শিশু-কিশোরদের গ্রাম্য ক্রিকেট ম্যাচে আমার অংশগ্রহণ

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আজ - বুধবার

০২ ফাল্গুন, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ


আসসালামু আলাইকুম



আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আপনাকে স্বাগতম

IMG_20220924_104016716_BURST0004.jpg




হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি গ্রামের শিশু-কিশোরদের ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণের এক দারুন অনুভূতি নিয়ে। যে ক্রিকেট খেলা গ্রামার ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন বাগান অথবা খোলা মাঠে লক্ষ্য করা যায়। ঠিক তারই বিস্তারিত আলোচনা নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্ট মনোযোগ সহকারে পড়বেন, তাই চলুন আর দেরি না করে মূল পর্বে চলে যাওয়া যায়।


'আমার বাংলা ব্লগ'
কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট



ফটোগ্রাফি সমূহ:


১ নং ফটোগ্রাফি

আমরা জানি বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা দুইটির নাম হচ্ছে ফুটবল আর ক্রিকেট। গ্রাম বাংলার আনাচে-কানাচে তাকালে লক্ষ্য করা যায় ছোট বড় সকল শ্রেণীর ছেলেমেয়েরা আজ ফুটবল খেলায় এবং ক্রিকেট খেলায় ব্যতিব্যস্ত। যখন বর্ষার সময় আসে তখন তো ফুটবল খেলা ছাড়া ক্রিকেট খেলতে পারেনা। তবে যখন বর্ষা থাকে না শুষ্ক মৌসুম তখন লক্ষ্য করা যায় ফাঁকা স্থান মাঠ কিংবা বাগানের মধ্যে ছেলেরা ক্রিকেট খেলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঠিক তেমনি আমাদের পাড়াগায় অনেক ছেলেমেয়ে রয়েছে যাদের মধ্য থেকে একটু উড়তি বয়সের ছেলেরা ক্রিকেট খেলায় ব্যস্ত একটি বাঁশ বাগানে। যে বাঁশ বাগান দিয়ে আমি আমাদের পুকুরে যাওয়া আসা করি। অনেকে আমাকে দেখে বলে ভাই খেলবেন অথবা অনেকে বলে কাকু আমাদের সাথে ক্রিকেট খেলবেন। আমি তেমন একটা তাদের সময় দিতে পারি না কারণ স্কুল থেকে এসেই খাওয়া-দাওয়া করে পুকুরে চলে আসে মাছের খাবার দিতে। হয়ে যায় খুবই ব্যস্ত। খেলব কখন?

IMG_20220924_104011999_BURST0001_COVER.jpg

IMG_20220924_104004534_BURST0007.jpg

Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স


received_305654148004402.webp


২ নং ফটোগ্রাফি

এমন একটা দিন সামনে এলো হঠাৎ করে ভাবলাম এরা এত করে যখন আমাকে বলে আমি চেষ্টা করবো তাদের সময়সুযোগ দেবার। কারণ তাদেরও তো মনে আনন্দ রয়েছে। আমি ওদেরকে বলে দিলাম শুধু করে একদিন খেলব তোমরা খেলো। ঠিক তেমনি একটা দিন চলে গেল আমার সামনে। আমিও রেডি হলাম তাদের সাথে খেলা করার জন্য। তবে লক্ষ্য করলাম দূর পাড়া থেকে যে সমস্ত ছেলেরা খেলতে এসেছিল তারা একটু বিরক্ত বোধ করছিল। আমি আমার ছোটকালের স্মৃতি মনে করলাম। আমরা যখন বন্ধুরা মিলে শিশু বাগানে খেলতাম, তখন বড় কোন ভাই বা চাচা খেলতে আসলে একটু বিরক্ত বোধি করতাম। তবে ছেলে-মেয়ে উভয় মিলেই ক্রিকেট খেলতাম তাতে কোন বিরক্ত হতাম না কারণ তারা সমবয়সী বন্ধু বান্ধবী। তাই আমি তাদের মাঝে উপস্থিত হলাম সামান্য সময়ের জন্য যেন তারা আনন্দটাও বোধ করতে পারে এবং বিরক্ত না বোধ করে।

