স্মৃতিময় স্কুলের দিনগুলি

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago
আসসালামু আলাইকুম

GridArt_20231114_151616143.jpg





হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। ফেলে আসা দিনগুলো স্মৃতি হয়ে যায়। তবে কিছু মাধ্যম রয়েছে যেগুলো স্মৃতি কে বার বার স্মরণ করে দেওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেয়। ঠিক তেমনি বিদ্যালয়ের সেই সুন্দর কিছু স্মৃতি নিয়ে আজকে উপস্থিত হয়েছি। আশা করি এই পোস্ট আপনাদের অনেক ভালো লাগবে।


'আমার বাংলা ব্লগ'
কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট


ফটোগ্রাফি সমূহ:


অনেকদিন পর আবার উপস্থিত হলাম বিদ্যালয় ছাত্রছাত্রীদের সুন্দর আনন্দঘন মুহূর্ত নিয়ে। টিফিন টাইমে ছাত্রছাত্রীরা ইচ্ছে মত খেলা করো তো আমাদের সামনে। আমার চেষ্টা করতাম যেন ছেলেমেয়েরা মারামারি না করে। যেহেতু ছোট ছোট বাচ্চারা অনেক সময় খেলতে গিয়ে মারামারিতে লিপ্ত হয়ে পড়ে। তাই আমি আর মুস্তাফিজুর তোদের খেলাধুলা করার সময় নজর রাখতাম সঠিকভাবে ছোটরা বড়রা আলাদা আলাদা ভাবে যেন খেলে। আর এই খেলাধুলা গুলো কিন্তু আমাদের ছোটবেলার স্মৃতি স্মরণ করিয়ে দেয়। আমরাও আমাদের 'জুগীরগোফা প্রাথমিক বিদ্যালয়' এ এভাবে খেলতাম। যাইহোক সবার জীবনে এমন সুন্দর রঙিন স্মৃতি রয়েছে। অনেকেই দেখা মাত্র স্মরণ করতে পারেন নিজের জীবনের সেই হারিয়ে ফেলা সোনালী দিনগুলোর স্মৃতি। হঠাৎ কেন জানি ঘুম থেকে উঠেই মনে পড়লো আমার ছোটবেলার দিনগুলোর কথা। তাই মোবাইলের গ্যালারিতে প্রবেশ করে খুঁজে দেখলাম আমার ছাত্র-ছাত্রীদের খেলাধুলার সেই ফটোগুলো। তাই সে হলো আজকে আপনাদের মাঝে বাচ্চাদের খেলাধুলার এই ছবিগুলো শেয়ার করি। আমাদের সময় স্কুল ড্রেস ছিল না, ছিল না এত নিয়ম শৃঙ্খলা। অনেক সময় খালিপায়ে স্কুলে চলে যেতাম। গায়ের জামা কাপড় ছেঁড়া ভালো ময়লা কোন কিছু দেখা ছিল না। এখন তার ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে। বিদ্যালয়ে যেমন কড়া নিয়ম শৃঙ্খলা পাশাপাশি অভিভাবকেরাও যথেষ্ট সচেতন এই বিষয়ে।

IMG_20220605_102951_933.jpg

IMG_20220605_102941_399.jpg

স্কুল শুরু হওয়ার পূর্বে আর টিফিন টাইমে ছাত্র-ছাত্রীরা হাই রোডে উঠে পড়ছে কিনা। এগুলো নজরে রাখতে হত সকল শিক্ষক মন্ডলীদের। যেদিন যার দায়িত্ব ছিল সে সেদিন হাইরোডের পাশে দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালন করত, যেন গেটের মধ্যে থাকে। ঠিক এমনই একটা মুহূর্ত যখন আমি বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলাম বেশ কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী এসে আমার মোবাইলের ছবি ওঠার চেষ্টা করছিল। এমনিতে অনলাইনে পোস্ট করার জন্য আমি যে ছবি উঠিয়ে থাকি এই সুবাদে ছাত্রছাত্রীরা বেশিরভাগ সময় আমার কাছে এসে উপস্থিত হত এবং আবদার করত স্যার আমাদের ফটোগ্রাফি করে দিন। ছোট ছোট বাচ্চাদের মনের ভালোলাগা আমিও পূরণ করার চেষ্টা করতাম ফটোগ্রাফি করে।

