বড় আব্বার মৃত্যুতে কুলখানির আয়োজন
আজ - শনিবার
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি বড় আব্বার মৃত্যুতে চল্লিশার আয়োজন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার জন্য। আশা করি বিস্তারিত আলোচনার সময় আপনার সাথে থাকবেন।
'আমার বাংলা ব্লগ' কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট |
---|
গত ১৫ দিন আগে আমাদের শ্রদ্ধেয় বড় আব্বাজান মারা গিয়েছেন। উনি অতিশয় ভালো মানুষ। মন মানসিকতা তার সর্বসময় ফেরেশ থাকতো। কখনো কারোর ভুল করে কোন ক্ষতি করেছে কিনা কেউ বলতে পারবে বলে মনে হয় না। কারণ এতটাই তিনি ভালো মানুষ ছিলেন এবং পাড়ার মাতবর বা মন্ডল ছিলেন। আশেপাশের দশ পনেরো গ্রাম তার অনেক সুনাম। এতটাই শ্রদ্ধাশীল ব্যক্তি ছিলেন উনি। হাডের সমস্যা আর কিডনির সমস্যা জনিত কারণে উনি ইন্তেকাল করেছেন। আমরা গভীর শ্রদ্ধার সাথে তাকে স্মরণ করি এবং দোয়া করি। তার এই মৃত্যুর উপলক্ষে চল্লিশার আয়োজন করা হয়েছিল। যেখানে দেড় হাজার মানুষের খাওয়ানোর ব্যবস্থা। আর সেই লক্ষ্যে আজকের এই এত সুন্দর আয়োজনের দৃশ্য। আজ দুই তিন দিন ধরে নির্দিষ্ট একটি জায়গা সামিয়ানা টানানো হচ্ছে গেস্টদের খাওয়ানোর সুন্দর জায়গা তৈরি করার উদ্দেশ্যে। যার পরিপূর্ণতা আজকে সুসম্পন্ন হয়েছে। মড়কা বাজারের কামরুল ডেকোরেশন সম্পন্ন দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন অ্যারেঞ্জমেন্টের। পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়গুলো দেখাশোনার দায়িত্ব পড়েছিল যারা খাজিনদারের দায়িত্বে রয়েছিলেন এবং পড়ার মন্ডলেরা।
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
গতকাল শুক্রবার বিকাল থেকেই সমস্ত ডেজগি সাজিয়ে রাখা হয়েছিল পাশাপাশি খড়ির সুব্যবস্থা করে রাখা হয়েছিল। যে সমস্ত উপকরণগুলো প্রয়োজন গেস্ট খাওয়ানোর জন্য সে সমস্ত উপকরণগুলো গন্তব্যস্থলে নিয়ে আসা হয়েছিল নির্দিষ্ট পরিমাণ অনুসারে। এখানে আমার একটি বিশেষ দায়িত্ব ছিল রাতে যেহেতু মাংস কাটার আয়োজন করতে হবে তাই লাইটিং এর ব্যবস্থা। অবশ্য লাইটিং এর ব্যবস্থার কথাটা আমাকে কেউ স্মরণ করে দিয়েছিল না যার জন্য আমি বিকাল টাইমে বামুন্দি বাজারে থাকায় আসতে রাত আটটা বেজে গিয়েছিল রাত আটটার পরে দেড় ঘন্টা লাইটিং এর কাজ করে দিয়েছিলাম এদিকে কোন এক মহান ব্যক্তি একটা লাইটিং এর কাজ করে দিয়ে গেছিলেন রাস্তার পাশ দিয়ে যেখানে বিভিন্ন উপকরণগুলো প্রয়োজন অনুসারে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। যেহেতু সারা রাতে এখানে মানুষ জেগেছিল বিভিন্ন জিনিস সামলে রাখা এবং অন্যান্য কাজের জন্য আমি রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত কাজে ব্যস্ত ছিলাম। যেহেতু শুনেছিলাম আয়োজন করার জায়গায় বাড়িতে মোটর লাইনের সমস্যা। আমি মেজো চাচার বাড়ির মোটর লাইন টা দুইদিন আগে ঠিক করে দিয়েছিলাম। কিন্তু বড় আব্বার বাড়ির মোটর লাইনটা একটু সমস্যা থাকাই সেটা দিয়ে কাজ তেমন করা হয়নি আর এটা আমাকে তেমন পূর্বে বলাও ছিল না যার জন্য আমি অবগত ছিলাম না। পাশের আরেকটি বাড়ি থেকে পানির ব্যবস্থা করা হয়েছিল অর্থাৎ সেজো চাচার বাড়ি এবং আরেকজনের বাড়ি থেকে পানির ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
রাত বারোটার পর থেকে যে যার মত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সে তার নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। তবে ঝাল পেঁয়াজ বাছার জন্য যে সমস্ত রাধুনীদের আনা হয়েছিল তারা কাল সন্ধ্যা থেকেই কাজ শুরু করে দিয়েছিল পেঁয়াজ রসুন বিনানো সহ অন্যান্য কাজে। আমি সকাল ভোরে উঠেই রান্না বিষয়ক বিভিন্ন কাজে অংশগ্রহণ করলাম যেমন এদিকে মাংস ধরা মাংস আগিয়ে দেওয়া রান্নার কাছে ডেজগি আগিয়ে দেওয়া ইত্যাদি। এভাবেই অনেকটা টাইম পার হলো বাজলো সাড়ে সাতটা।
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
