হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। মনের মধ্যে কিছু কথা জমা থাকে, যেগুলো ব্যক্ত করা হয় না মনের মত মানুষ না পাওয়ায়। কেউ সে সমস্ত কথা কবিতার ভাষায় প্রকাশ করে কেউ এভাবে লিখে। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব আমাদের সামিয়া বাবু হওয়ার পিছনে আমার দায়িত্বের মুহূর্ত ও অন্যান্য বিষয়।
তাহের ক্লিনিক -২, গাংনী হসপিটাল বাজার। সিজার করার পূর্বে ডাক্তার বেশ অনেক ইনজেকশন ও ঔষধ লিখে দিয়েছিল। একদিকে পরিবারের নিয়ে টেনশন আরেক দিকে বাইরের ছোটাছুটি। জানিনা আপনারা কতটা ফিল করতে পারবেন তবে সেই মুহূর্তে আমার যেন জান ছিল ঠোঁটের আগায়। তবুও মনকে শক্ত করে আমি আমার দায়িত্ব পালন করে চলতে থাকলাম। ক্লিনিক থেকে হাইরোড হাইরোড থেকে ফার্মেসি ফার্মেসি থেকে আরেক ফার্মেসি ঠিক এভাবেই সুস্থ সবল নবজাতক শিশুর পাওয়ার আশা এবং আমার পরিবারের ভালো রাখার আশা। তবে যেই সময়ে সিজার করার কথা ছিল ডাক্তার আসতে এতটাই দেরি করল সত্যি অধৈর্য হয়ে গেছিলাম সবাই। তিনটার সময় স্বীকার করার কথা সেখানে সাড়ে ছয়টার সময় কাজ সম্পন্ন হল। আর তার পূর্বে দুইটা ফার্মেসিতে বেশি চলাচল করতে হয়েছে এটা সেটা আনতে। এই ফার্মেসীর ভাইটা বেশ হাসিখুশি এবং ভালো মনের মানুষ। তবে ঔষধ বামুন্দি বাজারে যেমন ১০% ছাড় দেয় এখানে সেইটা পেলাম না। তবে মাথা গুনে কিছু টাকা ছাড় দেওয়া হয়েছে।
| |
বাবু হওয়ার পরেও বাবুর মায়ের জন্য বেশ কিছু ইনজেকশন কিনতে ছোটাছুটি করতে হয়েছে বিভিন্ন ফার্মেসিতে। কারণ এখানে অনেকগুলো ফার্মেসি ছিল একসময়, রাস্তা সংস্কারের কাজে সেগুলো ভেঙে দেওয়া হয়েছে। যার জন্য উপজেলা বাজার থেকে গাংনী উপজেলা বাজার থেকে বেশ অনেকটা দূরত্ব পথ গাংনী সবজি বাজার। আর সেই পথে চলতে হয়েছে আমার অবিরত। এদিকে বাবুর ভিটামিন জাতীয় একটা ওষুধ খাওয়ানোর জন্য নিচে আসতে হয়েছে। এক কথায় বুঝতে পারছেন কতটা ছোট ছোট করতে হয় এমন একটি মুহূর্তে। তাই যার এমন অবস্থা হয়, সে তখন চায় পাশে একজন সান্ত্বনা দেওয়া বা সাহস দেওয়ার মানুষ থাকুক। কারণ আমার পরিবার তো সেই মুহূর্তে অজ্ঞান সিজার করার জন্য। আর যত প্রকার টেনশন দায়িত্ব সব আমার নিজের মাথার উপর। এদিকে আপনারা জানেন যেখানে সিজার হয় সেখানে পুরুষ মানুষ রাতে অ্যালাও নেই। তবুও তিনটি রাত বারান্দায় শুয়ে থেকে পার করেছি। শুধু রাত্রে দেখেছি হাইরোড দিয়ে অনবরত চলাচল গাড়ি আর গাড়ির মন্দ শব্দ।
| |
