ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ায় উৎসাহ প্রদানের কৌশল

in আমার বাংলা ব্লগlast year
আসসালামু আলাইকুম

IMG_20220926_112005143_BURST0002.jpg





হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি ফেলে আসা সেই দিনগুলির কিছু ফটোগ্রাফি এবং বিস্তারিত আলোচনা নিয়ে। যে দিনগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের মেধার বিকাশের জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করতাম বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে, তার মধ্যে সাপ্তাহিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কুইজ প্রতিযোগিতা এবং তার পুরস্কার বিতরণী। ঠিক সে সমস্ত বিষয় নিয়ে আপনাদের মাঝে উঠে এসেছি আজকের এই পোস্ট নিয়ে। আশা করি আপনাদের খুবই ভালো লাগবে আমার আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট দেখে।


'আমার বাংলা ব্লগ'
কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট


ফটোগ্রাফি সমূহ:



ছোট ছোট বাচ্চাদের লেখাপড়ায় উৎসাহ প্রদান করার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে তাদের পুরস্কারের ব্যবস্থা করা। আমরা অনেকেই জানি ছোট বাচ্চারা স্কুলে যেতে তেমন একটা আগ্রহী হয় না। আবার দেখা যায় কিছুদিন স্কুলে যাওয়ার পরে স্কুলের প্রতি টান সৃষ্টি হয়। প্রথমত তাদের স্কুলের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করতে পিতামাতাকে অনেক হিমশিম খেতে হয়। অনেক বাচ্চারা রয়েছে স্কুলে প্রথম প্রথম কান্না করে অথবা স্কুলে যেতে চায় না। এমনকি পাশে আম্মা যদি না থাকে তাহলে সে স্কুলের থেমে থাকতে চায় না। বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে হয় সেই মুহূর্তে তার বাচ্চাকে স্কুল ধরানোর জন্য, হয়তো আমাদের জীবনে এমন ইতিহাস রয়েছে আমাদের পিতা-মাতা আমাদের স্কুল ধরানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছে। আমার ছোটবেলার কথা মনে পড়ে। আমার আব্বা আমাদের একজন শিক্ষকের হাতে টাকা দিয়ে রাখতেন এবং বলে রাখতেন আমরা যখন বাড়ির দিকে চলে আসতে যাব তখন যেন সেই টাকা দিয়ে দোকান থেকে দুই টাকার পাউরুটি কিনে আমাদের হাতে দেয় এবং স্কুলে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এভাবেই আমরা দিন দিন পাউরুটি খাওয়ার লোভে অথবা স্যারের হাত থেকে কলম নেওয়া লোভে স্কুল ধরেছিলাম। এখনো মনে পড়ে সেই ছোটবেলার দিনগুলো কতটা আনা পরিশ্রম করতে হয়েছিল পিতা-মাতার আর শিক্ষকদের কৌশল অবলম্বন করতে হয়েছিল আমাদের লেখাপড়ার লাইনে তুলে দেওয়ার জন্য।

IMG_20230130_132311_6.jpg

IMG_20230130_132315_7.jpg

IMG_20230130_132422_0.jpg

IMG_20230130_132424_2.jpg

IMG_20230130_132425_6.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স



আমি এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করতে এসে দেখেছি অনেক অভিভাবকেরা বিশেষ করে যাদের হাজবেন্ড বিদেশে রয়েছে সে সমস্ত অভিভাবকেরাই তাদের বাচ্চাদেরকে নিয়ে আসতো আমাদের বিদ্যালয়। আর তাদের তো পরিবারের বেশি একটা কাজ থাকত না, বাচ্চাদেরকে স্কুলে নিয়ে আসতো বিভিন্ন প্রকার খাবার সামগ্রী কিনে তাদের ব্যাগের মধ্যে পুরে দিত এমনকি তারা স্কুলের হল রুমে বসে লুডু খেলে সময় পার করতো বাচ্চাদের জন্য। এদিকে বাচ্চারা জানতো তাদের অভিভাবক হল রুমে রয়েছে তাই তারা কান্না করত না ক্লাসে উপস্থিত থাকতো। তবে একদম বাচ্চারা খুবই দুষ্টামি করে বেড়াতো, এক রুম থেকে আর এক রুমে লাফালাফি করত। ছুটে চলে যেত এই পাশ থেকে ওপাশে। ক্লাসে মনোযোগী হত না। বিভিন্ন কৌশলে তাদেরকে মনোযোগী করানোর চেষ্টা করা হতো। ঠিক তেমনি আরেকটি কৌশল সেটা হচ্ছে এই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার একটিভ করার জন্য বিশেষ পুরস্কারের ব্যবস্থা করা। পাশাপাশি ক্লাসেই কুইজ প্রতিযোগিতা করানো।

