ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে ভালোবাসা বিনিময়ের আনন্দঘন মুহূর্ত
আজ - মঙ্গলবার
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে আনন্দঘন একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করার অনুভূতি নিয়ে। যেখানে লক্ষ্য করবেন ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে সুন্দর একটা মুহূর্ত অতিবাহিত করেছি ফটোগ্রাফি আর ভালোলাগা হাসিখুশি আনন্দ নিয়ে। তাই চলুন আর দেরি না করে সম্পূর্ণ পোস্ট মনোযোগ সহকারে পড়ি এবং উপভোগ করি।
'আমার বাংলা ব্লগ' কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট |
---|
আমরা সকলেই জানি আজ বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। এই দিনে অনেক প্রেমিক প্রেমিকা বা অনেক আপনজন মানুষ তার প্রিয়জনের কথা স্মরণ করে এবং সাহায্যপূর্ণ আচরণের মধ্য দিয়ে দিনটিকে অতিবাহিত করার চেষ্টা করে থাকে। অনেকে ভালোবাসার টানে ছুটে যায় তাই প্রিয়জনের কাছে। হয়তো কেউ ছুটে যায় লাল গোলাপ হাতে কোন নির্জন স্থানে। অনেকে ভালোবাসা বিনিময় করার জন্য সংগ্রাম করে থাকে এই দিনে। তবে কিছু কিছু স্থানে আমরা লক্ষ্য করি ভালবাসার নামে কুরুচিপূর্ণ কার্যকলাপে লিপ্ত হয়। তবে সেই সাইটটাকে আমরা মন থেকে দূরে রাখি। আজ আমি সম্পূর্ণ ভিন্ন অনুভূতি নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি যেখানে লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন ছোট্ট ছোট্ট ছাত্র-ছাত্রী যেখানে প্লে থেকে ক্লাস সিক্স পর্যন্ত একে অপরের সাথে সহাদ্যপূর্ণ আচরণ আর আমার মোবাইলের ক্যামেরায় ক্যামেরা বন্দী হওয়ার জন্য উপস্থিত হয়েছিল।
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
আমাদের এই বিদ্যালয়ে অ্যাসেম্বলি ক্লাস শুরু হয় সকাল নয় টার সময় এবং স্টাডি ক্লাস শুরু হয় সাড়ে নয়টার সময়। ১০:১৫ এর দিকে টিফিন দেওয়া হয়। কারণ দূর-দূরান্ত থেকে ছোট বাচ্চারা সকালে তেমনটা না খেয়ে আসে। আবার এসে এসেম্বলি ক্লাস আর প্রথম একটি ক্লাস করে তারা খুবই ক্ষুধার্ত হয়ে যায়। তাই এই সমস্ত চিন্তা ভাবনা করেই একটি ক্লাস পড়ে টিফিনের ব্যবস্থা। যেহেতু আমার আজকে স্কুলে যেতে দেরি হয়েছিল তাই ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে প্রথম কোন অনুভূতি শেয়ার করতে পারি নাই। যখনই টিফিন হলো আমি অফিসে খাতা পত্র রেখে বাইরে এলাম তখনই ছোট্ট সোনা মনিরা বলে উঠলো স্যার আজকে নাকি ভালোবাসা দিবস? অনেকে প্রশ্ন করল স্যার এই দিনে কি করতে হয়? হয়তো আপনি আমি যেটা মনে করছি ছোট বাচ্চারা অতটা জানে না, অতটা বুঝেও না। আর আমি যেটাই বলবো ওরা সেটাই সত্যি ধরে নিবে। তাৎক্ষণিকভাবে আমি মনে করলাম ছোট আর বড়র মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার কোন কিছু বলি। তাই আমি তাদেরকে বললাম এই দিনে একে অপরের প্রতি স্নেহ মায়া মমতা গড়ে তুলতে হয়। এই দিন আমাদের শিক্ষা দেয় একে অপরকে ভালবাসতে, কেউ কারোর প্রতি অবহেলা না করে মায়ার দৃষ্টিতে দেখা। ছোট বড় সবার মাঝে সুসম্পর্ক স্থাপন করা।
