স্বরচিত হাস্যকর কবিতা || ওরে বাটপার || প্রিয় লাজুক খ্যাঁকের জন্য ১০%
আজ - রবিবার
Selfie device: Infinix hot 11s
location
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে ও মেহেরবানীতে অনেক অনেক ভাল রয়েছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল ভাই বোন বন্ধুদের আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা; সালাম ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আমার আজকের পোষ্টের বিষয় কবিতা। পূর্ব দিনের ন্যায় আজকেও আমি আপনাদের মাঝে কবিতা নিয়ে উপস্থিত হয়েছি। তবে আমার আজকের কবিতাটি ব্যতিক্রমধর্মী। আপনারা অনেকেই জানেন সুমন মানের নতুন কিছু, সুমন মানে ইউনিক পোস্ট। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আজকে ব্যতিক্রমধর্মী এই কবিতা নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। যে কবিতার ঘটনাবলি সত্য মিথ্যার সমন্বয়ে রচিত। কবিতাটির লেখার মূল উদ্দেশ্য আনন্দ প্রদান। যেখানে বাস্তব ঘটনা কিছু উল্লেখ রয়েছে। তাই চলুন আর দেরি না করে কবিতাটি পড়ে আসি। |
---|
কবিতা
বসেছিলাম আরএফএল ফার্নিচারে।
দুইটা করে চেয়ার পাতা
মাথার ওপর বড় ছাতা।
জানা ছিল না একটুও আমার
এই ফার্নিচার গুলো যে কার।
আমার কোন প্রেমিকা নাই
হালকা পাতলা প্রেম করতে চাই!
বেশি প্রেম করার মোটেও ইচ্ছা নাই
পরিবেশ দেখে ইচ্ছে হয়েছিল তাই।
গিয়েছিলাম আমি ঘুরতে সেথাই
প্রেমিক-প্রেমিকা চলে জোড়ায় জোড়ায়।
কত রূপসী আসে আর যায়
চেয়ে দেখি আমার টা নায়।
পড়েছিলাম বড় চিন্তা ভাবনায়
কেন আজও প্রেম করি নাই।
নির্বাক নয়নে চেয়ে নদীর পানে
কপালে কে আছে কেইবা জানে।
ভাবছিলাম কত কথা মনে মনে
আসলো অচেনা বান্ধবী তিনজনে।
একজন বলিল হায়! প্রেমিকা আসে নাই?
মনে মনে ভাবলাম কিচ্ছু বলার নাই!
থাকলাম আমি একটু নীরব
প্রেম প্রেম ফিলিংস করলাম অনুভব।
একজন বলিল ছ্যাকা খেয়েছে মনে হয়
অন্যজন বলিল প্রেমিকা বুঝি আমাদের মত নয়?
কেন যে ছেলেরা না জেনে না বুঝে
যার তার সাথে প্রেমে জ্বলে মরে।
কি বলিবো ভাষা মুখে নাই
বাটুন মোবাইলটা বারবার ঝাকায়।
বলিলাম আমার প্রেমিকা আছে
এখন সে ক্লাসে গেছে।
মিথ্যা শুনে মেয়েগুলো তাই
একটুখানি নিরব হয়ে যায়।
কতক্ষণ পর তাদের পানে
চেয়ে দেখলাম দু নয়নে।
তিনটার মধ্যে দুইটা মেয়ে
কত যে সুন্দর তা মনি জানে।
করলাম মিস মিথ্যা বলে
নিতে পারতাম চান্স সাহস রেখে।
ভাবলাম তখন টাকার কথা
ছলনায় জড়ালে হতে পারে পকেট ফাঁকা।
মেয়েগুলো তখন টাচস্ক্রিন সেট দিয়ে
তুলছিল ছবি আমায় দেখিয়ে।
ভাবলাম তখন এরা কোন বেহায়া
আমি লজ্জা পেলেও তারা পায় না।
বুঝলাম আমি গ্রামের ছেলে
ঠকাতে পারে সুযোগে ফেলে।
না জানি তাদের মতলব টা কি?
প্রতারক নারী! নাকি উঠতে বয়সের নেকামি?
কিছুক্ষণ পর একটি ছেলে এসে
বললো মামা মামি নেই পাশে?
হঠাৎ বুঝলাম না তার কথা
হয়ে উঠল নানান চিন্তা।
এ কোথায় এলাম রে ভাই
জীবনে কখনো শহরে আসি নাই।
ছাত্র আমি বিয়ে করি নাই
হেসে বললো প্রেমিকা নাই?
হাল না ছেড়ে বললাম আছে
এখন সে ক্লাসে গেছে।
বললো মামা দিন চেয়ার ভাড়া
আপনার তো নেই বুকিং করা।
পাঠাবো নাকি বাদাম আমড়া?
বুঝতে পেরেছি এই ব্যবসা।
বললাম মামনি তোমার আসবে যখন
অনেক কিছু কিনব তখন।
এখন বল চেয়ার ভাড়া কত?
দুইটা চেয়ার ঘণ্টা প্রতি কুড়ি টাকার মত।
দিয়ে হাতে দশটি টাকা
ধরে নাও আমার বুকিং রাখা।
হয়ে গেল আমার পকেট ফাঁকা
এর বেশি ছিলনা টাকা!
মামনি আসুক পরে টাকা নিবে
ইচ্ছেমতো বাদাম আমড়া দিবে।
উপরে চলে গেল হোটেল বয়
১৫ মিনিট গেলেই বুঝি ঘন্টা হয়।
বাটন মোবাইলটা কানে ধরে
জোরে জোরে বলিলাম আমি এই পারে।
দেখছো না জানু আমি হাত উঁচা করে
চলে আসো তুমি পদ্মার পশ্চিম পাড়ে।
হোটেল বয় চেঁচিয়ে বলে, মামা মামনি আসছে?
