পাঁচে রমজান, 'বিবাহের পরের দিন বিকাল' বামন্দী বাজারে অবস্থান

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আজ - শনিবার

১৪ শ্রাবণ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
২৯ জুলাই, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ


আসসালামু আলাইকুম




হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট।


ফটোগ্রাফি সমূহ:



দিনটা ছিল ২৮ শে মার্চ ২০২৩ রোজ মঙ্গলবার। আমি আর আমার বন্ধু মারুফ দুইজনে মিলে বামুন্দি বাজারে গিয়েছিলাম কিছু বাজার করার জন্য। অবশ্য বামুন্দি বাজারের দিন শুক্র আর সোমবার। তবে সোমবার আমার বিবাহ কাজ সম্পন্ন হওয়ার ফলে বিকাল টাইমে আমরা তো যেতে পারলাম না তাই তারপরের দিন মঙ্গলবার অর্থাৎ পাঁচ এ রমজান আমরা দুই বন্ধু বাজার করার জন্য বামুন্দি বাজারে উপস্থিত হয়েছিলাম। বামুন্দি বাজারে পৌঁছাতে পৌঁছাতে আছরের আজান হয়ে গেল তাই ভাবলাম বামুন্দি বাজারে কলেজ প্রাঙ্গণে যেই মসজিদটা রয়েছে সেখানে আমরা নামাজ আদায় করব আসরের। অবশ্য বামন্দি বাজারের এই স্থানটার নাম নিশিপুর। তবে কেউ নিশিপুর বলে এই জায়গার সম্বোধন করে না এক নামে পরিচিত বামুনদি বাজার। যাইহোক আমি আর আমার বন্ধু মারুক দুজনা চেষ্টা করলাম জামাতের সাথে এই মসজিদে নামাজ আদায় করতে। এই মুহূর্তে আকাশের অবস্থা খুব সুন্দর ছিল। অনেক লোকজনের ভিড়ে যেন অজু করতে গিয়ে একটু হিমশিম খাচ্ছিলাম। যেহেতু বাজারের লোকজন সবাই এসে নামাজ পড়ে এই মসজিদটাতে। একটি বড় মসজিদ রয়েছে সেটা লাস্টের দিকে দেখতে পারবেন তবে এই বাজারে এটাই। এমনিতেই বাজারের লোকজন আরেকদিকে রমজান মাস তাই ওযু করার জন্য জায়গা পাওয়াটাই কঠিন। বামুন্দী নিশিপুর কলেজ প্রাঙ্গণে শুধু ঐদিন প্রথম নয় আমার উপস্থিত পূর্বেও আমি উপস্থিত হয়েছি এবং নামাজ পড়েছি ২০১৪ সালের দিকে। যাইহোক রমজান মাসে বিয়ের পরের দিন নিজেকে একটু নতুন নতুন মনে হয়েছিল। কারণ ফটোগ্রাফি করছিলাম যখন বামুন্দি বাজারে তার আগের দিন ওই মুহূর্তে শ্বশুরবাড়ি বিয়ে করার জন্য যাচ্ছিলাম। কতটা তাড়াহুড়া আর কতটা মনের মধ্যে আনচান করছিল তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। অবশ্য ওই মুহূর্তে মারুফ আমার পাশেই ছিল। এদিকে এই মুহূর্তে আমরা দুইজন বামুন্দি বাজারে পূর্ব দিনের ন্যায় পাশাপাশি রয়েছি মসজিদ প্রাঙ্গণে। মনের মধ্যে যেন নতুন একটা অনুভূতি কাজ করছিল তাই কলেজ প্রাঙ্গণের চারিপাশ বারবার ফটোগ্রাফি করছিলাম এদিকে ওযু করা অবস্থায় যে সমস্ত মানুষগুলো মসজিদের পাশে অবস্থান করেছিল তাদের ফটোগ্রাফি করছিলাম। হয়তো এটা সেটা ফটোগ্রাফি করছি কিন্তু মনের মধ্যে একটাই চাওয়া পাওয়া রয়ে গেছে কখন বাড়ি পৌঁছাব এবং বউয়ের মুখটা দেখতে পারবো। এদিকে কিন্তু বউ কত চেয়ে রয়েছে এটা আমি বুঝতে পারছি।

