সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি হয় হত্যার কেন্দ্রস্থল, তাহলে জাতির বিবেক কোথায়?
হাই বন্ধুরা!
হাই
বন্ধুরা!আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। প্রথমে বলে রাখি,
মানুষ ভুলের উর্ধ্বে নয়, ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি দেশের কুলাঙ্গার মানুষদের বর্বরতার প্রতিবাদস্বরূপ ও বিবেক জাগ্রত করার জন্য কিছু কথা বলতে।আলোচনার বিষয়: শিক্ষাব্যবস্থা |
---|
আদিম যুগে যাব না। পরবর্তী চিন্তাধারা নিয়ে কিছু বলার জন্য উপস্থিত হয়েছি। মানুষ যখন আস্তে আস্তে বুঝতে শিখলো জাতিকে উন্নতি করতে হলে শিক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন। আর এই শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে হবে। ঠিক সেভাবেই সুচিন্তাকে কাজে লাগিয়ে প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে থাকলো। শিক্ষা দেওয়ার জন্য একটু জ্ঞানীগুণী মানুষদেরকে গুরু হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হলো। এভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাই স্কুল,কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থা শুরু হল সারা বিশ্বব্যাপী। শুরু হলো সুশিক্ষা গ্রহণের স্থান। পিতা-মাতার স্বপ্ন দেখল নিজের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে। নিজেরা লেখাপড়া শিখতে পেরেছি বা পারি নাই,নিজের সন্তানদেরকে সুশিক্ষা দেব, উচ্চ শিক্ষা দেব,যে শিক্ষার কারণে তারা মানুষের মতো মানুষ হবে, দেশ ও জাতির কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। নিজেরা ভুল পথে চললেও সন্তানেরা সঠিক পথ দেখাবে, সঠিক পথে চলবে। পিতা-মাতা হিসেবে নিজেদের মাথা উঁচু করে পথ চলতে পারবে। বলতে পারবে আমার সন্তান আজ দেশের অহংকার, দেশের গর্ব।
আর এভাবেই যুগ যুগ ধরে সারা বিশ্বব্যাপী স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে থাকলো। একটু অর্থ শালীর পিতা-মাতারা চিন্তা করে দেখল নিজের সন্তানদের উচ্চ শিক্ষার জন্য স্কুল কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় লেখাপড়া করাবো নিজেদের সন্তানদের। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় যদি লেখাপড়া করানো যায় তারা মানুষের মতো মানুষ হবে একটা জাতিকে ভালোভাবে পরিচালনা করবে। কুসংস্কার চিন্তা ধারা দূর হবে তাদের দ্বারা, সভ্য জাতি গড়ে উঠবে, আর এভাবেই আমাদের রাষ্ট্র আমাদের সমাজ ব্যবস্থা উন্নত হবে। যেখানে থাকবে না কোনো ভেদাভেদ মারামারি হানাহানি কাটাকাটি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। তৈরি হবে শান্তি প্রিয় মানুষ, দেশের সর্বশ্রেণীর মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে, একে অপরের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। যখনই এমন আশা প্রত্যাশা নিয়ে বাবা-মা স্বপ্ন দেখতে থাকলো, তখন তাদের কিছু সন্তানেরা বিশ্ববিদ্যালয় নামক স্থানে বসে মদ গাঁজা সিগারেট খাওয়া এমনকি নারী ধর্ষণ মানুষ হত্যা গুম খুনের কার্যক্রমে লিপ্ত হলো।
আরে বিশ্ববিদ্যালয় না তৈরি করা হয়েছে সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রদানের জন্য? যেখান থেকে শিক্ষার্থীরা মানুষের মত মানুষ তৈরি হয়ে দেশে জাতির কল্যাণে ভূমিকা রাখার কথা? আজকে তারা কি শিক্ষা গ্রহণ করছেন? তাদের কি ক্ষমতার জোর দেখানোর জন্য পাঠানো হয়েছে সেখানে? তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়টা দেয়া হয়েছে কুশিক্ষা গ্রহণ করার জন্য? তাদের কি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে আবরার তোফাজ্জলের মত মানুষদেরকে মেরে প্রাণনাশ করার জন্য? আজকে না তাদের জাগ্রত বিবেক দিয়ে সর্বশ্রেণীর মানুষদেরকে সুপথ দেখানোর কথা। তারানা সে শ্রেণীর পিতা-মাতাদেরকে উদ্বুদ্ধ করবে, নিজের সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে দেশ ও জাতির কল্যাণে ভূমিকা রাখার জন্য। আর যাদেরকে লেখাপড়া শিখে উন্নত রাষ্ট্রগুলোর সাথে জ্ঞান চর্চা করে তাল মিলিয়ে চলার কথা, তারা আজকে দেশের সর্বোচ্চ স্থানগুলোতে অবস্থান করে মানুষ হত্যা লিপ্ত থাকে! জোর করে মা বোনদের ইজ্জত কাড়ে এমনটা মিডিয়াতে দেখা যায়। তাহলে কি উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে আজ আমাদের এই জাতির অমানুষর হয়ে যাবে? উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে যদি এই জাতীয় অমানুষে পরিণত হয় তাহলে সেই উচ্চ শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলোর কি দরকার।
