সন্ধ্যা রাতে ঝাল-মুড়ির সন্ধানে দূরের এক বাজারে
আজ - রবিবার
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। পূর্ব দিনের মতো আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি নতুন কিছু উপস্থাপন করার জন্য। আশা করি এই জাতীয় পোস্ট খুব কম সংখ্যক আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছে। তবে আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে নতুন কিছু তথ্য খুঁজে পাবেন এবং আশা করি ভালো লাগবে। তাই আর দেরি না করে চলুন এখনই বিস্তারিত শুরু করা যাক।
'আমার বাংলা ব্লগ' কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট |
---|
রাত্রিকালীন অচেনা বাজার ফটোগ্রাফি
অনেকদিন পর গতকাল হাঁট বোয়ালিয়া বাজারে উপস্থিত হয়েছিলাম সন্ধ্যা সাতটার দিকে। ২০২৩ সালের অগ্রিম ক্যালেন্ডার বিতরণের জন্য গিয়েছিলাম বাসা থেকে ১০-১২ কিলো দূরে তিন গ্রামে। ক্যালেন্ডারটি অবশ্য আমাদের স্কুলের। স্কুলের পরিচিত লাভের জন্য এবং ছাত্র-ছাত্রী কালেকশনের জন্য পূর্ব পদক্ষেপ এটা। যাইহোক ৩ গ্রামে ক্যালেন্ডার বিতরণে শরীরটা হয়েছিল খুবই ক্লান্তিকর তাই সেই গ্রামগুলো অতিক্রম করে আরো পাঁচ কিলো দূরে এসে পরিচিত হাট বোয়ালিয়া বাজারে উপস্থিত হয়েছিলাম ঝাল মুড়ি খাওয়ার উদ্দেশ্যে। অনেকদিন আগে মাছ বিক্রি করার উদ্দেশ্যে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে এই স্থানের ফটোগ্রাফি করেছিলাম নরমাল মোবাইল সেট থেকে। তবে সেই সমস্ত ফটোগুলো আমার সংরক্ষণে আর নেই সেই চিন্তা মাথায় রেখেই চেষ্টা করলাম কিছু ফটোগ্রাফি করে আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। এই বাজারের মেন পয়েন্ট থেকেই কিছু ফটোগ্রাফি করেছি।
যেহেতু মাগরিবের আজান পার হয়ে গেছে তাই আর সামনে তেমন ঝালমুড়িওয়ালা ভাইদের দেখলাম না। তাই ঝালমুড়ি না পাওয়ায় বড়া খাওয়ার উদ্দেশ্যে নিকটে একটা গলির মধ্যে ঢুকে পড়লাম। আমি কখনো এই গোলির মধ্যে প্রবেশ করি নাই, এই প্রথম। গলির মধ্যে প্রবেশ করা মাত্রই লক্ষ্য করলাম ব্যস্তময় একটি বাজার এখানে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ তাদের নিজ নিজ কাজকর্মে ব্যস্ত রয়েছে। আমার সাথে ছিল আমারই বন্ধু মারুফ 'আমার বাংলা ব্লগ' কমিউনিটির একজন ভেরিফাইড ইউজার। আমরা গলির মধ্যে কিছুটা পথ চলতে থাকলাম।
কিছুটা পথ সামনে এগিয়ে লক্ষ্য করলাম সুন্দর একটি বসার জায়গা। টাইলস দিয়ে রক তৈরি করেছে। সেখানে উপস্থিত হয়ে উপর পানে লক্ষ্য করে দেখলাম জায়গাটা একটি তেঁতুল গাছকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে, যেখানে মানুষজন এসে বসে কিছুটা সময়ের রেস্ট নেয়। তার কিছুটা পাশে একটি ভাই বড়া ভাঁজছিল।
