আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি বন্ধুরা মিলে বামুন্দি বাজারে সবজি কেনাকাটা করতে গিয়েছিলাম, সেই বিষয়ে কিছু ফটোগ্রাফি এবং বর্ণনা উপস্থাপন করবে বলে। তাই চলুন আর দেরি না করে এখনই বিস্তারিত আলোচনা শুরু করি
বামুন্দি বাজার বহুল পরিচিত এবং দীর্ঘদিন চলাচল আমাদের এখানে। গাংনী থানার মধ্যে সবচেয়ে বড় বাজার বামুনদি বাজার। সকল প্রকার নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য এখানে পাওয়া যায়। আতায় বেশ কিছু জিনিস কেনা কাটার উদ্দেশ্যে আমরা চারজন বামন্দি বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম এক বিকেলে। আমি আমার দুই বন্ধু পলাশ মারুপ আর পলাশের মামাতো ভাই নাবি চারজন তিনটা মোটরসাইকেল যোগে বামুন্দি বাজারে উপস্থিত হলাম। বামুন্দি বাজারে হাটের দিন প্রত্যেক শুক্রবার ও সোমবার। আরে হাটে দিনগুলোতে বামুন্দি বাজারে মানুষের ভিড়ে নিজেকে সামলিয়ে রাখা বেশ কঠিন। কারণ এতটাই বিভিন্ন গ্রাম থেকে মানুষ আগত হয় বিভিন্ন জিনিস কেনা বেচার জন্য। হাই রোড দিয়ে যাওয়া বেশ ঝামেলা হয়ে যায় অনেক সময়। মাঝেমধ্যে ট্রাফিক জ্যামে পড়তে হয়। তাই বাজারের মধ্যে প্রবেশ করার শর্ট একটি হেয়ারিং রাস্তা রয়েছে। আমরা হাইরোড দিয়ে এসে বাজারের মধ্যে প্রবেশ করার সেই হেয়ারিং দিয়ে প্রবেশ করার চেষ্টা করলাম। ঠিক এই মুহূর্তে মারুফের মোটরসাইকেলে হঠাৎ তেল ফুরিয়ে গেল। রাস্তায় অবস্থান করে মারুফকে তেল আনার জন্য পাঠানো হলো। মারুফের মেজ ভাই যে কোন মুহূর্তে মোটরসাইকেল চালিয়ে তেল ফুরিয়ে বসে থাকে। আর এই বিষয়টা তার জানা থাকে না অনেক সময়। যাইহোক এরপরে আমরা বাজারে প্রবেশ করার সম্মুখে লক্ষ্য করলাম একজন রাস্তায় স্যান্ডেল কি করে করা বেশ কিছু স্যান্ডেল নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। আর এই সমস্ত জিনিসগুলো আমাদের পলাশের বেশি ইন্টারেস্টিং মনে হয়। মাঝেমধ্যে এমন জায়গা থেকে সুবিধামতো পেয়ে গেলে ও স্যান্ডেল বা জুতা কিনে বসে থাকে। যেহেতু আমাদের গাড়ির তেল ফুরিয়ে গেছিল তাই আমাদের আগেই পলাশ আর নাবিল বাজারে পৌঁছে গেছিল। বাজারের শুরুতে এই জায়গায় ওরা দুইজন স্যান্ডেল কেনার জন্য দেখছি দামাদামি করছে। এই মুহূর্তে আমি আর মারুফ যেয়ে উপস্থিত হলাম। যাই হোক ওরা ওদের কাজ করতে থাকলো আমরা আরো সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম, যেহেতু আমাদের কাঁচা বাজার করা লাগবে।
Photography device: Infinix hot 11s
Location
বামুন্দি বাজারে আর একটু সামনে এগিয়ে যেতে ই রয়েছে সবজির হাট আর তার পাশ দিয়ে রয়েছে দা হাইসু অর্থাৎ রডের হাতিয়ার বা কাটারির দোকান। আমি এখান থেকে বেশ অনেক বছর যাবত কেনাকাটা করে থাকি। যেহেতু পুকুর পরিষ্কার পরিবারে অন্যান্য খড়ি অথবা সবজি কাটার জন্য অনেক কিছু প্রয়োজন হয়ে থাকে তা এখান থেকেই সংরক্ষণ করা হয় অতি সুলভ মূল্যে। কারণ বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক কামারেরা তাদের তৈরি জিনিস নিয়ে আসে। যাইহোক যে মুহূর্তে এই জায়গায় অবস্থান করছিলাম সবজি কেনার জন্য তখনই চেষ্টা করেছিলাম ফটোগ্রাফি করার জন্য যেহেতু ভেতরে আর প্রবেশ করা হয়নি আমার কারণ তেমন কোন কিছু কেনার প্রয়োজন ছিল না।
