনি মৌমাছির কামড় থেকে রক্ষা পেয়ে গেছেন। ধন্যবাদ গল্পটা পড়ে অনেক ভালো লাগলো।
অনেক বাচা বেঁচে ছিলাম
আমি জিবনে একবার মৌমাছির কামড় খেয়েছিলাম। মৌমাছি কামড়ে যে কি বিষ আমি সেদিন থেকে উপলব্ধি করেছিলাম। আমার মাথায় কামড় দিয়েছিলো।