মূলা চাষের অনুভূতি
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি মোবাইলের পুরাতন অ্যালবাম থেকে আমার পুকুরপাড়ের সবজি বাগানে উৎপাদন করা মূলা নিয়ে আপনাদের মাঝে বেশ কিছু কথা বলব। আশা করবো আমার এই পোস্ট আপনাদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আমি ছোট থেকে শাকসবজি উৎপাদন করতে খুবই পছন্দ করি। কবে কখন যে এই শাকসবজি উৎপাদনের ক্ষেত্রে আসক্ত হয়েছি তা নিজেরে মনে নাই। তবে সেই আগের মত এখনো টাটকা শাকসবজি উৎপাদন করে খেতে পছন্দ করি বলেই প্রতি বছর কম বেশি শাকসবজি উৎপাদন করা হয়। আজকে কি পোস্ট করব এমন চিন্তা নিয়ে যখন মোবাইলটা হাতে ধরলাম। হঠাৎ মোবাইলে খোঁজাখুঁজি করতে গিয়ে শাকসবজি বিষয়ের ফোল্ডারে লক্ষ্য করে দেখলাম বেশ বিভিন্ন রকমের শাকসবজি নিয়ে ফটো ধারণ করা রয়েছে। তাই মূল উত্তোলন করার মুহূর্তের ফটোগুলো আপনাদের মাঝে প্রকাশ করার চেষ্টা করলাম যেন আমার এই পোষ্টের মধ্য দিয়ে আপনারা উৎসাহিত হতে পারেন। আমরা জানি বর্তমান বাংলাদেশের শাক সবজির প্রচুর পরিমাণ দাম। শীতের সময় বিভিন্ন রকমের শাকসবজি উঠে, শাকসবজির দাম কমে। কিন্তু এবার যেন শাকসবজির দাম কমছে না। গত শুক্রবার বামুন্দি বাজারে বাজার করতে গিয়ে মুলার দাম জিজ্ঞেস করলাম ছোট ছোট মুলার দাম বলল ৪০ টাকা একটু দেখার মত মুলার দাম বলল ৬০ টাকার কেজি। তখন আমি আশ্চর্য হলাম! মুরারি এত দাম? এ দেখি আমি এক মাস আগে আমার পুকুর পাড়ে মুলা বীজ বুনেছি গাছ বড় হয়ে গেছে। ঐদিনও উপস্থিত হয়েছিলাম মুলা পালন লাল শাক সহ বেশ কিছু শাকসবজির বীজ কেনার জন্য।
আমরা যদি নির্দিষ্ট একটি জায়গা প্রতিনিয়ত ব্যবহার করে থাকি এমন শাকসবজি উৎপাদনের জন্য তাহলে অনেক উৎপাদন করতে পারে। আমি পুকুর পাড়ের এই জায়গা বাগানে পরিণত করেছি চারই পাশে তার জাল দিয়ে ঘিরে। মাঝেমধ্যে যখন সুযোগ পাই জায়গা গুলোতে শাকসবজি উৎপাদন করার চেষ্টা করে থাকি। তাই সারা বছর ধরে আমার সবজি বাগানের মধ্যে বিভিন্ন রকমের শাকসবজি থেকে থাকে। এখানে দেখতে পারছেন মোলা উত্তোলন করে পুনরায় সেই জায়গাটা কাজে লাগানোর জন্য কোদাল দিয়ে কোপানো কার্যক্রম করেছিলাম। আমি আর আমার বন্ধু গত বছর অনেক শাকসবজি উৎপাদন করেছিলাম এখানে। প্রথম মুলা চাষের পর দ্বিতীয়বার মুলা চাষ করার জন্য জায়গাটা প্রস্তুত করতে হবে তাই মুলা উত্তোলন করে ফেলেছিলাম। আমি সবসময় চেষ্টা করি হাইব্রিড মুলাগুলো চাষ করার জন্য। এ মুলাগুলো অনেক বড় হয়ে থাকে এবং কয়েকটাতেই তরকারি হয়ে যায়। আমার নিজের কাছে আশ্চর্য লাগে এই সমস্ত বড় বড় মূলা আমার নিজের হাতে উৎপাদন করা হয়। এ ছাড়াও তো অন্যান্য শাকসবজি সব সময় থাকে সে সমস্ত বিষয় নিয়ে না হয় আলাদা পোস্ট আপনাদের মাঝে অন্য সময় শেয়ার করব, তবে আজকের এই পোস্টটা আপনাদের উৎসাহ প্রদান করার জন্যই আমি শেয়ার করলাম। দেশে শাকসবজির ব্যাপক দাম আসুন আমরা চেষ্টা করে থাকি নিজেদের পরিত্যক্ত জায়গাগুলো অথবা বাগানবাড়ির ছাদ যে কোন জায়গাতে যেভাবে পারা যায় শাকসবজি উৎপাদন করার চেষ্টা করি। আমি মনে করি নিজের ব্যস্ততার মধ্যে এ সমস্ত কৃষি কাজ করলে মন ভালো থাকে এবং টাটকা শাকসবজি খাওয়ার সুযোগ হয়।