আমরা যারা খাজিনদারের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম তাদের জন্য খিচুড়ি ভাতের আয়োজন করা হয়েছিল। আমরা সাড়ে সাতটা আটটার মধ্যে সবাই খিচুড়ি খেয়ে নিলাম। যেহেতু সারাদিন আমাদের কাজ এদিকে ওদিকে যাওয়ার কোন চান্স নেই তাই সকাল থেকেই মনোবল তৈরি করে রেখেছিলাম কাজ করার জন্য যেন এত সুন্দর একটা কাজে কোন প্রকার দুর্নাম সৃষ্টি না হয়। নিজের যে সমস্ত দায়িত্ব দেয়া ছিল এছাড়া অন্যান্য দিকেও লক্ষ্য রাখার চেষ্টা করেছিলাম। প্রথমে আমার চাচাতো বোন আর বন্ধুর সাথে আলোচনা করে নিলাম টেবিল সিস্টেম কিভাবে করতে হবে এবং আমারা ৭৫ জন খাজিনদারি করব তারা কে কোন অবস্থানে কাজ করবে। এভাবে আমাদের নির্ধারিত দায়িত্ব ফিক্সড হয়ে গেল। এদিকে খিচুড়ি আয়োজনে খাওয়া-দাওয়াটাও সেরে নিলাম সবার সাথে। তবে লক্ষ্য করেছিলাম খিচুড়ি খাওয়ার লোকসংখ্যা দেড়শ থেকে ২০০ জন ছিল। তবে যাই হোক বাড়ির আত্মীয়-স্বজন এই সেই মানুষটা হতেই পারে। একদিকে খিচুড়ি খাওয়া চলছিল অন্যদিকে রান্না করার কাজ অবিরাম ভাবে চলতে থাকলো। আমাদের রান্নার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছিল দশটার মধ্যে। বিস্তারিত সামনে পোস্টে জানাবো।
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
💌আমার পরিচয়💌
আমি মোঃ নাজিদুল ইসলাম (সুমন)। বাংলা মাস্টার্স ফার্স্ট ক্লাস মেহেরপুর গভমেন্ট কলেজ। আমার বাসা গাংনী-মেহেরপুর। মড়কা বাজার, গাংনী,মেহেরপুর এ গ্রীনরেইন ল্যাবরেটরি স্কুল নামক প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সহকারি শিক্ষক । ইলেকট্রনিক্সের যন্ত্রপাতি মেরামত ও সৌর প্যানেল নিয়ে রিসার্চ করতে পছন্দ করি। প্রাকৃতিক দৃশ্য ফটোগ্রাফি করা আমার সবচেয়ে বড় ভালোলাগা। দীর্ঘদিনের আমি পাঙ্গাস মাছ চাষী এবং বিরহের কবিতা লেখতে খুবই ভালোবাসি। |
---|
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচিতি | কিছু বিশেষ তথ্য |
---|---|
আমার নাম | @sumon09🇧🇩🇧🇩 |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | মোবাইল |
ব্লগিং মোবাইল | Infinix hot 11s |
ক্যামেরা | camera-50mp |
আমার বাসা | মেহেরপুর |
আমার বয়স | ২৬ বছর |
আমার ইচ্ছে | লাইফটাইম স্টিমিট এর 'আমার বাংলা ব্লগ' এ ব্লগিং করা |
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
অনেক পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে আজকের দিনটা শেষ করতে পারলাম। আজকে অনেক ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি । এই ধরনের বড় আয়োজন শেষ করা সত্যিই অনেক কষ্টের ব্যাপার।
তারপরে বলবো অনেক সুন্দর ভাবে কার্যসম্পন্ন হয়েছে।
আসলে কেউ পৃথিবী থেকে বিদায় নিলে তার ভালো কাজগুলোই তাকে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করিয়ে দেয় । তেমনি একজন ভালো মানুষ ছিলেন হয়তো আপনার বড় আব্বা । হয়তো এই জন্যই সবাই তাকে অনেক ভালবাসতেন । তাহার মৃত্যুর ৪০ দিনের অনুষ্ঠান বেশ জাকজমক ভাবেই পালন করা হচ্ছে দেখে মনে হল ।অনেক বড় অ্যারেঞ্জমেন্ট দেখে মনে হচ্ছে । যেহেতু অনেক লোকের জন্য আয়োজন করা হয়েছে সেহেতু আপনি যে খুবই ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন দেখেই বুঝতে পারছি । কেননা এত লোকের অ্যারেঞ্জমেন্ট বলে কথা । যাই হোক ভালো ছিল ।
হ্যাঁ উনি অনেক ভালো মানুষ ছিলেন।
পৃথিবীতে প্রতিটা মানুষ যেভাবে আসে ঠিক তেমনি কখন কে চলে যাবে কেউই বলতে পারেনা। আপনার বড় আব্বার মৃত্যুর মাগফিরাত কামনা করি। আশা করি তিনি না ফেরার দেশে অনেক ভালো আছে। অনেক ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে পার করেছেন এই বিষয়ে আপনার সাথে disc কোডে কথা হয়েছে। অনেক লোকের আয়োজন মনে হচ্ছে।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার বড়বাবা একজন ভালো মানুষ ছিলেন বলেই আপনি তার এত প্রশংসা করছেন। আসলে এই পৃথিবীতে আমরা সবাই ক্ষণিকের অতিথি। হয়তো সবাইকে একদিন চলে যেতে হবে। তবে কারো মৃত্যুর পর জাকজমোক করে অনুষ্ঠান করা আমার কাছে কেন জানি ভালো লাগে না। কারণ একজন মানুষ হারিয়ে গেছে। সেই বাড়িতে অনুষ্ঠান করা কেমন জানি দেখায়। যাইহোক অনেক কিছুই হয়তো সমাজের রীতিনীতির উপর তৈরি হয়েছে। এভাবেই হয়তো সমাজের আট দশজন মানুষ চলছে।
বিষয়টা আমারও বিবেকে বাদে কিন্তু কিছু করার নেই আপু।