IMG_20230328_165924_907.jpg

IMG_20230328_165928_966.jpg

IMG_20230328_165931_670.jpg

IMG_20230328_165936_967.jpg

IMG_20230328_170022_093.jpg

IMG_20230328_170026_086.jpg

IMG_20230328_170035_496.jpg

IMG_20230328_170043139_BURST0003.jpg

IMG_20230328_171214017_BURST0004.jpg

IMG_20230328_171250398_BURST0004.jpg



কিছুটা সময় ধরে বাজার করার চেষ্টা করলাম বামুন্দি বাজারের বিভিন্ন অলিগলি ঘুরে ঘুরে। বিভিন্ন কিছু কেনার মুহূর্তেও যেন স্মরণ হচ্ছিল বাসায় আমার বউ রয়েছে যা এই বাজারে পূর্বে অবস্থান করেছিলাম সেই দিন এমনটা স্মরণে হয়েছিল না। এইতো মাত্র কয়েকটা দিন আগেই আমরা দুই বন্ধু বামুন্দি বাজারে বাজার করতে এসেছিলাম কিন্তু তখন এইসব স্মরণ হয়েছিল না যে বিয়ে করবো কবে বা বউ থাকবে নিজের ঘরে। এই মুহূর্তে আমার বউ ঘরে রয়েছে আর আমি বামুন্দি বাজারে বন্ধুর সাথে এসে হয়তো তাকে বলতেও পারছি না আবার নিজের ভেতরে ধরে রাখতে পারছি না কখন বাসায় পৌঁছাতে হবে। ইতোমধ্যে কয়েকবার আমার বউ তার মোবাইল থেকে ইমুতে লাভ ইস্টিকার এবং কিসম স্টিকার পাঠিয়ে দিয়েছে! আমি আরো দেরি না করে সাথে সাথে যেন রিপ্লাই করেছি লাভ ও কি স্টিকার দিয়ে। যত বাজারের দিকে অগ্রসর হচ্ছি তত যেন বারবার ইমুতে বউ সাড়া দিচ্ছে এভাবে। নতুন বউ বলে কথা মনের মধ্যে হয়তো একটু আনচান রয়েছে কিন্তু ফোন দিতে ইচ্ছে করছিল না,কিছুটা লজ্জা অনুভূতি দুজনের মধ্যে কাজ করেছিল বুঝতে পারছিলাম। এদিকে বেলা গড়িয়ে ইফতারের সময় এসে গেল। আমরা বামন দিয়ে নিশিপুর কলেজের মসজিদ ছেড়ে বাজার করতে করতে চলে এলাম বামুন্দি বাজারের বড় মসজিদের কাছে। বড় মসজিদের পাশ থেকে ইফতারি কার্য সম্পন্ন হল। মসজিদে তেমন ভালো জায়গা পেলাম না ইফতারি কার সম্পন্ন করা হলো একটি ভ্যান গাড়ির উপর বসে। যাইহোক খুব সুন্দর একটি জায়গা ছিল পাবলিকের জন্য সামিয়ানা টাঙ্গানো ছিল সেই জায়গায়। বাজারের লোকজন বলে কথা অনেকের ভিড়। তাই নিরিবিলিটির জায়গায় বসে ইফতারি করার চেষ্টা করছিলাম। এদিকে ঘরে থাকা নতুন বউ যেন বারবার লাভ স্টিকার কিস স্টিকার পাঠাতেই আছে পাঠাতেই আছে। বারবার সে আমার ইমোতে মেসেজ করছে কখন বাসায় ফিরবে। একলা ঘরে তো আর ভালো লাগছিল না। বাড়ির লোকজন যেন তার কাছে একদম অচেনা। আমিও তাড়াহুড়া করছিলাম তার মনের কষ্ট বুঝতে পেরে। আমি মোটামুটি তাকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম মোটরসাইকেল আছে যেহেতু আমরা খুব শীঘ্রই বাসায় পৌঁছে যাব। তবুও নারীর মন বুঝতে পারছেন সবাই। তাই আমরাও দ্রুত ইফতারের কার্য সম্পন্ন করে নেওয়ার চেষ্টা করলাম আর নামাজ শেষে যে সমস্ত দোকানে কেনাকাটা বাকি ছিল তা শেষ করব ভাবছিলাম।