IMG_20230130_132545_8.jpg

IMG_20230130_132547_6.jpg

IMG_20230130_132548_7.jpg

IMG_20230130_151002_994.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স



আপনারা দেখছেন ফটোগ্রাফিতে বিভিন্ন ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে একটি করে কলম তুলে দেওয়া হচ্ছে। এই কলম তুলে দেওয়ার বিষয়টা হচ্ছে তাদের লেখাপড়ার প্রতি উৎসাহ প্রদান করা এবং যেন তারা নিয়মিত স্কুলে আসে আর আমরা যেই কুইজ প্রতিযোগিতা তাদের জন্য সৃষ্টি করেছি কারণ তাদের পাঠ্য বই থেকেই কুইজ তৈরি করে তাদের ধরা হতো এবং বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিতে হতো এভাবে। অবশ্য এই প্রক্রিয়াটা আমি আর মোস্তাফিজুর সৃষ্টি করেছিলাম ছাত্র-ছাত্রীর মেধার বিকাশ লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করার জন্য। আর এর মধ্য দিয়ে বিদ্যালয়ের উন্নতি সাধন করার জন্য। অনেক গার্জিয়ান এমন কি যারা আমাদের এই কার্যক্রম গুলো ফেসবুক ইউটিউবে দেখেছে তারা আমাদের খুবই সুনাম প্রকাশ করতো বিভিন্ন মানুষের নিকট এমনকি এর প্রক্রিয়া চলার মুহূর্তে অনেক ছাত্রছাত্রী এসে ভর্তি হয়েছিল বিদ্যালয়ে। তারা ইউটিউব অথবা ফেসবুক দেখেই উৎসাহ পেয়েছিল এই বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য। আর এই ধারা আমরা দুইজন অব্যাহত রাখতে পেরেছিলাম প্রায় এক বছর মত। যেখানে বিদ্যালয় তেমন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়নি বরং আমরাই কৌশল করে টাকা উঠাতাম শিক্ষক মন্ডলীদের কাছ থেকে। আর সেই টাকা দিয়ে পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হতো সাপ্তাহিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কুইজ প্রতিযোগিতায়।

IMG_20230130_132110_5.jpg

IMG_20230130_132112_3.jpg

IMG_20230130_132213_6.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স



এখানে যে সমস্ত ফটোগ্রাফিতে দেখতে পারছেন ছাত্র-ছাত্রীদের তুলে দেওয়া হচ্ছে সম্পূর্ণটাই শিক্ষক মন্ডলির কাছ থেকে তোলা টাকার পুরস্কার। আর এভাবেই সৃষ্টি করতে চেয়েছিলাম ভালো একটা পর্যায় যাতে ছাত্রছাত্রীরা লেখাপড়ার প্রতি উৎসাহ পেতে থাকে এবং লেখাপড়ায় মনোযোগী হয়। এদিকে আমি ক্লাসের চেষ্টা করতাম তাদের কুইজ প্রতিযোগিতা করানোর জন্য এতে বেশ উন্নতি হতো তাদের লেখাপড়ার চিন্তাধারা। প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রী উৎসাহমূলকভাবে লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করতো। তবে এক বছর ধরে এই কার্যক্রম চালাতে গিয়ে অনেক ছাত্র-ছাত্রীর উন্নতি লক্ষ্য করেছিলাম। পরবর্তীতে কার্যক্রম নিজেরাই বন্ধ করে দিয়েছিলাম বিভিন্ন সমস্যার কারণে হয়তো এখন আর সেই কার্যক্রম নেই। নেই এই ধারার উৎসাহ অবদান। তবে আজকে যারা আমারে পোস্ট করছেন আশা করব অভিভাবক যারা রয়েছেন তারা আপনাদের সন্তানদের প্রতি অনেক যত্নশীল হবেন এবং লেখাপড়ায় উৎসাহ প্রদান করার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করবেন এতে আপনার সন্তান বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার দিক থেকে ভালো অবস্থান করবে এবং অনেক পুরস্কার অর্জন করতে সক্ষম হবে আর এভাবেই তার লেখাপড়ার বিকাশ ঘটতে থাকবে উৎসাহ পাওয়ার মধ্য দিয়ে।

IMG_20230130_132225_5.jpg

IMG_20230130_132246_3.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স

আশা করি,আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনি অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে বুঝতে ও শিখতে পেরেছেন, সেই সাথে নতুন জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছেন। পোস্টটি উপস্থাপনা কেমন ছিল এবং এ বিষয়ে আপনার অনুভূতি কেমন, অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আমাকে জানাতে ভুলবেন না। আপনার জন্য আমার পক্ষ থেকে শুভকামনা রইলো।


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif

zr7XQBzuvvkjgjjPxunUtP5k84gxgWc4mR8PqdBj5rx8AtXSSugGPwSy7JKyM3rgX4k3arRVPC2wT66DqiAYg2UuYrHpE94NCJsYEnjKP7Erbg.png


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Sort:  
 last year 

আসলে আমরা দুজন উদ্যোগ নিয়ে ছাত্রছাত্রীদেরকে দারুন ভাবে উৎসাহ প্রদান করতে পেরেছিলাম। লক্ষ্য করে দেখেছি এই উৎসাহ প্রদানের কারণে তাদের লেখাপড়ার আগ্রহ আরো বৃদ্ধি পেয়ে গিয়েছে।

 last year 

হ্যাঁ একদম ঠিক কথা বলেছ

 last year 

আপনার পোস্ট পড়ছিলাম আর মনে মনে হাসছিলাম নিজের অতীত ভেবে, কতই না দুষ্টুমি করেছি স্কুলের সেই প্রথম দিকে। যাইহোক আপনার উদ্যোগটি দারুন ছিল কারণ পড়াশোনার করার একটা উৎসাহ দেয়া খুবই ইম্পর্টেন্ট বাচ্চাদের জন্য।

 last year 

আমাদের অতীত ছিল মধুর

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 56784.71
ETH 2392.67
USDT 1.00
SBD 2.27