টক-ঝাল-মিষ্টি কুলঝুম রেসিপি || প্রিয় লাজুক খ্যাঁকের জন্য ১০% বেনিফিসারী
আজ - বৃহস্পতিবার
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে ভালো ও সুস্থ রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ' কমিউনিটিতে কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট করে উন্নতির ধারায় এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আপনার আমার একান্ত কর্তব্য। আসুন নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিয়মিত কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট করে এই কমিউনিটিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সকল সদস্যবৃন্দকে আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা,সালাম ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন পোস্ট।আমি যখন খুবই ছোট ছিলাম, বুদ্ধি জ্ঞান হওয়ার পর থেকে দেখে আসছি আমাদের পরিবারে আন্টি; বড় বোন অথবা আমাদের সমাজের অন্যান্য পরিবারের লোকজন কুলের সিজন এলে কুল বা বড়ই ও ধনিয়া পাতা দিয়ে কুলঝুম করতো।শুধু কুল আর ধনিয়া পাতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বিশেষ সাদ ও লোভনীয় করার জন্য এর সাথে অন্যান্য মশলাপাতি এবং আরো কিছু উপাদান ব্যবহার করা হতো। আমরাও বন্ধু-বান্ধবী মিলে কুলঝুম করতাম। বলতে গেলে ইহা গ্রাম বাংলার অন্যরকম ঐতিহ্য। আর সেই ঐতিহ্য আপনাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য আমি আজকের উপস্থিত হয়েছি। আজকে পোষ্টের বিষয়: বিভিন্ন প্রকার কুলের সমন্বয়ে টক-ঝাল-মিষ্টি কুলঝুম তৈরির রেসিপি। তাহলে আর দেরি নয়, চলুন এখনই শুরু করা যাক।
- কুলঝুম রেসিপির প্লেট হাতে নিয়ে আমার একটি ফটো।
চার প্রকার কুল | ৬০ পিচ |
পেঁয়াজ কুচি | এক পিস |
রসুন কুচি | চার পিস |
মরিচের গুঁড়া | এক চামুচ |
জিরার গুঁড়া | পরিমাণ মতো |
লবণ | পরিমাণ মতো |
রসগোল্লা | এক পিচ |
ধনিয়া পাতা | পরিমাণ মতো |
পাকা টমেটোর ফালি | তিন পিস |
প্রথম ধাপ :
• প্রথমে আমি আমার পাঁচটি কুল গাছ থেকে চার ধরনের কুল একটি বাটিতে করে পেড়ে নিয়ে এলাম।
দ্বিতীয় ধাপ :
• এবার সমস্ত কুল গুলোকে একটি গামলার মধ্যে রেখে পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিলাম।
তৃতীয় ধাপ :
• এবার সমস্ত কুলগুলোর গোড়া থেকে বোঁটা গুলো আলাদা করে নিলাম।
চতুর্থ ধাপ :
• এবার চার ধরনের কুল চারটা বাটিতে আলাদা আলাদা করে রাখলাম। কুলগুলো জাত ছিল যেমন: কাশ্মীরি আপেল কুল, চাইনিজ বাউকুল এবং দেশি দুই জাতের কুল।
পঞ্চম ধাপ :
• এরপর ধনিয়া পাতা গুলো ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে নিলাম। ছুরি দিয়ে খণ্ড-খণ্ড করে কেটে নিলাম এবং একটি পাত্রে রাখলাম। ধনিয়া পাতার বাটি কুল গুলোর বাটির পাশে রেখে একটি ফটো উঠালাম।
![]() | ![]() |
---|
ষষ্ঠ ধাপ :
• আমাদের রান্নাঘরের পুরানো শীল-পাটা বা পাটানোড়া ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিয়ে একটি চিক কাগজের উপর রাখলাম কুল গুলো ছেচবার জন্য।
সপ্তম ধাপ :
• সমস্ত কুলের বাটিগুলো শীলাপাটার পাশে রেখে কার্যক্রম শুরু করে দিলাম।
অষ্টম ধাপ :
• প্রত্যেক ধরনের কুল একের পর একটি করে পাটার উপরে রেখে নোড়া দিয়ে ছেচে আটি বের করে দিলাম। এভাবে চার প্রকার কুলগুলোর আটি বের করে নিলাম।
নবম ধাপ :
• এবার যাবতীয় মসলাগুলো নির্দিষ্ট পরিমান করে একটি বাটিতে রাখলাম। পেঁয়াজ কুচি করে রাখলাম এবং টমেটো ফালি ফালি করে রাখলাম। সমস্ত কুলগুলো ভালোভাবে বাটা হয়ে গেলে তার সাথে মিশানো উদ্দেশ্যে।
