গাংনী থেকে মেহেরপুর আড়তে মাছ বিক্রয় করতে যাওয়ার অনুভূতি - দ্বিতীয় পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগlast year
আসসালামু আলাইকুম

IMG_20230608_140613_553.jpg



হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি মেহেরপুর আড়তে মাছ বিক্রয়ের দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে। গাংনী বাজার থেকে মেহেরপুর যাওয়ার মাঝ পথে এই সুন্দর মুহূর্তটা আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে এসেছি এই পোস্টটিতে। আশা করি আপনারা খুব মনোযোগ সহকারে তা পড়বেন।


'আমার বাংলা ব্লগ'
কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট



ফটোগ্রাফি সমূহ:



আজ থেকে পাঁচ মাস আগে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। তবে ২৭ তারিখ আসলে ৫ মাস পূর্ণ হবে। আর তার আগেই মেহেরপুরে এসেছিলাম যেহেতু সাতক্ষীরা শহরে চারুকলা বিভাগে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম। মেহেরপুরে বন্ধুদের ম্যাচে একরাত থেকে তাদের সাথে গিয়েছিলাম এরপরে তাদের সাথে ফিরে মেহেরপুরে এক রাত থেকে তারপর বাড়িতে। আর এটাই ছিল মেহেরপুরে শেষ আসা। অনেকদিন পর মাছ বিক্রয় করার জন্য মেহেরপুর আড়তে দিকে অগ্রসর হলাম। তবে চলতি পথে আগের চেয়ে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করছি। যেহেতু দীর্ঘ ৭ বছর মেহেরপুর গভমেন্ট কলেজে লেখাপড়া শেষ করে এদিকে তেমন একটা আর আসা হয় না তবে এই সাত বছরের যেমন পরিবর্তন দেখেছিলাম তার চেয়ে বড় পরিবর্তন দেখছি মাত্র এই চার মাস পাঁচ মাসের ব্যবধানে। এখন পার্থক্যটা কি সেটা আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে চাই প্রত্যেক ফটোগ্রাফির বর্ণনার সাথে। আপনারা প্রথমে ফটোগ্রাফিতে লক্ষ্য করছেন রাস্তার দুই পাশে রাস্তা আরও বৃদ্ধি করার জন্য এরিয়া করে নেওয়া হয়েছে। হয়তো এ থেকে বুঝতে পারছেন রাস্তার দুই পাশ দিয়ে গাছ ছিল। যে সমস্ত কাজগুলো আমি মেহেরপুর গভমেন্ট কলেজের যার মুহূর্তেই দেখতে পারতাম। আর গাছগুলো রাস্তার সৌন্দর্যকে আরো বৃদ্ধি করে রাখত বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গাছের ফল ও ফুল লক্ষ্য করতাম। মনে হতো যেন সাজানো পরিপাটি করা রাস্তার সৌন্দর্য। তবে রাস্তা আরো প্রসার করার জন্য রাস্তার পাশে সমস্ত গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে আর রাস্তার কাজ চলছে দুপাশ দিয়ে। তাই রাস্তার পাশ দিয়ে বেশ যথেষ্ট ফাঁকা অনুভব করছি। এদিকে আমি এক মাছের ড্রামের উপর বসে রয়েছি। স্বচক্ষে সমস্ত রাস্তাগুলো দেখতে দেখতে যাচ্ছি আর সুযোগে সুযোগে ফটোগ্রাফি ভিডিও ধারণ করার চেষ্টা করছি। মেহেরপুর যেতে এই রাস্তাটির নাম গাড়াডোব-কাচারি পাড়া গ্রাম। এখানকার সৌন্দর্যটা এতটাই ছিল যে আজও চোখে ভাসে। একসময় এই জায়গাটার দৃশ্য ক্যামেরা বন্দি করেছিলাম কিন্তু সেই ফটোগুলো এই মুহূর্তে আমার কাছে নেই। আর এভাবেই দেখতে দেখতে চলে আসলাম আলমপুরের পাশে। যে জায়গাটা সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য আজকের পোস্ট এর মধ্যে।

IMG_20230806_081811_1.jpg

IMG_20230806_081812_2.jpg

IMG_20230806_081815_3.jpg

IMG_20230806_081825_3.jpg

IMG_20230806_081830_9.jpg

IMG_20230806_081828_3.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
Location