প্রথমে বড়া ভাজার কাছ থেকে বেগুনি নিয়ে খেলাম কিন্তু বেগুনি তেমন ভালো পর্যায়ের হয় নাই। এরপর এক পোয়া বড়া নিলাম। আমাদের মড়কা বাজারের বড়া ভাজাদের মত বড়া নয় এখানে। আমি যখন বড় বানানোর ফটোগ্রাফি করে তেঁতুল গাছের নিচে বসার জন্য পিছন ঘুরে আসছিলাম একজন বয়স্ক মানুষ আমার পিছু পিছু ভাই ভাই বলে ডাকতে ডাকতে আসলো। আমি পিছন ফিরে তার পানে তাকালাম। উনি আমাকে ভীতু সুরে বলছে ভাই আমাদের বড় ভাজার ফটো তুলছেন কেন? উনি আমাকে ভেবেছিলেন আমি কোন সাংবাদিক। হয়তো উনাদের বড়ার মধ্যে কোন প্রকার ভেজাল আছে তাই আমি এটা ফটোগ্রাফি করে কোন ঝামেলায় ফেলতে পারি এমনই মনোভাব ছিল তার। আমি তাকে বললাম আপনার ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই আমরা সাংবাদিক নই। দীর্ঘদিন এই পথে চলাফেরা করেছি অনেক আগে কিন্তু কখনো এভাবে বড়া খাওয়ার উদ্দেশ্যে এই বাজারে থামিনাই। আজকে যখন থেমেছি সুন্দর একটি জায়গা, এখানে ফটোগ্রাফি না করলে মনে শান্তি পাব না। তাই বাজারে কয়েকটি ফটোগ্রাফি করছিলাম স্মৃতি করে রাখার জন্য। উনি আমার কথা স্বস্তি পেলেন এবং নিরবে চলে গেলেন। তবে কি করার দুজনে একত্রে খাওয়া-দাওয়া করে বাজারে পুনরায় ঝালমুড়ির সন্ধান করলাম কিন্তু না পেয়ে একটি ইলেকট্রনিক্সের দোকান থেকে বিদেশির টর্চলাইটের সুইচ অফ অন করা চামড়ার কভার ক্রয় করলাম। দীর্ঘদিন আমার বিদেশী লাইভটির সুইচ অফ অন করা চামড়ার কভারটি নষ্ট হয়ে গেছে। লাইট ঠিক করা হয় নাই তাই পড়েছিল। হঠাৎ বাজারে থাকা অবস্থায় স্মরণে এলো এই বিষয়টি। যেহেতু আমি গাংনী বাজারে অনেক খোঁজ করেছি কভারটি খুঁজে পাই নাই। তাই ভাবলাম এত দূরে যখন এসেছি খোঁজ করে দেখি। যাইহোক খুঁজে পেলাম। এরপরে সামনে আরেকটি ছোট বাজারের উদ্দেশ্যে মোটরসাইকেল যোগে আগাতে থাকলাম, যেহেতু আমাদের উদ্দেশ্য ছিল ঝালমুড়ি খেতেই হবে। তবে এবার গন্তব্যস্থলের নাম হেমায়েতপুর বাজার।
হেমায়েতপুর বাজারে এসেই খুঁজে পেলাম একজন ঝালমুড়ি বিক্রেতার। উনি রেডি হচ্ছিলেন বাড়িতে চলে যাওয়ার জন্য। ওনার কাছে অনেক ঝালমুড়ি ছিল তখন, তাকে বিস্তারিত বললাম। যেন সুন্দর করে ঝাল মুড়ি মাখিয়ে দেয় আমাদের। কারণ বোয়ালি বাজারে অনেক খোঁজাখুঁজির পরে খুঁজে পায় নাই। প্রথমে কুড়ি টাকার নিলাম। তার ঝাল মুড়ি অসাধারণ ছিল। ঝাল মুড়ি খেয়ে মনের তৃপ্তি মিটলো না তাই পুনরায় তাকে আরো কুড়ি টাকার দিতে বললাম।