Photography device: Infinix hot 11s
Location
ঢাকার বাজারের মতো বামুন্দি বাজারে কচুর লতি পাওয়া যায়। এছাড়াও আমড়া মিষ্টি কুমড়া পটল আলু সহ বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি দেখা মেলে। যাই হোক আমি আমার প্রয়োজন মত বেশ কিছু সবজি ইতোমধ্যে কিনে ফেলেছি। অনেকেই বলে থাকেন আপনার পুকুর পাড়ে সবজি রয়েছে এরপরে আপনার কিনতে হয় কেন এটা কিন্তু ভুল ধারণা। কারণ সবকিছু তো আর পুকুর পড়ে থাকে না। আর শুধু যে শাক-সবজি কেনার জন্যই বাজারে যেতে হয় তাও তো নয় পাশাপাশি আরো অনেক কিছুই প্রয়োজন হয়ে থাকে। আমি এমনিতেই ভাতের সাথে কাঁচা শসা কাটা বেশি পছন্দ করে থাকি তাই এখানে শশার দাম জানছিলাম কিন্তু একদম কাচা খাওয়ার মত ছিল না। যাইহোক ৬০ টাকার কেজি দাম শুনে দেখলাম যে আরো সামনের দিকে যাই কারণ বাজার সামনে পড়ে রয়েছে।
Photography device: Infinix hot 11s
Location
এরপর বাজারে আরেকটু সামনের দিকে এগিয়ে যেয়ে লক্ষ্য করে দেখলাম হ্যাঁ এখানে যথেষ্ট আছে খাওয়ার মত শসা বা খেরায় রয়েছে। এখানে দাম জিজ্ঞেস করলাম ৪০ টাকা কেজি। তাই এখান থেকে এক কেজি নেওয়ার চেষ্টা করলাম বেছে বেছে। কারণ বামুন্দি বাজারটা এমন একটি স্থান এখানে যে যেমন বিক্রেতারা দাম বেশি বলে টাকা ধরে নিতে পারে। তাই বাজারে প্রবেশ করলে আগে যে কোন জিনিস হোক না কেন বাজার ঘুরে দেখা সব থেকেও উত্তম কাজ। ঠিক আমার সেই কাজটাই করলাম তখন। এরপর আরো কিছু সবজি কেনার জন্য সামনে বাজারের দিকে এগিয়ে যায়।
Photography device: Infinix hot 11s
location
আমরা ছোটবেলায় জানতাম মুলা শীতকালীন সবজি অর্থাৎ রবি শস্য বা সবজি। কিন্তু এখন বর্তমান আমাদের দেশের লক্ষ্য করা যায় কৃষক ভাইয়েরা এতটাই অ্যাডভান্স হয়ে গেছে যে বর্ষাকালে মুহূর্তে ও আমাদের দেশে বিভিন্ন হাট বাজারগুলোতে শীতকালীন সবজি খুঁজে পাওয়া যায়। সবজি বিক্রেতার কাছে মুলার দাম জিজ্ঞেস করলাম বললো কুড়ি টাকা কেজি। আর দেরি না করে এক কেজি মুলা নিয়ে নিলাম। কারণ আমাদের দেশগুলোতে যখন কোন জিনিস নতুন উঠতে দেখা যায় তখন তার দাম এতটাই বেশি হয়ে থাকে তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। কিছুদিন আগে পাড়াগাঁয়ে গল্প শুনেছিলাম বাজারে মুলা উঠেছে ৮০ টাকা কেজি। কিন্তু উপস্থিত হয়ে দেখলাম কুড়ি টাকা কেজি তাই আর দেরি না করে একটা জিনিস নেওয়ার চেষ্টা করেছি।
Photography device: Infinix hot 11s
location
এরপর চলে গেলাম পেঁয়াজ রসুন ঝালের বাজারে হয়তো আপনারা বলতে পারেন এটা আবার কেমন কথা সকল সবজি বিক্রেতা তাদের কাছেই তো ঝাল পেঁয়াজ থাকে। বামুন্দি বাজারে কিছু কিছু জায়গায় ব্যতিক্রম দেখা যায় বেশ বড় একটা অংশ জুড়ে রয়েছে সেখানে শুধু ঝাল পেঁয়াজ রসুন বিক্রয় করে মাঝেমধ্যে তাদের কাছে আলু লক্ষ্য করা যায়। যাই হোক কিছুদিন যাবৎ আমাদের এদিকে ঝালের দাম খুব বেশি ছিল এখন অবশ্য তেমন আর বেশি ঝালের দাম নয় 150 টাকা কেজি ঝালের দাম। শুনেছিলাম দেড়শ টাকার নিচে চলে গেছে তার পরেও যেহেতু প্রয়োজন এক পোয়া নেওয়ার চেষ্টা করলাম এখান থেকে। আর ইতোমধ্যে বেশ কিছু জিনিস কিনে আমার বাজার করা ব্যাগ কিন্তু লোড হয়ে গেছে যেগুলো সম্পূর্ণ ফটোগ্রাফি করা হয়ে ওঠেনি। আর সেগুলোর বিষয় না হয় আপনাদের মাঝে বাদই দিলাম।