মুলা চাষ করতে বেশি পরিশ্রম করার আগে না বা বেশি খরচ করা লাগে না। মাত্র কুড়ি ৩০ টাকার বীজ আনলেই সারা শীতের মূল্য হয়ে যায়। দুইবার চাষ করলে খুব জোর ৬০ টাকার বীজ লাগে। যেখানে এক কেজি মুলা হয়। আর সেই ৬০ টাকার বীজে দেড় থেকে দুই মন তারও বেশি মূলা হয়। মাঝখানে শুধু এক দু কেজি ইউরিয়া সার সময়তে সময়তে একটু একটু করে প্রয়োগ করা লাগে। তাই হিসাব করলে দেখা যায় দুই কেজি মুলার দামে দুই মন মুলা উৎপাদন করা সম্ভব হয়ে থাকে। এখানে ভুল বা মিথ্যা তেমন কিছুই বলছি না যেহেতু আমি দীর্ঘ বছর ধরে পুকুরপাড়ের সবজি বাগানে নির্দিষ্ট স্থান করে রেখেছি সেখানে আলাদা আলাদা ভাবে প্রত্যেকটা শাকসবজি উৎপাদন করে থাকে। সেচ হিসাবে পুকুরের পানি ব্যবহার করে থাকি। হয় গামলা দিয়ে পানি উত্তোলন করে সবজি ভেজায়। এছাড়াও যখন সারা সবজি বাগানটা সেচ দিতে হয় তখন আমার সাবমারসিবল পাম্প নিয়ে যায়। তাই আমার পক্ষ থেকে আপনাদের নিকটে মেসেজ থাকবে নিজে একটু পরিশ্রম করলে অনেক কিছু করা সম্ভব। ১০০ টাকার নিচে খরচ করে আপনি দুই হাজার টাকার জিনিস উৎপাদন করে খেতে পারবেন, তাও আবার ফরমালিনমুক্ত ভেজালমুক্ত টাটকা। এখন সিদ্ধান্ত আপনার আমার নিজেদের। বেশি দামে সবজি কিনে খেতে হবে নাকি নিজে একটু বুদ্ধি খাটিয়ে পরিশ্রম করে ভেজাল মুক্ত শাকসবজি খাব। আলহামদুলিল্লাহ এ বছরে নিজেদের পারিবারিকভাবে খাওয়ার জন্য যে মুলা চাষ প্রয়োজন তা বড় হওয়া শুরু হয়ে গেছে এছাড়াও আজকে আমি আলাদাভাবে আরেক জায়গায় বীজ বপন করব। তাই আসুন নিজেরা একটু অ্যাক্টিভ হয় এই সমস্ত বিষয়ে। তাহলে যখন ইচ্ছে তখন সবজি উত্তোলন করে এনে খেতে পারব খুব সহজে।
বিষয় | মুলা চাষের অনুভূতি |
---|---|
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Infinix Hot 11s |
লোকেশন | গাংনী-মেহেরপুর |
ব্লগার | @sumon09 |
দেশ | বাংলাদেশ |
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
গাছে থাকা শাকসবজি গুলো দেখতে ভালোই লাগে। আপনার মুলা চাষের খুব সুন্দর অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। বেশ ভালো লাগলো ফটোগ্রাফি গুলো দেখে। নিজেদের গাছের ভেজালমুক্ত তাজা শাকসবজি খেতে সবারই ভালো লাগে। ফটোগ্রাফি গুলা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
অনেক সুন্দর মন্তব্য করেছেন।
সবজি চাষের ক্ষেত্রে আপনার অনুভূতিটা দেখে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। আমি জানি যে আপনার এ বিষয়ে অনেক ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে কেননা আপনি বিগত সময়ে অনেক সুন্দর সুন্দর সবজি চাষ করেছেন। আপনার সবজি চাষ দেখে যেন আমি প্রতিনিয়ত মুগ্ধ হয়ে যাই।
মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।
আসলে ফসল থেকে এই ধরনের তাজা তাজা সবজি খাওয়ার মজাটাই আলাদা। আর আপনি তো দেখছি এই মুলা চাষের পদ্ধতি খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আর নিজের কষ্টের ফল যখন ভালো হয় তখন তো মজা লাগারই কথা।
আপনার মতো দেখে খুশি হলাম দাদা।
আপনি শুধু মুলো চাষ করেননি, আমাদেরকেও শিখিয়ে দিলেন কিভাবে মুলো চাষ করতে হয়। প্রতিটা ফটোগ্রাফির মাধ্যমে দেখলাম মাটি তৈরি থেকে মুলো উৎপাদন। একটা কথা না বলে পারছিনা, আপনার কিন্তু চমৎকার হাত। কত সুন্দর মুলো ফলিয়েছেন! জাস্ট অসাধারণ। এই টাটকা সবজি খেতেও তো খুবই সুন্দর।
আশা করব এভাবে পাশে থাকবেন।
শুধু মুলা কেন ভাইয়া বর্তমান সময় সবজির অনেক দাম সেটা যে কোন সবজি হোক না কেন। আপনার মত আমাদের উচিত প্রত্যেকের বাসায় একটু করে হলেও সবজি চাষ করা যাতে নিজের পরিবারের চাহিদা মিটে। তাহলে এই সবজির দাম হয়তো নিয়ন্ত্রণে আসবে। যেমন আপনি আপনার পুকুরপাড়ের ওই জায়গাতেই কিন্তু বিভিন্ন শাকসবজির চাষ করে থাকেন। যাই হোক মুলা চাষ করার পদ্ধতি বিশ্লেষিত ভাবে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই।
বিশেষ করে শীতের সময় শাক সবজির আবার বেশি হয়।যদিও আমাদের এলাকায় এভরকম আবাদ হয় না। কিন্তু পাশের গ্রামে লক্ষ্য করছি তারা সব কিছু আবাদ করে।যাইহোক আপনার মুলা চাষের অনুভূতি পরে খুবই ভালো লাগলো।ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপনি একদম ঠিক বলেছেন।