ওয়াজ মাহফিলের মেলা ভ্রমণ করে আমার অনুভূতি প্রকাশ
আজ - বৃহস্পতিবার
হ্যালো বন্ধুরা,
আমাদের গ্রামের দক্ষিণপাড়া গোরস্থান ময়দানে দুই দিনব্যাপী ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়ে থাকে প্রতিবছর। তবে এই ওয়াজ মাহফিলে তেমন একটা অংশগ্রহণ করা হয় না। আমরা জানি ওয়াজ মাহফিলে অংশগ্রহণ করলে নিজের মধ্যে ধর্মীয় অনুভূতি জাগ্রত হয় এবং এ বিষয়ে মনোবল সৃষ্টি হয়। মনের মধ্যে ধর্মের প্রতি সক্রিয়তা লাভ করে বেশি। যাই হোক আমি লক্ষ্য করে থাকি ওয়াজ মাহফিলে গুরুত্বপূর্ণ কথা মোটামুটি যাই বলুক না কেন আমরা এই বিষয়গুলো খুব কম অবগত থাকি এবং অবহেলায় ছেড়ে দেই ওয়াজ মাহফিলের নাম করে বেশিরভাগ জমজমাট আয়োজন সৃষ্টি হয়ে যায় চুড়িমালার দোকানগুলো আর খাবারের দোকানগুলো। আমার কাছে একটাও খারাপ অনুভূতি লাগে,বর্তমান যোগাযোগের মাধ্যম অনেক বেশি। আমরা ইউটিউব ফেসবুক বা অন্যান্য মিডিয়াগুলো সাচ করলে ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিল অনেক বেশি শুনতে পারি, জানতে পারি। মনের মধ্যে যদি ধর্মীয় চেতনা প্রবল থাকে তাহলে সেখান থেকে আমরা অনেক কিছু জানতে পারি এবং শিখতে পারি। আর গ্রামের এই সমস্ত ওয়াজ মাহফিল থেকে হয়তো সেই ধর্মীয় অনুভূতিটা আরো সক্রিয় ভাবে নিজের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করতে পারি। কিন্তু সে সমস্ত ধ্যান-ধারণা বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে নেই বরঞ্চ লক্ষ্য করা যায় মেলাগুলোর আশপাশে আনন্দ উল্লাস করে বেড়ায়। ওয়াজ মাহফিলের স্থানগুলো ছেড়ে এসে যদি লক্ষ্য করা যায় এই সমস্ত দোকান গুলোর পাশে মনে হয় যেন হয়তো এখানে কোন যাত্রাপালার আয়োজন চলছে, আর তাই এখানে ছেলে-মেয়ে উভয় শ্রেণীর মানুষগুলো আনন্দ উল্লাস করে বেড়াচ্ছে। যেখানে ওয়াজ মাহফিল শুনে মানুষের মধ্যে ধর্মীয় চেতনা সৃষ্টি হবে মনের মধ্যে একটা স্রষ্টার প্রতি ভয়ভীতি কাজ করবে সেগুলো হয় না বরঞ্চ এখানে হয়ে যায় জমজমাট আনন্দ উল্লাসের আয়োজন। যাই হোক ধর্মীয় বিষয়গুলো নিয়ে আর বেশি কিছু বলার ইচ্ছে নেই আমার, সবগুলো নিজেদের বিবেকের কথা। তবে একলা কোনদিন ওয়াজ মাহফিলে যাওয়ার আমার ইচ্ছে হয় না। বন্ধুরা যখন একাধিকবার রিকোয়েস্ট করে তখন তাদের কথা ফেলতে না পারায় যেতে হয়। আর এদিকে যেহেতু ব্লগের কাজ করি তাই ছবি তোলার প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই আমাদের গ্রামের এই ওয়াজ মাহফিলের আমি অবস্থান করেছিলাম। সত্যি কথা বলতে ওয়াজ শোনার জন্য নয়, ফটোগ্রাফি করে বেড়ানোর জন্য গিয়েছিলাম আর মেলা থেকে এটা সেটা খাওয়ার জন্য গিয়েছিলাম। কারণ ওয়াজ মাহফিল সেখানে বসে শুনব আমার ধৈর্য শক্তি তেমনটা নেই। ঠিক এই সমস্ত পরিবেশ গুলো দেখে নিজের বিবেকের মধ্যে একটু অন্যরকম খারাপ লাগা বেশি জাগ্রত হয়, তার জন্য মনের ভেতর খোব সৃষ্টি হয়, সেই ভালোলাগাটা হারিয়ে ফেলি। হয়তো অনেকে বলতে পারে 'যে খারাপ হয় হোক, নিজের