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা আমার কথা মনোযোগ সহকারে শুনলো এবং বুঝতে পারল। আমি বললাম এই দিনে তোমাদের মত অনেক ছাত্র-ছাত্রীরা একসাথে হ্যান্ডসাপ করে, একসাথে বন্ধুত্ব বিনিময় করে ফুল দিয়ে অথবা যেকোন গিফট দিয়ে, ছোট বড় সবাই মিলে একসাথে খেলা করে, আবার অনেকেই দেখা যাচ্ছে স্মৃতি ধরে রাখার জন্য ফটো উঠে ফেসবুকে ছাড়ে। আমার থেকে সমস্ত কথা শোনার পরে ছাত্রছাত্রীরা আমার কাছে বায়না ধরল স্যার আমাদের একসাথে ফটো উঠাতে হবে। আবার অনেকে বলল স্যার আমাদের ফুলের মধ্যে দাঁড় করিয়ে ফটো উঠাতে হবে। তারা সবাই মিলে আনন্দ শুরু করে দিল। অনেকে দল বেঁধে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার চেষ্টা করলেও আবার কেউ ফুলের মধ্যে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার চেষ্টা করল। অনেকে বুঝতে পারল এই দিনের শিক্ষা দেয় ছোট-বড় সবাই মিলে সুন্দর ভালবাসার সেতু বন্ধন গড়ে তোলার। তবে বড় ছেলে মেয়েদের মধ্যে কেউ কেউ বিষয়টা জানে এই দিনে প্রেমিক-প্রেমিকা ফুল বিনিময় করে পার্কে যায় ইত্যাদি। তবে তাদেরকে তখন আমি বুঝিয়ে বললাম যারা খারাপ ইসলাম ধর্ম মানে না তারা আবোল তাবোল কাজকর্মে লিপ্ত হয় শুধু এই দিনেই নয় খারাপ কাজে লিপ্ত হওয়ার সুযোগ পেলেই। তোমরা কখনো ওসব দিকে কান দেবে না। ওগুলা শোনাও পাপ। তারা বুঝতে পারল। যেহেতু ছোট ছেলে মেয়ে তাই অল্প কথাতে সুন্দর করে বুঝে নিল।
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
আমি প্রথমে চেষ্টা করলাম এদের মধ্যে কে কার সাথে খুব অল্প সময়ের মধ্যে রাগারাগি অথবা মন খারাপই হয়েছে। অনেক ছাত্র-ছাত্রী বলল কাল পরশু বা তার আগে অমুক জনার সাথে আমার মারামারি বা মন খারাপই হয়েছে। আমি তাদেরকে ডাক দিলাম এবং বললাম দুইজন করে বা তিনজন করে আমার কাছে আসো যার যার সাথে মন খারাপই হয়েছে একসাথে হাতে হাত রেখে ফুলের সাথে ছবি ওঠাও একে অপরের প্রতি ভালোবাসা বিনিময় করো নয় কনো শত্রুতা বা দূরত্ব। তারা সকলেই আমার কথা বুঝতে পারলো আর একে একে জুটি বেঁধে দুইজন তিনজন করে আমার সামনে উপস্থিত হল বন্ধুত্বসুলভ আচরণ নিয়ে। যাদের মধ্যে দু'একদিনেই আগে গ্যাঞ্জাম হয়েছে তারা হাতে হাত রেখে সামনে উপস্থিত হলো ছবি উঠার জন্য এবং সুসম্পর্ক স্থাপন করল। আমার কাছে স্যালেন্ডার করলো আর বেয়াদবি করবে না।
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
ছোট বড় ছেলে মেয়ের সবাই মিলে নির্বিশেষে একসাথে হাতে হাত রেখে উপস্থিত হলো বিভিন্ন ফুলের সাথে ফটোগ্রাফি করার জন্য। অনেকেই জানে আমি অনলাইনে কাজ করে থাকি সেখানে ফটো লাগে। তাদের মধ্য থেকে কেউ কেউ বলল: "স্যার আপনার যেখানে ফটো দেন সেখানে আমাদের ছবিগুলো দিয়ে দিবেন, বলে দিবেন আমরা একে অপরের বন্ধু, কারো সাথে শত্রুতা নাই, আজকের এই দিনে সবার সাথে ভালোবাসা বিনিময় করেছি"। কিছু চঞ্চল ছেলে-মেয়ে আছে তাদের কথা শুনতেও ভালো লাগে। আমি মনে করি বর্তমান যুগে ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে যে কুসংস্কার আর কুরুচিপণ্য কার্যকলাপ সৃষ্টি হচ্ছে, সে সমস্ত দিকগুলো থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ফিরিয়ে আনতে হলে অবশ্যই তাদের ভালো কিছু শেখাতে হবে যেন তারা প্রথমেই খারাপটা বা খারাপ কোন কিছু মাথায় গেছে না নাই। আমি যেমন বললাম ছোট-বড় সবার সাথে সুন্দর সম্পর্ক স্থাপন করা নামে ভালোবাসা দিবস। আর তারা এটাই বিশ্বাস করে নিলেও আর বুঝতে পারল হ্যাঁ তাহলে এই দিনে সকল ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে সুন্দরের সম্পর্ক স্থাপন করতে হয়। তারা খুব সুন্দরভাবে খেলাধুলা করল একে অপরের সাথে সহাদ্যপূর্ণ নিয়ে। আর তাদের এই সুন্দর ব্যবহার আমাকে মুগ্ধ করেছিল। আমিও যেন ভালোবাসা দিবসের এক নতুন মানে খুঁজে পেলাম ছাত্রছাত্রীদের ফটোগ্রাফি সুন্দর ব্যবহার একসাথে খেলাধুলার মুহূর্ত দেখে। তখন শুধু মনের মধ্যে একটি চিন্তাধারা কাজ করলো ভালোবাসা দিবসটা যদি এমন হতো তাহলে কত না ভালো হতো।
