আনন্দঘন একটি ফুটবল ম্যাচ উপভোগ || প্রিয় লাজুক খ্যাঁকের জন্য ১০%
আজ - মঙ্গলবার
Photography device: Infinix hot 11s
Kodailkati
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাই-বোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি একটি ফুটবল ম্যাচ দেখা নিয়ে। যে উদ্বোধনী ম্যাচে আমাদের গ্রাম বিজয়ী হয়েছিল ৩ এক গোলে। তার পাশাপাশি থাকবে যে স্থানে খেলা হয়েছিল মাঠের পাশে রয়েছে ঐতিহাসিক একটি বটগাছ। সামনে বিস্তারিত আলোচনা করব এই পোস্টের মধ্যে, আশা করি ততক্ষণ সাথে থাকবেন।
'আমার বাংলা ব্লগ' কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট |
---|
ফটোগ্রাফি
আমাদের গ্রাম থেকে ১০ কিলো দূরে কোদালকাঠি নামক গ্রামে ছাত্র কালেকশনের জন্য গিয়েছিলাম। তবে জীবনে প্রথম এই গ্রামটিতে এবার যেতে হয়েছে। দ্বিতীয় দিনের জন্য যেদিন যাব, ওই দিনটিতে শুনেছিলাম আমাদের গ্রামের ফুটবল প্লেয়াররা নাকি ওই গ্রামে ফুটবল খেলতে যাবে। বিষয়টা নিশ্চিত হয়ে আমিও আনন্দ বোধ করলাম এক কাজে দুই কাজ হয়ে যাবে আর কি। আর এই বিষয়ে প্রথমে আমাকে জানিয়ে ছিল আপনাদের প্রাণ প্রিয় বন্ধু আমার বাংলা ব্লগের একজন নিয়মিত ইউজার @mostafezur001 মুস্তাফিজুর। সৌভাগ্যক্রমে আমরা তিনজন একসাথে খেলা দেখতে গিয়েছিলাম। আমি মোস্তাফিজুর আর আপনাদের আরো একজন প্রিয় বন্ধু বাংলা ব্লগ ইউজার আমাদের ভাগ্নে @kibreay001 কিবরিয়া। তিনজনে বাইকযোগে সে গ্রামে গিয়েছিলাম। খেলার মাঠে প্রবেশ করে দেখলাম বৃষ্টির পানি জায়গায় জায়গায় বেধে রয়েছে। আবার আমরা পৌঁছানোর পূর্বে খেলা শুরু হয়ে গেছিল উভয়পক্ষ এক গোল এক গোল করে দিয়েছে। আমাদের গ্রামের বিপক্ষে ফুটবল খেলছিল 'দুল্লুবপুর' নামক গ্রাম।
খেলার প্রথম পর্যায়ে লক্ষ্য করেছিলাম আমাদের গ্রামের খেলোয়াররা খুব ভালো রকম খেলছে। মাঝে মধ্যেই গোল দেয়ার পর্যায় হচ্ছিল। আপনারা ভালো করেই জানেন ফুটবল খেলা হলে আশেপাশ থেকে প্রায় ১০-১২ গ্রামের মানুষ জুটে যায় খেলা দেখার জন্য। আর ফুটবল খেলা আমাদের এলাকায় খুবই জনপ্রিয় একটি খেলা যেখানে সর্বশ্রেণীর মানুষ উপস্থিত হয়ে থাকে। প্রথমেই আমি ঐতিহাসিক বট গাছটির নিচে দাঁড়িয়ে বটগাছের ফটোগ্রাফি করার চেষ্টা করলাম। শুনেছি এই বটগাছ ব্রিটিশ আমলের। এই গাছকে কেন্দ্র করে অনেক ঘটনা রয়েছে গ্রামবাসীর মুখে মুখে। যে ঘটনাগুলো আমাদের গ্রামের অনেক মানুষই জানে। গাছটি লক্ষ্য করে দেখলাম প্রায় এক থেকে দুই বিঘা জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। গাছটির গায়ে অনেক লম্বা লম্বা শিকড় মাটি ছুঁয়ে গেছে। আর এই গাছের নিচে রয়েছে ছোট ছোট দোকান। ঝাল মুড়ি বিক্রয়কারী ভাইয়েরা এখানে তাদের ছোট্ট দোকানটি নিয়ে হাজির হয়ে যায় খেলার দিনে। যাই হোক দীর্ঘদিন শুনে আসা ঐতিহাসিক বটগাছ এই প্রথম দেখতে পেরে আমারও বেশ ভালো লাগছিল।
তথ্য নিয়ে জানতে পারলাম গাছটি যদি আজকে বৃষ্টিতে ভেজা না থাকতো তাহলে গাছের নিচের ডালগুলোতে অনেক ছেলেরা উঠে খেলা উপভোগ করত। গাছটাতে ভালো পাতা দেখতে কিছুটা ভয়ানক মনে হলেও দিনের বেলায় তেমন কোন সমস্যা পড়তে হয় না। তবে পূর্বের দিনে নাকি এই গাছের নিচে আসার শ্রাদ্ধ হতো না কোন মানুষের দিন কিবা রাতের বেলায়। রাতের বেলায় অনেক মানুষ জিন ভূতের সম্মুখীন হয়েছে এই স্থানে। যাইহোক, সেদিকে কথা না বলে এটাই জানাতে চাই গাছের চারপাশে অসংখ্য মানুষ খেলা দেখার জন্য উপস্থিত ছিলেন। আমি এপাশ-ওপাশ থেকে খেলা দেখার পাশাপাশি ছবি তোলার চেষ্টা করছিলাম যেহেতু পড়ন্ত বেলায় রোদের ছটা প্রখর ছিল।