ভালো হলে জগৎ ভালো। এ কথা মানুষ বলে বলুক, তবে এই প্রসঙ্গে মানায় না। কারণ আমি লক্ষ্য করে দেখেছি মেলায় মানুষজন কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকে ওদিকে ওয়াজ মাহফিলের বক্তা ধর্মীয় বিশেষ কথা বলে সেখানে তাদের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা কর কিন্তু তা মানুষের ভুল করে শুনতে চায় না, জেনেও জানতে চায় না, শুনেও শুনতে চায় না বুঝেও বুঝতে চায় না। আর প্রতিনিয়ত এগুলোই বেড়ে চলছে। আর এই চিন্তা ভাবনাটা আমি মেলার দোকানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ফটোগ্রাফি করছিলাম আর ভাবছিলাম। যখন আমি এই সমস্ত সুন্দর সুন্দর আংটি ও মেয়েদের অলংকার গুলো ফটোগ্রাফি করছিলাম তখন যেন নিজের বিবেকে অনেক বাধা প্রদান করছিল। বারবার শুধু মনে হচ্ছিল যদি আজকে এই সমস্ত জিনিসগুলো এখানে না থাকতো তাহলে অবশ্যই ওয়াজ মাহফিলের প্রতি আমার আর আমার মত অন্যান্য মানুষেরও আগ্রহ থাকতো এবং বক্তার বিশেষ কথা গুলো শুনতাম এবং হয়তো তা মেনে চলার চেষ্টা করতাম। কিন্তু কি আর করার দিন দিন ওয়াজ মাহফিলের স্থানগুলোতে যে পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে তা আমার কাছে সত্যিই গ্রহণযোগ্য নয়। যাইহোক বিবেকের প্রসঙ্গ নিয়ে আর কথা না বাড়ায় এগুলো যে যে ব্যক্তির পার্সোনাল ম্যাটার। এরপর বন্ধুদের সাথে ওয়াজ মাহফিলের এই মেলাগুলো থেকে শুধু ফটোগ্রাফি করে চললাম দেখলাম বাচ্চাদের বিভিন্ন প্রকার খেলনা মহিলাদের বিভিন্ন প্রকার অলংকার বা স্বাস্থ্যোজ্জার জিনিস এখানে রয়েছে বিভিন্ন বিক্রেতা তাদের মন মাতানো বা মন ভোলানো কথার মধ্য দিয়ে বিক্রয় করার চিন্তা করছে চেষ্টা করছে। আর এই সমস্ত খেলনা বা অলংকার জাতীয় জিনিস গুলো দেখে ছোট থেকে বড় বয়সের সর্ব শ্রেণীর ছেলে এবং মেয়ে মানুষ এই দোকানগুলোতে ভিড় করছে। ওয়াজ মাহফিল সোনার নাম করে অনেক মানুষ এসে এখানে কেনাকাটায় ব্যতিব্যস্ত। এই মেলাতে লক্ষ্য করলাম অনেক যুবক ছেলেরা তাদের গার্লফ্রেন্ড নিয়ে এসে এটা সেটা কিনে দিচ্ছে, আর বেহায়া মত হাসাহাসিতে ব্যস্ত। বাপ চাচা বয়সী অনেক মানুষ সামনে দিয়ে চলাচল করছে কিন্তু তাদের সামনে যেন মেলা থেকে গার্লফ্রেন্ডকে এটা সেটা কিনে দেওয়ার আর আবোল তাবোল কথায় হাসাহাসিটা খুব সহজ বিষয় হয়ে যাচ্ছে যুব সমাজের মাঝে। ওয়াজ মাহফিলের পরিবেশটা যেন নিকটস্থ মেলাগুলোতে নোংরা পরিবেশে রূপ ধারণ করছে। আমার সাথে যে সমস্ত বন্ধুরা এই ওয়াজ মাহফিলের মেলাতে গিয়েছিল তাদেরকে লক্ষ্য করলাম সেখান থেকে বিভিন্ন প্রকার খেলনা সামগ্রী এবং তার পরিবারের জন্য অলংকার সামগ্রী কিনছে। তবে ওই মুহূর্তে আমি বন্ধুদের প্রশ্ন করেছিলাম এমন পরিবেশ কেমন লাগছে তোমাদের কাছে। হয়তো ওয়াজ মাহফিলের নামে চারি পাশে এই যে মেলা বসানো এবং যুব সমাজের অশ্লীলতার কার্যকলাপ সেগুলো আমার বন্ধুরা বুঝতে পারল তারা বলল সত্যিই আজ ধর্মকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে বিভিন্ন