![IMG_20240117_142318_620.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmbtMuACCaTQy6fNy1GQT4YPvGn6RrCpoYE5UfhmF5LmME/IMG_20240117_142318_620.jpg)
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি একটি ফিঙ্গি রাজা পাখির সুন্দর গল্প নিয়ে। গল্পটা খুব মনোযোগ সহকারে পড়ি এবং বিস্তারিত অনেক কিছু জানার চেষ্টা করি।
ছোটবেলা থেকেই গ্রামে বসবাস করে আসছি। আর গ্রামে যারা বসবাস করে তাদের তো বন্ধুর অভাব নেই। আমাদের সময় তো আর মোবাইল ইন্টারনেট ছিল না। তাই আমাদের খেলার মাধ্যম ছিল বন্ধুরা মিলে গ্রাম্য বিভিন্ন খেলায় অংশগ্রহণ। আমি একদিন আমরা সারা বছর ধরে যত খেলা করেছি সেগুলো মনে করতে করতে প্রায় ৯০ প্রকার খেলার কথা মনে করেছিলাম। হয়তো অবাক হবেন তবে কেউ যদি আমাকে বলে আমি এক নিমিষেই বলে বুঝিয়ে নাম গুলো শুনিয়ে দিতে পারব। ঠিক তার মধ্যে একটা বিষয় ছিল পাখির বাসা থেকে ডিম পেড়ে আনা। আমি অবশ্য কোনদিন এগুলো পছন্দ করতাম না। তবে সাথের বন্ধুরা যখন যেই কাজ করতো পাশেই থাকতে হতো। আমাদের পাড়ায় রয়েছে সুন্দর একটি বাগান। সেখানে বাঁশ গাছ মেহেগুনির বাগান, আমের বাগান, সেগুন গাছের বাগান ছিল। এখনো অবশ্য সেই সেগুন গাছ রয়েছে। আমাদের মধ্যে একজন বন্ধু হঠাৎ বলল এই সেগুন গাছের মাথায় ফিঙ্গি রাজার বাসা রয়েছে। আজকে বিকালে ফিঙ্গি রাজার বাসা থেকে ডিম পাড়তে হবে। ঠিক এই মুহূর্তে ওরা আরো অন্যান্য পাখির বাসা থেকে ডিম পাড়ছিল। যাইহোক সেই মুহূর্ত অতিবাহিত হয়ে গেল।
![IMG_20240117_142328_149.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWL5RodcqzEAZWnLRYV9aKMPMzHx77zieXmvaCS9nBFMo/IMG_20240117_142328_149.jpg)
বিকেল বেলা না আসতেই আমার খুব ইচ্ছে হয়েছিল ফিঙ্গি রাজার বাসা থেকে ডিম আমি নেব। যেহেতু ওরা এক এক বাসা থেকে ডিম পেড়ে আনছে আর নিজেরাই খেলা করছে। তাই আমার বন্ধুরা স্কুল থেকে বারোটার পর বাড়িতে ফিরে যখন বাগানের দিকে এখনো পৌঁছায়নি আমি অবশ্য ওই মুহূর্তে বাগানে এসে উপস্থিত হলাম। এরপর সেগুন গাছের দিকে তাকালাম দেখতে পারলাম সত্যি তো গাছের মাথায় ডালের মাঝখানে বাসা দেখা যাচ্ছে। তবে গাছটা এতই লম্বা আর সেই সময় আমি তো প্রাইমারির স্টুডেন্ট আমার কাছে আরও বেশি বড় মনে হচ্ছিল। তারপরে মাথার ভিতরে আমার ঘুরপাক করছিল এই গাছ থেকে ডিম গুলো আমি নেব। ছোটবেলার মন-মানসিকতা বন্ধুদের কারণেই হয়তো আমার এই ডিমের প্রতি আসক্ত সৃষ্টি হলো। তাই আমি চারিদিকে তাকিয়ে দেখলাম কোন খেলার সাথীরা বাগানের দিকে আসছে কিনা। ভর দুপুরে মানুষজন বাগানের দিকে খুব কমই যায়, গরমের সময়। আমি তখন আস্তে আস্তে গাছে ওঠা শুরু করে দিলাম। গাছটার কথা কি বলব কিছুটা পথ উঠে এরপর বেশ কয়েকটা ডাল রয়েছে। তারপর আবার ফাঁকা, কোন ডাল নেই। এরপর মাথায় উঠে সেখানে বেশ তিন চারটা ডাল রয়েছে। ঠিক এভাবেই গাছের উপরে উঠে গেলাম আনুমানিক দুইতলা ঘর যত উঁচা হয় তার চেয়ে বেশি উপরে পাখির বাসা। ছোট মানুষের কাছে কতটা ভয়ানক তাহলে বুঝতে পারছেন। তবে আমার গাছে ওঠার অভ্যাস রয়েছে সেই টানে টানে চলে গেছি।
