আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি অন্যরকম এক ভালোলাগার অনুভূতি নিয়ে। যেখানে আমার প্রাণপ্রিয় ছাত্রছাত্রীরা স্কুল মাঠের পাশেই ভুট্টা ক্ষেতে পড়ে থাকা ভুট্টা কুড়িয়ে আনন্দ করে পুড়িয়ে খাওয়ার আয়োজন করেছিল তার অসাধারণ অনুভূতি নিয়ে। আশা করি বিস্তারিত আপনারা মনোযোগ সহকারে পড়বেন এবং আনন্দের কিছু অংশ ভাগাভাগি করে নিবেন। আর সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয় এই আনন্দ আয়োজনে নেতৃত্ব প্রদান করেছিল আপনার আমার প্রাণপ্রিয় ব্লগার
@mostafezur001 তাই চলুন আর দেরি না করে এখনি ভিডিও ও ফটোগ্রাফির পাতায় চোখ রাখি এবং বিস্তারিত পড়ে দেখি।
'আমার বাংলা ব্লগ' কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট |
আমাদের বিদ্যালয়ের পাশেই ভুট্টা খেত। আপনারা জানেন এখন ভুট্টা মাড়ায় এর সময়। যেহেতু এখন প্রতিটা মাঠে ভুট্টা পেকে গেছে। আর এই ভুট্টা পাকা পুড়িয়ে খেতে কার না ভালো লাগে। আর এই ভালো লাগাকে কেন্দ্র করে আমাদের বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রছাত্রী অনেক দিন ধরে ভুট্টা পোড়া খাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে আসছে। আরেকটি বিষয় আপনাদের মাঝে না বললেই নয় আমাদের বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পরে তিনটা ক্লাস নেওয়া লাগে যা কোন বিদ্যালয়ের এই প্রচলন রয়েছে বলে আমার মনে হয় না। যাই হোক এখন রমজান মাস কিন্তু এই মাসে তাপমাত্রা অধিক পরিমাণে পড়ছে যা রোজা মুখে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস নেয়া মোটেই সম্ভব নয়। তাই আমাদের বিদ্যালয়ের পাশে কিছু ভুট্টা খেতে লক্ষ্য করা গেল অনেক ভুট্টা কেটে নিয়ে গেছে এবং খড়িগুলো জমিতে শুকাতে দেয়া হয়েছে। যেহেতু আমরা অনেকেই জানি ভুট্টার খড়ি শুকাতে দেওয়া হলেও তার মধ্যে অনেক ভুট্টা পড়ে থাকে। কথা আছে না 'লেবার দিয়ে কাজ করলে কাজের তিন অবস্থা হয়'। আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা ভালো করেই জানে এই বিষয়টা এবং তারা গ্রামের ছেলে তাই এটা জানবে স্বাভাবিক। তাই তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রদের মধ্যে কয়েকজন ভুট্টার ভুইতে চলে গেল পরীক্ষা করার জন্য সেখানে সত্যি ভুট্টা পড়ে আছে কিনা। আর এই সমস্ত বিষয়গুলো কন্ট্রোল করতে থাকলো মুস্তাফিজ স্যার। আমার পায়ে প্রচন্ড ব্যথা তাই আমি ওদিকে বেশি একটা গুরুত্ব দিলাম না শুধু ফটোগ্রাফি আর ভিডিও করায় একটু ব্যস্ত থাকলাম। লক্ষ্য করলাম তারা অনেকগুলো ভুট্টা হাতে করে এনে মোস্তাফিজুর কে দেখালো এবং বলল স্যার এখনো অনেক পড়ে রয়েছে। আর ছাত্র-ছাত্রীরা উভয় মিলে বলতে থাকলো আমার একটা ক্লাস করতে পারব না এই গরমে অনুষ্ঠানের পরে কিসের ক্লাস প্রতিদিন এটা সম্ভব নয়। তাদের মুখপানে চেয়ে আমরা একটু সুযোগ দেয়ার চেষ্টা করলাম বললাম লাস্টের ক্লাসটা নেব দুইটা ক্লাস নেব না, তারা খুবই আনন্দ বোধ করল।
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
আমাদের বিদ্যালয়ের আঙিনা পরিষ্কার করে যে সমস্ত আবর্জনা গুলো হয়ে থাকে, তা আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয় তাই বিদ্যালয়ে ম্যাচ ছিল। যাই হোক মুস্তাফিজুর ম্যাচ এনে দিল আর বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের বিস্কুট এটা সেটা খাবারের প্যাকেট গুলো গুছিয়ে ফেলল ছাত্রছাত্রীরা। স্কুল মাঠের পাশে তামাক পোড়ানোর জন্য তেনা নাড় দেওয়া রয়েছে, কয়েকজন সেখান থেকে তেনা ম্যানেজ করল। আর এভাবে প্রাথমিক পর্যায়ে ভুট্টা পোড়ানোর কাজ শুরু হল। আর এই দেখে অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীরা উৎসাহ প্রদান করল বলল যে তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরা শুধু ভুট্টা পুরা খাবে আর আমরা বসে থাকবো? এই কথাটা সকল ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ল এবং জানাজানি হয়ে গেল পাশের একটি জমিতে ভুট্টার খড়ই শুকাতে দেয়া হয়েছে, তার মধ্যে অনেকটা পড়ে রয়েছে। প্রচন্ড রোদ গরম অতিক্রম করে অনেকের সেখানে গেল এবং কুড়িয়ে আনলো। আর এদিকে শুরু করে দিল এক জায়গায় গুছিয়ে ভুট্টা পোড়ানোর কার্যক্রম।