তোমাদের হোটেল এরিয়া চিনে না ডাকি তার।
আবার সেই ছেসড়া মেয়েগুলো
দাঁড়িয়ে গেল সামনে এসে।
একটি মেয়ে বলল যে ভাই
হাত তুলে কি ডাকছিলেন আমায়?
পড়লাম বুঝি আবার ঝামেলায়
আমার কাছে এক টাকাও নাই।
টাকা ছিল খালাতো বড় আপুর কাছে
না জানি আজ কি কপালে আছে।
বোনটা আমার ছিল অতি সচেতন
পকেটে টাকা রাখার তোর নেই প্রয়োজন।
এখানে কত ছিনতাইকারী আছে
সরল মানুষ দেখে ঘুরে পিছে পিছে।
ভেবেছিলাম মেয়েগুলো হতে পারে কি তাই?
যাক বাবা আমার কাছে কোন টাকা নাই!
বাঁচতে হবে এবার হোটেল বয়ের থেকে
বললাম মেয়েগুলোর বসুননা ছাতার নিচে।
মেয়েগুলো কেমন জানি আনন্দের সাথে
চলে গেল আমার সেই বুকিং চেয়ারে।
কি জানি তারা বলছিল পা নেড়ে নেড়ে
একটু দূর থেকেও যেন মন নিচ্ছিলো কেড়ে।
হোটেল বয়কে ডেকে বললাম শুনছো মামা
মামনি যে এসে গেছে আর টেনশন নিও না।
এখন আমি একে যাব পাঁচ মিনিটের মত
আমড়া বাদাম নিয়ে মামীদের কাছে রাখো।
চেয়ে আছে মেয়েগুলো আমাদের পানে
ভাগ্যে কি আছে তাঁদের বিধাতাই জানে।
একে যাবো নাম দিয়ে হয়ে এলাম পার
কলেজ মাঠে আপুর পাশে দাঁড়িয়ে আছে স্যার।
বললাম আপুর আপনার ভাইবা কি হলো?
খুব বেশি খিদে পেয়েছে বাসাতে চলো।
ভালই ভালই কোনমতে বাসায় চলে এলাম
কথায় কথায় বিস্তারিত সব বলে দিলাম।
কথা শুনে বড় বোন বলল একটু হেসে
বোকা ছেলে আর একটু হলে জাতিযে তুই ফেঁসে!
এই ঘটনা আমার জীবনের সত্যি মুগ্ধকর
একা একাই হাসি পায় স্মরণ হওয়ার পর।
সমা প্ত |
---|
এই কবিতাটির অন্তরালে লুকিয়ে আছে ২০১৪ সালের আমার কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং ঘটনা। যে বাস্তব অভিজ্ঞতা আর ঘটনাটির ঘটেছিল রাজশাহী কলেজের পাশে পদ্মাপাড় নামক স্থানে। আমি অবশ্য জায়গায় জায়গায় চেয়ার পেতে রাখা বিষয়ে অবগত ছিলাম না। নদীর নিকটে চেয়ার গুলো পেতে রাখা হয়েছে আর হোটেলটা ছিল রাস্তার পাশে। এর মধ্যে প্রায় ৭০-৮০ গজ দূরত্ব। পাশে বসে থাকার অন্যান্য জায়গা রয়েছে। তবে চেয়ার পাতা রয়েছে এ বিষয়ে আমার ধারণা না থাকায় সেখানেই আরো লাগছে বসে ছিলাম। এদিকে আমাকে কেউ দেখছে কিনা সেদিকে ছিলাম না। আর এ থেকে হয়েছিল বিস্তারিত কাহিনী। যা কবিতার মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে কিছুটা সত্য আর মিথ্যাকে অবলম্বন করে। কবিতার সৌন্দর্য সৃষ্টির জন্য সত্য মিথ্যা আশ্রয় গ্রহণ করতে হয়েছে।
২০১৪ সালের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই কবিতাটি লিখেছেন জেনে ভালো লাগলো। আসলে কবিতা আমাদের জীবন থেকেই তৈরি হয়। জীবনের ছন্দ গুলো কবিতার ভাষায় প্রকাশ পায়। হয়তো আমাদের এলোমেলো চিন্তাধারাগুলো ছন্দে প্রকাশ পেলেই সুন্দর কবিতা তৈরি হয়। আপনার লেখা কবিতাটি ভালো লেগেছে। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
যেহেতু কিছুটা বাস্তবতা ছিল তাই চেষ্টা করেছিলাম এভাবে কবিতার রুপ দেওয়ার।
সত্যি কবিতাটি পড়ে অনেক আনন্দ পেলাম।কবিতাটি অনেক লম্বা হলেও পড়তে অনেক মজা পেয়েছি।আসলে আমাদের এই পৃথিবীতে মানুষকে ঠকানোর জন্য অনেকেই উৎপেতে থাকে।খুব সাবধানে থাকতে হয়।ইদানিং আমাদের কক্সবাজারেও এরকম অনেক কালো বাজারি হচ্ছে। খবরে, পত্র-পত্রিকায় অনেক ঘটনা দেখা যাচ্ছে।তাই সবাইকে সাবধানে চলাফেরা করতে হবে।
যেহেতু কিছুটা ঘটনা কেন্দ্রিক তাই কবিতা অনেক বড় হয়েছে।