IMG_20220611_080935_756.jpg

IMG_20220611_081032_631.jpg

এক এক শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা যখন একসাথে বসে টিফিন খেত, দেখতে বেশ ভালো লাগতো। মনে হতো যেন একই ফ্যামিলির সন্তান এরা। নেই কোন মারামারি; কথা কাটাকাটি; চিল্লাপাল্লা। এমন সুন্দর দৃশ্য গুলো আমার কাছেও বেশ ভালো লাগলো তাই আমিও চেষ্টা করতাম ক্যামেরা বন্দী করে মোবাইলে রাখার জন্য। কারণ স্মৃতি ধরে রাখতে, আমি ফটোগ্রাফি করতে বেশি বেশি পছন্দ করে থাকি। এজন্য আমার মোবাইলে থাকা সেই ফটোগ্রাফির মধ্য থেকে চেষ্টা করলাম আপনাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য হয়তো অনেকের জীবনে রয়েছে এমন সুন্দর আনন্দ ভালো স্মৃতিময়। টিফিন টাইমটা সত্যিই অনেক আনন্দের বিষয়। সব ছাত্রছাত্রী যেন খাওয়া-দাওয়ার ব্যস্ততা মধ্য দিয়ে সময় পার করে থাকে। আর যারা টিফিন আনে না তারা স্কুল থেকে দোকানের দিকে খেতে যেত। তাদেরকেও দেখাশোনা করতে হতো আমাদের। যেন রাস্তায় সাবধানে চলাচল করে, এক্সিডেন্ট না হয়।

IMG_20220613_114143_591.jpg

একেক উপদেষ্টা মন্ডলী যখন বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতো, তাদের সাথে নিয়ে সমন্বয় মিটিং শুরু হতো বিদ্যালয়ের মান উন্নয়নের জন্য। কিভাবে বিদ্যালয়ের ভালো রেজাল্ট করানো যায়; ছাত্রছাত্রীদের মেধার বিকাশ ঘটানো যায়; নিয়ম শৃঙ্খলা আরো সুন্দর করা যায় সেই সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হত দীর্ঘক্ষণ। যখন যে সমস্ত উপদেষ্টা মন্ডলীরা আমাদের কাছে উপস্থিত হতো তাদের মধ্যে বেশিভাগ বিভিন্ন বিদ্যালয় শিক্ষক, কলেজের প্রফেসর এসে উপস্থিত হতো। তাদের উপস্থিতিতে বেশ ভালই লাগতো। আরো যারা উৎস সৃষ্টি হতো তোমাদের মধ্যে তাদের ভালোভাবে লেখাপড়া করানোর জন্য। বিদ্যালয়ের নিয়ম শৃঙ্খলা গুলো সুন্দর ভাবে ধরে রাখার জন্য।

IMG_20220604_120122_124.jpg

IMG_20220604_120055_635.jpg

IMG_20220604_120052_090.jpg

IMG_20220604_120028_404.jpg

বিদ্যালয়ে সাপ্তাহিক সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। আর এই সাপ্তাহিক সংস্কৃতি অনুষ্ঠানে মাঝেমধ্যে বিশেষ মেহমান এসে উপস্থিত হতো। ঠিক তেমনি সুন্দর একটা দৃশ্য এই ফটোতে দেখতে পাচ্ছেন। তিনজন ব্যক্তির মাঝে মাঝখানে যিনি রয়েছেন তিনি আমাদের নিকটস্থ একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক। উনি মাঝেমধ্যে এসে আমাদের বিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয় পরামর্শ দিয়ে থাকতে। বিশেষ করে সাপ্তাহিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান গুলো দেখার জন্য আসতেন উনি।