আলমপুরের এই ব্রিজটা আমার অতি প্রিয়। আমার জানাশোনা আশেপাশে যদি নদী থেকে থাকে এই কাজলা নদী টাই গাংনী, মেহেরপুরের মধ্যে প্রধান নদী। তবে যাই হোক আমাদের এলাকায় তেমন নদী নেই বললেই চলে, যে নদীতে মানুষের দুঃখ বয়ে আনে অথবা সুখ বয়ে আনে তেমন পর্যায়ের নদী নেই এটাই রয়েছে যা আমাদের বাসা থেকে কমসেকম ১৫/২০ কিলো দূরে। এ কাজল নদীটি মেহেরপুর যাওয়ার হাই রোডের এপাশ থেকে ওপাশ করচ করেছে। তাই তার উপরে গড়ে উঠেছে সুন্দর একটি ব্রিজ। আর ব্রিজে উঠতেই পথে খুব সুন্দর করে মানুষ তৈরি করেছে কফি হাউস, ফুলের বাগান আর বসে থাকার জন্য সুন্দর জায়গা। যে কোন মুহূর্তে এই জায়গায় বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষজন আসে এবং সময় অতিবাহিত করে বিভিন্নভাবে। হয়তো গাড়ির উপরে অবস্থান করছিলাম বলে ভালো ফটোগ্রাফি তুলে ধরতে পারলাম না। তবে যথেষ্ট ভিডিওর মধ্যে দেখানোর চেষ্টা করেছি।

IMG_20230806_081845_0.jpg

IMG_20230806_081844_2.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স



এরপর আমরা ভালই ভালই এই আলমপুরের সুন্দর ব্রিজটা ক্রস করলাম। ব্রিজটা ক্রস করার মুহূর্তে আমার স্মরণে আসলো এখানে আমার বন্ধু মিন্টুর বাসা রয়েছে। সে এখন ঢাকা গার্মেন্টসে ভালো একটি পোস্টে চাকরি করে ওর চেহারাটা অনেক সুন্দর নায়ক নায়ক লাগবে দেখতে। তাই মেহেরপুর গভমেন্ট এ পড়া মুহূর্তে দেখতাম বেশ মেয়েরা তার পিছু লাগতো। একদিন কলেজে যাওয়ার মুহূর্তে হঠাৎ করে লক্ষ্য করেছিলাম এখানে যেই পুরাতন ব্রিজটা ছিল ব্রিজটা ভেঙে গেছে তার আগের দিন কলেজে যাওয়ার মুহূর্তে লোকাল বাসে চলে গেলাম কোন সমস্যা ছিল না কিন্তু পরে যাওয়ার মুহূর্তে খেয়াল করেছিলাম ব্রিজটার উপরে লোহার স্প্যান বসানো হয়েছে। আর এরপর থেকে ই আস্তে আস্তে নতুন এই ব্রিজের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল তা আবার দেখতে দেখতে আজ ছয় বছর পার হয়ে গেছে। অনেকদিন পরে সবকিছুই যেন অচেনা আর নতুন মনে হচ্ছে আমার।

IMG_20230806_081848_2.jpg

IMG_20230806_081902_8.jpg

IMG_20230806_081900_9.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স



যত মেহেরপুরের দিকে অগ্রসর হতে থাকলাম ততই যেন অচেনা মনে হচ্ছিল কারণ রাস্তার পাশের গাছগুলো সম্পূর্ণ কেটে ফেলা হয়েছে আর রাস্তার কার্যক্রম চলছে। আলমপুরের পরে পার হলাম মদনাডাঙ্গা গ্রাম। আর এভাবে চলতে থাকলাম সামনের দিকে দেখতে থাকলাম আশেপাশের ফসলের মাঠগুলো রাস্তার চারিপাশ যেন ঘন সবুজে ঘেরা আমাদের এই মেহেরপুর অঞ্চল। হয়তো ফটোগ্রাফিগুলোতে আপনারা লক্ষ্য করছেন রাস্তার পাশে গাছ কাটার দৃশ্য রয়েছে। তবে আশা করব খুব শীঘ্রই রাস্তা অনেক সুন্দর হয়ে যাবে পুনরায় রাস্তার পাশে গাছ লাগানো হবে।

IMG_20230806_081957_3.jpg

IMG_20230806_081959_1.jpg

IMG_20230806_082000_4.jpg

IMG_20230806_081930_0.jpg

IMG_20230806_081932_6.jpg

IMG_20230806_081941_1.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
Location