IMG_20220924_103825_302.jpg

IMG_20220924_104137_056.jpg

IMG_20220924_104134_866.jpg

Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স


received_305654148004402.webp


৩ নং ফটোগ্রাফি

আমি তাদের বললাম খেলা তোমরাই খেলবে, আমি সামান্য খেলব। তবে চেষ্টা করব বেশি তোমাদের ফটো উঠানোর জন্য যেগুলো আমি অনলাইনে ছেড়ে দেব তোমাদের অনেকেই দেখতে পারবে। এটা আমার সবচেয়ে বেশি ভালোলাগা। তারা খুব আনন্দের সাথে এসে আমার সামনে উপস্থিত হল ফটো উঠানোর জন্য, মনে হলো যেন আমার চেয়ে বেশি আনন্দ তারাই পাচ্ছে ফটো উঠাতে। যাইহোক আমি তাদেরকে ভাগ করে দিলাম ছোট বড় নির্বিশেষে দুইটি দলে বিভক্ত করে দিলাম। আমি তাদেরকে দুইটি দলে ভাগ করে দেওয়ায় ওরা সন্তুষ্ট হয়েছিল কারণ অনেক সময় দেখা যায় এ পাড়া ও পাড়ার ছেলেমেয়েদের মধ্যে গ্যাঞ্জাম সৃষ্টি হয়। আবার অনেকে বলে আমরা সবাই ছোট দুর্বল ভালো পারি না তোমরা সবাই ভালো পারো এই ভাগ বাটোয়ারা মেনে নেব না। অনেক বিশৃঙ্খলা হয়। আমি অতি শৃঙ্খলার সাথে দুইটা দলে ভাগ করে দিয়ে টস করে খেলা শুরু করে দিলাম।

IMG_20220924_104038_614.jpg

IMG_20220924_104026_804.jpg

IMG_20220924_104107_284.jpg

IMG_20220924_103958_563.jpg

Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স


received_305654148004402.webp


৪ নং ফটোগ্রাফি

আমি আধাঘন্টা তাদের মাঝে অবস্থান করলাম এবং তাদের খেলাধুলা পরিচালনা করার চেষ্টা করলাম, যেন শৃঙ্খলার সাথে খেলতে পারে এবং তারা সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করতে পারে। খেলা যখন চলমান থাকলো আমি তাদের সন্তুষ্টি আদায় করে চলে গেলাম। তারা সকলেই খুশি মনে আমাকে বিদায় জানালো। তবে আমি কয়েকবার ব্যাট করেছি এবং বল করেছি। তারা যেন কোন মতে আমার থেকে বিরক্ত বোধ না করে সেই চেষ্টাটাই করেছি। তবে তারা খুব অনুরোধ করেছিল তো আরো কিছুক্ষণ যেন তাদের সাথে আমি খেলি। যেহেতু সময় সাপেক্ষের একটা বিষয় রয়েছে তাই বেশি সময় তাদের দিতে পারলাম না। তবে তাদের বলেছিলাম পরবর্তীতে তোমার সাথে সুযোগ পেলে খেলব। খুবই সুন্দরভাবে তাদের খেলা চলতে থাকলো। তাদের মধ্যে আমাদের কয় একটা স্টুডেন্ট ছিল। পরবর্তীতে আমি তাদের থেকে জানতে পারলাম খেলা খুব সুন্দর ভাবে তারা উপভোগ করেছিল এবং সুন্দর খেলা হয়েছিল। অন্যান্য দিন যেমন গ্যাঞ্জাম ঝগড়া হয় তাদের মধ্যে এমন কোনটাই হয়েছিল না। আমি মনে করি এই জাতীয় খেলা গুলো এখন বর্তমান বাংলাদেশের ঐতিহ্য রূপ লাভ করেছে কারণ আমাদের সময় আমরা অনেক প্রকার খেলা খেলেছি যখন খেলনা ছিলনা। খেলনা ছাড়াই এদিক সেদিক থেকে বিভিন্ন জিনিস ম্যানেজ করে খেলার চেষ্টা করেছি। আবার কিছু কিছু খেলনা নষ্ট হয়ে গেলে দ্বিতীয়বার কেনার সাধ্য হতো না। এখন খেলনা খুব সহজেই তারা কিনতে পারে কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক খেলার জায়গা কমে গেছে। আমি মনে করি ছোটদের খেলাধুলা করার সময় দেওয়া উচিত কারণ তার মধ্যে থেকে তাদের মানসিক বিকাশ সৃষ্টি হয়। তাই আমি আপনাদের একটা অনুরোধ করবো 'আপনার আশেপাশে যে সমস্ত ছেলেমেয়েদের খেলতে দেখেন, তাদের খেলার সুন্দর একটা সুযোগ করে দিবেন। যেন বিশৃঙ্খলা না হয় এবং শান্তিপূর্ণভাবে খেলতে পারে'। আপনার সুন্দর ব্যবহারের কারণে ছেলেমেয়েরা সন্তুষ্ট থাকবে এবং ভবিষ্যতে আপনাকে মান্য করবে। আর তাদের খেলাধুলা টাও মনোমুগ্ধকর হবে।

