গল্প: ছোটবেলায় একদিন রাজহাঁসের দৌড়ানি খেয়েছিলাম

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago
আসসালামু আলাইকুম



হাই বন্ধুরা!

আমার গল্পের রাজ্যে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগতম। পূর্বসপ্তার ন্যায় আজকে উপস্থিত হয়ে গেলাম সুন্দর একটি গল্প নিয়ে। আশা করি গল্পের টাইটেল পড়েই বুঝে গেছেন আজকের এই গল্পটা কত ইন্টারেস্টিং হতে চলেছে। মজার মজার ইন্টারেস্টিং গল্প শেয়ার করতে আমার ভালো লাগে। আশা করি আমার এই গল্প জানতে অবশ্যই প্রত্যেক সপ্তাহের রবিবারে আমার ব্লগ ফলো করবেন। তাই চলুন আর কথা না বাড়িয়ে, এখনই বিস্তারিত গল্প জানা শুরু করে দেয়।


রাজহাঁসের দৌড়ানি:

IMG_20231121_164630_514.jpg

তখন আমি বেশ ছোট। সম্ভবত প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। ঠিক এমনই একটা দিন স্কুল ছুটির শেষে রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। এই মুহূর্তে আমার সাথে খেলার বন্ধুরা বলেছিল বাড়িতে বই রেখে আয়, আমরা শিশু বাগানে গোল্লাছুট খেলা করব। কেন জানি আমি তাদের কথা মত বাড়িতে খাওয়া দাওয়া না করেই, দ্রুত উপস্থিত হলাম তাদের সাথে খেলতে। যাই হোক আমাদের পাড়ার নাম পশ্চিমপাড়া। আমরা অবশ্য পশ্চিমপাড়া আর পূর্ব উত্তরপাড়ায় দুই জায়গায় খেলেছি ছোট বেলায়। চলে গেলাম খেলার উদ্দেশ্যে পশ্চিম পাড়ায় আমার বন্ধু পলাশ দের বাড়ির পাশ দিয়ে একটা গলির মধ্য দিয়ে সোহেলদের বাড়ির দিকে। অবশ্য আমরা সবাই খেলতাম একসাথে। কিন্তু ভরদুপুরে সবাই তো আর পথে-ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকে না গরমের সময় যে যার মত বাগানে রুমে অবস্থান করছে। আমি শুধু একা গলির মাঝখান দিয়ে। সময়টা সম্ভবত শীতকাল পার হয়েছে সবে মাত্র গরম পড়া শুরু হয়েছে। হ্যাঁ এই মুহূর্তেই তো রাজহাঁসের বাচ্চা ফোটে। যাইহোক দেখলাম দুইটা রাজহাঁস তার বেশ কয়েকটা বাচ্চা সাথে করে গলির মধ্য দিয়ে রাস্তার দিকে আসছে,আর আমি রাস্তা দিয়ে পার হয়ে গলির মধ্য দিয়ে সোহেলের বাড়ির দিকে যাচ্ছি। এমন অবস্থায় মিলন ভাইয়ের মায়ের রাজহাঁস আমার সম্মুখে। বেশ খাবড়িয়ে গেলাম,জানি রাজহাঁস বাচ্চা ফুটলেই আশেপাশে মানুষ যেতে দেখলে ঠুকিয়ে দেয়। গলা নিজ করে আস্তে আস্তে আগিয়ে আসছে আমার দিকে। আমি ভেবে পেলাম না কি করবো এই মুহূর্তে।

IMG_20231121_164634_568.jpg

আশেপাশে কোন মানুষ নেই ভয়তে আমার জান শুকিয়ে গেল। আমি ছোট থেকে এমনটাই যতটা ভয় পাই সাথে সাথে তার চেয়ে বেশি সাহস জুগিয়ে যায় মনের মধ্যে। কথায় আছে না দেয়ালের পিঠ ঠেকলে মানুষ সামনের দিকে যায় ঠিক আমি সেইরকম। আরেকটা বিষয় জানা নো প্রয়োজন আমি ছোটবেলা থেকে প্রচন্ড দৌড়াতে পারি। পাড়ায় দৌড়াদৌড়িতে ফার্স্ট ছিলাম। আর গোল্লাছুট খেলায় আমাকে সব সময় রাজা বানানোর জন্য দুই পক্ষ টানা হাচড়া করত। যাই হোক, আমি কিছুটা পিছিয়ে দৌড় দেবো ভাবলাম। কিন্তু এত মধ্যেই দুই পা পিছাতে না পেছাতেই রাজহাঁস এসে আমার পায়ে ঠক দিয়ে বসলো। যে রাজহাঁসটা আমাকে ঠকানোর জন্য রেডি পাশাপাশি আর একটা রাজহাঁস আর সাথের বাচ্চারাও যেন আমার পিছনে দৌড়ানো শুরু করলো। আর ইতোমধ্যে একটা রাজহাঁসতো আমার পায়ে মুখ লাগিয়ে বসেছে। আতঙ্কে দাঁড়িয়ে গেলাম,প্রচন্ড রেগে গেলাম! এরপর রাজহাঁসের গলার চেপে ধরে তুলে এক আছাড়। ভয়ে ঘেমে গেছিলাম, কেউ দেখলে আমাকে বকবে এই কারণে,নাকি সাহসে, নাকি গরম পরছে সেটা কিন্তু জানিনা। যেমন রাজহাঁসের ঠোক খেয়েছি তেমন উচিৎ শিক্ষা দিয়েছিলাম। কি করবো আমার তো কিছু করার নেই। হয়তো নির্দয় হতে হয়েছিল অবলা প্রাণীর উপরে, তখন তো আমিও ছোট। গলির মাঝখানে আমাকে একা পেয়ে নাজেহাল করবে আর আমি মেনে নেব, ভয় পেয়েছি কিন্তু আমি তো ভীত নই। এরপর থেকে জানতে পেরেছি রাজহাঁস ঢোকাতে আসুক আর যাই করুক যেভাবে স্বাভাবিক অবস্থায় পাশ দিয়ে চলতে হয়, সেভাবে চলে গেলে সে ঠুকায় না। যাই হোক এরপর পাশের বড় রাজহাঁসটির গলা সোজা দুইটা লাথি দিয়ে আমি এক দৌড়ে চলে আসলাম বাড়িতে। এরপর আমার আর খেলা করা তখন হলো না বাড়িতে এসে খাওয়া দাওয়া করে পুনরায় আর এক পথ দিয়ে খেলার সেই শিশু-বাগানে পৌঁছালাম।