আজকে তো বিশ্ববিদ্যালয় গুলো কলঙ্কিত হয়ে গেছে এই সমস্ত শিক্ষার্থীদের জন্য। কিভাবে তারা প্রশ্রয় পায় সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বসে এমন হত্যা যোগ্য কাছে লিপ্ত হওয়ার। যেখানে জাতি আশা করেন নিম্ন শিক্ষার বা নিম্ন জ্ঞান সম্পন্ন মানুষেরা ভুল করলে ওই সমস্ত মানুষেরা তাদের ধৈর্য শক্তি দিয়ে আলোর পথ দেখাবে। আজ দেখা যায় অশিক্ষিত নিম্ন শিক্ষিত জ্ঞানহীন ব্যক্তিরাই তাদেরকে মূর্খ বলে গালাগালি করছে। আজকে দেখা যায় তাদের কার্যক্রমে অবহেলিত অরক্ষিত মানুষগুলোই আশা ভরসা হারিয়ে ফেলছে। আজকে দুর্বল যারা তারা ভরসা করে ওই সমস্ত সবল মানুষের উপর যারা একদিন তাদের দুর্বল স্থানকে জয় করে আলোর পথ দেখাবে। কিন্তু দুর্বলরা তো আরো হতাশায় পরিণত হচ্ছে তাদের কার্যকলাপ দেখে। এমনটা কি চেয়েছিল পিতা মাতারা? এই আশা সামনে রেখেই কি পিতা মাতারা তার সন্তানদের উচ্চ শিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছিল।
মিডিয়ার বিভিন্ন ভিডিও আর তথ্য মোতাবেক জানতে পারা যায় তোফাজ্জল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ছিলেন। মাকে হারিয়েছেন অনেক আগে, পিতা কে হারিয়েছেন ক্যান্সারের কারণে, শেষ ভরসা বড় ভাইটাকেও হারিয়েছেন এক বছর আগে। হারিয়েছেন প্রাণপ্রিয় ভালোবাসার মানুষটাকে। তার হৃদয় কতটা রক্তক্ষরণ কেউ বুঝতে যায়নি। কেউ খোঁজ নেই নি মিনিটে মিনিটে তার হৃদয়ের রক্তক্ষরণ, হয়তো কিছুটা স্বস্তি পাবার আশায় ভালো থাকার আশায় আবারো পা রেখেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে। বিভিন্ন কারণে আজ মানসিক ভাবের বিপর্যয়ের সম্মুখীন। তাইতো সে স্বস্তি খুঁজতে গিয়েছিলেন সেখানে। আর সেই মানুষটাকে খাবার দেওয়ার অভিনয় করে হত্যা করা হলো। কিন্তু ওই সমস্ত মূর্খ জানোয়ারের বাচ্চারা বুঝলো না একজন চোর কখনো চুরি করে সেই স্থানে থাকে? চোর তো সুযোগ পেয়ে চুরি করে এলাকা ছেড়ে উধাও হয়ে যাওয়ার কথা। সে কখনো চুরি করে তাদের মধ্যে এসে বসে থাকবে। একটু সামান্য বিবেক তো একটা অক্ষরহীন মানুষের রয়েছে। আর তারা দেশের সর্বোচ্চ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা লাভ করে বুঝলো না। মাত্র ৩৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ চেয়ে, না পাওয়ায় হত্যা করল এমন একটা অসহায় মানুষকে? তারা কি আদৌ শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থান করেছে? নাকি বাবার টাকা রয়েছে সে টাকার জোর দেখানো আর অপকর্ম করার প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ে জায়গা দখল করে থাকে। যারা বিশ্ববিদ্যালয় লেখাপড়া করতে এসে অহংকার ক্ষমতার বড়াই মেধাবী ভালো নারী পুরুষ বা শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরণ যুক্ত তাদেরকে যত দ্রুত সম্ভব গলার জুতার মালা পরিয়ে বিদায় করে দেয়া হোক। কারণ তাদের দ্বারা একটা জাতির উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ লক্ষ্য করা যায় না বরঞ্চ ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকে ঠেলে নিয়ে যাবে এভাবেই একের পর এক অপকর্ম দ্বারা। এখনো সময় আছে আমাদের সবার বিবেককে জাগ্রত করতে হবে, জেগে উঠতে হবে স-সভ্যতার মনোভাব। জয় হোক মানবতার,জয় হোক সভ্যতার, জয় হোক সুশৃংখল মানবজাতির। জাগ্রত হোক বিবেক, সচেতন ও সজাগ হোক দৃষ্টিভঙ্গি। আল্লাহ হাফেজ।
বিষয় | শিক্ষা |
---|---|
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Infinix Hot 11s |
Photo editing app | picsart app |
লোকেশন | গাংনী-মেহেরপুর |
ব্লগার | @sumon09 |
দেশ | বাংলাদেশ |
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
দারুন একটা বিষয় নিয়ে পোস্ট করেছেন। আমিও কয়দিন ধরে ভাবছিলাম এই বিষয়ে পোস্ট শেয়ার করব। আসলে দিন দিন কিছু কিছু মানুষ মানুষজন যেন লেখাপড়া শিখে কুত্তার চেয়ে জঘন্য হয়ে যাচ্ছে। যাদের নিয়ে দেশ জাতি আশা করে তাদের আচরণ যদি এমন হয়, তাহলে যাদের নিম্নশিক্ষা তাদের আচরণ কোন পর্যায়ে যাবে। আশা করি তোফাজ্জলের হত্যার সঠিক বিচার হবে।
মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