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
💌আমার পরিচয়💌
আমি মোঃ নাজিদুল ইসলাম (সুমন)। বাংলা মাস্টার্স ফার্স্ট ক্লাস মেহেরপুর গভমেন্ট কলেজ। আমার বাসা গাংনী-মেহেরপুর। মড়কা বাজার, গাংনী,মেহেরপুর এ গ্রীনরেইন ল্যাবরেটরি স্কুল নামক প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সহকারি শিক্ষক । ইলেকট্রনিক্সের যন্ত্রপাতি মেরামত ও সৌর প্যানেল নিয়ে রিসার্চ করতে পছন্দ করি। প্রাকৃতিক দৃশ্য ফটোগ্রাফি করা আমার সবচেয়ে বড় ভালোলাগা। দীর্ঘদিনের আমি পাঙ্গাস মাছ চাষী এবং বিরহের কবিতা লেখতে খুবই ভালোবাসি। |
---|
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচিতি | কিছু বিশেষ তথ্য |
---|---|
আমার নাম | @sumon09🇧🇩🇧🇩 |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | মোবাইল |
ব্লগিং মোবাইল | Infinix hot 11s |
ক্যামেরা | camera-50mp |
আমার বাসা | মেহেরপুর |
আমার বয়স | ২৬ বছর |
আমার ইচ্ছে | লাইফটাইম স্টিমিট এর 'আমার বাংলা ব্লগ' এ ব্লগিং করা |
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
ব্যস্ততার কারণে এমন একটা দিন মিস করে ফেললাম। আজকের মত একটা দিনে স্কুলে যেতে পারলাম না আর ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে দেখা করতেও পারলাম না। যদিও ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে দিনটা কেটেছে কিন্তু খুব খারাপ লেগেছে স্কুলে যেতে না পেরে।
আফসোসের কোন কারণ নেই আবার এমন দিন ফিরে আসবে।
ভাইয়া আপনি ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে নিয়ে খুব সুন্দর একটি সময় কাটিয়ে সেই অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আপনার উদ্যোগটি দেখে অনেক খুশি হয়েছি। সবাই পার্ক,রেসটুরেন্টে সময় ব্যয় করেছে। আর আপনি আপনার ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে সময় কাটিয়েছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ওরা এখন আমার ভালোবাসা।
আপনি ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে খুবই সুন্দর একটি অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। খুবই ভালো লাগলো যে আপনি ভালোবাসা দিবস যে আপনি শিক্ষার্থীদের সাথে উদযাপন করেছেন। এত সুন্দর একটি অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনাকে রইল অশেষ ভালোবাসার শুভেচ্ছা।
আমার সকল ছাত্র-ছাত্রীর পক্ষ থেকে আপনার ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা রইল
আমি বলবো আপনিই অনেক সুন্দর ভালোবাসা দিবস উদযাপন করেছেন ৷ কারন এসব ছোট্ট বাচ্চাদের মনে মধ্যে রয়েছে একদম নিখুঁত পরিপক্ক ভালোবাসা ৷ তাই বলি আপনিই আসল ভালোবাসা পালন করছেন৷
জি ভাই ভালোবাসা এক রকমের নয় অনেক রকমের হয়
ভালোবাসা দিবস উপলক্ষ্যে আপনার স্কুলের বাচ্চাদের সাথে কাটানো আনন্দময় মূহুর্তের বর্ণনা ও ছবি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ। এদিন বাচ্চাদের মধ্যে যাদের ঝগড়া-গ্যাঞ্জাম ছিল,তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব তৈরি করে দিয়েছেন, যেনে ভালো লাগলো। আমার মনে হয় দিনটি সবচেয়ে ভাল কেটেছে আপনার,সুন্দর সুন্দর বাচ্চাদের সাথে কাটিয়ে। শুভ কামনা আপনার জন্য।
ওরা সব আমার কলিজার টুকরা। আমি ওদের শিক্ষক আমি ওদের বাবা-মা।