গল্প: বিয়ের পাত্রী দেখতে যাওয়ার পূর্ব পর্যায়
আজ - সোমবার
হ্যালো বন্ধুরা,
আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আমরা যে সমস্ত ভাইবোনেরা একসাথে কাজ করছি, হয়তো অনেকেই বিবাহিত। অনেকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রকার পোস্ট করে থাকি এই কমিউনিটিতে। তবে আজ পর্যন্ত আমি লক্ষ্য করেছি কেউ বিয়ের অনুভূতি নিয়ে পোস্ট করলেও মেয়ে দেখার অনুভূতি নিয়ে পোস্ট করেনি। আর তাই আমি সেই ফাঁকা স্থানটা পূরণ করার জন্য আপনাদের মাঝে উপস্থিত হলাম বিবাহের জন্য মেয়ে দেখার অনুভূতি নিয়ে।
হয়তো অনেকদিন আগে আমি এই কমিউনিটির অন্যান্য সদস্যদের সাথে এই বিষয়ে আলোচনা করেছিলাম এবং বলেছিলাম আমি বিয়ে করলে তার পূর্বে মেয়ে দেখার অনুভূতি আপনাদের মাঝে তুলে ধরব। মাঝে মাঝে অনেক ভাই-বোনেরা আমাকে প্রশ্ন করতো আজও কি মেয়ে দেখা হয়নি? কবে সেই পোস্ট আপনার কাছ থেকে পাব। হয়তো আজ আমি সেই দিনের সম্মুখীন হয়েছি। আর আপনাদের সেই ইচ্ছা পূরণ করার জন্য মোবাইল হাতে ধরেছি। তাই একদম প্রাথমিক পর্যায়ে থেকে আপনাদের মাঝে সমস্ত বিষয়গুলো তুলে ধরতে চাই এই পোস্টে। জীবনে প্রথম একটি মেয়ে বিয়ে করার জন্য দেখলাম এবং তার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গেলাম।
১৯ এ মার্চ স্কুল থেকে ছুটি নিয়েছিলাম সাতক্ষীরায় চারুকলা বিভাগে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার জন্য অবশ্য এই দিনটা ছিল রবিবার। আমার পরীক্ষার ডেট ছিল ২২-২৩ শে মার্চ। ১৯ তারিখে স্কুল করে কুড়ি একুশ বাইশ তেইশ চব্বিশ এ মার্চ পর্যন্ত ছুটি নিলাম। তবে তার পূর্ব থেকে বাড়িতে আলোচনা চলছিল পরীক্ষা দেওয়ার আগে মেয়েটা দেখতে যাওয়া হবে না। অলরেডি আমার বাপের দেখা হয়ে গেছে উনার খুব পছন্দ হয়েছে। বাড়িতে তাকে নিয়ে এটা সেটা গল্প চলছিল কিন্তু আমি যখন জানতে চেয়েছিলাম মেয়ের বাড়ি কোথায়, কি নাম, দেখতে কেমন, কত সালে এসএসসি পাস? কোন কিছু আমাকে বলা হচ্ছিল না। আমিও খুব আফসোস প্রকাশ করেছিলাম। আমাকে নাকি স্কুল থেকে অনেকেই দেখেছে তাই আমার কাছে সবকিছু অজানা রয়ে গেল। যাইহোক সাতক্ষীরা থেকে পরীক্ষা দিয়ে বাসায় ফিরলাম ২৪ তারিখে অর্থাৎ পহেলা রমজানের দিন। তবে সাতক্ষীরাতে তিন বন্ধু মিলে খুব আনন্দে ছিলাম আর একথা যেন প্রায় ভুলেই গেছিলাম।
ইতোপূর্বে অনেকবার আমার কাছে সাতক্ষীরায় ফোন গেছে মেয়ে বাড়ির লোকেরা খুবই অধীর আগ্রহে রয়েছে কবে ছেলে বাড়ি ফিরবে। আমি বাসায় ফিরতে না ফিরতে তার পরের দিন মেয়ের বাবা আমাকে দেখার উদ্দেশ্যে যায় এবং আমাকে দেখে তার মাথায় আর কাজ করে না। শুধু বলে বিয়ের ডেট দিয়ে দিন। এই ছেলের সাথে আমি আমার মেয়েকে বিয়ে দেবো। এমনকি আমার আব্বার কাছে অনেকবার অনুরোধ করেছে, অনৈয়-বিনয় করেছে, "ছেলে আমার পছন্দ ভাই যেন হাতছাড়া না হয়"। মেয়ের বাবা তো আমাকে দেখার পর পরই তার মেয়ের ইমো নম্বর আমাকে দিয়ে দিল এবং বলল বাবা এখনই তোমার ছবি পাঠিয়ে দাও মেয়ের কাছে। আমিও কিছু ফটো পাঠিয়ে দিলাম কিন্তু ফটো ব্যাক আসল না অর্থাৎ মেয়ের নাম কি সেটা জানতে পারলাম ইমো নম্বরে কিন্তু মেয়ের কোন ছবি নেই সেখানে। যাইহোক সাতক্ষীরা থেকে বাসায় ফিরে ২৬ তারিখ পর্যন্ত ছুটি পেয়েছিলাম ২৭ তারিখে স্কুল।
