নিজ হাতে উৎপাদিত ফরমালিনমুক্ত টমেটো
আজ - সোমবার
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি নিজের হাতে উৎপাদিত সবজি টমেটোর ফটোগ্রাফি নিয়ে।
'আমার বাংলা ব্লগ' কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট |
---|
আপনারা জেনে খুশি হবেন যে আমার ২৫ থেকে ৩০ টা টমেটো গাছ রয়েছে পুকুরের বাউরিতে। আমি শিক্ষকতার পাশাপাশি পরিবারের বিভিন্ন কাজকর্মে অংশগ্রহণ করে থাকি তার মধ্য থেকে সবজি চাষ করা আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগা। তাইতো এবার শীতকালীন বিভিন্ন সবজি চাষ করেছি তার মধ্য থেকে টমেটো আমার অতি প্রিয় একটি সবজি। আর এই টমেটো গাছ লাগানোর পর থেকে প্রতিদিন সকাল বিকাল টাইমে একটু একটু করে পরিচর্যা করতাম। সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে গাছগুলো অনেক সুন্দর বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে ফুল এবং ফল ধরেছে। আপনারা হয়তো ফটোগ্রাফি গুলো দেখার মধ্য দিয়ে বুঝতে পারছেন কেমন সুন্দর ভাবে আমার এই টমেটো গাছগুলোতে টমেটো ধরা শুরু হয়েছে। গাছগুলো বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য সময়মতো সাবমারসিবল পাম্প এবং ১২ ভোল্টের ডিসি ব্যাটারি দিয়ে পুকুর থেকে পানি উঠিয়ে পানি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। সঠিক সময় মত পানি দেওয়া এবং সার প্রয়োগ করতাম যার ফলে এত সুন্দর ভাবে কাজ গুলো ভিত্তি পেয়েছে।
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
আজ থেকে কয়েক বছর পূর্বে আমি কৃষি প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম। কৃষি অফিস থেকে গ্রামে গ্রামে যে সমস্ত প্রশিক্ষণ দেয়া হয়ে থাকে ঠিক এমন একটি প্রশিক্ষণে আমার নাম দেয়া হয়েছিল এবং আমি তাতে অংশগ্রহণ করেছিলাম এবং সেই থেকে জানতে পেরেছিলাম কিভাবে ফসলের পরিচর্যা করতে হয় বিশেষ করে শাক সবজির। তাই আমি এই বিষয়ে বেশি গুরুত্ব আরোপ করেছিলাম কারণ আমি শাকসবজি উৎপাদন করতে খুবই আগ্রহী। সে থেকে আমি সুন্দর নাম শৃঙ্খলা বুঝে গেছি এবং প্রতিবছর কমবেশি সবজি উৎপাদন করে থাকি। এবার আমার চাচাতো ভাই বা বন্ধু মারুফকে বলেছিলাম যে করেই হোক বিভিন্ন প্রকার সবজি উৎপাদন করব তবে তার মধ্য থেকে টমেটোর প্রতি বেশি গুরুত্ব আরোপ করব কারণ এটা আমার খুবই প্রিয় একটি সবজি। মারুফ খুবই উৎসাহিত হয়েছিল তার উৎসাহিত হওয়ার পিছনে বিশেষ কারণ এই যে সবজিতে পানি দেয়ার সঠিক সু ব্যবস্থা রয়েছে। যেহেতু স্কুল টাইম শেষ করে বাড়িতে যেয়ে খাওয়া দাওয়া করে বিকেলের আযান হয়ে যায় এরপরে আমরা ওই টাইমটাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি অবহেলায় না নষ্ট করে। যার ফলে এত সুন্দর সুন্দর টমেটো ফলালষতে সক্ষম হয়েছি, আর সম্পূর্ণটাই সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানী।
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
আমার প্রতিটা গাছে অধিক পরিমাণে টমেটো এসেছে। এবং খুব কম পরিমাণ টমেটো নষ্ট হয়েছে। তবে ইদানিং লক্ষ্য করছি আমাদের কিছুটা ভুলের কারণে টমেটো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা দুজন তার কারণ উদঘাটন করেছি। লক্ষ্য করলাম আমরা তাড়াহুড়া করে যে সবজিতে পানি দিয়ে চলে আসি কিন্তু যে সমস্ত টমেটোগুলো মাটির সাথে ঠেকে রয়েছে, সেগুলোর প্রতি আমাদের খেয়াল একেবারেই ছিল না যার জন্য মাটির সাথে লেগে থাকায় এবং সেচ দেয়ার ফলে নিচে কাঁদা হয়ে