IMG_20220602_110652_418.jpg

ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ানো ও শেখানোর পর মাঝেমধ্যে বই দেখিয়ে লিখতে দেওয়া তাদের লেখাপড়া এবং হাতের লেখা সুন্দর করার অন্যতম কৌশল। কারণ যখন তারা দেখে দেখে লেখে এতে কিন্তু লেখাটা সুন্দর হয়, আর ছোটবেলাটাই লেখা সুন্দর করার অন্যতম সময়। তাই আমিও চেষ্টা করতাম প্রতিনিয়ত তাদের হাতে লেখা সুন্দর করার জন্য বাড়িতে লিখতে দেওয়ার পাশাপাশি বিদ্যালয় লিখতে দেওয়া। অনেক ছাত্র-ছাত্রী বিরক্ত বোধ করত তারপরেও শিক্ষকের নির্দেশ মান্য করতে হতো কিন্তু এতে যে তাদের ভালো হতো সেটা সবাই বুঝে উঠত না। যাইহোক এভাবেই যেন চেষ্টা করা হতো বিদ্যালয়ের এবং ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার মান উন্নয়নের। হঠাৎ আজ তাদের কথা মনে পড়ে চেষ্টা করলাম সুন্দরভাবে তাদের সেই পুরনো দিনগুলো আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে।

IMG_20220606_092309_198.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স

আশা করি,আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনি অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে বুঝতে ও শিখতে পেরেছেন, সেই সাথে নতুন জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছেন। পোস্টটি উপস্থাপনা কেমন ছিল এবং এ বিষয়ে আপনার অনুভূতি কেমন, অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আমাকে জানাতে ভুলবেন না। আপনার জন্য আমার পক্ষ থেকে শুভকামনা রইলো।


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif

zr7XQBzuvvkjgjjPxunUtP5k84gxgWc4mR8PqdBj5rx8AtXSSugGPwSy7JKyM3rgX4k3arRVPC2wT66DqiAYg2UuYrHpE94NCJsYEnjKP7Erbg.png


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Sort:  
 10 months ago 

ভাইয়া এমন দৃশ্য দেখলে শৈশবের স্মৃতি মনে পড়ারই কথা। সত্যি কত সুন্দর ছিল সেই সময়টা। ঠিক বলেছেন আমাদের সময় এত নিয়ম-কানুন ছিল না তবে আমাদের স্কুলের ড্রেস ছিল সবসময়। টিফিন হলেই খেলাধুলা ব্যস্ত হয়ে পড়তাম। আপনি বাচ্চাদের খুব সুন্দর মুহূর্ত ক্যামেরা বন্দি করেছেন। আপনাদের স্কুলটা আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। বিশেষ করে স্কুলের সামনের এত সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখলে মুগ্ধ হয়ে যাই। আমাদের স্কুলেও সাপ্তাহে একদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো আর সেই দিন কোনো ক্লাস হতো না। আমরা সেই দিন খুব আনন্দ পেতাম। যাই হোক আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।

 10 months ago 

একদম ঠিক বলেছেন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের দিন ক্লাস হতো না কিন্তু এখানে হয়

 10 months ago 

শৈশবে স্কুলে কাটানো স্মৃতিময় দিনগুলি হৃদয়ের পাতায় লেখা থাকবে আজীবন। প্রতিটি স্কুলের বাচ্চাদের স্কুল টাইমে সকল দায়িত্ব তাদের শিক্ষকের হয়ে থাকে। সুন্দর একটি পোস্ট বিস্তারিতভাবে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

একদম ঠিক কথা বলেছেন ভাইজান

 10 months ago 

অনেক সুন্দর দৃশ্য শেয়ার করলেন আপনি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের খেলার। তাদের স্মৃতির সাথে আপনার শৈশবের স্মৃতি আলোচনা করলেন। আসলে ছোটবেলায় কোথায় পড়ে যাব কাপড় ছেড়ে যাব কিনা এগুলো কোনই চিন্তা থাকতো না। অনেক ছুটাছুটি করতাম অনেক খেলাধুলা করতাম বেশ ভালই লাগতো। আপনাদের স্কুলের একটা শৃঙ্খলা আছে খুব সুন্দর ভাবে একেক জন একেক দিন একেক দায়িত্ব পালন করেন। তবে বাচ্চাদেরকে নিয়ে খুব সুন্দর একটি নজরে রাখেন। যাতে ছোটরা এবং বড়রা আলাদা আলাদা ভাবে খেলতে পারে।

 10 months ago 

কারো শৈশবের এমন দৃশ্য দেখলে মনে পড়ে যায় অতীতের দিনগুলো

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 53955.17
ETH 2265.61
USDT 1.00
SBD 2.34