ঔষধ কেনার জন্য, বকশিশ দেয়ার জন্য, আর যাই বলুন না কেন, মাঝে মাঝে ফিল করেছি দু পাঁচ হাজার করে টাকা হাতে আনার। তাই ছুটে হয়েছে বিকাশ অথবা নগদের ঘরে। এদিকে পরিবারের জন্য, যে কয়েকজন আত্মীয়-স্বজন উপস্থিত ছিল তাদের জন্য এটা সেটা কিনতে হয়েছে। তাই ওই তিন-চার দিনের মুহূর্তে বেশ কয়েকবারের জন্য ফার্মেসি সহ বিকাশ বা নগদের ঘরের দিকে যেতে হয়েছে আমার। তবুও পেয়েছি অবহেলা, অশিক্ষিতের মত কথাবাত্রা।
| |
এদিকে পরিবারের পেটের একটি অংশে হালকা সার্জারি টেপের টান লাগায় ফোসকা পড়েছিল। যার জন্য হয়রানির শিকার হয়েছে। ডাক্তারে বলে এক কিন্তু ফার্মেসির পন্ডিতের দেয় আরেক। আর এভাবে কিন্তু ঔষধ কেনার বেলাতেও বেশকিছু বার হয়রানি শিকার হতে হয়েছে। খুব সুন্দর করে ফার্মেসীর মানুষেরা বুঝিয়ে দেয় ডাক্তার যেটা লিখেছে ঠিক সেটার বড়ি এটা,খালি কোম্পানি আলাদা। এভাবে ডাক্তারের কথা বা ফার্মেসীর মানুষের কথার মধ্যে পার্থক্য থাকায় মাঝখানে হয়রানির শিকার আমাদের মত পাবলিক। আর এটাও বেশ ফিল করেছিলাম টেনশনের মধ্যে।
| |
আলহামদুলিল্লাহ এরপর ভালই ভালই রিলিজ নিয়ে বাড়ির দিকে ফেরা। সাথে সাত দিনের ঔষধ লিখে দিয়েছিল ডাক্তারের। সাত দিন শেষে যখন সেলাই কাটা হলো, তখন আবারও চার দিনের ঔষধ লিখে দিল। বুঝতেই পারছেন সিজারের পেশেন্টের কেমন দামের ঔষধ প্রয়োজন হয়। যাইহোক সেদিকে না বলি। সবকিছুর পরে যখন বেশ কয় একটা কথা শুনতে হয় 'পুরুষ মানুষ কিছুই বুঝতো না,মেয়ে মানুষ হলে বুঝতে সেজারের কত যন্ত্রণা' 'এটা আর খরচ হল কতজনের বাচ্চা হওয়াতে গেলে লাখ টাকা খরচ হয়ে যায়' এছাড়াও আরো অনেক কথা যখন শুনতে হয় বিভিন্ন টেনশন আর খরচের মুহূর্তে তখন সত্যিই মনটা খুবই খারাপ হয়ে যায়। একটা পুরুষ মানুষ কখনো মাথা নিচ করতে জানেনা। তবে যখন অপমানিত হয়,তখন বড় আঘাত মনের মধ্যে যন্ত্রণা সৃষ্টি করে। আমিও ঠিক তেমনি ফিল করেছি এখনো করি কিছু গোমূর্খ আত্মীয়-স্বজনের কথায়। তবে দূরের মানুষ আবোল তাবোল বললে গায়ে লাগে না, অতি নিকটের মানুষ কিছু অধমের মত বললে সত্যি সেটা মেনে নেওয়া কঠিন। আলহামদুলিল্লাহ এ পর্যন্ত আপনাদের দোয়ায় আমার সন্তান সুস্থ সবল ও ভালো রয়েছে। আপনারা দোয়া করবেন আমার সন্তানের জন্য। দোয়া করবেন সন্তানের মায়ের জন্য যেন সে সুস্থ সবল অবস্থায় তাকে দেখাশোনা করতে পারে।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
আপনার সন্তানের জন্য দোয়া করি ভাই আপনার সন্তান যেন সুস্থ থাকে। আল্লাহ তাকে নেক হায়াত দান করুক। আর আমাদের সমাজে এমন মানুষ আছে যারা উল্টাপাল্টা কথা বলে। তাদের কথায় কান না দেওয়ায় উচিত।
হ্যাঁ একদম ঠিক কথা।
জি ভাই।