দিক থেকে। আগে ওয়াজ মাহফিল হতো যেখানে মানুষের বিবেক জাগ্রত হতো এবং ধর্মের প্রতি বেশি উৎসাহ হয়ে নামাজ কালামের প্রতি যোগ দিত এবং সৎ পথে চলার চেষ্টা করত। এখন এই সমস্ত বিষয়গুলো যত বেশি শুনছি মানুষ তত যেন অবজ্ঞা করে চলছে। আর এই সমস্ত বিষয়গুলো বলাবলি করার মত দিয়ে আমি আমার মত ফটোগ্রাফি করে শুনলাম আর বন্ধুরা তাদের মত কেনাকাটা করে খুব দ্রুত মেলা থেকে বের হয়ে গেলাম। বন্ধুদের প্রশ্ন করলাম ওয়াজ শুনবে না। বলল অনেক জায়গায় ওয়াজ শুনেছি, তেমন বেশি আর ইচ্ছে করে না। যতটা জানি সেগুলোই তো মনে হয় না। তবে ওয়াজের স্থানে বসতে পারলে বেশি ভালো হতো। যাই হোক এ বলে তারা সেখানে অবস্থান করতে আর রাজি হলো না তাই একসাথে দ্রুত স্থান ছেড়ে চলে আসতে বললাম কারণ এই পরিবেশ অর্থাৎ মেলার স্থান আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হচ্ছিল না তবে সব মেলার স্থানগুলো কি এমন হয় নাকি শুধু আমাদের গ্রামের এই পরিবেশটাই ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে অগ্রহণযোগ্য আমার কাছে সেটা অন্য কোন ওয়াজ মাহফিল ভ্রমণ করে তা আপনাদের মাঝে তুলে ধরব। তবে মন থেকে সবসময় এটাই কামনা করব আমাদের সবার মাঝে যেন ধর্মীয় অনুভূতি এবং জাগ্রত বিবেক সৃষ্টি হয় এবং ধর্মকে মান্য করে চলতে পারে। ওয়াজ মাহফিল শোনার নামে যেন মেলাগুলোর মাঝখানে আড্ডা না দেয়, ধর্মকে অবজ্ঞা করা হয় এমন কার্যকলাপে লিপ্ত না হয়। জেনো ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে পারি সেই বিবেকটা আমাদের মধ্যে জাগ্রত থাকে। আর মেলা থেকে যে সমস্ত ফটোগ্রাফিগুলো আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম তা আপনাদের কেমন লেগেছে অবশ্যই জানাবেন।
Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন
Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন
Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন
Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ।
আমাদের এলাকাতেও ওয়াজ মাহফিলে এমন মেলা বসে।যদিও মাহফিলে এমন আয়োজন করা উচিত না।তবে আগে যখন ছোট ছিলাম বেশ মজা হতো।কারণ মেলায় সুন্দর খাবার থাকে।এর পাশাপাশি অনেক খেলনা এবং কসমেটিকস। যাইহোক মাহফিলে ঘুরাঘুরির মহূর্ত সেয়ার করার জন্য।
ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ধর্মকে বেশি অবহেলা বা অবজ্ঞা করে ফেলছে এসব কারণে
আমি কিছুদিন আগে এমন একটি পোস্ট শেয়ার করেছিলাম। এখন সব জায়গায় ওয়াজ মাহফিল হলেই মেলা বসে আর ছোটখাটো কোনো মেলা নয়। একদম বড় মেলার মতো আয়োজন করা হয়। আমাদের এদিকে এবার ওয়াজে মেলা বসতে নিষেধ করা হয়েছে। মনে হচ্ছে এরপর ওয়াজ মাহফিল হলে আর মেলা বসবে না।যাই হোক আপনি এমন মেলায় ঘুরাঘুরি করার খুব সুন্দর অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।
ওয়াজ মাহফিল কে কেন্দ্র করে এই জাতীয় মেলা গুলো উঠতি বয়সের যুবক ছেলে মেয়ে গুলোকে খারাপ পথের সুযোগ করে দিচ্ছে।