তার পচন হচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাবে কারণ উদঘাটন করতে পেরে আমরা দুজন বাঁশের ঝাড় থেকে কিছু কঞ্চি কেটে নিয়ে গেলাম। কুনচি গুলোকে ছোট ছোট খন্ডে বিভক্ত করলাম। যে জায়গাতে অনেক পরিমাণ টমেটো এসেছে তার নিচে খুটি দেওয়ার মতো করে কঞ্চি পুতে দিলাম। আরেকটি বিষয়ে আমরা যথেষ্ট সজাগ ও সচেতন রয়েছি এই জন্য যে একই স্থানে বেশি টমেটো থাকলে সম্পূর্ণটা ভালোভাবে বৃদ্ধি পায় না তাই যেগুলো খাওয়ার উপযুক্ত হয়ে গেছে তার মধ্য থেকে কিছু কিছু তুলে পাতলা করে দিলাম।
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
আর ঠিক এভাবেই আমরা প্রতি সপ্তাহে দুইদিন করে টমেটো তুলে থাকি। তবে একটি বিষয় আমাদের আনন্দ দিয়ে থাকে এবং পরিবার থেকে বাহবা পেয়ে থাকি সেটা হচ্ছে একদম ফরমালিন মুক্ত সতেজ ও সবল টমেটো পেয়ে থাকে নিজের চাষকৃত ছোট্ট বাগান থেকে বা পুকুরের পাড় থেকে। আর এই বিষয়টা পরিবারসহ পাড়া গায়ে অনেকটা অবাক করা রূপ ধারণ করেছে। অবাক করা একটি রূপ ধারণ করেছে এই জন্য যে ডিসি সাবমারসিবল পাম্প আর ডিসি ব্যাটারির মাধ্যমে খুব অল্প সময়ে সেচ ব্যবস্থা চালু করেছি দেখে। যেকোনো মুহূর্তে দিন কিবা রাতে কাঁধে করে নিয়ে যেয়ে সবজিতে পানি দিয়ে আসতে পারি। হয়তো এমন ডিসি সাবমারসিবল পাম্প দেশের বিভিন্ন স্থানে চালু রয়েছে কিন্তু আমাদের এলাকায় নেই বললেই চলে। যেহেতু আমাদের এখানে শুধু মাছ আর ধানের চাষ।সবজির কোন চিহ্ন নেই। আর এরই মধ্যে আমরা যে কাজটা করে থাকি তা অন্যান্য মানুষকে উৎসাহ প্রদান করা হয়ে থাকে নতুন কিছু উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে। যেখানে অল্প পরিশ্রমে পড়ে থাকা জায়গায় সবজি উৎপাদন করতে পারছি। আর আমি আমার এই ডিসি সাবমারসিবল পাম্প অনলাইনে কিনেছিলাম সিলেট থেকে। ডিসি ১২ ভোল্টের ব্যাটারিটা কিনেছিলাম গাংনী বাজার থেকে। আর এই সমস্ত বিষয়ে ধারণা অর্জন করেছিলাম ইউটিউব দেখে। যাইহোক সুন্দর টমেটো উৎপাদন করে মানুষকে দেখাতে পেরে নিজের কাছে গর্ববোধ করছি। আশা করি এই দেখে আপনারা উৎসাহিত হয়ে পড়ে থাকা জায়গা কাজে লাগাবেন।
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
💌আমার পরিচয়💌
আমি মোঃ নাজিদুল ইসলাম (সুমন)। বাংলা মাস্টার্স ফার্স্ট ক্লাস মেহেরপুর গভমেন্ট কলেজ। আমার বাসা গাংনী-মেহেরপুর। মড়কা বাজার, গাংনী,মেহেরপুর এ গ্রীনরেইন ল্যাবরেটরি স্কুল নামক প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সহকারি শিক্ষক । ইলেকট্রনিক্সের যন্ত্রপাতি মেরামত ও সৌর প্যানেল নিয়ে রিসার্চ করতে পছন্দ করি। প্রাকৃতিক দৃশ্য ফটোগ্রাফি করা আমার সবচেয়ে বড় ভালোলাগা। দীর্ঘদিনের আমি পাঙ্গাস মাছ চাষী এবং বিরহের কবিতা লেখতে খুবই ভালোবাসি। |
---|
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচিতি | কিছু বিশেষ তথ্য |
---|---|
আমার নাম | @sumon09🇧🇩🇧🇩 |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | মোবাইল |
ব্লগিং মোবাইল | Infinix hot 11s |
ক্যামেরা | camera-50mp |
আমার বাসা | মেহেরপুর |
আমার বয়স | ২৬ বছর |
আমার ইচ্ছে | লাইফটাইম স্টিমিট এর 'আমার বাংলা ব্লগ' এ ব্লগিং করা |
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
পুকুরের পাড়ে দেখছি আপনি দারুন কিছু সবজির চাষ করে ফেলেছেন। আপনি পুকুরের পাড়ে ২০-৩০ টি টমেটো গাছ লাগিয়েছেন এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো। আসলে এই ধরনের টমেটো গুলোতে কোন ধরনের কীটনাশক থাকে না যার ফলে এগুলো খুবই স্বাস্থ্যসম্মত হয়।
