ফেলে আসা দিনের অ্যাসেম্বলী ক্লাসের অংশবিশেষ

in আমার বাংলা ব্লগlast year (edited)

আজ - বুধবার

২৮ আষাঢ়, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
১২ জুলাই, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ


আসসালামু আলাইকুম

IMG_20230511_092814_439.jpg





হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি আমার প্রাণপ্রিয় ছাত্র-ছাত্রীদের ফটোগ্রাফি নিয়ে। যেখানে অ্যাসেম্বলি ক্লাস অবস্থায় দেখতে পারবেন আমার সেই স্নেহের ছাত্র-ছাত্রীদের যাদের পিছনে অক্লান্ত পরিশ্রম করতাম রোদ গরমে।


'আমার বাংলা ব্লগ'
কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট



ফটোগ্রাফি সমূহ:



আজ যখন চুয়াডাঙ্গা থেকে মাছ বিক্রয় করে বাড়ির দিকে ফিরছিলাম, ফিরতে পথে হাইরোডে লক্ষ্য করেছিলাম আমার একটি ছাত্রী। অনেকদিন পর আমার ছাত্র-ছাত্রীর মুখ দেখতে পেরে অতীতের সেই স্মৃতিগুলো মনের মধ্যে ভেসে আসলো। ছাত্র ছাত্রীর মেধা বিকাশের জন্য কত কিছুই না করতাম একসাথে সকল শিক্ষক মন্ডলি মিলে। সকল শিক্ষক মন্ডলী স্কুলের ক্লাস শুরু হওয়ার ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘন্টা আগেই স্কুলে যে উপস্থিত হতাম। ৭ঃ৪৫ এ স্কুলে উপস্থিত হয়ে ৮ এ সময় অ্যাসেমলি ক্লাস এবং সাড়ে আটটার সময় বিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ ক্লাস শুরু হয়ে যেত। তবে আজ বহুদিন এই বিদ্যালয়ের সেই দৃশ্য আর আমার চোখের সামনে আসে না এমনকি আমার সেই দায়িত্ব আর নেই। ছেড়ে এসেছি সেই দীর্ঘ দায়িত্বের কার্যক্রম। হয়তো তার পূর্বেই ছেড়ে আসতাম কিন্তু একটু দেরি করে ছেড়ে আসতে হয়েছে শুধু মায়ার বন্ধন দ্রুত ছিন্ন করতে পারি নাই বলে। তবে মায়ার বন্ধন কেনই বা ছিন্ন করে আসতে হবে! যেখানে নিজের এত অধিকার। যেখানে নিজের এত দায়িত্ব-কর্তব্য, যেখানে ছাত্র-ছাত্রী মানুষ করার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলাম। সুন্দর এই আয়োজন ছেড়ে চলে আসতে হয়েছে শুধুমাত্র জীবন জীবিকার তাগিদে। হয়তো বিদ্যালয়ের কার্যক্রম যথাযথভাবে চালাছিলাম ছাত্র-ছাত্রী ম্যানেজ করেছিলাম বিদ্যালয়টাও দেখতে ফিটফাট কিন্তু শিক্ষকদের সেখানে মোটেও মূল্যায়ন করা হয় না না মূল্যায়ন করা হয় সম্মানীর দিক থেকে না মূল্যায়ন করা হয় সম্মানের দিক থেকে। একজন এমএ পাস মানুষের মূল্য যদি হয় সাড়ে চার হাজার টাকা তাহলে সে মানুষ তার সংসার কিভাবে চালাতে পারে। কিন্তু সে মানুষগুলো ভূতের মত পরিশ্রম করে থাকে সকাল ভোর থেকে আসর পর্যন্ত। কিন্তু তাদের মূল্যায়ন করার মুহূর্তে আর মূল্যায়ন করা হয় না শুধু মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেয়া হয় বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে আবার সময় সুযোগ পেলে খারাপ আচরণের শিকার হতে হয়। ঠিক তাই যেন আর থাকা হলো না আমার। নিজ দায়িত্বে সেখান থেকে চলে এসেছি। তবে তাদের সেই ফটোগ্রাফি মূলক স্মৃতিগুলো রয়ে গেছে আমার মোবাইলের পাতায়। সকালের এই সুন্দর শীতল হাওয়া মুহুর্তে বাচ্চাদের অ্যাসেম্লি ক্লাস করানো। অনেকগুলো মুখের সাথে মতবিনিময়। ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চাদের হাসি খুশি মন কতনা নিষ্পাপ। প্রতিনিয়ত তাদের অ্যাসেম্বলি ক্লাসে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত শেখানোর চেষ্টা করানো হয় অন্যান্যদের উৎসাহ প্রদান করা হয় তাদের শপথ বাক্য পাঠ করানো হয় যেন তারা সমগ্র জাতির উপকারের জন্য নিজেকে সেই ভাবে গড়ে তুলতে পারে।