আমাদের মেহেরপুরের স্বনামধন্য ব্যক্তি ফরহাদ হোসেন দুদুল যেহেতু বর্তমান মন্ত্রী পদে রয়েছেন, উনি মেহেরপুর শহরকে আরো উন্নতিশীল করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন। কুষ্টিয়া মজমপুর থেকে শুরু করে মেহেরপুর পর্যন্ত একটানা হাই রোড গুলো অনেক সুন্দর করার জন্য কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন। কিছুদিন আগে কুষ্টিয়া শহরে দেখে এসেছিলাম কুষ্টিয়া শহরের রাস্তাগুলো অনেক উন্নত করে ফেলেছে, ইনশাআল্লাহ খুব শীঘ্রই গাংনী মেহেরপুরের হাইরোড উন্নত করে ফেলবে। আর এভাবেই আমাদের এলাকা উন্নত পর্যায়ে রূপ ধারণ করবে ইনশাল্লাহ। আগলা-মন গাড়ির মাছের ড্রামের উপর বসে দেখতে দেখতে আর ভাবতে ভাবতে সময় পার হতে থাকলো। আর এভাবেই দেখতে থাকলাম রাস্তার চারিপাশে কার্যক্রম চলছে। এরপর আমরা দিঘির পাড়া অতিক্রম করলাম। আর এ মুহূর্তে আকাশের অবস্থা কিছুটা পরিবর্তন হলো, যেহেতু গাংনী বাজার থেকে বৃষ্টির পানিতে হালকা ভিজতে ভিজতে আসছিলাম কিন্তু এই মুহূর্তে যাই হোক বৃষ্টি পানি আর তখন পড়ছিল না। আমরা মাছ বিক্রয়ের আশায় চলতে থাকলাম মেহেরপুরের দিকে। বাকি অংশ আগামী পোস্টে আপনাদের মাঝে তুলে ধরব ততক্ষণ ভালো থাকবেন সবাই।

IMG_20230806_082111_5.jpg

IMG_20230806_082132_7.jpg

IMG_20230806_082104_6.jpg

IMG_20230806_082002_9.jpg

IMG_20230806_082023_2.jpg

IMG_20230806_082152_9.jpg

IMG_20230806_082155_4.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
Location


এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ।

R6TbvATub8MquGoqJZ4SE2UCpaUQzmNnWQxvJGwvYApXWE4KsVzC8vNNXWgtz7hrfoYPSrjupZgj7VtKhrH935ua1PLs4Vr7KiYnVAy3oD...tCNiac63XNuwJJZPbTjHfGPYJH4BJoHgX8HdohSPrSasKvArV8wiiFV7ntYqz66tLZiqG67BKrPAveZFRs3vaqucpJgsaE3qA6Rwasb2fYDx3U5dXGLwwRdyH8.png

Sort:  
 last year 

সময়ের সাথে সাথে সবকিছুরই পরিবর্তন হয়। যেহেতু অনেকদিন পর সেখানে গিয়েছেন তাই সব কিছুরই পরিবর্তন মনে হয়েছে। যাই হোক ভাইয়া আপনি আপনার পুকুরের মাছ বিক্রি করতে গিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। অনেক অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 last year 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আপু।

 last year (edited)

দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছুই পরিবর্তন হয়ে যায়।আপনার দীর্ঘদিনের ব্যবধানে মেহেরপুরেও তাই উন্নত হয়েছে।আপনারা যে উদ্দেশ্যে গিয়েছিলেন তা নিশ্চয়ই সফল হয়েছে মেহেরপুর আড়তে ।রাস্তার দুপাশের সবুজ রঙের দৃশ্য দেখলে মন ছুঁয়ে যায়।আপনার পোস্টটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

 last year 

হ্যাঁ আপু এই জায়গাটা সুন্দর রেস্টুরেন্ট রয়েছে

 last year 

মামা আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন গাংনী থেকে মেহেরপুরে মাছ বিক্রি করতে যাওয়ার দ্বিতীয় পর্ব। আপনার লেখা প্রথম পর্বের পোষ্টটি ও আমি পড়েছিলাম। আসলে আমাদের এই মেহেরপুর রোডে অনেক সুন্দর একটি ব্রিজ হয়েছে অল্প কিছুদিন আগে আমিও দেখেছি। পুকুরের মাছগুলো তো বেশ ভালোভাবে বিক্রয় করেছেন মামা দেখে বোঝা যাচ্ছে। মাছ বিক্রি করে বাড়ি ফেরার সময় আমার সাথে আপনার দেখা হয়েছিল গান নিতে দুইজন সেই সময় গাড়ির উপর থেকে কথা বলেছিলাম। ধন্যবাদ মামা এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 last year 

হ্যাঁ মামা ফিরতে পথে গাংনী বাজারে তোমার সাথে দেখা হয়েছিল আমার

 last year 

আপনি গাংনী থেকে মেহেরপুর আড়তে মাছ বিক্রয় করতে যাওয়ার পথে অনেক গুলো রাস্তার ও আলমপুরের ব্রিজের ফটোগ্রাফি করেছেন। সেই সাথে দারুন বর্ণনাও দিয়েছেন। নিজের জেলার রাস্তা যেহেতো সেই রাস্তায় অনেক স্মৃতি থাকবে,এটাই স্বাভাবিক। ধন্যবাদ।

 last year 

হ্যাঁ ভাই স্মৃতি ধরে রাখতে এই পোস্ট

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 58551.09
ETH 2617.32
USDT 1.00
SBD 2.44