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
ছোট ছোট ছেলে মেয়ে কখন না জানি গায় আগুন ধরে যায় আবার না জানি ইয়ার্কি আড্ডার ছলে জামা কাপড় নষ্ট করে ফেলে তাই মুস্তাফিজুর তাদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য সকলের আনন্দটা যেন বজায় থাকে সেই দিকে লক্ষ্য রেখে একত্রে এই কাজে অংশগ্রহণ করল। আমার পক্ষে অবশ্য এটা সম্ভব নয় তাই আমি শুধু দূর থেকে একটু ইয়ার্কিতে মেতে উঠলাম আর ফটো ভিডিও করতে দেখলাম। প্রচন্ড রোদ গরম তাই স্কুল মাঠে দাঁড়িয়ে এ কাজ করা বড়ই কঠিন তারপরে ছাত্র-ছাত্রীরা খাওয়াই ঝুল তুলেছে। যাইহোক তারা সবকিছু একসাথে ম্যানেজ করে প্রত্যেকটা ভুট্টা এক একটা কাঠির মাথায় গেঁথে আগুনের উপরে ধরে পোড়াতে শুরু করল এমন পদ্ধতি আমার পূর্বে জানা ছিল না। এই প্রথম দেখলাম কিভাবে ভুট্টা পোড়ানো হয়। জায়হোক অতি আনন্দঘন মুহূর্ত চলতে থাকলো তখন।
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
এরপর লক্ষ্য করলাম আমার কিছু লজ্জাশীল ছাত্রছাত্রীরা লজ্জা পাচ্ছে এবং ফটোতে ও ভিডিওতে আসতে চাচ্ছে। যে মুহূর্তে যখন তাদের ক্যামেরা ধারণ করছিলাম কিছু কিছু দুষ্টু ছেলেরাও যেন ফাজলামিতে মেতে উঠতে লাগলো। হয়তো তুই তেমন কিছু মনে করলাম না যেহেতু একটা আনন্দঘন মুহূর্ত ছোট বাচ্চারা এটা নিয়ে আমাদের ভালোলাগা। তবে এই জীবনে কখনো এভাবে ভুট্টা পোড়া নিয়ে কখনো কোথাও আনন্দ করতে দেখিনি বা অংশগ্রহণ করিনি। যায়হোক জীবনে প্রথম এত সুন্দর একটা ভুট্টা খাওয়ার অনুভূতিতে অংশগ্রহণ করে আমার খুবই ভালো লাগছিল, ফিরে পেয়েছিলাম ছোটবেলার অন্যান্য স্মৃতিগুলো। হয়তো আমার জীবনে ছোটবেলায় এই স্মৃতি না থাকলেও স্মরণ করতে পেরেছি ভুলে যাওয়া স্মৃতি গুলো। দোয়া করি আমার প্রত্যেকটা ছাত্রছাত্রী যেন আনন্দঘন মুহূর্তের মধ্য দিয়ে লেখাপড়া শিখে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। তাদের মুখে অনাবিল হাসি লেগে থাক, কোন বিপথগামী যেন না হয় শিক্ষক হিসেবে সর্বদা তাদের জন্য দোয়া রইল।
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
আশা করি,আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনি অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে বুঝতে ও শিখতে পেরেছেন, সেই সাথে নতুন জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছেন। পোস্টটি উপস্থাপনা কেমন ছিল এবং এ বিষয়ে আপনার অনুভূতি কেমন, অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আমাকে জানাতে ভুলবেন না। আপনার জন্য আমার পক্ষ থেকে শুভকামনা রইলো। |
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
💌আমার পরিচয়💌
আমি মোঃ নাজিদুল ইসলাম (সুমন)। বাংলা মাস্টার্স ফার্স্ট ক্লাস মেহেরপুর গভমেন্ট কলেজ। আমার বাসা গাংনী-মেহেরপুর। মড়কা বাজার, গাংনী,মেহেরপুর এ গ্রীনরেইন ল্যাবরেটরি স্কুল নামক প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সহকারি শিক্ষক । ইলেকট্রনিক্সের যন্ত্রপাতি মেরামত ও সৌর প্যানেল নিয়ে রিসার্চ করতে পছন্দ করি। প্রাকৃতিক দৃশ্য ফটোগ্রাফি করা আমার সবচেয়ে বড় ভালোলাগা। দীর্ঘদিনের আমি পাঙ্গাস মাছ চাষী এবং বিরহের কবিতা লেখতে খুবই ভালোবাসি। |
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |