হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি রাত্রিকালীন মুহূর্তে মাছ বিক্রয়ের অনুভূতি নিয়ে, যেখানে আপনারা দেখতে পারবেন বিভিন্ন পর্যায়ের ফটোগ্রাফী রাত্রিকালীন মুহূর্তে যখন মাছ ধরা হয়েছিল।
আমি আপনাদের মাঝে মাছ ধরার বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন অনুভূতি শেয়ার করেছি কিন্তু কোনদিন আজ পর্যন্ত রাত্রি কালের মুহূর্তে মাছ ধরার অনুভূতি শেয়ার করা হয়নি। তাই আজকে মনে হল এই দৃশ্য আপনাদের মাঝে তুলে ধরা একান্ত প্রয়োজন, হয়তো এই থেকে আপনারা অনেক তথ্য গ্রহণ করতে পারবেন। জানতে পারবেন অনেক বিষয়। তাই এই বিষয়টা যখনই মাথায় এসেছিল তখনই আমি ক্যামেরা বন্দি করেছিলাম। তবে আমি তুলে ধরবো এখানে কেন রাত্রে কালীন মুহূর্তে মাছ বিক্রয় করতে হয় তার সুবিধা কি। রাত্রি কালীন মুহূর্তে পাঙ্গাস মাছ ধরতে কোন অসুবিধা হয় কিনা। পাঙ্গাস মাছ রাত্রি কালিন মুহূর্তে ধরতে হয় এজন্য যে বিভিন্ন এলাকার আড়ত গুলোতে তা সাপ্লাই করা হয়। রাত্রে কালিন মুহূর্তে ধরলে সে সমস্ত স্থানে পৌঁছাতে সকাল হয়ে আসে আর আড়তগুলোতে সকালবেলায় বাঁচার বসে। আমাদের গাংনী মেহেরপুর থেকে মাছগুলো দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রপ্তানি করা হয় যেমন এখান থেকে আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া,পাবনা, ফরিদপুর, রাজশাহী সহ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। রাত্রি কালিন মুহূর্তে মাছ ধরলে একটি সুবিধা মাছ গুলো রোদের তাপে মারা যায় কিন্তু রাতে তো আর রোদ থাকে না। এদিকে রাত্রে মাছ ধরলে সকালবেলায় আড়তের বেচাকেনা টা ভালো হয়। বিভিন্ন শ্রেণীর মাছ ব্যবসায়িকরা খুব সহজেই আরো থেকে মাছগুলো গ্রহণ করতে পারে টাটকা এবং তরতাজা।
অনেকে চিন্তা করে থাকেন পাঙ্গাস মাছ যখন জেলে ভাইরা ধরে তখন তাদেরকে গায়ে কাটা লাগেনা? স্বাভাবিকভাবে বলতে গেলে পাঙ্গাস মাছের কাঁটা অনেক সময় গেঁথে যায় বেকায়দা সুযোগ তবে দিন অথবা রাত নয় যে কোন মুহূর্তে সেটা হতে পারে একটু সাবধানতা অবলম্বন করলে হয়তো সেটা কম হয়। যাই হোক মাছ ধরেছি দীর্ঘদিন মাছ ধরতে দেখেছি দীর্ঘদিন কিন্তু এমন বেকায়দা কখনো হতে দেখি নাই। এদিকে জেলে ভাইয়েরা বলে থাকে রাত্রে মাছ ধরতে তাদের বেশ সুবিধায় হয়। দিনে প্রচন্ড রোদের আলো চোখে অথবা কপালে লাগে কিন্তু রাতের বেলায় সেদিক থেকে চেপে থাকা যায়। পুকুরপাড় থেকে একদম রাস্তা পর্যন্ত মাথায় করে যখন মাছের হাড়ি বহন করে তারা তাদের কাছে একটি করে ছোট লাইট থাকে তা জ্বালিয়ে পথ চলে। তবে বড় ভালো লাগা তাদের এটাই যে রাত্রি কালের মুহূর্তে মাছ এর হাড়ি বহন করতে হাঁপিয়ে যেতে হয় না কিন্তু প্রচন্ড রোদ গরম হলে পারে হাঁপিয়ে যেতে হয়। আপনারা ফটোগ্রাফিতে দেখতে পাচ্ছেন জেলে ভাইয়েরা খুব মনোযোগ সহকারে মাছ ঘেরাও করে এনেছে সারা পুকুর থেকে এবং সে মাছগুলো জালের মধ্যে আটকে রাখার জন্য চতুর কোণে চাকটা খুঁটি পড়ছে। এই মুহূর্তে মাছগুলো খুব জোরে লাফাতে ছিল, যার জন্য তারা একটু থেমেছিল মাছ আগে লাফানো কম করুন। এরপরে তারা ছোট মাছগুলো হাত অথবা ডালি দিয়ে বের করে দিবে।