IMG_20230328_182323056_BURST0002.jpg

IMG_20230328_182528_446.jpg

G71CCvZmOmGgRQsRaFwiCfeIwQJ.jpg

IMG_20230328_182614_566.jpg

IMG_20230328_182921_940.jpg

IMG_20230328_182929_634.jpg

IMG_20230328_182933_777.jpg

IMG_20230328_182940_039.jpg



রোজা রমজান মাস মাগরিবের নামাজের জন্য অনেক দোকানদার দোকান বন্ধ করে একবারে বাড়িতে চলে যাই। এর পরে আর দোকান খোলে না। তবু আমাদের পুরনো অভ্যাস রয়েছে বামুন্দি বাজারে আসলে কাফিরুলের ইলেকট্রনিক্সের দোকানে কিছু না কিছু কিনতে হয়। তাই আমরা বামুন্দি বাজারের বড় মসজিদ অতিক্রম করে এসে সেই দোকানের পাশে এসে অবস্থান করলাম। দেখলাম দোকান খোলা রয়েছে কিন্তু এখনো কেউ সেভাবে মাগরিবের নামাজের পরে দোকানে বসে নেই। কিছুটা সময় অপেক্ষা করার পরে দোকান থেকে প্রয়োজনে কিছু জিনিস কেনাকাটা করে আমরা বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। ইতোমধ্যে আরো ইমো কল এসে উপস্থিত হয়ে গেছে লাভ ও স্টিকার। এটাই বুঝতে পারছেন নিজের মনের মধ্যে অনুভূতিটা কখন কেমন টা হয়ে ওঠে আর কতটা আবেগঘন মন নিয়ে দ্রুত বাসার দিকে চলে আসতে হল। আর সেই থেকে যেন মনের মধ্যে বেশি বেশি জাগ্রত হতে থাকলো পরিবারের প্রতি ভালোলাগা ও ভালোবাসা অনুভূতি। আলহামদুলিল্লাহ গত ২৭ তারিখে চারটা মাস পার হয়ে গেছে বিবাহের। আলহামদুলিল্লাহ সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানীতে এবং আপনাদের দোয়ায় বেশ ভাল রয়েছি দুজনায়। আশা করি পরবর্তীতে এমন আরো অনেক বিস্তারিত বিষয় নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হব।

IMG_20230328_191020_360.jpg

IMG_20230328_185323_139.jpg


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Sort:  
 last year 

মামা আপনি বিবাহের পরের দিন বিকেল বেলায় আমাদের এলাকার বাজারে এসেছিলেন জেনে বেশ ভালো লাগলো। আপনি আর মারুফ মামা দুইজন বাজারে এসে বাজার করেছেন এবং ঘোরাঘুরি করেছেন আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম। আসলে আমাদের এলাকাতে বামুন্দি বাজারে সব ধরনের জিনিস পাওয়া যায়। ধন্যবাদ মামা এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

হ্যাঁ মামা স্মৃতি ধরে রাখতে এই পোস্টটা শেয়ার করলাম

 last year 

বামুন্দি বাজার নামটি অদ্ভুত কেমন।যাইহোক বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে গিয়েও নিজের বউয়ের জন্য মন ছটফট করছে ভাইয়া।আসলে এই অনুভূতি মনে হয় নতুন বিয়ের পর সবারই হয়।যদিও আমি সিওর নই, কারন আমি সিঙ্গেল।হি হি,ধন্যবাদ ভাইয়া।

 last year 

বিবাহ হয়ে গেলে বুঝতে পারবেন কতটা মনের অনুভূতি দুজন দুজনার মধ্যে

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 58589.32
ETH 2636.10
USDT 1.00
SBD 2.45