![IMG_20240117_142434_1.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmayVoS6r7WdzRX8G2y6DGPa6iSjBbUn2FH7ja3Z1oEpPU/IMG_20240117_142434_1.jpg)
ফিঙ্গি রাজা পাখির বাসায় তাকিয়ে দেখলাম পাখি বসে ডিম তাওয়া দিচ্ছে। আমি তার গায়ের কাছে হাত দিতে যাচ্ছি কিন্তু সে কিছুতেই উঠছে না। মাঝে মাঝে ভয় করল হাতে ঠোঁক দিবে কিনা। আর হাতে যদি চোখ দেয় তাহলে তো আমি ভয় পেয়ে পড়ে যেতে পারি। এরপর আমি গাছটা বাম হাত দিয়ে বুকের সাথে চেপে ধরে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখলাম আমি কত উপরে। তখন আমার বেশ ভয় লাগছিল,আর গাছে উঠলে এমনিতে মাঝেমধ্যে পা কাপে। যেহেতু অনেক উপরের শূন্যস্থানে দাঁড়ালে এমনটা হতে পারে। তখন আমার ভয় এতটাই বেড়ে গেল, পাখি উড়ছে না ডিমের উপর বসে রয়েছে। এখন আমি কি করবো। নেমে আসবো! আবার এতদূর উঠেছি, ডিম না নিয়ে নেমে আসাটাও কেমন হয়। অবশেষে উপর পান তাকিয়ে দেখলাম পাখি উড়ে চলে গেছে। আমি ডিম দুইটা হাত দিয়ে নিয়ে বুক পকেটে রাখলাম। এরপর গাছ থেকে নেমে আসতে আসতে দুইটা ডিম ভেঙে গেল। এরপর বুঝতে পারলাম পুরাটাই আমার বোকামি হল, তাই আমি আর কখনো এমন কাজ করবো না সিদ্ধান্ত নিলাম।
![IMG_20240117_142636_8.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmNmFTePmgyq6yLqyNVncfX2XdygL2i7VVT4m1RzF4vBx3/IMG_20240117_142636_8.jpg)
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
![received_434859771523295.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmNWDB75FzSxTwtShAnr43iHiR2FP4VCa1LxXScRQcmyaG/received_434859771523295.gif)
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
![TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmQ3mfWTXpoSCNp2gtiVisKb3mP2PhBrCpfiKzGRAMPD1g/TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png)
আমার তো মনে হচ্ছে পাখির উচিত ছিল আপনাকে একটা ঠোকর দেওয়া। এভাবে পাখির কাছ থেকে ডিম নিয়ে আসা মোটেও ঠিক হয়নি। পাখি হয়তো ওই ডিম থেকে বাচ্চা ফোটাতো। কিন্তু আপনি তো সেই ডিম নিয়ে এসে নিচ পর্যন্ত নামতেও পারলেন না ভেঙে নষ্ট হয়ে গেল। আসলে আমরা অনেক সময় না জেনে পশুপাখিকে কষ্ট দেই এটা একেবারেই ঠিক না।
তখন কি কিছু বুঝতাম ছিলাম তো অনেক ছোট