২৭ এ মার্চ ২০২৩ সোমবার, স্কুলে যাওয়ার পূর্বে আমার আব্বা বলেছিল বাপ স্কুলের ছুটি নিয়ে চলে আসবে মেয়ে দেখতে যেতে হবে। আমি ২৬ তারিখে বিকেলে একটি মিথ্যা অভিযোগ শুনেছিলাম মেয়ের পরিবার সম্পর্কে তাই আমি বলেছিলাম ভালোভাবে সন্ধান নিন, আমি আজকে যেতে পারবো না। আর আজ পর্যন্ত আমি কোন কিছু জানতে পারলাম না। মেয়ের ছবিও দেখতে পারলাম না। পারলে কারন ইমো অথবা হোয়াটসঅ্যাপে আমাকে মেয়ের ছবি দেখাতে বলুন। বাড়িতে ভাই প্রতিবাদ করে বলল মেয়ের ছবি দেখে কি হবে সরোজমিনে দেখতে হবে, এমনকি দেখে পছন্দ হলে সাথে সাথে বিয়ে করিয়ে দেব। আমি বিয়ের শব্দটা কানে নিতে পারছিলাম না। কারণ বিয়ে করা অতি প্রয়োজন বোধ করছিলাম না। তাই সকলে বাবা ভাইয়ের সাথে একটু মনোমালিন্য মন নিয়ে চলে গেলাম স্কুলে।
স্কুল থাকা অবস্থায় বারোটার দিকে হঠাৎ দেখি ভাই ফোন করে বলছে তাড়াতাড়ি ছুটি নিয়ে বাড়ি আসবি, দুইটার দিকে মেয়ে দেখতে হবে। আমি কোনমতে রাজি হচ্ছিলাম না যেহেতু আমাদের বিদ্যালয়ে ২৫ থেকে ২৯ তারিখের মধ্যে টিউটোরিয়াল পরীক্ষা নিয়ে ৩০ তারিখে অভিভাবক সমাবেশে ও তার ফল প্রকাশ করা হয়। আর বিশেষ করে অনুষ্ঠান আমাকে পরিচালনা করতে হয়। এদিকে স্কুলের সাউন্ড বক্স নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। যেহেতু মেয়ে দেখতে যাওয়ার ইচ্ছে আমার কোনমতেই ছিল না। তাই আমিও স্কুলে পরীক্ষা না নিয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম না। আর এদিকে বারবার শুধু ভাই আর আব্বা আমাকে ফোন দিচ্ছিল। তিনটা দশে স্কুল বন্ধ হল। বাসায় পৌঁছাতে চারটা বাজলো। এদিকে হঠাৎ করে ভাই বাড়ি এসে প্রস্তুত অর্থাৎ সে আর আব্বা মেয়ের বাড়িতে চলে গেছিল সে মেয়ে দেখেছে। আমাকে বলছে দ্রুত গোফদারি কাট, রেডি হ, মেয়ে বাড়ি যেতে হবে,আজকে তোকে বিয়ে করা লাগবে। এমন কথা শুনে আমার খুবই খারাপ লাগলো। আজ পর্যন্ত মেয়ে কেমন, কি করে, নাম কি, কোন গ্রামে বাড়িতে? সঠিক জানলাম না। তবে কে জানছিল ইতোমধ্যে আমার বিয়ে ফরজ হয়ে গেছে। বিস্তারিত আগামীতে জানতে পারবেন।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ।
বাহ বাহ ভাই শেষ অবদি আপনার বিবাহের ফুল ফুটিয়াছে।
ভাই এমব পরিস্থিতিতে পরিনায় তাই এই অভিজ্ঞতা এখনো হয়নি আমাদের।তবে গল্প টা পরে বুঝলাম আপনি ভেশ নারভাস ও ছিলেন বটে হাহাহা।শুভ কামনা রইলো
আসল পরিচয় তো এখনো বাকি রয়েছে
বিয়েটা কি করে ফেলেছেন ভাইয়া? এমন জায়গায় এসে শেষ করলেন পরবর্তী পর্ব না দেখা পর্যন্ত তো ভালো লাগছে না। যাই হোক না দেখে শুনে কিভাবে বিয়ে হবে। তাছাড়া আপনি পাত্রী দেখতে যাবেন না জন্য স্কুলের সব পরীক্ষা শেষ করে দেরিতে গিয়েও তেমন একটা লাভ হলো না মনে হচ্ছে। আপনার বাবা এবং ভাইরা আগে গিয়ে পাত্রী দেখে বিয়েটি মনে হয় ঠিক করে এসেছে। দেখা যাক বিয়ে করেছেন কিনা।
আশা করি ওয়েট করবেন এবং বিস্তারিত জানতে পারবেন,তবে এটা বলতে পারি লস হবে না
ঠিকই বলেছেন ভাইয়া মেয়ে দেখার অনুভূতি নিয়ে আজ পর্যন্ত পোস্ট দেখিনি।এই ব্যতিক্রমধর্মী পোস্ট দেখতে পেলাম আপনার পোস্টার মাধ্যমে।এর আগে আপনি বলেছিলেন,যেহেতু সেই সময়ে এসে গিয়েছে তাই পোস্ট টা দেখতে পেলাম।আপনি বেশ টেনশনেই ছিলেন এই পরিস্থিতিতে হঠাৎ মেয়ে দেখতে যাওয়াই,,,পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।ধন্যবাদ সুন্দর পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
পরবর্তী পর্যায় দিতে বাকি, লেখা রয়েছে।