এই কোদালকাঠি নামক গ্রামের বলফিল্ডের পাশেই কিবরিয়ার ফুবুদের বাড়ি। যেহেতু কিবরিয়ার বাড়ি খুবই নিকটে একটি গ্রামে, সে আমাদের ভাগ্নে। কিবরিয়া দীর্ঘদিন আমাদের গ্রামে থেকে লেখাপড়া করছে। কিবরিয়ার গ্রামের নাম কামারখালী। কোদালকাঠি থেকে পাঁচ কিলো পথ। অবশ্য কামারখালী গ্রাম হয়েই এসেছি কোদালকাটি গ্রামেতে। তাই বুঝতেই পারছেন কামারখালী গ্রামের অনেক মানুষ এসেছে খেলা দেখতে পাশাপাশি তার ফুবুদের বাড়ির আশপাশে লোকের সাথে কিবরিয়ার রয়েছে অনেক মিল। যার জন্য কিবরিয়া আমাদের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ পায়নি পরিচিত মানুষ আর বন্ধুদের সাথে গল্প গুজবে লিপ্ত হয়ে পড়েছিল সেই মুহূর্ত তাই এই খেলা দেখার মুহূর্তে আমি আর মোস্তাফিজুর একসাথে চলাচল করছিলাম। কিবরিয়া তার মত সবার সাথে সাক্ষাৎ করে বেড়াচ্ছিল আর খেলা দেখছিল। আর এরই মাঝে আমি খেলা দেখার পাশাপাশি ফটোগ্রাফিতে ব্যস্ত ছিলাম।
মানুষজন ফুটবল খেলা উপভোগ করার জন্য বল মাঠের চারিপাশে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে। কেউ বা বসে রয়েছে আবার অনেকে রয়েছে ঘরের ছাদের উপরে। যে যার সুবিধামতো খেলা দেখার জন্য প্রস্তুত হয়ে উপভোগ করছে। এমন দৃশ্য দেখার মুহূর্তে আমাদের গ্রাম আরেকটি গোল দিয়ে দিল বিপক্ষ দলের। হাফ টাইম হওয়ার পূর্বেই আমাদের গ্রাম ২-১ গোলে এগিয়ে গেল। আমার যে মূল উদ্দেশ্য ছিল ছাত্র কালেকশনের জন্য কিছু বাড়িতে যাব অথবা ফিল্ডে কারো সাথে সাক্ষাৎ করব কিন্তু খেলা দেখার মধ্যে আমি হারিয়ে গেলাম। আর হয়ে উঠল না সেই কাজ। আপনারাই বিচার করুন, ফুটবল খেলা দেখলে মাথায় কি আর কাজ করে, খেলা ছেড়ে কোথাও যেতে মন চায়? আর এই মুহূর্তে আমাদের গ্রাম বিজয়ী হয়ে রয়েছে টানটান উত্তেজনা মুহূর্ত যার জন্য আমার আর ছাত্র কালেকশনের জন্য গ্রামের মধ্যে ঢোকা হলো না, বল ফিল্ডে রয়ে গেলাম।
হাফ টাইমের পর খেলা শুরু হতে না হতেই আমাদের গ্রাম পাঁচ মিনিটের মাথায় আরেকটি গোল করে তিন এক গোলে এগিয়ে গেল। ঠিক সেই মুহূর্তে লক্ষ্য করলাম ফিল্ডে থাকা অসংখ্য মানুষ ক্রমান্বয়ে আস্তে আস্তে ফিল ত্যাগ করে বাড়ির দিকে যেতে থাকলো যেহেতু তারা ফলাফল বুঝেই ফেলেছে জুগীরগোফা গ্রাম আজ বিজয়ী হবে। আমাদের গ্রাম দীর্ঘদিন থেকে ফুটবল খেলায় পারদর্শী যেহেতু আমাদের গ্রামে স্কুল মাঠ অনেক বড় তাই এখানে সকল প্রকার খেলাধুলা প্র্যাকটিস করা হয় ছোট বড় নির্বিশেষে। আর এভাবেই সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো খেলা শেষ হয়ে গেল, খেলার ফলাফল আমাদের গ্রাম তিন, বিপক্ষ দল এক অর্থাৎ আমাদের গ্রামের ফুটবল টিম বিজয়ী হলেন। আমরা তিনজন পুনরায় একত্রিত হয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। আর এরই মধ্য দিয়ে সুন্দর একটি আনন্দঘন ফুটবল ম্যাচ উপভোগ করলাম।
|
---|
আমার পরিচিতি | কিছু বিশেষ তথ্য |
---|---|