ঠিক দ্বিতীয়বারের মুহূর্তে চাচার মুখে বেশ দারুন একটি হাসি দেখতে পারলাম। আমরা ঝাল মুড়ির খাওয়ার পাশাপাশি আরও ৩ জন ঝালমুড়ি ক্রয় করল। এতে ঝাল মুড়ি বানানো চাচা খুবই আনন্দ বোধ করছিল। হাসি মাখা সুন্দর মুখ দেখে বেশ ভালো লাগলো আমার। আমরা যখন ঝাল মুড়ি খাচ্ছিলাম তখন কয়েকটি কথায় কথায় আমি একটি সুন্দর বাক্য উচ্চারণ করে ফেলেছিলাম যে কথাটা আমার কানে এখনও বাজছে 'মায়ের হাতের খাবারে মন ভরে, পেটও ভরে। বাইরে যা খায় না কেন মনো ভরে না পেটো ভরে না' লোকটি সাথে সাথে বলে উঠলো ঠিক! তুমি ঠিক বলেছ বাবা। যাইহোক এর পরের তার বিল পরিশোধ করে বাড়িতে চলে এলাম।
বাড়িতে আসা মাত্র আর না থেমে সাথে সাথে লাইট টা ঠিক করার জন্য বসে পড়লাম। হয়তো আমি এই বিষয়ে আলাদা একটি পোস্ট তৈরি করে আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে পারতাম। তবে বড়ই ক্লান্ত ছিলাম যার জন্য আর আলাদা করে ফটোগ্রাফি করতে মন চায় নাই। অবশ্য লাইটটা নষ্ট করেছিল আমার ভাইয়ের ছোট্ট বাচ্চাটা। সে কাভারটা দাঁতে লাগিয়ে জোরে টান দিয়ে ছিড়ে এবং কেটে ফেলছিল। অনেকদিন পরে লাইটা টা ঠিক করতে পেরে আমারও খুব বেশি ভালো লাগছিল। তবে যাই হোক ক্যালেন্ডার বিতরণ করতেছে সুন্দর একটি স্মৃতি রয়ে গেল আমার। বাড়ি থেকে ক্যালেন্ডার বিতরণ করতে গিয়েছিলাম ১০ কিলো উত্তরে। ক্যালেন্ডার বিতরণ শেষ করে ঝালমুড়ি খেয়ে এলাম তা ছাড়া দশ কিলো দক্ষিনে। আর একই সাথে দীর্ঘদিনের পড়ে থাকা লাইভটা পুনরায় ঠিক করতে পারলাম কভারটি হাত বোয়ালি বাজারে পেয়ে। হয়তো বেশি ব্যস্ত ছিলাম তারপরেও দুইটা বিষয় আমাকে শান্তি দিয়েছে ব্যস্ততার মধ্যে। এক হচ্ছে হামাদপুর বাজারে ঝাল মুড়ি, আর অন্যটা হচ্ছে দীর্ঘদিন পড়ে থাকা বিদেশি লাইটটা আমি ঠিক করতে পারলাম খুব সহজেই।
|
---|
আমার পরিচিতি | কিছু বিশেষ তথ্য |
---|---|
আমার নাম | @sumon09🇧🇩🇧🇩 |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | মোবাইল |
ব্লগিং মোবাইল | Infinix hot 11s |
ক্যামেরা | camera-50mp |
আমার বাসা | মেহেরপুর |
আমার বয়স | ২৬ বছর |
আমার ইচ্ছে | লাইফটাইম স্টিমিট এর 'আমার বাংলা ব্লগ' এ ব্লগিং করা |
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্ট, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
বাহহ ভাই শেষ মেস ঝাল।মুরি খেয়েই ছেরেছেন আমার তো লোভ লাগছে আমাদের কবে খাওয়াচ্ছেন তাই বলুন।হাহাহা দারুন উপভোগ করেছেন
উদ্দেশ্য যখন মুড়ি খাওয়া তাই আর ব্যর্থ না হয়ে এক বাজার অতিক্রম করে আরেক বাজার এ এসে খুঁজে পেয়েছি।