Photography device: Infinix hot 11s
location
আরো কিছু কেনাকাটা করে ঘুরতে ঘুরতে চলে এলাম বামুন্দি বাজারের মাছের বাজারটাতে। আমরা মাছ বিক্রয় করার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে চেয়ে থাকি কিছু কিছু আড়ত দেখেছি বামন্দি বাজারের মাছ বিক্রয়ের বাজারের চেয়েও অনেক ছোট হয়ে থাকে। তাহলে বুঝতে পারছেন বামন্দি বাজারের মাছের বাজার টা কত বড়। তবে এখানে বিভিন্ন প্রকার মাছের দেখা মেলে। যে সময় বাজারে ইলিশ খুব কম দেখা যায় তখনও বামুন্দি বাজারে ইলিশে দেখা মেলে। যাইহোক সুন্দর এই মাছের বাজারটা যেন গন্ধে পরিপূর্ণ। দূর থেকে যতটা জমজমাট আর ভালোলাগা কাছে গেলে যেন সেই রুচি টা হারিয়ে যায়। মাছের আরত গুলোতে মাছ বিক্রি করতে গেলে এতটা গন্ধ না কি আসে না। কিন্তু বামুন্দি বাজারের এই মাছের বাজারটায় প্রবেশ করা কঠিন হয়ে ওঠে। জানিনা এর মধ্য থেকেও কিভাবে বেচাকেনা হয়। হয়তো আপনারা আমার এই কথাটাই আমাকে খারাপ দৃষ্টিতে ভাববেন। তবে এটা সত্য বিভিন্ন মাছের বাজারে প্রবেশ করেছি কিন্তু এতটা ময়লা আবর্জনা আর গন্ধযুক্ত মাছের বাজার কোথাও দেখিনি। যাই হোক এভাবে বিভিন্ন প্রকার প্রয়োজনীয় জিনিস কেনাকাটা করে সর্বশেষে সবাই একত্রিত হলাম দেখলাম যে যার প্রয়োজন নিজ নিজ দায়িত্বে কেনাকাটা করে ফেলেছে।
Photography device: Infinix hot 11s
location
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
Posted using SteemPro Mobile
আপনাদের ওই বাজারে তো দেখছি অনেক ধরনের পণ্য সামগ্রী থেকে শুরু করে সবজি সহ আরো অনেক কিছু পাওয়া যায় এবং বন্ধুদের সঙ্গে খুবই সুন্দর একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন কেনাকাটার মুহূর্তে। সকলে মিলে একত্রে কেনাকাটা করতে গেলে অনেক বেশি ভালো লাগে, আমি মনে করি বাজারটা আসলে এরকমই হওয়া উচিত যেখানে সবকিছুই পাওয়া যাবে এরকম একটি বাজার প্রত্যেকটা গ্রামে থাকা দরকার বলে আমি মনে করি। ধন্যবাদ আপনার কাটানো সুন্দর মুহূর্তটা আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
হ্যাঁ ভাই এখানে সবকিছু পাওয়া যায় এবং সুলভ মূল্যে
মামা আপনি আজকে আমাদের মাঝে দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। বর্তমানে খাদ্যদ্রব্যের দাম বাংলাদেশের প্রচুর পরিমাণে। আসলে এই বামুন্দি বাজারটি আমাদের বাড়ির পাশে বললেই চলে। বাজারের বেশ কিছু সুন্দর ফটোগ্রাফি আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ মামা বন্ধুর সাথে এত সুন্দর একটা সময় অতিবাহিত করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ মামা তোমাদের বাড়ির অতি নিকটে
এটা ঠিক যে আমাদের থানার সব থেকে বড় বাজার বামুন্দি বাজার। এখানে সব কিছুরই দেখা মেলে এবং সেটা কম দামেও পাওয়া যায়। আপনাদের মোটরসাইকেলের তেল ফুরিয়ে গিয়েছিল তাহলে তো ভালোই কষ্ট করতে হয়েছিল দেখছি। পলাশ মামা তাহলে যেখানে যায় সেখানেই স্যান্ডেল কিনতে শুরু করে দেয় এটা তো জানা ছিল না।
হ্যাঁ এখানে অনেক কিছু পাওয়া যায় বড় একটি বাজার তাই আমার খুব প্রিয়।