আমার নাম | @sumon09🇧🇩🇧🇩 |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | মোবাইল |
ব্লগিং মোবাইল | Infinix hot 11s |
ক্যামেরা | camera-50mp |
আমার বাসা | মেহেরপুর |
আমার বয়স | ২৬ বছর |
আমার ইচ্ছে | লাইফটাইম স্টিমিট এর 'আমার বাংলা ব্লগ' এ ব্লগিং করা |
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্ট, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
মামা সত্যি বলতে সেই ফুটবল খেলা আমি অনেক ভালোভাবে উপভোগ করেছিলাম। আসলে আপনি আর মুস্তাফিজুর মামা যেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলেন ওই জায়গায় দাঁড়িয়ে ফুটবল খেলা ভালো দেখা যাচ্ছিল না তাই আমি অন্য জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলা দেখতে ছিলাম। আসলে মামা সব থেকে ভালো লেগেছিল আমাদের গ্রাম যখন ৩ গোলে জিতে গিয়েছিল। ধন্যবাদ মামা এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
নিজের গ্রাম বিজয়ী হয়েছিল সেটা যদি পোস্ট না করে তাহলে কেমনে হয় মামা
আপনারা তিনজন মিলে সে গ্রামে গিয়ে খুব সুন্দর ফুটবল খেলা উপভোগ করেছেন। হ্যাঁ ভাইয়া যেহেতু বাহিরে বৃষ্টি তাই মাঠের জায়গায় জায়গায় বৃষ্টির পানি জমে রয়েছে। সে ঐতিহাসিক বটগাছটি দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে। আমার কাছে এমন বটগাছ বেশ ভালো লাগে। বট গাছের ছায়ার নিচেও বসে থাকতে ভাল্লাগে। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো খুব ভালো লাগছে ভাইয়া।
ইচ্ছিছিল গাছের সাথে ছবি উঠাবো কিন্তু জায়গায় জায়গায় পানি কাঁদার জন্য তা হয়ে ওঠেনি।
অনেক ভালো লাগলো আপনার ফুটবল খেলার ম্যাচটি দেখার অনুভূতি পড়তে পেরে। বিশেষ করে এক কাজে দুই কাজ হয়ে গেছে সেটা আসলে অনেক ভালো একটি বিষয়।আর এদিক থেকে যে গাছগুলোর কথা বলেছেন আপনি, শিকড় নিচে নেমে রয়েছে। এই রকম গাছ খুব কম দেখা যায়। তবে কিছু কিছু ভয়ঙ্কর গাছ দেখতে পাওয়া যায়,যদিও খুব কম,অনেক ভালো ছিল ধন্যবাদ।
হ্যাঁ ভাই এটা ব্রিটিশ আমাদের ঐতিহাসিক গাছ ছিল
সেটাই দেখতে পেলাম, ধন্যবাদ আপনাকে খুব সুন্দর ফিডব্যাক দেওয়ার জন্য।
আপনারা দিন ব্লগার একসাথে বাইকে করে খেলা দেখতে গিয়েছেন এটা শুনে ভালো লাগলো। একেবারে খেলার মাঝে হারিয়ে ছাত্র কালেকশনের কাজটাও করতে পারলেন না। এমনকি গ্রামের কারো বাড়িতেও গেলেন না। এই কথা শুনেই বুঝতে পেরেছি খেলাটা কতটা জমজমাট হয়েছে। গ্রামের এই ধরনের খেলা গুলো উপভোগ করতে ভীষণ ভালো লাগে।
আসলে এটা নিজের গ্রামের খেলা ছিল তো যার জন্য আর ইচ্ছে হয়নি ছাত্র কালেকশন করা
আপনি ফুটবল ম্যাচের মুহূর্তগুলো খুব সুন্দর ভাবে অতিবাহিত করেছেন। দেখে খুব ভালো লাগলো। আপনি তো দেখছি এক ঢিলে দুই পাখি মারলেন। যাহোক এত চমৎকার পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু সাকসেস হয় নাই
আসলে ওই দিনের ফুটবল খেলাটা দেখতে ভালই লেগেছিল। যদিও বৃষ্টির কারণে ফুটবল খেলা দেখতে যেতে একটু দেরী হয়ে গিয়েছিল তারপরও খেলা দেখে মজা পেয়েছিলাম। খেলা দেখে মজা পাওয়ার সব থেকে বড় একটা বিষয় ছিল আমাদের গ্রাম এই খেলাতে তিন গোলে জিতে গিয়েছিল। যাইহোক পরবর্তী সময়ে আবার খেলা দেখতে যেতে হবে রেডি থাকিয়েন।
দেখা যাক পরীক্ষার সামনে তো যেতে পারবো কিনা সঠিক বলতে পারছি না