একদম জেনুইন সবজি খেতে পারছি
খুব কষ্ট করে আমার প্রিয় সবজি আপনি উৎপাদন করেছেন। আমাক কিছু পার্সেল করা যায় ভাই? পুকুর পাড়ে আপনি খুব সুন্দর করে ২০-৩০ টি গাছ লাগিয়েছেন যেখানে খুব সুন্দর সুন্দর বেশ টমেটো ধরেছে। আবার চাষের জন্য ১২ ভোল্টের ব্যাটারীও কিনেছেন। দোয়া রইল আপনার প্রতি ভাই।
পার্সেল করার সময়টা পাবো বলেন মনে হয় না
আপনারা দুইজনে মিলে তো দেখছি বেশ সুন্দর করে পুকুর পাড়ে টমেটো চাষ করেছে। আবার দেখি এই টমেটো গাছগুলোতে পানি দেওয়ার জন্য সাবমারসিবল পাম্প এবং ১২ ভোল্টের ডিসি ব্যাটারি দিয়ে পুকুর থেকে পানি উঠিয়ে পানি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। এভাবে যেকোনো সবজি নিজেরা উৎপাদন করলে সেগুলো খুবই স্বাস্থ্যসম্মত হয়ে থাকে।
পাকা টমেটো খাওয়ার দাওয়াত থাকলো
এই ধরনের সবজি ক্ষেত দেখলে অনেক ভালো লাগে।ছোটকালে যখন গ্রামে ছিলাম তখন গ্রামের বাড়িতে বাড়ির আঙিনায় সুন্দর করে সবজি চাষ করতাম অনেক ভালো লাগতো।আসলেই বাজার থেকে কোন কিছু কিনে খেতে বেশ ভয়ে ভয়ে কিনতে হয় কারণ ফরমালিন ছাড়া এখন কিছু পাওয়া যায় না। তবে এভাবে যদি নিজেদের ক্ষেত থেকে ফ্রেশ খাবার খাওয়া যায় তাহলে আনন্দটা কিন্তু আলাদা হয়।বেশ সুন্দর চাষ করেছেন এবং ফ্রেশ খাবার খাচ্ছেন অনেক ভালো লেগেছে।
আমি এমনিতেই লাগাতে এবং সবজি উৎপাদন করতে ভালবাসি। কারণ প্রকৃতির মধ্যে সুখ খুঁজে পায়
ভাই ২০-৩০ টা টমেটো গাছ রোপন করে তো নিজের চাহিদাটা ভালোভাবে পূরণ করতে পারবেন। তাছাড়া আপনার পরিশ্রম আপনার সফলতা এনে দিয়েছে এটা বলতেই হবে। আমাদের ঘরের পাশেই কিছুটা জায়গা রয়েছে সেখানে আমরা সবজি বাগান করেছি। তাছাড়া ছাদের উপরে টবের মধ্যেও কিছু টমেটো গাছ লাগিয়েছি। যদিও মোটামুটি সবগুলো গাছে টমেটো দেখা যাচ্ছে। তবে আপনার মত এইভাবে লাগানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা ঘরের পাশে নেই, সেজন্য অল্প কয়েকটাই লাগিয়েছি। নিজেদের চাহিদা পূরণ করতে এগুলো যথেষ্ট।
এইতো ভাই রাত দশটার সময় টমেটো উঠে আনলাম। নিজের চাহিদা যে কোন মুহূর্তে পূরণ করতে পারছি
একদম ঠিক ভাই আমিও আমাদের ছাঁদে কিছু টমেটোর গাছ লাগিয়েছি। ধন্যবাদ আমার মন্তব্যের ফিডব্যাক দেয়ার জন্য।
নিজের হাতে যে কোনো জিনিস উৎপাদন করে ফসল হাতে পাওয়ার অনুভূতি সত্যি খুব আনন্দের। আপনি টমেটো চাষ করেছেন জেনে খুব ভালো লাগলো। টমেটো গুলো খুবই সতেজ এবং ফরম্যাটমুক্ত। এই গুলোর ক্ষেত্রে খুবই মজাদার এবং সুস্বাদু হবে। আমিও সময় পেলে সবজি চাষ করে থাকি। এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
একদম ঠিক কথা বলেছেন ভাই
আপনি অনেক পরিশ্রম করেন ভাই তা আপনার পোস্টগুলো পড়ে বুঝতে পারি। শিক্ষকতার পাশাপাশি সবজি চাষ করা সহজ ব্যাপার নয়। আমাদের অনেকেরই এই ধৈর্য নেই। আপনার পুকুর পাড়ের টমেটো গাছগুলো খুব সুন্দরভাবে বড় হয়েছে এবং অনেক টমেটো ধরেছে। গাছ কম হলেও এতে আপনার চাহিদা মিটে যাবে। আপনার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলাফল এই সুন্দর ফলন। ধন্যবাদ ভাইয়া।
সব বিষয়ে চেষ্টা করে থাকি নিজেকে অংশগ্রহণ করার
বেশ কিছু টমেটো গাছ লাগিয়েছেন আর টমেটো তো বেশ ভালোই ধরেছে। সপ্তাহে ২ দিন টমেটো তুলেন বলেই টমেটো গুলো একদম সতেজ রয়েছে। কাঁচা টমেটো আবার তরকারির সাথে বেশি মজা লাগে।
ইদানিং রাতের বেলায় ইদুরে খেয়ে যাচ্ছে