IMG_20220924_103931_665.jpg

IMG_20220924_103927_831.jpg

IMG_20220924_103925_186.jpg

IMG_20220924_180201_808.jpg

IMG_20220924_180132_225.jpg

Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স


received_305654148004402.webp

R6TbvATub8MquGoqJZ4SE2UCpaUQzmNnWQxvJGwvYApXWE4KsVzC8vNNXWgtz7hrfoYPSrjupZgj7VtKhrH935ua1PLs4Vr7KiYnVAy3oD...tCNiac63XNuwJJZPbTjHfGPYJH4BJoHgX8HdohSPrSasKvArV8wiiFV7ntYqz66tLZiqG67BKrPAveZFRs3vaqucpJgsaE3qA6Rwasb2fYDx3U5dXGLwwRdyH8.png


আশা করি,আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনি অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে বুঝতে ও শিখতে পেরেছেন, সেই সাথে নতুন জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছেন। পোস্টটি উপস্থাপনা কেমন ছিল এবং এ বিষয়ে আপনার অনুভূতি কেমন, অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আমাকে জানাতে ভুলবেন না। আপনার জন্য আমার পক্ষ থেকে শুভকামনা রইলো।

💌আমার পরিচয়💌


আমি মোঃ নাজিদুল ইসলাম (সুমন)। বাংলা মাস্টার্স ফার্স্ট ক্লাস মেহেরপুর গভমেন্ট কলেজ। আমার বাসা গাংনী-মেহেরপুর। মড়কা বাজার, গাংনী,মেহেরপুর এ গ্রীনরেইন ল্যাবরেটরি স্কুল নামক প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সহকারি শিক্ষক । ইলেকট্রনিক্সের যন্ত্রপাতি মেরামত ও সৌর প্যানেল নিয়ে রিসার্চ করতে পছন্দ করি। প্রাকৃতিক দৃশ্য ফটোগ্রাফি করা আমার সবচেয়ে বড় ভালোলাগা। দীর্ঘদিনের আমি পাঙ্গাস মাছ চাষী এবং বিরহের কবিতা লেখতে খুবই ভালোবাসি।




পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif

image.png

image.png

আমার পরিচিতিকিছু বিশেষ তথ্য
আমার নাম@sumon09🇧🇩🇧🇩
ফটোগ্রাফি ডিভাইসমোবাইল
ব্লগিং মোবাইলInfinix hot 11s
ক্যামেরাcamera-50mp
আমার বাসামেহেরপুর
আমার বয়স২৬ বছর
আমার ইচ্ছেলাইফটাইম স্টিমিট এর 'আমার বাংলা ব্লগ' এ ব্লগিং করা

zr7XQBzuvvkjgjjPxunUtP5k84gxgWc4mR8PqdBj5rx8AtXSSugGPwSy7JKyM3rgX4k3arRVPC2wT66DqiAYg2UuYrHpE94NCJsYEnjKP7Erbg.png


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Sort:  
 last year 

আপনার এই পোস্ট দেখে আমার ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। আসলেই ব্যস্ততার কারণে সময় দেওয়া হয় না তাছাড়া ছোটবেলায় এমন কত ক্রিকেট খেলেছি। বাঁশ বাগানে নয় তবে আমরা আমাদের মেহগনি গাছের একটি বাগান ছিল সেখানে ক্রিকেট খেলতাম। যাই হোক আর সবশেষে যখন তাদের সবাইকে একসাথে করে ছবি তুলছিলেন তারা সত্যি বোধহয় আপনার প্রতি অনেক খুশি হয়েছিল।

 last year 

মাঝে মাঝে মন চায় তাদের সাথে খেলতে

 last year 

আসলে এ ধরনের পোস্ট দেখলে শৈশবে স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে উঠে।যদিও এখন অনেক গ্রামের এসব চিত্র দেখা যায় না।সব কিছু যেন মোবাইলে নিয়ে গেছে ভাই।আপনিও সম্ভবত বাচ্চাদের সাথে ক্রিকেট খেলেছিলেন।দারুন উপভোগ করেছেন,দেখেই বোঝা যাচ্ছে।

 last year 

আমি মাঝেমধ্যে শৈশবের স্মৃতিগুলো স্মরণ করার চেষ্টা করি এবং আপনাদের চেষ্টা করিয়ে দি।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.12
JST 0.027
BTC 62355.30
ETH 3372.21
USDT 1.00
SBD 2.50