দশম ধাপ :
• এবার সমস্ত কুল গুলোকে একের পর এক শীলপাটার মাধ্যমে ছেচতে থাকলাম।
একাদশ ধাপ :
• এখন পেঁয়াজ ও ধনিয়া পাতা একসাথে করে হালকা বেঁটে নিলাম।
দ্বাদশ ধাপ :
• শীলা-পাটায় বাটা কুল গুলো একটি গামলার মধ্যে রেখে তার সাথে পিয়াজ ধনিয়া পাতা বাটা দিয়ে মিশিয়ে নিলাম।
ত্রয়োদশ ধাপ :
• এবার গামলার মধ্যে একটি মিষ্টি ভেঙে দিলাম এবং ভালোভাবে মিশিয়ে দিলাম।
চতুর্দশ ধাপ :
• সর্বশেষে বাকি মসলাগুলো ও টমেটোর ফালি কুলঝুমের সাথে ভালো ভাবে মাখিয়ে টক-ঝাল-মিষ্টি কুলঝুম তৈরি করে ফেললাম।
পঞ্চদশ ধাপ :
• কুলঝুম তৈরি করা শেষ হয়ে গেছে,এখন গামলা থেকে একটি বাটিতে উঠানোর পালা। তার আগে একটু মুখে দিয়ে টেস্ট করে নিলাম, যেহেতু দেরি আর সইছিল না! জিভে জল এসে গিয়েছিলো। আহ! কি স্বাদ, দারুন টেস্টি হয়েছে।
শেষ ধাপ :
• এখন কুলঝুুমের রেসিপিটা একটি প্লেটে উঠিয়ে নিলাম। আর এরই মধ্য দিয়ে আমার আজকের কুলঝুমের রেসিপি সমাপ্ত হল। সমাপ্ত হলো আজকের কার্যক্রম।
আশা করি,আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনি অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে বুঝতে ও শিখতে পেরেছেন। পোস্টটি উপস্থাপনা কেমন ছিল এবং এ বিষয়ে আপনার অনুভূতি কেমন আমাকে জানাতে ভুলবেন না। আপনার জন্য আমার পক্ষ থেকে শুভকামনা রইলো।
আমি মোঃ নাজিদুল ইসলাম (সুমন)@sumon09
বাংলা মাস্টার্স ফার্স্ট ক্লাস মেহেরপুর গভমেন্ট কলেজ। আমার বাসা গাংনী-মেহেরপুর। বর্তমান প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা সমাপ্ত করে,চাকরি প্রত্যাশায় বেকার-স্টাডিতে! নিয়োজিত। ইলেকট্রনিক্সের যন্ত্রপাতি মেরামত ও প্রাকৃতিক দৃশ্য ফটোগ্রাফি করা আমার সবচেয়ে বড় ভালোলাগা। ভালোলাগা নেই কোন, আছে শুধু নিরাশ মনে একবুক হাহাকার। ট্রাজেডি ভরা জীবন নিয়ে পথে চলছি আঁধারে। অনিশ্চিত এ জীবন ঘন আঁধারে ঢাকা। মায়ার বেড়াজাল ছিন্ন করে উদাসীন মৌনতা নিয়ে কাটছে দিবারাত্রি।
💖💞💞💖
আমার পরিচিতি | কিছু বিশেষ তথ্য |
---|---|
আমার নাম | @sumon09🇧🇩🇧🇩 |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | মোবাইল |
মোবাইল | itel vision 1 |
ক্যামেরা | Al dual camera-8mp |
আমার বাসা | মেহেরপুর |
আমার বয়স | ২৫ বছর |
আমার ইচ্ছে | লাইফটাইম স্টিমিট এর 'আমার বাংলা ব্লগ' এ ব্লগিং করা |
কুলঝুম রেসিপি খেতে আমি খুবই ভালোবাসি এখন কুলের সময় অর্থাৎ কুলঝুম রেসিপি খাবার সময় চলে এসেছে। আপনি বিভিন্ন রকম কুল ব্যবহার করে খুব সুস্বাদু একটি কুলঝুম রেসিপি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন বিশেষ করে আপনি এই রেসিপিটি এর মধ্যে মিষ্টি ব্যবহার করেছেন বলে খেতে মনে হয় অনেক বেশি মাসালাদার লাগবে ।ধন্যবাদ আপনাকে এমন সুস্বাদু একটি রেসিপি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি আপনিও চেষ্টা করবেন।
অসাধারণ একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন ভাই। এটা একদমই নুতন মনে হচ্ছে টক-ঝাল-মিষ্টি কুলজম। তবে এটা খেতে খুবই মজার হবে। সেটা কিন্তু দেখেই বোঝা যাচ্ছে। এরকম চার ধরনের বড়ই দিয়ে এটা তৈরি করলে তার সাথে আবার টমেটো এটা কিন্তু খুবই মজা হবে. ধন্যবাদ আপনাকে ,শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
ধন্যবাদ ভাইয়া । খুব সুন্দর মন্তব্য করেছেন আমার কুলঝুম নিয়ে। আশা করি আপনারা চেষ্টা করবেন এমন সুন্দর ভাবে রেসিপি তৈরি করা জন্য।