গল্পটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif


পুনরায় ফিরে আসবো নতুন কোন গল্প নিয়ে। ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই, সবার জন্য শুভকামনা রইল। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Sort:  
 5 months ago 

ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে আপনার একটি গল্প খুব সুন্দর ভাবে লিখে শেয়ার করেছেন। আসলে ভাই এই রাজহাঁসের দৌড়ানি আমিও অনেক বার খেয়েছি। তবে আপনি শুধু দৌড়ানি খেয়েছেন তা নয় আপনি হাঁসের সঠিক সাজা দিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে গল্পটা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

নরম শরম হলেও চালাক চতুর ছিলাম তাই তো আছাড় দিয়েছি সাহস করে।

 5 months ago 

আপনার ছোটবেলায় রাজহাঁসের দৌড়ানি খাওয়ার গল্প পড়ে খুবই ভালো লাগলো। দৌড়াতে গেলে রাজহাঁস বেশি ঠোকা দিতে আসে। আপনি তো ছোটবেলায় রাজহাঁসের দৌড়ানি খেয়েছিলেন আর আমি তো এখনো রাজহাঁসের দৌড়ানি খায়।

 5 months ago 

আপনি এখনো ছোট রয়েছেন আপু, তাইতো রাজহাঁস আপনাকে এখনো দৌড়ানি দেয়।

 5 months ago 

ভাইয়া আপনার ছেলেবেলা নিয়ে সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন।গল্পটা পড়ে ভালোই লাগলো। পড়ছিলাম আর কিছুটা হাসছিলাম। আপনার তখনকার মুহূর্তটা মনে করে। তবে এটা জেনে ভালো লাগলো আপনি বেশ সাহসী। আমি হলেত ওদের আঘাত করতাম কি ভয়ে আমি নিজেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকতাম। কিন্তু ভাইয়া আপনার আছার খেয়ে রাজাহাঁস কি বেঁচে ছিল না আহত হয়ে হাসপাতালে গিয়েছিল। সেটা তো জানালেন না। ভাইয়া আপনার গল্পটি পড়ে আমার বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাই মাঝে মাঝে এরকম কিছু গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন আশা করি।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

ধানদিলেগে কিছুটা সময় বসে ছিল মনে হয়েছিল কিন্তু বারবার তো আর তাকাইনি উল্টা তো আমি দৌড় দিয়েছিলাম না।

 5 months ago 

আপনি ছোট বেলায় রাজহাঁসের দৌড়ানি খাওয়ার গল্প শেয়ার করেছেন। আপনার গল্পটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। আমিও যখন ছোট ছিলাম এমন রাজহাঁসের দৌড়ানি অনেক বার খেয়েছি। ধন্যবাদ গল্পটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 5 months ago 

আসলে আমাদের সকলের কমবেশি এমন দৌড়ানি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে।

 5 months ago 

আপনি অনেক মজার একটা বিষয় নিয়ে আজকে আলোচনা করেছেন। রাজহাঁসের ধরে লেখাটা আমার কাছে কমন পড়েছে। রাজহাঁসের দৌড়ানি খাওয়ার ভয়ে আমি মেজো খালার বাসায় তেমন একটা যেতাম না। রাজহাঁসের সাথে আমার কিসের শত্রুতা আমি ঠিক বলতে পারি না কিন্তু রাজহাঁস দেখলেই আমাকে তাড়া করতো।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

ছোটবেলার সেই স্মৃতিগুলো সত্যি খুব আনন্দ দেয়

 5 months ago 

ছোটবেলার সেই স্মৃতিগুলো সত্যি খুব আনন্দ দেয়

একদম ঠিক কথা বলেছেন ভাই। ছোট বেলার স্মৃতিগুলো ভোলার মতো না।

 5 months ago 

ভাইয়া আপনার সাহস আছে মানতেই হবে। শেষ পর্যন্ত রাজহাঁসের গলায় চেপে ধরে আছার মারলেন। বাপরে বাপ অনেক সাহসী আপনি।রাজহাঁসের দৌড়ানি ছোটবেলায় অনেক খেয়েছি। আপনার লেখা পড়ে অনেক ভালো লাগলো।

 5 months ago 

আমি মনে করি, কমবেশি আমরা সবাই দৌড়ানি খেয়েছি রাজহাঁসের।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57174.31
ETH 3071.24
USDT 1.00
SBD 2.40