আপনার পাখিরপাশা থেকে ডিম পাড়ার কাহিনীটা পড়ে ভালই লাগলো। আপনি একটা কথা ঠিক বলেছেন ভাইয়া ছোটবেলা মোবাইল এত ছিলনা youtube বা facebook twitter তখন আমাদের বন্ধুদের বন্ধনও ছিল অন্যরকম আর এখন মনে হয় মোবাইল সবার বন্ধু। তবে ভাই আপনার গাছে ওঠার কাহিনীটা পড়ে কিন্তু ভয় পেয়েছিলাম। যদি পড়ে যেতেন। আর একটা জিনিস খারাপ লেগেছে পাখিটা ডিমগুলোতে তা দিচ্ছিল বাচ্চা ফোটানোর জন্য আর আপনি সেখান থেকে দিনগুলো নিয়ে এসেছেন। তবে তখন আপনি ছোট ছিলেন হয়তো এতো কিছু বুঝতে পারেননি আমরা ছোটবেলা অনেকে না বুঝে অনেক কিছু করেছিলাম। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।ছোটবেলার কাহিনী নিয়ে একটা মজার গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ তখন অনলাইন তো ছিলই না ছিলনা মোবাইল ফোন
ঠিক তাই ভাইয়া।
ছোট্টবেলার দিনগুলো কতইটা সুন্দর ছিল। গ্রামের সমবয়সীদের সাথে এরকম দুষ্টামিতে আমি অনেক মেতে উঠেছি ।কিন্তু পাখির বাসা থেকে ডিম পেড়ে আনা যেগুলো আমার পছন্দ ছিল না । তাদের সাথে সবসময় এই বিষয়ে বিরোধিতা করতাম । সেই ডিম নিয়ে এসে ভেজে খেয়ে ফেলতো। যাইহোক, আপনার গল্পটি সত্যি ভালো লেগেছে কারণ অনেক সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন।
মধুর স্মৃতি সরণ হলেই মন চায় আপনাদের মাঝে শেয়ার করি
ছোটবেলায় না বুঝে অনেক ভুল কাজ আমরা করে ফেলি। আসলে আমাদের উচিত হয় না এই কাজ গুলা করার। ছোটবেলায় পাখির বাসা দেখলে মাথায় কাজ করতে না। ছোটবেলায় এই ধরনের অভ্যাস সবার ভেতরে কমবেশি ছিল। শেষ পর্যন্ত আপনি আপনার ভুল বুঝতে পারছেন এটাই অনেক।
হয়তো ভুল ছিল তবুও সে সমস্ত স্মৃতি মনে হলে খুব ভালো লাগে
এই কথাটা একদম ঠিক বলেছেন।
তবে এটি ঠিক ছোটকালে সবাই অনেক ধরনের খেলাধুলা করতো। এখন কার মতো মোবাইল ইন্টারনেট ওই সময় ছিল না। তবে জেনে অবাক হয়ে গেলাম আপনি 90 টি খেলার নাম এক নিমেষ বলতে পারবেন। তবে ফিঙ্গি-রাজা পাখির বাসা থেকে ডিম আনা খুব কষ্টকর। তারপরও আপনার বন্ধুরা সহ সাহস করেছেন। এবং এত কষ্ট করে ডিম গুলো পাখির বাসা থেকে নিচে নেমে আনতে ভেঙ্গে গেল। আসলে আপনাদের একটি ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে। তবে পাখির বাসা এবং ডিম নষ্ট করা এগুলো ভালো না। যাইহোক খুব সুন্দর করে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
আমরা বিভিন্ন খেলায় মেতে থাকতাম। হ্যাঁ আপু এগুলা মোটেও ভালো নয় তবে ছোটবেলায় তো এত কিছু মাথায় থাকে না
আসলে শৈশবে যে খেলার ছলে আমরা কতো ভুল ভাল অন্যায় কাজ করে থাকি তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়।আপনারও তেমনি একটি ভুল ফিঙ্গিরাজা পাখির ডিম নিতে গাছে ওঠা।আপনি ভয় পেয়ে পড়ে বড়ো ধরনের দূর্ঘটনার সমূখীন হতে পারতেন। আশাও পূরণ হলো না ডিম নেওয়ার নামতেই ভেঙ্গে গেলো।সেদিনের পর থেকে আর কখনো এ কাজ করবেন না সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যাঁ মানুষ ভুলের মধ্য দিয়ে কিন্তু শিক্ষা গ্রহণ করে।