IMG_20230306_091109_4.jpg

IMG_20230306_091112_3.jpg

IMG_20230306_091116_7.jpg

IMG_20230306_091125_7.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স



অ্যাসেম্বলি ক্লাসের মাধ্যমে তাদেরকে শৃঙ্খলা শেখানো হতো, দূরত্ব বজায় রাখা,ছেলে মেয়ের ভেতরের যে পার্থক্য, কিভাবে তাদের মানুষ হতেই হবে, কোন পর্যায়ে তারা ভবিষ্যতে যাবে প্রাথমিক পর্যায়ে তাদের বিভিন্ন নিয়ম শৃঙ্খলা ধারণা দেওয়া হতো এসেম্বলি ক্লাসের মধ্যে থেকে। এক কথায় বলতে গেলে অ্যাসেম্বলি ক্লাসটা ছিল যেন তাদের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার প্রাথমিক হাতে খড়ি। এখানে শরীরচর্চার পাশাপাশি যেন মন চর্চা হয়ে যায়। হয়তো প্রচন্ড রোদ গরম শুরু হয়ে যায় একটু অতিষ্ঠ হতে হয় উঠতি রোদে। তবুও যথেষ্ট শরীর চসার মধ্য দিয়ে তারা দ্বীনের যাত্রা শুরু করে এতে মন প্রফুল্ল থাকে। আর এই সমস্ত দায়িত্বগুলো আমরাই অব্যর্থ ভাবে পালন করে চলতাম। এখানে নিজের কোন স্বার্থ নেই আছে শুধু স্বার্থকতা। নেই কোন অবহেলা রয়েছে অক্লান্ত পরিশ্রম আর মানুষ গড়ার প্রচেষ্টা। নেই কোন হিংসা মনোভাব। ছাত্র-ছাত্রীদের সেই শিক্ষা প্রদান করা হতো এখানে।

IMG_20230306_091050_6.jpg

IMG_20230306_091101_2.jpg

IMG_20230306_091053_8.jpg

IMG_20230306_090945_4.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স



হয়তো যুগ যুগ ধরে হাজার হাজার শিশু এভাবেই মানুষ হচ্ছে বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে। অনেকেই সুন্দর শিক্ষা গ্রহণ করেও যেন বড় পর্যায় চাকরিতে চেয়ে ছোটবেলায় এই শপথের কথাগুলো যেন মনে রাখেনা শিক্ষকদের কাছ থেকে নেওয়া সেই শপথগুলো যেন হারিয়ে ফেলে। তবুও আমি দূর থেকে দোয়া করব আমার এই ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য তারা যেন সুন্দরভাবে জীবন গড়ে তুলতে পারে এবং মানুষের মতো মানুষ হয়। হয়তো আজ আর আমি সেই বিদ্যালয়ে নেই তবুও রয়েছে তাদের সেই স্মৃতি এবং তাদের প্রতি ভালোবাসা। আমার পূর্বে চলে আসলো রানা ভাই, তারপর পড়ে চলে আসলাম আমি। সকলেই একটা আশা নিয়ে যায় কিন্তু তাদের কার্যক্রম আর কথাই ঠিক না থাকলে কিভাবে থাকা যায় সেখানে। তবুও ছাত্রছাত্রীদের জন্য দোয়া। তারা সকলেই যেন মানুষের মতো মানুষ হতে পারে। তাদের জীবনে চলার পথে যেন কোনো প্রকার বাধা বিঘ্ন না হয়, সর্বদা সেই কামনা।

IMG_20230306_090746_0.jpg

IMG_20230306_090735_2.jpg

IMG_20230306_090945_4.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স

আশা করি,আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনি অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে বুঝতে ও শিখতে পেরেছেন, সেই সাথে নতুন জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছেন। পোস্টটি উপস্থাপনা কেমন ছিল এবং এ বিষয়ে আপনার অনুভূতি কেমন, অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আমাকে জানাতে ভুলবেন না। আপনার জন্য আমার পক্ষ থেকে শুভকামনা রইলো।


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif

💌আমার পরিচয়💌


আমি মোঃ নাজিদুল ইসলাম (সুমন)। বাংলা মাস্টার্স ফার্স্ট ক্লাস মেহেরপুর গভমেন্ট কলেজ। আমার বাসা গাংনী-মেহেরপুর। মড়কা বাজার, গাংনী,মেহেরপুর এ গ্রীনরেইন ল্যাবরেটরি স্কুল নামক প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সহকারি শিক্ষক । ইলেকট্রনিক্সের যন্ত্রপাতি মেরামত ও সৌর প্যানেল নিয়ে রিসার্চ করতে পছন্দ করি। প্রাকৃতিক দৃশ্য ফটোগ্রাফি করা আমার সবচেয়ে বড় ভালোলাগা। দীর্ঘদিনের আমি পাঙ্গাস মাছ চাষী এবং বিরহের কবিতা লেখতে খুবই ভালোবাসি।

zr7XQBzuvvkjgjjPxunUtP5k84gxgWc4mR8PqdBj5rx8AtXSSugGPwSy7JKyM3rgX4k3arRVPC2wT66DqiAYg2UuYrHpE94NCJsYEnjKP7Erbg.png


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.17
JST 0.031
BTC 86983.34
ETH 3345.59
USDT 1.00
SBD 2.84