পুকুর পাড়ে মাছ বিক্রয়ের দৃশ্য। যেখানে ডিজিটাল কাটায় মাছ মাপা হয়। এখানে জেলে পার্টি, মাছের ব্যাপারী পার্টি, আর আমরা নিজের অবস্থান করি। হয়তো ভাবতে পারছেন রাত্রে কালীন মুহূর্তে এখানে আলোর ব্যবস্থা করা হয় কিভাবে? এখানে বাড়ি থেকে কারেন্টের লাইন আনা হয় অবশ্য এই দিন কারেন্টের লাইন ব্যবহার করা হয়নি, ১২ ভোল্টের ব্যাটারি আর বাল্ব নিয়ে এসে আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বিভিন্ন প্রকার লাইট বাজারে পাওয়া যায় সে সমস্ত লাইট অনেক সময় ব্যবহার করা হয় রাত্রিকালীন মুহূর্তে মাছ বিক্রয় করার সময়। তবে সবচেয়ে বেশি ভালো হয় ১২ ভোল্টের ব্যাটারি আর বাল্ব ব্যবহার করলে, এতে দীর্ঘক্ষণ থাকে তিনটা বাতি জ্বালিয়ে চারিপাশে আলো করে রাখা যায়। শর্ট সার্কিটের কোন ভয় থাকে না, যে কোন স্থানে নড়ানো যায়। তাই বাড়িতে থাকা এই ব্যাটারি নিয়ে কাজ চালানো হয়। এতে চারপাশ আলোকিত হয়ে থাকে জেলে ভাইয়েরা পুকুর থেকে মাছ উঠাতে সুবিধা বধ করে, এদিকে মাছ মাপার কাজে খুব সহায়তা হয়।
রাতে এভাবেই দীর্ঘক্ষণ ধরে পুকুর থেকে হাড়িতে করে উপরে তোলা এবং হাড়িতে করে ডিজিটাল কাটায় মেপে জেলে ভাইয়েরা মাথায় করে বহন করে নিয়ে যায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির ডামেতে ডালার জন্য। আর এভাবেই দীর্ঘক্ষণ ধরে ৫/১০/১৫ টা গাড়ি লোড করা হয়। আমরা দশটি গাড়ি আনার জন্য বলেছিলাম যেখানে ২৫ থেকে ৩০ মন মাছ বিক্রয় করা কথা ছিল। পরে দেখা গেল মাছ দু কেজি সাইজের নিচে তাই ছয়টা গাড়ি মাছ লোড করে বাকি গাড়িগুলো ঘুরে দেয়া হয়েছিল। কারণ মাছ পার্টির সাথে দামে ধরে মিল খেয়ে ছিল না তাই। হয়তো এভাবে আবার কিছুদিন পরে রাত্রী কালীন মুহূর্তে মাছ বিক্রি করতে হবে। চেষ্টা করব আবারো আপনাদের মাঝে এই বিষয়গুলো তুলে ধরার জন্য।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
ভাইয়া আপনি মাছ চাষ করতে পছন্দ করেন আমরা সবাই জানি। আপনার পুকুরের বিভিন্ন মাছ এর আগেও দেখেছি। পুকুর থেকে তুলে এই মাছগুলো বিক্রি করেছেন জেনে ভালো লাগলো। বর্তমানে মাছের দাম অনেক বেড়ে গেছে। তবে পাইকারি ব্যবসায়ীরা আপনাদের কাছে কিনে বলে বাজারের তুলনায় অনেকটা কম দামে কিনতে পারে।
পুকুর থেকে মাছের দাম খুবই কম আপু বর্তমানে দশ টাকার বেশি কমে গেছে
মামা আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন রাত্রিকালীন মুহূর্তে পাঙ্গাস মাছ বিক্রয়ের অনুভূতি। আপনার পোস্টে পড়ে সত্যি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। আসলে আমিও এই অনুভূতির সাথে বেশ পরিচিত আমিও অনেকবার রাত্রেকালীন পাঙ্গাস মাছ বিক্রয়ের সময় ছিলাম। মাছ বিক্রির কথা ছিল দশ গাড়ি কিন্তু মাছের সাইজ ছোট হওয়ার কারণে আপনারা ছয় গাড়ি মাছ লোড দিয়েছিলেন আর বাকি চারটা গাড়ি ফেরত পাঠিয়েছিলেন তাও জানতে পারলাম পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে। ধন্যবাদ মামা এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ মামা রাত্রিবেলায় মাছ বেচার একটা অন্যরকম অনুভূতি থাকে